<p>চলে গেলেন ওপার বাংলার বর্ষীয়ান অভিনেতা মনোজ মিত্র। থিয়েটার ও চলচ্চিত্র জগতের কিংবদন্তি এই অভিনেতা আজ মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সকাল ৮.৫০ নাগাদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বেশ কিছুদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন তিনি। অভিনেতার মৃত্যুর বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন তার ভাই, সাহিত্যিক অমর মিত্র।</p> <p>চলতি বছর সেপ্টেম্বর মাসে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বর্ষীয়ান অভিনেতাকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। সল্টলেকের ক্যালকাটা হার্ট ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট নিয়ে অভিনেতাকে ভর্তি করানো হয়। শরীরে সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের মাত্রা কমে যাওয়ার রক্তচাপ খুবই কমে গিয়েছিল। এর পর তিনি সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে আসেন। তবে অসুস্থতা পিছু ছাড়েনি। এ বছর একাধিকবার হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। বছরের শুরুতেই বুকে প্রেসমেকার বসেছিল মনোজ মিত্রের। হৃদযন্ত্রের সমস্যা-সহ একাধিক অসুস্থতার চিকিৎসা চলছিল৷ শেষ পর্যন্ত সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে সাজানো বাগান ফেলে চলে গেলেন মনোজ।</p> <p>১৯৩৮ সালের ২২ ডিসেম্বর ব্রিটিশ ভারতের সাতক্ষিরা জেলার ধূলিহর গ্রামে জন্ম মনোজ মিত্রের। ১৯৫৮ সালে স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে দর্শনে অনার্স-সহ স্নাতক হন তিনি। এই কলেজেই থিয়েটারে দীক্ষিত হন। সঙ্গী হিসেবে পান বাদল সরকার, রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্তের মতো ব্যক্তিত্বদের। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে এমএ করেন। ডক্টরেটের জন্য গবেষণা শুরু করেছিলেন।</p> <p>১৯৫৭ সালে কলকাতায় মঞ্চনাটকে অভিনয় শুরু মনোজ মিত্র’র। ১৯৭৯ সালে তিনি চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে নাট্যকলা বিভাগের অধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দেওয়ার আগে বিভিন্ন কলেজে দর্শন বিষয়েও শিক্ষকতা করেন। যদিও প্রথম নাটক ‘মৃত্যুর চোখে জল’ লেখেন ১৯৫৯ সালে কিন্তু ১৯৭২-এ ‘চাক ভাঙা মধু’ নাটকের মাধ্যমে তিনি পরিচিতি তৈরি হন। ওই নাটকটির মঞ্চ নির্দেশনা করেন বিভাস চক্রবর্তী। নাট্যগোষ্ঠী ‘সুন্দরম’ প্রতিষ্ঠাতাও মনোজ মিত্র। থিয়েটারের মতোই চলচ্চিত্রে অভিনয় করেও খ্যাতি অর্জন করেন কিংবদন্তি শিল্পী। সারা জীবনে বহু পুরস্কার, সম্মান পেয়েছেন এই শিল্পী। বলা বাহুল্য, মনোজ মিত্রের মৃত্যু একটি যুগের অবসান।</p>