অবসরের চার দিন মাত্র বাকি। এর মধ্যে নিজের স্ত্রীকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়াসহ আনুষাঙ্গিক কাজকর্ম গুছিয়ে বিদ্যালয়ে থাকা ৬৬ হাত লম্বা একটি টিনের ঘর (শ্রেণি কক্ষ) ভেঙে নিয়ে নিজবাড়িতে বসতঘর তৈরি করছেন। ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার আব্দুল হোসেন উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এনায়েত হোসেন ভূঁইয়া রতনের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ উঠেছে।
আরো পড়ুন
পদত্যাগে বাধ্য হওয়া শিক্ষকদে স্বপদে বহালের দাবি
গতকাল শনিবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে সরেজমিনে নান্দাইল উপজেলার খারুয়া ইউনিয়নের রাজাবাড়িয়া গ্রামে অবস্থিত ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, ঘরের টিনের চাল, বেড়া ও অন্যান্য উপকরণ প্রধান শিক্ষক মো. এনায়েত হোসেন ভূঁইয়ার নতুন বাড়ি ভিটার আশপাশে জড়ো করে রাখা হয়েছে।
বিদ্যালয় মাঠের দক্ষিণ দিকে ছিল ৬৬ হাত দৈর্ঘ্য ও নয় হাত প্রস্থ বিশিষ্ট টিনের ঘরটি।
বিদ্যালয়ের একটি সূত্র জানায়, প্রধান শিক্ষক মো. এনায়েত হোসেন ভূঁইয়া জানান, গত ৩১ মার্চ তিনি অবসরে গেছেন। তার স্ত্রী শামছুন্নাহার এখন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বপালন করছেন।
বিদ্যালয়ের ঘর ভেঙে ব্যক্তিগত বাড়ি নির্মাণকাজে ব্যবহারের অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এনায়েত হোসেন ভুইয়া রতন বলেন, ‘গত ২৭ মার্চ তিনি বিদ্যালয়ের টিনের ঘরটি নিলামে তুলেছেন।
তিনজন ডাককারী নিলামে অংশ নিয়েছেন। সর্বোচ্চ ডাককারী হিসেবে হিমেল মিয়া ৩২ হাজার টাকায় টিনের ঘরটি কিনে নেন। আমি সেই ক্রেতার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকায় ঘরটি কিনে নিয়েছি।’
আরো পড়ুন
দুর্নীতির মামলায় খালাস পেলেন ফালু
কীভাবে নিলাম ডাক অনুষ্ঠিত হয়েছে জানতে চাইলে এনায়েত হোসেন ভুইয়া বলেন, ‘নান্দাইলের তৎকালীন ইউএনও অরুন কৃষ্ণ পালের নির্দেশে এ কমিটি গঠন করা হয়েছিল।
ওই কমিটিতে তাঁর স্ত্রী (ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক) ও বিদ্যালয়ের তিনজন শিক্ষক ছিলেন।’
তবে এ বিষয়ে নান্দাইলের সাবেক ইউএনও অরুন কৃষ্ণ পাল বলেন, ‘গত ডিসেম্বর মাসে নান্দাইল থেকে অন্যত্র বদলি হয়ে যান। তিনি বদলি হওয়ার আগে এ ধরনের কোনো নির্দেশ দেননি। প্রধান শিক্ষক মিথ্যা তথ্য দিচ্ছেন।’
হিমেল নামে একজনকে দিয়ে ঘরটি কিনিয়েছেন বলে দাবি করেন প্রধান শিক্ষক।
জানতে চাইলে ওই হিমেল বলেন, ‘আমাকে কাগজে-কলমে রেখেছেন, এ ছাড়া আর কিছুই জানি না।’
জানতে চাইলে বিদ্যালয় পরিচালনা এডহক কমিটির আহ্বায়ক আজিজুল হক বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক তো আমাকে বলেছেন সবই নিয়মের মধ্যে হয়েছে। এখন কেন প্রশ্ন উঠছে। বিষয়টি জানতে হবে।’
আরো পড়ুন
মোংলায় অজ্ঞাত নারীর মরদেহ উদ্ধার
নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সারমিনা সাত্তার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘নিজের ইচ্ছা মতো প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের কোনো ঘর বিক্রি করতে পারেন না। এই জন্য উপজেলায় একটি কমিটি রয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’