রাজধানীতে ফিরছে সুলতানি আমলের ঈদ মিছিল

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
রাজধানীতে ফিরছে সুলতানি আমলের ঈদ মিছিল
সংগৃহীত ছবি

সুলতানি আমলে পুরান ঢাকায় একসময় ঈদ মিছিল হতো। সেই ঐতিহ্য অনুসরণ করে এবার ঈদ আনন্দ মিছিল বের করা হবে, পাশাপাশি আয়োজন করা হবে ঈদ মেলার।

১২০৪ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গতে মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠা হলেও নামাজ, রোজা ও ঈদ উদ্‌যাপনের প্রচলন হয় তার বেশ আগে থেকেই। তবে ঘটা করে ঈদ পালনের রীতি শুরু হয় স্বাধীন সুলতানি আমলে।

 

ধারণা করা হয়, সেই আমলেই প্রথম ঢাকা শহরে উৎসবমুখর পরিবেশে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা পালন শুরু হয়। তখন কৃষিনির্ভর গ্রামবাংলায় বসবাসকারী মুসলমানরা যার যার সাধ্য অনুযায়ী ঈদের আনন্দে মেতে উঠত। ইবাদত, খাওয়া-দাওয়া ও আনন্দ-উৎসব—সবই ছিল তাতে। 

তাদের এই আয়োজনে ভিন্ন ধর্মের লোকজনও শামিল হতো।

ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে আনন্দ ভাগাভাগি হতো। তবে বঙ্গদেশে ঈদ উদযাপনকে প্রাণবন্ত করে তোলে মোগলরা। মোগলদের সময় ঈদ উদযাপনের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল ঈদ মিছিল। রাজধানীতে ঈদের দিন মোগল সম্রাটরা নামাজ পড়তে যেতেন মিছিল করে।
মোগলাই জৌলুস প্রকাশিত হতো সেই ঈদ মিছিলে। 

১৬১০ সালে বাদশাহ জাহাঙ্গীরের আমলে সুবেদার ইসলাম খাঁ চিশতী যখন বাংলা সুবার রাজধানী বিহারের রাজমহল থেকে ঢাকায় স্থানান্তর করেন। নায়েব-নাজিমদের আমলে ঈদ মিছিল বিস্তৃতি লাভ করে ও বর্ণাঢ্য হয়। ব্রিটিশ আমলেও সগৌরবে বহাল ছিল ঈদ মিছিলের ঐতিহ্য। পাকিস্তান আমলে এটি অব্যাহত থাকলেও এক পর্যায়ে বন্ধও হয়ে যায়।

এরপর গত শতাব্দীর শেষ দশকের শুরুতে চালু হয় ঢাকার ঈদ মিছিল। তবে পৃষ্ঠপোষকতার অভাব আর সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আবেদন ধরে রাখতে না পেরে এখন প্রায় হারিয়ে গেছে পুরান ঢাকার ঈদ মিছিলের ঐতিহ্য।

গত বছরের ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরে ড. ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। সম্প্রতি এই সরকারের পক্ষ থেকে হারানো ঈদ মিছিলের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার কথা বলা হয়। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, ‘দিন যত যাচ্ছে ঈদ আয়োজনটি ক্রমে কালেক্টিভ, সামাজিক রূপ থেকে ব্যক্তিগত কিংবা পারিবারিক উৎসবে রূপান্তরিত হচ্ছে। আমরা ঈদের দিন অনেকটাই টিভি দেখে, ঘুমিয়ে কাটাচ্ছি।’

তাই আসন্ন ঈদুল ফিতর সামনে রেখে তিনি বলেন, ‘সুলতানি আমল কিংবা মোগল আমলে ঈদের ঐতিহ্য নামাজের পর ঈদ মিছিল, আমরা সেই ঐতিহ্য পুনরুজ্জীবিত করতে চাই। এবার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে আগারগাঁওয়ে পুরনো বাণিজ্য মেলা মাঠে ঈদের জামাতের পর একটি বর্ণাঢ্য ঈদ আনন্দ মিছিলের আয়োজন করব।’

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন জানিয়েছে, সোমবার (৩১ মার্চ) সকাল সাড়ে ৮টায় বাংলাদেশ চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রের পাশের পুরনো বাণিজ্য মেলার মাঠে ঈদের জামাতের পর ঈদ আনন্দ মিছিল বের করা হবে। মিছিলটি পুরনো বাণিজ্য মেলার মাঠ থেকে শুরু হয়ে সংসদ ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হবে। ঈদ মিছিলটি হবে বর্ণাঢ্য। মিছিলের সামনে শাহি ঘোড়া ও সামনে-পেছনে ২০টির মতো ঘোড়ার গাড়ি থাকবে। ঈদকে আরো বেশি আনন্দময় ও জমকালো করতে থাকছে ঐরাবত হাতি। ব্যান্ড পার্টি থাকবে, সুলতানি-মোঘল আমলের ইতিহাসসংবলিত চিত্রকলাও থাকবে। নারী-পুরুষ, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই এই ঈদ আনন্দ মিছিলে অংশগ্রহণ করবে। অন্যান্য ধর্মামাবলম্বীও আসবেন। এর মাধ্যমে ঢাকার ৪০০ বছরের ঈদ ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনা হবে।

ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ জানান, ঈদ মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকবে। ঈদ মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের জন্য সেমাই ও মিষ্টি দিয়ে আপ্যায়ন করা হবে। এ ছাড়া ঢাকার ঐতিহ্যবাহী বাতাসা থাকবে আপ্যায়নে।

এ ছাড়া বাংলাদেশ চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র প্রাঙ্গণে দুই দিনব্যাপী ঈদ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে ২০০টির মতো স্টল থাকবে এ কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নানা ধরনের পণ্যসামগ্রী, খাবার, চটপটি থাকবে। শিশুদের আনন্দের জন্য নাগরদোলা ও খেলার ব্যবস্থা রয়েছে। এই মেলা সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। আমাদের ঈদ আনন্দ উৎসব শুধু পুরুষ বা নারীর জন্য নয়, এখানে শিশুদের জন্যও নানা আয়োজন থাকবে। পুরো পরিবার নিয়ে সবাই যেন উপভোগ করতে পারেন এই ব্যবস্থা থাকছে ডিএনসিসির ঈদ আনন্দ উৎসবে।’

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

মতিঝিলে বাসচাপায় নিরাপত্তারক্ষী নিহত

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
মতিঝিলে বাসচাপায় নিরাপত্তারক্ষী নিহত

রাজধানীর মতিঝিলে বিআরটিসি বাস কাউন্টারের সামনে রাস্তা পার হওয়ার সময় বাসের চাপায় রুহুল আমিন (৫৫) নামে এক নিরাপত্তারক্ষী নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) বিকেলে মতিঝিল এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত রুহুল আমিন গাজীপুরের শ্রীপুর থানার নান্দাসাগর গ্রামের মৃত মোহের আলী শেখের ছেলে। বর্তমানে সবুজবাগের পূর্ব বাসাবো এলাকায় ভাড়া থাকতেন।

তিনি সবুজবাগ কদমতলা পূর্ব বাসাবো স্কুল অ্যান্ড কলেজের নিরাপত্তারক্ষী ছিলেন।

নিহতের ছেলে শাকিল বলেন, ‘মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে কমলাপুর বিআরটিসি কাউন্টারের সামনে এই ঘটনা ঘটে। রাস্তা পার হওয়ার সময় আমার বাবাকে (রুহুল আমিন) ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

মতিঝিল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবু সালে শাহীন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করেছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। বাসচালককে আটক ও বাসটি জব্দ করা হয়েছে।

মন্তব্য

থানায় জিডি করলেন ভোক্তার সেই জব্বার মণ্ডল

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
থানায় জিডি করলেন ভোক্তার সেই জব্বার মণ্ডল
সংগৃহীত ছবি

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ঢাকা অঞ্চলের পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার মণ্ডলের নামে ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ও পেজ খোলার অভিযোগে থানায় জিডি করেছেন তিনি।

সোমবার (৩১ মার্চ) রাজধানীর তেজগাঁও থানায় করা জিডিতে (জিডি নম্বর-১৬৯৯) আব্দুল জব্বার মণ্ডল উল্লেখ করেন, তার নামে এবং তার ছবি ব্যবহার করে একাধিক ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ও পেজ খোলা হয়েছে। এতে বিভ্রান্তি ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে।

তিনি নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টের মাধ্যমে বিষয়টি জানিয়েছেন।

পোস্টে তিনি ভুয়া অ্যাকাউন্ট ও পেজগুলোর স্ক্রিনশট যুক্ত করে দেন এবং সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানান। পাশাপাশি তিনি লেখেন, ‘আমার নামে এবং আমার ছবি ব্যবহার করে কিছু নকল ফেসবুক অ্যাকাউন্ট এবং ফেসবুক পেজ খোলা হয়েছে। এ বিষয়ে জিডি করা হয়েছে। সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানানো হলো।

পোস্টের শেষে তিনি ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে লেখেন, ‘তাক্বাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুম। ঈদ মোবারক।’

উল্লেখ্য, মো. আব্দুল জব্বার মণ্ডল দীর্ঘদিন ধরে বাজারে অতিরিক্ত দাম, ভেজাল পণ্য ও প্রতারণার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। তার নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে অসাধু ব্যবসায়ীরা শাস্তির মুখোমুখি হচ্ছেন এবং বাজারে ন্যায্য দাম প্রতিষ্ঠা পাচ্ছে।

তার শান্ত ও ধৈর্যশীল আচরণের মাধ্যমে একদিকে ব্যবসায়ীদের সঠিক দামে পণ্য বিক্রিতে বাধ্য করা হচ্ছে, অন্যদিকে ক্রেতারা উপকৃত হচ্ছেন।

মন্তব্য

নাঈমার মায়ের কাছে বাসাটা এখন ‘কবরস্থান’

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
নাঈমার মায়ের কাছে বাসাটা এখন ‘কবরস্থান’
উত্তরায় নিজ বাড়ির বারান্দায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান স্কুলছাত্রী নাঈমা সুলতানা। সংগৃহীত ছবি

চিকিৎসক গোলাম মোস্তফা দেওয়ান ও আইনুন নাহার দম্পতির ছোট মেয়ে ছিলেন নাঈমা সুলতানা। ছিলেন বলার কারণ, নাঈমা এখন আর নেই। গণ-অভ্যুত্থানে সেও একজন শহীদ।

গত রমজানেও মা ও বড় বোনের সঙ্গে তারাবি পড়ত নাঈমা।

ইফতারিতে নতুন নতুন খাবারের বায়না। ঈদের কেনাকাটা নিয়ে নাঈমার আনন্দ ছিল আরো বেশি। তবে এখন সব কিছুই আইনুন নাহারের কাছে স্মৃতি। আর এই স্মৃতি মলিন করে দিয়েছে তাদের ঈদ।
পরিবারে নেই ঈদ আনন্দ।

জুলাই আন্দোলনের সময় ১৯ জুলাই রাজধানী ঢাকার উত্তরায় নিজ বাসার চারতলা ভবনের বারান্দায় দাঁড়িয়েছিল স্কুলছাত্রী নাঈমা। সেখানেই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় সে।

চাঁদপুরের মতলব উত্তরের আমুয়াখান্দা উত্তরপাড়ায় নাঈমার গ্রামের বাড়ি।

গোলাম মোস্তফা গ্রামের বাজারেই রোগী দেখেন। আর তার স্ত্রী আইনুন নাহার সন্তানদের নিয়ে উত্তরার ৯ নম্বর সড়কের ৫ নম্বর বাড়ির চারতলায় ভাড়া থাকতেন।

শহীদ নাঈমার মা আইনুন নাহার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘কয়েক রোজা গেলেই নতুন জামাকাপড় কেনার জন্য অস্থির হয়ে যেত নাঈমা। সব সময় মেয়ের আবদার পূরণ করতে চেষ্টা করতাম। আমরা যৌথ পরিবারে ওর দাদার বাড়িতে একসঙ্গে ঈদ করতাম।

গ্রামে সবাই অপেক্ষা করত, কত রোজায় বাড়ি যাব। এবার সেই আনন্দ নেই।’

মেয়ের কথা ভেবে নির্ঘুম রাত কাটছে আইনুন নাহারের। মেয়ের জন্য কাঁদতে কাঁদতে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তিনি। নিচ্ছে মানসিক ডাক্তারের চিকিৎসা।

তিনি বলেন, ‘এখন মনে হয় বাসায় কোনো মানুষ নেই, কবরস্থান। সারা দিন কাঁদি। কিছু করতে বসলেই মেয়ের কথা মনে হয়।’

মন্তব্য

ঈদ অবকাশে ঢাকা

বাসস
বাসস
শেয়ার
ঈদ অবকাশে ঢাকা
রাজধানী এখন অনেকটাই ফাঁকা। ছবি : বাসস

জনবহুল রাজধানী ঢাকা এখন অনেকটাই ফাঁকা। নেই মানুষের কোলাহল, হকারের হাঁকডাক আর যন্ত্র যানের হুইসেল, নেই চিরচেনা যানজট। পবিত্র ঈদুল ফিতরের লম্বা ছুটিতে রাজধানী ছেড়েছেন অসংখ্য মানুষ। ফলে ফাঁকা হয়ে গেছে জনবহুল এই মেগা শহর।

তবে ঈদের দ্বিতীয় দিন যান চলাচল কিছুটা বেড়েছে। আবার যান চলাচল বাড়লেও গণপরিবহনগুলোতে রয়েছে যাত্রী সংকট।

সরেজমিনে রাজধানীর খিলগাঁও, রামপুরা, মতিঝিল, পল্টন, শান্তিনগর, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, বাংলামোটর, শাহবাগ, মৎস্য ভবন এলাকায় দেখা যায়, ঈদের দিন সোমবারের তুলনায় মঙ্গলবার যানবাহনের সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। তবে, বেশির ভাগ যানবাহনে রয়েছে যাত্রী সংকট, যাত্রীর অভাবে আসন ফাঁকা রেখেই চালাতে হচ্ছে যানবাহন।

যাত্রী সংকটে এসব পয়েন্টে কিছু সময়ের জন্য বাসগুলোকে অপেক্ষা করতেও দেখা গেছে। বাস ও লেগুনার স্টাফদের দীর্ষ সময় ধরে যাত্রীর খোঁজে ডাকাডাকি করতে দেখা গেছে।

রাজধানীতে কিছু যানবাহন চলাচল করলেও সড়কের কোথাও যানজটের চিত্র দেখা মেলেনি। তবে বিভিন্ন ট্রাফিক সিগন্যালে স্বল্প সময়ের জন্য গাড়িগুলোকে থামতে দেখা যায়।

সেই সঙ্গে ফাঁকা রাস্তায় রিকশা, ব্যাটারি চালিত রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেল দাপিয়ে বেড়াতে দেখা গেছে।

রাজধানীর খিলগাঁও জোড়পুকুরে লেগুনার ড্রাইভার আবুল হাশেমের সাথে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘একটা গাড়ি ভরতে এক ঘণ্টারও বেশি সময় লেগে যায়। যেখানে আগে সেটা ১০ থেকে ২০ মিনিটে হয়ে যেত। ফলে অনেক লোকসান দিয়ে গাড়ি চালাতে হচ্ছে।

একজন যাত্রী থেকে বসশিস হিসাবে ৫ টাকা করে বেশি নিলেও এই ক্ষতি পূরণ হচ্ছে না। তবু নিরুপায় হয়ে গাড়ি চালাতে হচ্ছে।’  

শান্তিনগরে কথা হয় দোকান কর্মচারি মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে। তিনি এবার ঈদে বাড়ি যাননি। স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে ঢাকায়ই ঈদ করেছেন। আজ যাচ্ছেন গাজীপুর বোনের বাড়ি বেড়াতে। আজমেরী গ্লোরি পরিবহনে কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘পুরান ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্ক থেকে বাসে চড়েছি। মাত্র কয়েক মিনিটে শান্তিনগর চলে এসেছি। অথচ অন্য সময় এইটুকু রাস্তা আসতে ঘণ্টা পার হয়ে যেত। রাস্তায় কোথাও যানজট নেই, একটানে চলে আসতে পেরেছি। গাড়িতে আসনও ফাঁকা ছিল, যাত্রীও খুব একটা নেই। মনে হয় গাজীপুর যেতে এক ঘণ্টাও লাগবে না।’

ঈদ বকশিসের কথা বলে কিছু টাকা বেশি নিলেও এ ব্যাপরে তার খুব একটা আপত্তি নেই বলেও জানান তিনি। 

গাবতলী থেকে প্রতিদিন আসেন সামিউল। তিনি বলেন, ‘রাস্তায় কোথাও যানজট ছিল না, তবে যাত্রীর জন্য বাস সব স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়েছে। প্রতি যাত্রী থেকে ৫ টাকা করে বেশি ভাড়া নিয়েছে।’

যাত্রী সংকটের দায় মেটাতে যাত্রীদের কাছ থেকে সামান্য কিছু টাকা বেশি নেওয়া হয়েছে বলে জানান এই বাসের হেলপার সোহেল।  

তিনি বলেন, ‘ফাঁকা গাড়ি নিয়ে রাস্তায় ঘুরতে হচ্ছে। যাত্রী পাচ্ছি না। আর কারো কাছ থেকে জোর করেও অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছি না। ঈদ বকশিস হিসেবে যে যা দিচ্ছে তাই নিচ্ছি।’

রাজধানীর পল্টন পুলিশ বক্সে দায়িত্ব পালন করছেন সন্তোষ নামের এক পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘আজ এবং ঈদের দিন সড়ক অনেকটা ফাঁকা। গতকাল একেবারেই ফাঁকা ছিল। তবে, আজ কিছু গাড়ি রাস্তায় নেমেছে। কোথাও কোনো যানজট নেই। অন্য সময় হলে এখানে ট্রাফিক সামলাতে শরীরের ঘাম ছুটে যেত। কিন্তু আজ অনেকটা রিল্যাক্স মুডে ডিউটি করছি। গাড়ির শব্দ দূষণ বা হর্ণ নেই। রাস্তায় আজ তুলনামূলক ধুলাবালিও কম।’

তিনি বলেন, ‘রাস্তাঘাট ফাঁকা হলেও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর কঠোর নজরদারির কারণে রাস্তায় ছিনতাইকারী বা অপরাধীদের প্রবণতা অন্যান্যবারের তুলনায় অনেকটাই কম। জনগণের যানমালের নিরাপত্তা এবং মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে ঈদ করতে পারে সে জন্য আমরা তৎপর রয়েছি।’

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ