এখন বসন্ত ঋতু চললেও সূর্যের তাপে পুড়ছে শরীর। সেটি বোঝা যায় বাইরে বের হলেই। বসন্তের মৃদু বাতাসের বদলে গরম হাওয়ার আঁচ এসে লাগছে চোখে-মুখে। সেই সঙ্গে গরমে অস্বস্তি তো আছেই।
এখন বসন্ত ঋতু চললেও সূর্যের তাপে পুড়ছে শরীর। সেটি বোঝা যায় বাইরে বের হলেই। বসন্তের মৃদু বাতাসের বদলে গরম হাওয়ার আঁচ এসে লাগছে চোখে-মুখে। সেই সঙ্গে গরমে অস্বস্তি তো আছেই।
রমজানের এই সময়ে তাই অনেকে বাইরে বের হতে চান না। যারা বের হন তারাও কাজ সেরে তাড়াতাড়ি ফেরার চেষ্টা করেন। তৃষ্ণা মেটাতে অনেকে ইফতারে বিভিন্ন ধরনের পানীয় রাখেন। কিন্তু নিজেকে ফিট রাখতে কী ধরনের পানীয় খাবেন, কী ধরনের পানীয় খাবেন না, তা অনেকেই জানেন না।
তীব্র গরমে সুস্থ থাকতে চাইলে বেশি করে পানি খাওয়া ছাড়া উপায় নেই। শরীর ডিহাইড্রেটেড হয়ে গেলেই বিপদ। তাই সারা দিন রোজা রাখার পর ইফতারের নির্দিষ্ট সময় পর পর পানি পানের চেষ্টা করুন।
শুধু গরমকাল বলে নয়, রোগবালাই থেকে দূরে থাকতে হলে পানি খাওয়ার কোনো বিকল্প নেই। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা থেকে অন্য কোনো রোগের ঝুঁকি, পানিতেই লুকিয়ে রয়েছে সুস্থ থাকার রসদ। তবে সারা বছরই প্রাপ্তবয়স্কদের তিন থেকে সাড়ে তিন লিটার পানি খাওয়ার কথা বলা হয়।
গরমে কি পানি খাওয়ার পরিমাণ বাড়াতে হবে
চিকিৎসকদের মতে, যে হারে গরম বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে, তাতে পানি বেশি করে খেতেই হবে। শরীরে পানির পরিমাণ যদি কমে যায়, তাহলে নানা রোগবালাই এই সময় জাঁকিয়ে বসবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, তিন থেকে সাড়ে তিন লিটারের বেশি পানি খাওয়ার দরকার নেই। এই পরিমাণ পানি খেলেই হবে। তবে ডায়াবেটিক, হার্টের রোগের ক্ষেত্রে পানি খাওয়ার নির্দিষ্ট পরিমাণ রয়েছে। সেই পরিমাণটা সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের থেকে জেনে নিতে হবে।
অনেকেরই পানি খাওয়ার কথা মনে থাকে না। তাই পানির বিকল্প খোঁজেন। কিন্তু পুষ্টিবিদদের মতে, পানির বিকল্প পানিই। পানি খেলে যে উপকার পাওয়া যাবে, তা আর অন্য কোনো কিছুতেই মিলবে না। তবে কে, কতটা পানি খাবেন সেটা নির্ভর করে ব্যক্তির বয়স, উচ্চতা, ওজনের ওপর।
আবার কে, কোন পরিবেশে থাকছেন, তার ওপরেও পানি খাওয়ার পরিমাণ নির্ভর করে। যিনি বাইরের রোদে ঘুরে কাজ করেন, স্বাভাবিক ভাবেই তার শরীর থেকে বেশি পানি বের হয়। ফলে তাকে পানি খাওয়ার পরিমাণ বাড়াতেই হবে। অন্যদিকে দিনভর এসিতে থাকলেও যে পানি খাওয়ার প্রয়োজন নেই, তা একেবারেই নয়।
যে পানীয় থেকে দূরে থাকবেন
গরমে সাময়িক স্বস্তি পেতে অনেকেই আখের রস, কোল্ড ড্রিংকসে গলা ভেজাচ্ছেন। তাৎক্ষণিক তৃপ্তি দিলেও এই ধরনের পানীয় শরীরের জন্য একেবারেই ভালো নয় বলে জানাচ্ছেন পুষ্টিবিদরা। তারা জানিয়েছেন, কোল্ড ড্রিংক উল্টো শরীরে পানির ঘাটতি তৈরি করে। রাস্তায় ভ্যানে করে যে আখের রস বিক্রি করা হয় তা কতটা স্বাস্থ্যকর ও পরিষ্কার, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তবে আখ কিনে এনে চিবিয়ে খেতে পারলে ভালো।
সূত্র : এই সময়
সম্পর্কিত খবর
হাজারটা সমস্যার সমাধান রয়েছে রসুনে। শুধু রান্নার স্বাদ বাড়ায় না, সংক্রমণজাতীয় রোগ ও ওজন কমানো থেকে সব কিছুরই সমাধান করে রসুন। রসুন হজমশক্তি উন্নত করে, বিপাক হার বাড়ায়। কোলেস্টেরল, ব্লাড সুগারেরও মোক্ষম দাওয়াই এই রসুন।
রসুন একটি শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিক। সকালের নাশতায় রসুন খেলে ঠাণ্ডা লাগার সমস্যা কমে অনেকটাই। রসুনের অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট রক্তকে পরিশুদ্ধ করে। কিছু ভাইরাস ও সংক্রমণজনিত অসুখ, যেমন নিউমোনিয়া, ব্রংকাইটিস, হাঁপানি, হুপিং কাফ প্রতিরোধ করে রসুন।
যক্ষ্মায় আক্রান্ত রোগীর ওষুধে সারা দিনে কয়েক কোয়া রসুন খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। তবে এত উপকার পেতে হলে কাঁচা রসুন খেতে হবে বিশেষ উপায়ে। কিভাবে রসুন খেলে উপকার পাবেন, চলুন জেনে নেওয়া যাক।
আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মতে, রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রতিদিন অন্তত একটি করে রসুনের কোয়া খাওয়া প্রয়োজন।
রসুনের মধ্যে এলিসিন নামক যে উপাদান রয়েছে সেটিই রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইডের সমতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকলে আচমকা স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাক হওয়ার ঝুঁকিও কমে।
রসুন ওজন কমাতে এক্সপার্ট। বিশেষ করে পেটের মেদ।
রসুন রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে, ফলে ব্লাড সুগার রোগীদের জন্য রসুন খুব উপকারী। রসুন শরীর থেকে টক্সিন দূর করে। আমাদের শরীরে প্রচুর ফ্রি-র্যাডিক্যালস তৈরি হয়, যা হার্ট ও অন্যান্য অঙ্গের জন্য ক্ষতিকর। রসুনের অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট প্রপার্টি সেই ক্ষতির হাত থেকে শরীরকে বাঁচায়।
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, রসুন হাই ব্লাড প্রেশার কমায়। রসুনের রস হার্টের জন্যও খুব উপকারী। ইউনিভার্সিটি অব কানেটিকাটের স্কুল অব মেডিসিনের কার্ডিওভাসকুলার রিসার্চ টিমের বিজ্ঞানীদের দাবি, কাঁচা রসুন খেলে হার্ট অনেক বেশি সুস্থ থাকে।
রসুন যকৃত ও মূত্রাশয়কে ভালো রাখে। রসুন পেটের নানা গোলমাল, হজমের সমস্যা, ডায়ারিয়া সারায়, ফলে যকৃত থাকে সুস্থ। পাশাপাশি, রসুন স্নায়বিক চাপ কমিয়ে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
কতটা রসুন খাবেন
পূর্ণবয়স্কদের ক্ষেত্রে ২-৩টি রসুনের কোয়া খেতে বলছেন পুষ্টিবিদরা। প্রতিদিন সকালে এক কোয়া রসুন কাঁচা চিবিয়ে খেলে সবচেয়ে বেশি উপকার মেলে। তবে, একান্তই সকালে খেতে না পারলে কোনো ক্ষতি নেই। বিকেল-দুপুর বা রাতে খেতে পারেন। তবে খেতে হবে কাঁচা।
কিভাবে রসুন খেলে উপকার পাবেন
সকালে খালি পেটে কাঁচা রসুনের সঙ্গে ঈষদুষ্ণ পানি মিশিয়ে খান। কিংবা, রসুনের সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে খান। রসুনের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলেও ওজন কমে ঝটপট। সামান্য একটু লবণ দিয়ে রসুন খেলেও পেটের মেদ ঝরে দ্রুত।
আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মতে, সবচেয়ে ভালো ফল পেতে গেলে সাপ্লিমেন্ট না খেয়ে খেতে হবে কাঁচা রসুন। কাঁচা রসুনের যত উপকার, রান্না করার পর আর তত থাকে না। কাঁচা রসুনে থাকে এলিসিন, যা ওষুধের মতো কাজ করে।
রসুন কাটা বা বাটার পর সঙ্গে সঙ্গে খেয়ে না নিলে এলিসিন আস্তে আস্তে উবে যায়। সে জন্যই রসুন শুকিয়ে বা রান্নায় দিয়ে খেলে উপকার কমে যায়। প্যাকেটের রসুন বাটা বা সাপ্লিমেন্টেও এই উপকার থাকে না। তা ছাড়া অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টের মাত্রাও বেশি থাকে কাঁচা রসুনে।
সকালে খালি পেটে এক কোয়া কাঁচা রসুন খেতে পারলে ভালো হয়। না হলে গরম ভাতে অল্প কাঁচা রসুন বাটা মিশিয়েও খেতে পারেন। অনেকে কাচের শিশিতে মধু ভরে তার মধ্যে কাঁচা রসুনের কোয়া দিয়ে মজিয়ে রাখেন। সঠিক পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করতে পারলে তা সপ্তাহ দুয়েক পর্যন্ত ভালো থাকে। মধু আর রসুনের মিশ্রণ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, হার্ট ভালো রাখে।
সূত্র : নিউজ ১৮
রান্নার স্বাদ বাড়াতে অনেক সময় রাঁধুনিরা কারি পাতা ব্যবহার করেন। কিন্তু শুধু স্বাদে নয়, শরীরেরও অনেক উপকার করে এই পাতা। প্রতিদিন পাঁচ থেকে দশটি কারি পাতা চিবিয়ে খেলে অনেক রোগ নির্মূল হতে পারে। এ ছাড়া আর কী উপকার আছে এই পাতায়, তা জানুন এই প্রতিবেদনে।
কারি পাতা ডায়াবেটিসকে দূরে রাখতে এবং শরীরে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে কার্যকর। যাদের আগে থেকেই ডায়াবেটিস আছে, তাও নিয়ন্ত্রণ করে এই পাতা।
কারি পাতায় ভিটামিন ই পাওয়া যায়। এটি বার্ধক্য রোধে সহায়ক।
কারি পাতা প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়ামও পাওয়া যায়। এটি হাড় ও পেশি শক্তিশালী করে। জয়েন্টের ব্যথাও কমিয়ে দেয়।
কোষ্ঠকাঠিন্য ও খাবার হজমে অসুবিধা হলে কারি পাতা খুবই উপকারী। এটিতে অ্যান্টি-ফাঙ্গাল ও অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এটি হজমেও সাহায্য করে।
কারি পাতায় ফলিক এসিড পাওয়া যায়, যা রক্তশূন্যতা দূর করে।
সূত্র : নিউজ ১৮
অনেক সময় বাড়িতে যারা গ্যাসের চুলায় রান্না করেন, তারা বুঝতে পারেন না কখন গ্যাস শেষ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। আবার অনেক সময় বার্নারের আগুনের রং দেখেও বোঝা যায় সব যন্ত্রপাতি ঠিকঠাক আছে কি না। গ্যাসের আগুনের রং দেখে গ্যাসের জ্বলনের অবস্থা এবং উপস্থিত অন্যান্য পদার্থের উপস্থিতি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। দেখে নিন আগুনের রং দেখে কী কী জিনিস জানা যায়।
নীল আগুন
এটি সবচেয়ে আদর্শ ও নিরাপদ অবস্থা। নীল আগুন নির্দেশ করে যে গ্যাসটি সম্পূর্ণরূপে জ্বলছে এবং পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহ হচ্ছে। নীল আগুন সাধারণত পরিষ্কার ও পরিপূর্ণ জ্বলনের লক্ষণ।
হলুদ বা কমলা আগুন
এই রঙের আগুন দেখলে বুঝতে হবে গ্যাসটি অসম্পূর্ণভাবে জ্বলছে।
লাল আগুন
লাল রঙের আগুন বার্নারে অন্য পদার্থের উপস্থিতি নির্দেশ করে।
সবুজ আগুন
গ্যাসে সবুজ রং খুব একটা দেখা যায় না। সবুজ রং বার্নারে তামার মতো ধাতুর উপস্থিতি নির্দেশ করে।
সূত্র : আজকাল
খাওয়াদাওয়ার বৈচিত্র্যে নজির রয়েছে বাংলাদেশে। আর খাওয়াদাওয়ার পরে একটু মুখশুদ্ধি না হলে অনেকেরই আবার চলে না। মৌরি থেকে মিছরি, এলাচ থেকে পান বা সুপারি, খাওয়ার পরে নানা মুখশুদ্ধিতে মুখের স্বাদ বদলান খাদ্যরসিকরা। কিছু মুখশুদ্ধি তো এমন রয়েছে, যা খাওয়ার পিছনে রয়েছে বৈজ্ঞানিক ও আয়ুর্বেদিক কিছু কারণ।
মুখশুদ্ধি হিসেবে লবঙ্গকে একদম ওপরের সারিতে রেখেছে আয়ুর্বেদ। লবঙ্গকে খাওয়ার পরে চিবিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। লবঙ্গ যে কেবল মুখের স্বাস্থ্য ভালো রাখে তাই নয়, হজমের প্রক্রিয়াকে মজবুত করতে এর জুড়ি মেলা ভার।
খাবার পরে লবঙ্গ চিবিয়ে খেলে দাঁতের স্বাস্থ্যেও প্রভূত উপকার হয়।
লবঙ্গ যে শুধু এক ঘরোয়া দারুণ মশলা তাই নয়, এটির মধ্যে রয়েছে বিশেষ ঔষধিগুণও।
লবঙ্গকে বলা হয় প্রাকৃতিক মাউথ ফ্রেশনার। দাঁতের যন্ত্রণা, মাড়ির ফোলাভাব কমাতে কার্যকরী ভূমিকা নিয়ে থাকে লবঙ্গ। বহুদিন ধরেই লবঙ্গ তেলকে দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ব্যবহার করা হয়।
ঠাণ্ডা লাগলে লবঙ্গ চিবালে গলার জমা কফ সহজে বেরিয়ে আসতে পারে। এর ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণ সর্দি ও কাশি থেকে রেহাই দেয়। বিভিন্ন গবেষণায় ওঠে এসেছে, ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে লবঙ্গের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য।
লবঙ্গের বিশেষ উপাদান শরীরে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়িয়ে তোলে, যাতে ডায়াবেটিক রোগীদের উপকার হয়। লবঙ্গে উপযুক্ত মাত্রায় রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরো শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।
লবঙ্গের গুণে শরীর থাকে সুস্থ, নীরোগ। শরীরের নানা সংক্রমণ থেকে লড়ার ক্ষমতা তৈরি হয় লবঙ্গের বিশেষ উপাদানের ফলে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, খাওয়ার পরে ১ থেকে ২টি লবঙ্গ চিবিয়ে খাওয়ার উপকার অনেক। ধীরে ধীরে চিবিয়ে খেতে হবে, যাতে এর রস মুখে ভালোভাবে মিশ্রিত হতে পারে।
সূত্র : আইএএনএস