পটুয়াখালী-২ (বাউফল) আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজের ছোট ভাই এ কে এম ফরিদ মোল্লাকে এক বছরের কারাদণ্ড এবং এক কোটি ৮০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সকালে পটুয়াখালী যুগ্ম জেলা জজ আদালতের বিচারক মো. বেলাল হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, জেলার প্রথম শ্রেণির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স হোসেন অ্যান্ড ব্রাদার্স’-এর স্বত্বাধিকারী এ টি এম মোকাম্মেল হোসেনের কাছ থেকে দীর্ঘ ব্যাবসায়িক সম্পর্কের সুবাদে ফরিদ মোল্লা বিভিন্ন সময়ে মোট এক কোটি ৮০ লাখ টাকা ধার নেন। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টাকা ফেরত না দিয়ে ক্ষমতাবান ভাইয়ের প্রভাব দেখিয়ে সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন।
পরে ২০১৯ সালের ২২ ডিসেম্বর ফরিদ মোল্লা তার প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব (মেসার্স মনিরা এন্টারপ্রাইজ) থেকে বাদীকে এক কোটি ৮০ লাখ টাকার একটি চেক প্রদান করেন। কিন্তু পরদিন চেকটি রূপালী ব্যাংকের পটুয়াখালী নিউ টাউন করপোরেট শাখায় জমা দিলে তা ডিজ-অনার হয়।
এরপর বাদী ২০২০ সালের ৯ জানুয়ারি আইনজীবীর মাধ্যমে একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠান। কিন্তু আসামি বাদীর দাবি অস্বীকার করেন।
নিরুপায় হয়ে বাদী মোকাম্মেল হোসেন আদালতের দ্বারস্থ হন।
বাদীপক্ষ অভিযোগ করেন, আসামির ভাই ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের নেতা হওয়ায় তাদের দাপটে অভিযোগের বিচারিক কার্যক্রম প্রভাবিত হয়ে আসছিল। তবে ৫ আগস্টের পর মামলার বিকচারিক কার্যক্রমে গতি আসে। এরপর রায় পেয়ে বাদী আদালতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
ব্যবসায়ী এ টি এম মোকাম্মেল হোসেন বলেন, ‘আমি সব সময় সততার সঙ্গে ব্যবসা করেছি। দীর্ঘ ছয় বছর ধৈর্য ধরার পর আজ ন্যায়বিচার পেয়েছি। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করায় আদালতের প্রতি কৃতজ্ঞ।’
আসামিপক্ষের বিরুদ্ধে ন্যায়বিচার প্রভাবিত করার অভিযোগ প্রসঙ্গে পটুয়াখালী জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে মামলাটি প্রভাবিত করার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আইনের বিজয় হয়েছে।
’
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আল-আমীন সুজন বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের আমলে তারা নানাভাবে আদালতকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছিল। সর্বশেষ এই রায়ের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়।’
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছর পটুয়াখালীতে দল ও ভাইয়ের প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদারি কাজ বাগিয়ে নিয়েছেন ফরিদ। এ ছাড়া অন্যের দরপত্র পাওয়া কাজও নিজে প্রভাব খাটিয়ে ভাগিয়ে নিয়েছেন।