দার্শনিক ও রাষ্ট্রচিন্তক কবি ফরহাদ মজহার বলেছেন, আমরা জীবন দিলাম, সাঈদ-মুগ্ধরা জীবন দিল। জীবন দিয়ে আবার শেখ হাসিনার হাতে ক্ষমতা তুলে দিলাম। শেখ হাসিনা তো নাই, তাহলে কীভাবে ক্ষমতা তুলে দিলাম। শেখ হাসিনার ভূত এখনো দেশে আছে।
এই ভূতের নাম সংবিধান। যে ফ্যাসিস্ট সংবিধান তিনি লিখে গেছেন, এই পুরো রাষ্ট্র ফ্যাসিস্ট সংবিধান অনুযায়ীই চলছে।
বুধবার (৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুরে প্রবন্ধ আলোচনা, বৈষম্যবিরোধী কবিতা ও গণসংগীত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ২৬ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে জেলা সাহিত্য সংসদের ব্যানারে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এ আয়োজন করা হয়।
ফরহাদ মজহার বলেন, গণ-অভ্যুত্থান যখন হয়, এটা আইন মেনে চলে না। এটা আইন ভাঙার জন্য হয়। আইন ভেঙে আবার যে বা যারা গণ-অভ্যুত্থান করল, তারা নিজেদেরকে নতুন করে গঠন করার জন্য নতুন ব্যবস্থা, নতুন আইন, নতুন সংস্কৃতি সৃষ্টি করবে। কিন্তু আমরা উল্টোটা করেছি।
তিনি বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনুস বলেছেন বাংলাদেশ বিশ্ব জয় করতে নেমেছে। আমরা বিশ্ব জয় করেই ছাড়বো। আমরা একমাত্র অভিভাবক বঙ্গোপসাগরের। আমরা বঙ্গোপসাগরীয় দেশ। তিনি কিন্তু বলেননি আমরা এটার মালিক।
কিন্তু ভারতীয়রা তা বুঝতে পারেনি। তিনি বলেছেন, আমরা এটি রক্ষা করবো। যার ধারা আমরা, বিশ্ব, চীন ও ভারত উপকৃত হবে। অর্থনৈতিক উন্নয়ন আমাদের একমাত্র অগ্রাধিকার। দ্রুততম সময়ের মধ্যে আমরা ইউরোপ-আমেরিকার মতো জায়গায় পৌঁছে যেতে পারি।
তিনি আরো বলেন, আমরা যদি এই সরকারকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করি। অনেক সাংবিধানিক সমস্যা রয়ে গেছে। শেখ হাসিনার ভূত রয়ে গেছে। এই ভূত আমাদেরকে সমস্যা করে। এই ভূত কিন্তু আসবে, বার বার আমাদের ওপর হামলা করবে। তাকে মোকাবেলা করার জন্য আমাদেরকে প্রস্তুত থাকতে হবে। একই সঙ্গে দ্রুততম সময়ে অর্থনৈতিক উন্নয়ন করতে হবে। যারা জুলাই গণঅভ্যুত্থান এখনো বুঝেন নাই, তাদেরকে সরল ভাষায় বুঝিয়ে বলছি, বাংলাদেশের ছাত্র-তরুণ এবং সৈনিকেরা একসঙ্গে যে গণঅভ্যুত্থান সফল করেছে, তার উদ্দেশ্য বাংলাদেশের ১৮ কোটি জনগণ বিশ্ব জয় করতে নেমেছে এবং তারা বিশ্ব জয় করবে। এটা ঠেকানোর সাধ্য কারো নাই।
জেলা সাহিত্য সংসদের সভাপতি ডা. মো. সালাহ উদ্দিন শরীফের সভাপতিত্বে এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জেলা সাহিত্য সংসদের সাধারণ সম্পাদক কবি গাজী গিয়াস উদ্দিন।
এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ স্টাডি ফোরামের উপদেষ্টা মো. আলাউদ্দিন, ময়মনসিংহ সরকারি আনন্দ মোহন কলেজের সহযোগী অধ্যাপক কবি জসিম উদ্দিন মুহাম্মদ।
এ সময় বক্তব্য রাখেন লক্ষ্মীপুর সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর খন্দকার ইউসুফ হোসেন, রায়পুর সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ আলাউদ্দিন, লক্ষ্মীপুর পুলিশ লাইন্স কলেজের অধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম তপন ও চাঁদপুর সাহিত্য মঞ্চের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মাইনুল ইসলাম মানিক।