গ্লকোমা চোখের একটি সাধারণ রোগ, যা অপটিক নার্ভের ক্ষতির দিকে পরিচালিত করে। অপটিক স্নায়ুর এই ক্ষতির ফলে দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পায়। যদি সঠিকভাবে চিকিৎসা না করা হয়, তবে দৃষ্টিশক্তির ক্ষতি অস্থায়ী বা স্থায়ী হতে পারে। এই গ্লকোমাকে বলা হয় ‘নীরব ঘাতক’।
গ্লকোমা চোখের একটি সাধারণ রোগ, যা অপটিক নার্ভের ক্ষতির দিকে পরিচালিত করে। অপটিক স্নায়ুর এই ক্ষতির ফলে দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পায়। যদি সঠিকভাবে চিকিৎসা না করা হয়, তবে দৃষ্টিশক্তির ক্ষতি অস্থায়ী বা স্থায়ী হতে পারে। এই গ্লকোমাকে বলা হয় ‘নীরব ঘাতক’।
গ্লকোমার জন্য যাদের চক্ষু পরীক্ষা জরুরি
৪০ বছরের বেশি বয়সীরা : বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গ্লকোমার ঝুঁকি বাড়ে। ৪০ বছরের পর প্রতি ২ বছর পরপর এবং ৬০ বছরের পর প্রতি বছর চোখ পরীক্ষা করানো উচিত।
পরিবারের কেউ গ্লকোমায় আক্রান্ত থাকলে : গ্লকোমার একটি বড় কারণ বংশগত প্রবণতা। যদি পরিবারের বাবা-মা, ভাই-বোন বা অন্য আত্মীয়দের গ্লুকোমা থাকে, তাহলে ঝুঁকি অনেক বেশি।
উচ্চ চোখের চাপ থাকলে: চোখের অভ্যন্তরীণ চাপ বেশি হলে গ্লুকোমার ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে। তাই যারা আগে থেকেই চোখের চাপ বেশি এমন রোগী, তাদের নিয়মিত পরীক্ষা করা দরকার।
ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপ থাকলে : ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ গ্লকোমার অন্যতম কারণ। বিশেষ করে ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি থাকলে গ্লকোমার ঝুঁকি দ্বিগুণ।
দীর্ঘদিন স্টেরয়েড ওষুধ ব্যবহারকারীরা : যারা স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ (আইড্রপ, ইনহেলার বা ট্যাবলেট) দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করেন, তাদের চোখের চাপ বেড়ে যেতে পারে। এদের নিয়মিত চক্ষু পরীক্ষা করা প্রয়োজন।
চোখে আঘাতপ্রাপ্ত বা অস্ত্রোপচার করা রোগীরা : অতীতে চোখে কোনো আঘাত পেলে বা অস্ত্রোপচার (যেমন ছানি অপারেশন) করলে গ্লকোমার ঝুঁকি বেশি।
মাইগ্রেন বা ঘন ঘন মাথাব্যথা থাকলে : গবেষণায় দেখা গেছে, যাদের মাইগ্রেন বা মাথার রক্ত সঞ্চালনে সমস্যা আছে, তাদের গ্লকোমার ঝুঁকি বেশি।
ধূমপান ও মদ্যপান করলে : ধূমপান ও অ্যালকোহল অপটিক নার্ভের ক্ষতি করে এবং গ্লকোমার ঝুঁকি বাড়ায়। ধূমপায়ীদের জন্য নিয়মিত চক্ষু পরীক্ষা জরুরি।
উচ্চ মায়োপিয়া বা হাইপারোপিয়া: যাদের চশমার পাওয়ার (-৬ বা +৬ এর বেশি) বেশি থাকে, তাদের চোখের গঠন একটু ভিন্ন হয়, যা গ্লকোমার ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
গ্লকোমা প্রাথমিক অবস্থায় ধরা না পড়লে স্থায়ী অন্ধত্ব হতে পারে। তাই আগে থেকেই সচেতন হওয়া জরুরি।
লেখক : চক্ষু বিশেষজ্ঞ ও সার্জন
জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, শেরেবাংলানগর, ঢাকা।
সম্পর্কিত খবর
সামান্য মাথা ব্যথা থেকে শুরু করে কোমরে বা হাতেপায়ে বাতের ব্যথাসহ নানা কারণে অনেকেই পেইনকিলার খেয়ে থাকেন। অনেকের আবার এই অভ্যাস দীর্ঘদিনের। তবে সাময়িকভাবে ব্যথানাশক ওষুধ (পেইনকিলার) ক্ষতিকারক না হলেও দীর্ঘদিন সেবনে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি দেখা দিতে পারে।
সাধারণত ব্যথানাশক ওষুধগুলোকে এনএসএইডস এবং ওপিওয়েড—এই দুই গ্রুপে ভাগ করা হয়।
স্বাস্থ্যঝুঁকি
ব্যথানাশক হিসেবে আইবুপ্রফেন, ন্যাপ্রক্সেন, ডাইক্লফেনাক— এই ওষুধগুলো বেশি ব্যবহৃত হয়। এর মধ্যে প্যারাসিটামলসহ কিছু ওষুধ ওটিসি হিসেবে স্বীকৃত। অর্থাৎ এ ধরনের ওষুধ কেনার জন্য কোনো রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনের প্রয়োজন হয় না। তবে অতিরিক্ত ডোজে নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে একাধারে দীর্ঘদিন এ ওষুধ সেবন করলে এর মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে।
তীব্র ব্যথার ক্ষেত্রে ওপিওয়েড ওষুধ ব্যবহার করা হয়। এনএসএইডের তুলনায় এর ব্যবহার বেশ সীমিত বললেই চলে। এর কারণে ওপিয়েড আসক্তি, বিষণ্নতা, কোষ্ঠকাঠিন্যসহ বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে।
স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে করণীয়
গ্যাস্ট্রিক আলসারের ঝুঁকি এড়াতে ব্যথার ওষুধ খেতে হবে ভরা পেটে এবং খাওয়ার আগে অবশ্যই গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খেতে হবে।
যেমন—দিনে প্যারাসিটামল ৫শ মিলিগ্রামের আটটি ট্যাবলেটের বেশি সেবনে লিভারের ক্ষতি হতে পারে। ৬৫ বছরের বেশি বয়স্কদের ক্ষেত্রে ব্যথার ওষুধ ব্যবহারে বিশেষ সতর্ক হতে হবে।
আগে থেকে কিডনি, লিভারের সমস্যা বা পেটে আলসার আছে কি না, ভালোভাবে জেনে নিতে হবে।
বর্তমান সময়ে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। প্রায় প্রতিটি ঘরে ঘরেই এমন রোগী আছে। ডায়াবেটিস হলে বারবার পানির পিপাসা, ঘন ঘন প্রস্রাব, ক্লান্তি, ঝাপসা দৃষ্টি ও অনিচ্ছাকৃত ওজন কমে যেতে পারে।
রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে গেলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে এর প্রভাব পড়ে।
এ কারণে ডায়াবেটিস হলে শরীরের গুরুতর সব অঙ্গে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। চলুন, তবে জেনে নেওয়া যাক ডায়াবেটিসের কারণে শরীরের কোন কোন অঙ্গে কী কী প্রভাব পড়ে ও লক্ষণ দেখা দেয়—
চোখ
রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি হলে রেটিনার রক্তনালিগুলোতে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে।
রেটিনোপ্যাথির কারণে রেটিনার পরিবর্তন ঘটে। যদি এর সঠিক চিকিৎসা না করা হয় তাহলে ডায়াবেটিক রোগীদের দৃষ্টিশক্তি কমে যায়। এমনকি তারা অন্ধত্ব বরণও করতে পারে।
পা
ডায়াবেটিসের কারণে পায়ে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। এ ক্ষেত্রে স্নায়ুর ক্ষতি হয়। ফলে পায়ে সংবেদন অনুভব করতে পারে না। ডায়াবেটিসের কারণে পায়ে রক্ত সঞ্চালনে ব্যাঘাত ঘটে। এর ফলে পায়ের বিভিন্ন ক্ষত সারানো কঠিন হয়ে পড়ে।
কিডনি
কিডনি শরীরের একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। এটি শরীর থেকে সব ধরনের টক্সিন ও বর্জ্য ফিল্টার করতে সাহায্য করে। কিডনিতে থাকা একাধিক ক্ষুদ্র রক্তনালি বিশেষ এই অঙ্গের কার্যকারিতায় সাহায্য করে।
রক্তে শর্করা বেড়ে যাওয়ার কারণে কিডনির রক্তনালিতেও ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। এর থেকেই ডায়াবেটিক রোগীর কিডনির সমস্যা বাড়ে। যা ডায়াবেটিক নেফ্রোপ্যাথি নামে পরিচিত।
এর উপসর্গগুলোর মধ্যে আছে- প্রস্রাবে প্রোটিন, বারবার প্রস্রাবের বেগ, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের অবনতি, পা, গোড়ালি, হাত ও চোখ ফুলে যাওয়া, বমি বমি ভাব, বমি, ক্লান্তিসহ অনেক কিছু।
স্নায়ু
ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি ও নেফ্রোপ্যাথির মতো উচ্চ রক্তে শর্করাও ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি নামক স্নায়ুর ক্ষতির কারণ হতে পারে।
এই অবস্থার কারণে অসাড়তা বা ব্যথা বা তাপমাত্রা অনুভব করার ক্ষমতা কমে যায়। এ ছাড়া জ্বালাপোড়া, তীক্ষ্ণ ব্যথা, স্পর্শে সংবেদনশীলতা ও গুরুতর পায়ের আলসার, সংক্রমণ ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
হার্ট
রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে হার্টের রক্তনালিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ কারণে ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের মধ্যে স্ট্রোক ও হৃদরোগসহ কার্ডিওভাস্কুলার জটিলতার ঝুঁকিতে থাকে।
এ ছাড়া ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) অনুসারে, ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের উচ্চ রক্তচাপসহ হৃদরোগের ঝুঁকি বেশি থাকে।
মাড়ি
মাড়ির রোগকে পিরিওডন্টাল রোগ বলে। রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে মাড়িতে রক্তপ্রবাহ কমে যায় ও পেশিগুলো দুর্বল হয়ে যায়। এ জন্য মাড়ি থেকে রক্তপাত ও প্রচণ্ড ব্যথা হতে পারে।
ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাবেন যেভাবে
স্বাস্থ্যকর জীবনধারা অনুসরণ করার মাধ্যমে রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। ডায়াবেটিসসহ দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতার ঝুঁকি কমাতে অবশ্যই স্বাস্থ্যকর, পুষ্টিকর ও কম প্রক্রিয়াজাত খাবার খেতে হবে।
এর পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে হবে। এ জন্য নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে। এ ছাড়া ধূমপান ও অ্যালকোহল সেবন এড়াতে হবে। এ ছাড়া ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো নিয়মিত চেকআপ করানো ও ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলা।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
‘কিডনি রোগীর সংখ্যা প্রতিবছর বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশে ১০ বছর পূর্বে কিডনি রোগী ছিল ১৮ শতাংশ, ২০২৩ সালে বেড়ে হয়েছে প্রায় ২৪ শতাংশ। ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ বৃদ্ধি পাওয়া এর প্রধান কারণ। ২০১১ সালে ডায়াবেটিসের রোগী ছিল ৮০ লাখ, যা ২০১৮ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ১০ লাখে।
বক্তারা আরো বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে, মাত্র ৪০ শতাংশ মানুষ জানে না তার ডায়াবেটিস আছে। আর ৬০ শতাংশ মানুষ জানে না তারা উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে। ৯০ শতাংশ মানুষ জানেই না তাদের প্রস্রাব দিয়ে আমিষ নির্গত হয়। এর ফলে নিজের অজান্তেই তারা দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে (ক্রনিক কিডনি ডিজিজ) আক্রান্ত হচ্ছে।
কিডনি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আর রশিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. সৈয়দ জাকির হোসেন এবং ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ডিপার্টমেন্ট অফ এপিডেমিওলজি অ্যান্ড রিসার্চের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল ও রিচার্স ইনস্টিটিউটের মেজর জেনারেল (অব.) অধ্যাপক জিয়াউদ্দিন আহম্মেদ, মহাসচিব অধ্যাপক ডা. রুহুল আমিন রুবেল, ব্যবস্থাপনা পরিচালক টিনী ফেরদৌস রশিদ প্রমুখ।
জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান বলেন, ‘বর্তমানে দেশে ১ কোটির ওপরে ডায়াবেটিক রোগী রয়েছে এবং সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে একে রোধ করা দরকার।’
অধ্যাপক ডা. সৈয়দ জাকির হোসেন বলেন, ‘বর্তমান সরকার নন-কমিউনিকেবল ডিজিজের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে এবং কিছু কিছু কমিউনিটি ক্লিনিকে বিনা মূল্যে ওষুধ প্রদান করা হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতিটি জেলায় ১০ বেডের ডায়ালাইসিস ইউনিট চালুর পরিকল্পনা করা রয়েছে।’
অধ্যাপক হারুন আর রশিদ বলেন, ‘কিডনি রোগের প্রধান তিনটি কারণের মধ্যে প্রথম ডায়াবেটিস, দ্বিতীয়ত উচ্চ রক্তচাপ এবং তৃতীয় কারণ নেফ্রাইটিস। দেশে নেফ্রাইটিস দিন দিন কমলেও অসংক্রামক রোগ ডায়াবেটিস ও উচ্চরক্তচাপের রোগী বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে।’
প্রতিবছর মার্চ মাসের দ্বিতীয় বৃহস্পতিবার বিশ্ব কিডনি দিবস পালিত হয়। এই বছর ১৩ই মার্চ কিডনি সম্পর্কিত রোগ ও সংক্রমণ এবং তা প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিশ্ব কিডনি দিবস পালিত হচ্ছে। অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে, এই রোগ কি দীর্ঘস্থায়ী? এর থেকে কি প্রতিকারের উপায় নেই? আর সেসব প্রশ্নের উত্তর জানতে বিস্তারিত পড়ুন এই প্রতিবেদনে।
কিডনি রোগ কি দীর্ঘস্থায়ী
বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ একটি ক্রমবর্ধমান অবস্থা যেখানে কিডনি ধীরে ধীরে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সঠিকভাবে কাজ করার ক্ষমতা হারায়।
দীর্ঘস্থায়ী এই রোগের ফলে কিডনি তার কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলে। যার ফলে শরীরে ক্ষতিকারক পদার্থ জমা হয়।
সতর্ক থাকার জন্য প্রাথমিক সংকেত
নেফ্রোলজিস্টরা জানিয়েছেন, কিডনির দীর্ঘস্থায়ী রোগের লক্ষণগুলো প্রায়শই ধীরে ধীরে বিকাশ লাভ করে এবং প্রাথমিক পর্যায়ে লক্ষণীয় নাও হতে পারে। অবস্থা অগ্রসর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যক্তিরা ক্লান্তি, পা ও পায়ে ফোলা (শোথ), ঘন ঘন প্রস্রাব (বিশেষ করে রাতে), ক্রমাগত চুলকানি, পেশীতে ক্রাম্পস, বমি বমি ভাব এবং মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করতে অসুবিধা অনুভব করতে পারে। উচ্চ রক্তচাপ, ক্ষুধামন্দা ও শ্বাসকষ্টও এর ইঙ্গিত হতে পারে।
উন্নত পর্যায়ে এই রোগ তীব্র তরল ধারণ, রক্তাল্পতা ও বিপাকীয় ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি করতে পারে। যেহেতু উল্লেখযোগ্য কিডনি ক্ষতি হওয়ার আগ পর্যন্ত লক্ষণগুলো প্রকাশ নাও হতে পারে, তাই প্রাথমিক নির্ণয়ের জন্য নিয়মিত চেকআপ এবং কিডনি ফাংশন পরীক্ষা অপরিহার্য।
ঝুঁকির কারণ
কিছু মানুষ অন্যদের তুলনায় কিডনির দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকিতে বেশি থাকেন। বিশেষ করে ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ব্যক্তিরা। যাদের পরিবারে কিডনি রোগের ইতিহাস আছে, স্থূলতা, হৃদরোগ বা লুপাস আছে তাদেরও ঝুঁকি বেশি। দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ বয়স্কদের মধ্যে বেশি দেখা যায়।
তবে ধূমপান, খারাপ খাদ্য ও ব্যায়ামের অভাবের মতো জীবনযাত্রার কারণে যেকোনো বয়সে কিডনি ক্ষয়কে ত্বরান্বিত করতে পারে। তদুপরি, চিকিৎসা পরামর্শ ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে ব্যথা নিরাময়কারী ওষুধ বা কিছু অ্যান্টিবায়োটিক সেবনকারী ব্যক্তিরা অজান্তেই কিডনি ক্ষতির দিকে এগিয়ে যেতে পারেন।
চিকিৎসা কী
যদিও এই অবস্থার কোনো প্রতিকার নেই, তবে খাদ্যতালিকাগত পরিবর্তন ও চিকিৎসাগত হস্তক্ষেপের মাধ্যমে এর অগ্রগতি নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এই রোগের চিকিৎসা রোগের পর্যায় ও অন্তর্নিহিত কারণগুলোর ওপর নির্ভর করে। কিডনি ক্ষতি ধীর করার জন্য ওষুধ রক্তচাপ, রক্তে শর্করার মাত্রা ও কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
সোডিয়াম, পটাসিয়াম ও প্রোটিনের পরিমাণ কমিয়ে খাদ্যতালিকাগত সমন্বয় কিডনির ওপর চাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে। তীব্র ক্ষেত্রে রক্ত থেকে বর্জ্য ফিল্টার করার জন্য ডায়ালিসিসের প্রয়োজন হয়, অথবা কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন হতে পারে।
প্রতিরোধের উপায়
এই প্রতিবেদনের তথ্যগুলো পরামর্শমূলক। সাধারণ তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। বিস্তারিত জানতে বা পরবর্তী যেকোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস