<p>প্রশাসনে শুদ্ধি অভিযান না চালানো সরকারের ব্যর্থতা বলে মন্তব্য করে আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান বলেছেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের অধিকার রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। শেখ হাসিনা জনগণের যে অধিকার ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন আর কেউ জনগণের অধিকার যেন ছিনিয়ে নিতে না পারে, এই বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। কোনো বিদেশি শক্তিকে আমরা আমাদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ভারতের মতো কুক্ষিগত হতে দিতে পারি না।’</p> <p>শনিবার (১১ জানুয়ারি) ময়মনসিংহ নগরের টাউন হলের তারেক স্মৃতি অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য এসব কথা বলেন তিনি। ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে ও ২০২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণ এবং জুলাই বিপ্লবোত্তর আকাঙ্ক্ষা ও সম্ভাবনা শীর্ষক সেমিনার ও জাগরণী সংগীত আয়োজন করে আস-সিরাজ নামে একটি সম্মিলিত সামাজিক সংগঠন। </p> <p>মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘১৫ বছর ধরে বাংলাদেশ ভারতের একটি ঔপনিবেশে পরিণত হয়েছিল। বাংলাদেশকে আবার ভারতের ঔপনিবেশে পরিণত হতে দিতে পারি না। আমাদের এই ঐক্য যারা ফাটল ধরাতে চাইবে তাদেরই প্রতিহত করতে হবে সে যে-ই হোক না কেন। সম্মিলিতভাবে আমাদের প্রতিহত করতে হবে।’</p> <p>তিনি আরো বলেন, ‘এই সরকার একটা বিপ্লবের পর এসেছিল। কিন্তু এই সরকার বুঝতে পারেনি, তারা একটি বিপ্লবের প্রডাক্ট। যেকোনো বিপ্লবের পরে পৃথিবীর সব দেশে একটা শুদ্ধি অভিযান চলে। আমলাতন্ত্র, সেনাবাহিনী, পুলিশ সব জায়গায় শুদ্ধি অভিযান চলে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে একই সরকার গত পাঁচ মাসে শুদ্ধি অভিযান করতে পারেনি। তাই এখনো অরাজকতা দেখতে পাচ্ছি। আজকে যদি তারা ক্ষমতায় এসে শুদ্ধি অভিযান চালাত তাহলে বাংলাদেশ অনেক বেশি ঐক্যবদ্ধ থাকত। অরাজক পরিস্থিতি তৈরি হতে পারত না।’</p> <p>মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘গতকাল হঠাৎ করে সরকার সব কিছুর ওপর ভ্যাট বাড়িয়ে দিয়েছে। ওষুধের ওপরও ভ্যাট বাড়িয়ে দিয়েছে। রেস্টুরেন্টের ওপর ৫ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ ভ্যাট করা হয়েছে। সব রেস্টুরেন্ট তো আর বড়লোকের রেস্টুরেন্ট না। গরিব মানুষও তো রেস্টুরেন্টে খায়। সব রেস্টুরেন্টে ভ্যাট বাড়ানো মানে গরিব মানুষের খাবারেরও দাম বাড়িয়ে দিল। পোশাকের ওপর সাড়ে ৭ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ ভ্যাট বাড়াল। কাপড় কিনতে গেলে, ওষুধ কিনতে গেলে মূল্য বৃদ্ধি হবে। এই যে সিদ্ধান্ত সরকার নিল এর মধ্যেই প্রমাণিত হয়, এই সরকার বিপ্লবের চেতনাকে পুরোপুরি ধারণ করতে পারেনি। যদি বিপ্লবের চেতনা পুরোপুরি ধারণ করত তাহলে এমন একটি সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সব অংশীজনের সঙ্গে তারা আলোচনা করত। ঐকমত্যের ভিত্তিতে বাড়াত। যেখানে গরিবের কষ্ট হবে না সেখানে ভ্যাট বাড়ানো প্রয়োজন ছিল।’</p> <p>আস-সিরাজ ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা অধ্যাপক মুফতি মুহিববুল্লাহর সভাপতিত্বে এ ছাড়া বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য লুৎফর রহমান, জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা আশরাফ মাহাদী, ড. আতিক মুজাহিদ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া প্রমুখ। এরপর শহীদ ১৫ জন পরিবারের সদস্যদের মাঝে অনুদানের অর্থ বিতরণ করেন অতিথিরা। পরে জাগরণী সংগীত অনুষ্ঠিত হয়।</p>