ঢাকা, বুধবার ১৬ এপ্রিল ২০২৫
৩ বৈশাখ ১৪৩২, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৬

ঢাকা, বুধবার ১৬ এপ্রিল ২০২৫
৩ বৈশাখ ১৪৩২, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৬

বিশ্ব পারকিনসন্স দিবস আজ, রোগী বাড়লেও চিকিৎসায় পিছিয়ে দেশ

শিমুল মাহমুদ
শিমুল মাহমুদ
শেয়ার
বিশ্ব পারকিনসন্স দিবস আজ, রোগী বাড়লেও চিকিৎসায় পিছিয়ে দেশ
সংগৃহীত ছবি

দেশে প্রবীণ জনগোষ্ঠী বাড়ছে। এর সঙ্গে বাড়ছে পারকিনসন্স রোগী। তবে চিকিৎসায় আশানুরূপ অগ্রগতি নেই। পারকিনসন্স মস্তিষ্কের ক্ষয়জনিত রোগ, যা সাধারণত ৫০ থেকে ৬০ বছর পার হলে দেখা দেয়।

প্রথম দিকে রোগীর হাত-পা কাঁপে, হাঁটতে সমস্যা হয়। খাওয়ার সমস্যা ও কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়, বিভিন্ন ঘটনা ও স্মৃতি ভুলে যাওয়াসহ আচরণে অস্বাভাবিকতা দেখা যায়।

এমন পরিস্থিতির মধ্যে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো আজ বাংলাদেশে পালিত হচ্ছে ‘বিশ্ব পারকিনসন্স দিবস’। ১৮১৭ সালে জেমস পারকিনসন্স নামের ইংরেজ শল্যচিকিৎসক রচিত ‘শেকিং পালসি’ নামে পারকিনসন্স রোগ নিয়ে প্রথম প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়।

তাঁর জন্মদিন ১১ এপ্রিল পারকিনসন্স দিবস পালিত হয়। তাঁরই নামানুসারে এই রোগের নামকরণ হয়েছে। দিবসটির এবারের প্রতিপ্রাদ্য বিষয়— ‘বিজ্ঞানী ও চিকিৎসকদের ক্ষমতায়ন : আবিষ্কার এবং যত্ন উদ্ভাবন ত্বরান্বিত করুন’।

রোগী বাড়লেও চিকিৎসা পিছিয়ে

পারকিনসন্স রোগের লক্ষণ : সাধারণত হাতের কাঁপুনির মাধ্যমে এই রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়।

ধীরে ধীরে তা বাড়তে থাকে। হাঁটাচলা করতে সমস্যা দেখা দেয়। রোগী সামনের দিকে ঝুঁকে ছোট ছোট পায়ে হাঁটতে থাকে। মাংসপেশি শক্ত হয়ে যায়। এ রোগে আক্রান্তদের চেহারা দেখে মনে হবে তাদের কোনো আবেগানুভূতি নেই।
গলার স্বর ভারী ও একঘেয়ে হয়ে থাকে। কথায় জড়তা আসে। হাঁটার সময় হাত শরীরের সঙ্গে লেগে থাকে। বিষণ্নতায় বেশি ভোগে। রাতে ঘুমের ঘোরে হাত-পা ছোড়া, ঘুমের ব্যাঘাত ঘটা, কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া, ঘ্রাণশক্তি কমে যাওয়া—এসব সমস্যা দেখা দিতে পারে।

রোগটি হওয়ার কারণ : স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পারকিনসন্স রোগের নির্দিষ্ট কোনো কারণ এখনো জানা যায়নি। তবে বংশপরম্পরা, দীর্ঘকাল ধরে সার ও কীটনাশকের মতো রাসায়নিক পদার্থের সংস্পর্শে থাকা, মস্তিষ্কে জড় পদার্থের কণা জমা হওয়া ইত্যাদি কারণে পারকিনসন্স হতে পারে।

স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে পারকিনসন্স রোগ ও চিকিৎসা নিয়ে কোনো গবেষণা কখনো হয়নি। এতে রোগটির সব তথ্য নিয়ে সঠিক পরিসংখ্যান কারো জানা নেই। তবে ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিদের মধ্যে হাসপাতাল ও চেম্বারে যারা আসছেন, তাঁদের মধ্যে ১০ শতাংশ পারকিনসন্স রোগী পাওয়া যাচ্ছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। তবে রোগটি কম বয়সেও হতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে প্রবীণ নাগরিকের সংখ্যা বাড়লেও তাঁদের যত্ন ও সহায়তার জন্য স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা এবং বিদ্যমান সুযোগ-সুবিধা যথেষ্ট নয়। স্বাস্থ্য সুরক্ষাসহ যথাযথ যত্ন দ্রুত নিশ্চিত করতে না পারলে ভবিষ্যতে সংকট তৈরি হতে পারে। তাই এ ব্যাপারে এখনই জাতীয় পর্যায়ে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালের ইন্টারভেনশনাল নিউরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. হুমায়ুন কবীর হিমু কালের কণ্ঠকে বলেন, দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, এই রোগের সঙ্গে দেশের অনেকে পরিচিত নন। বার্ধক্যজনিত সমস্যা মনে করে বেশির ভাগ মানুষ চিকিৎসার জন্য আসেন না। ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিদের মধ্যে যাঁরা হাসপাতালে বা চেম্বারে চিকিৎসার জন্য আসেন, তাঁদের মধ্যে ১০ শতাংশ পারকিনসন্স রোগী পাচ্ছি। ৮০ বছরের বেশি বয়সীদের প্রায় অর্ধেক এ রোগে আক্রান্ত।

ডা. হুমায়ুন কবীর হিমু বলেন, বিশ্বে পারকিনসন্স রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। কারণ প্রবীণ মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। বাংলাদেশে প্রবীণ মানুষের সংখ্যা বাড়লেও তাঁদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। জাতীয় পর্যায়ে এ বিষয়ে এখনই পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।

বিশেষজ্ঞদের তথ্য মতে, মস্তিষ্কের ছোট একটি অংশ, যেটিকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় ‘সাবস্ট্যানশিয়া নাইগ্রা’ বলা হয়, এই অংশের স্নায়ুকোষ বা নিউরন শুকিয়ে যাওয়ার কারণে ডোপামিন নামক নিউরোট্রান্সমিটার (এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ) নষ্ট হয়ে যায় অথবা এর ঘাটতি দেখা দেয়। ডোপামিন যেহেতু একটি প্রোটিন, তাই রক্তে এর কার্যকর শোষণ নিশ্চিত করতেও বিভিন্ন ওষুধ দরকার হয়। তবে একসময় এই ডোপামিন প্রয়োগেও কোনো কাজ হয় না। তখন প্রয়োজন হতে পারে অস্ত্রোপচারের।

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল নিউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. এম এস জহিরুল হক চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, পারকিনসন্স রোগের নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই, তবে ওষুধের মাধ্যমে রোগীর কিছুটা উন্নতি হতে পারে। ক্ষেত্রবিশেষে মস্তিষ্কে আক্রান্ত অংশে সার্জারির মাধ্যমে সামান্য উন্নতি করা সম্ভব।

জহিরুল হক চৌধুরী বলেন, দুঃখের বিষয় হচ্ছে, এই রোগ কখনো পুরোপুরি ভালো হয় না। ওষুধ প্রয়োগে লক্ষণগুলো হয়তো দীর্ঘ সময়ের জন্য নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এক পর্যায়ে রোগ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। তবে রোগীর চিকিৎসা কখনো বন্ধ করা উচিত নয়। কারণ নিয়মিত চিকিৎসা নিলে একজন রোগী শয্যাশায়ী হতে ২০ বছর সময় লাগতে পারে। চিকিৎসা না নিলে তিন-চার বছরে শয্যাশায়ী হয়ে পড়ে।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

নিত্যদিনের যেসব অভ্যাসে এড়াতে পারেন হৃদরোগের ঝুঁকি

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
নিত্যদিনের যেসব অভ্যাসে এড়াতে পারেন হৃদরোগের ঝুঁকি
সংগৃহীত ছবি

জীবনযাত্রা যদি সঠিক হয় তবেই কমবে হৃদরোগের ঝুঁকি। তবে আধুনিক যুগে কাজের ব্যস্ততার কারণে আমরা সঠিক সময় খাওয়াদাওয়া করি না। এ ছাড়া সময়ের কাজ সময়ে করি না। এমন অনিয়মিত জীবনযাত্রার কারণে অনেক সময় হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে।

দিন দিন হৃদরোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এর মধ্যে এসব রোগী আবার উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও স্থূলতার রোগেও ভুগছেন। চিকিৎসকরা জানান, ২০৩৫ সালের মধ্যে হার্টের রোগীর সংখ্যা অকল্পনীয়ভাবে বাড়বে।

এমন রোগ থেকে বাঁচতে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনতে হবে।

কেমন পরিবর্তন আনবেন জীবনযাত্রায়, তা জানাতেই আজকের প্রতিবেদন। চলুন, জেনে নেওয়া যাক।

আরো পড়ুন
গরমে কোন কোন রোগের ঝুঁকি বেশি, কিভাবে সুস্থ থাকবেন

গরমে কোন কোন রোগের ঝুঁকি বেশি, কিভাবে সুস্থ থাকবেন

 

কী কী পরিবর্তন করবেন

আপনি যদি হার্টের রোগ কমাতে চান, তাহলে আপনার জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আবশ্যক। নিত্যদিন যদি এই জীবনধারার পরিবর্তন আনতে পারেন, তাহলে আপনার হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমবে।

ডায়েট খাবার খাবেন

হার্ট ভালো রাখতে ডায়েট করে খাবার খান। প্রচুর পরিমাণে খাওয়াদাওয়া করা এড়িয়ে চলুন। নিত্যদিনের খাদ্য তালিকায় ফলমূল, সবজি, গোটা শস্য, চর্বিবিহীন প্রোটিন রাখুন, অর্থাৎ সুষম খাদ্যের দিকে বিশেষ নজর দিন।

ট্র্যান্স ফ্যাট জাতীয় খাবার

ট্র্যান্স ফ্যাট জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন। জলপাইয়ের তেল, অ্যাভোকাডো, বাদাম ইত্যাদি খাওয়ার চেষ্টা করুন।

এতে আপনার উচ্চ রক্তচাপ কমবে। আর উচ্চ রক্তচাপ কমাতে লবণ কম খেতে হবে।

আরো পড়ুন
সময়মতো লাঞ্চ-ডিনার না করলে স্বাস্থ্যের যে ক্ষতি

সময়মতো লাঞ্চ-ডিনার না করলে স্বাস্থ্যের যে ক্ষতি

 

ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড

শরীরে যাতে কোলেস্টেরলের মাত্রা না বেড়ে যায় সেই ক্ষেত্রে চর্বিবিহীন মাছ, তিসির বীজ, আখরোট ইত্যাদি খান । ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি এসিড যুক্ত খাবার খাদ্য তালিকায় রাখুন। এতে আপনার শরীর ভালো থাকবে।

ব্যায়াম

শরীরকে সক্রিয় রাখুন অর্থাৎ নিত্যদিন ব্যায়াম করুন কিংবা সকালবেলা উঠে হাঁটুন। এতে আপনার হৃদরোগের ঝুঁকি কিছুটা হলেও কমবে। সপ্তাহে ১৫০ মিটার ব্যায়াম করুন। না হলে হাঁটুন, না হলে সাইকেল চালান। এতে আপনার ওজন বাড়বে না। এ ছাড়া শরীরে বাড়তি ফ্যাটও কমতে থাকবে।
 
জাংক ফুড

অনেকেই বর্তমান সময় বাইরের জাংক ফুড খেয়ে তাদের ওজন বাড়িয়ে ফেলেন। ওজনকে কখনোই বাড়তে দেবেন না। এতে রক্তচাপ, ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়তে থাকবে। আর এর থেকেই হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে। তাই বাইরের খাবার খাওয়া এড়িয়ে চলুন।

আরো পড়ুন
এসি রুমে বসেই ধূমপান, হতে পারে যে বিপদ

এসি রুমে বসেই ধূমপান, হতে পারে যে বিপদ

 

খাবার হজম

খাওয়াদাওয়া যাতে ভালোভাবে হজম হয়, সেদিকে নজর রাখুন। শরীরকে হাইড্রেট রাখুন। প্রচুর পরিমাণে পানি খান। নিত্যদিন সাত থেকে আট গ্লাস পানি খাওয়ার চেষ্টা করুন।

ধূমপান

ধূমপান ও অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকুন। আপনি যদি ধূমপানে আসক্ত থাকেন, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে দ্রুতই ধূমপান ত্যাগ করুন। নারী-পুরুষ কারোরই ধূমপান করা উচিত নয়। এতে হার্টের রোগ বাড়ে।

মানসিক চাপ

মানসিক চাপ নেওয়া এড়িয়ে চলুন। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে ধ্যান করুন। গভীরভাবে শ্বাস নিন। যোগ ব্যায়াম করুন। এতে আপনার মানসিক চাপ কমবে। শরীর সুস্থ থাকবে। প্রায় সময় রক্তচাপ, কোলেস্টেরল ও সুগার পরীক্ষা করুন।

আরো পড়ুন
পপকর্ন লাংস কী, যে কারণে সাবধান হবেন ধূমপায়ীরা

পপকর্ন লাংস কী, যে কারণে সাবধান হবেন ধূমপায়ীরা

 

চিকিৎসকের পরামর্শ

আপনার যদি শরীর কখনো খারাপ লাগে কিংবা বুকে ব্যথা হয়, তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। হার্টের রোগ ধরা পড়লে দ্রুতই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খান। তাহলে দ্রুত সুস্থ হবেন।

সূত্র : ওয়ানইন্ডিয়া

মন্তব্য

অস্টিওপোরেসিস কেন হয়? জেনে নিন কারণ

অনলাইন প্রতিবেদক
অনলাইন প্রতিবেদক
শেয়ার
অস্টিওপোরেসিস কেন হয়? জেনে নিন কারণ
সংগৃহীত ছবি

অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন অনেক জটিল রোগের জন্ম দিচ্ছে, যার মধ্যে অস্টিওপোরোসিস অন্যতম। এই রোগে হাড় দুর্বল ও ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। প্রাথমিকভাবে কব্জি, নিতম্ব বা মেরুদণ্ডে হঠাৎ ফ্র্যাকচার হয়ে যেতে পারে। হাড়ের ঘনত্ব কমে যাওয়ায় এটি ঘটে।

চিকিৎসকদের মতে, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা ও শরীরে গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টির ঘাটতির কারণে এ রোগ হয়। বিশেষ করে মহিলাদের মধ্যে এই রোগের প্রকোপ বেশি।

অস্টিওপোরোসিসের কারণ
অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞদের মতে, মেনোপজ-পরবর্তী সময়ে নারীদের মধ্যে হরমোন ইস্ট্রোজেনের পরিমাণ কমে যায়। এই হরমোন হাড়কে রক্ষা করে, তাই এর ঘাটতি অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি বাড়ায়।

এছাড়া অপুষ্টি ও হরমোনের অন্যান্য অসামঞ্জস্যতাও হাড় দুর্বল করে দেয়।

প্রতিরোধের উপায়
নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে,
প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটুন,
১৫-২০ মিনিট রোদে থাকুন যাতে শরীরে ভিটামিন ডি তৈরি হয়,
দিনে অন্তত ৪৫ মিনিট হালকা ব্যায়াম করুন,
প্রয়োজনে ফিজিওথেরাপি নিন।

খাদ্যাভ্যাসে যা রাখতে পারেন
ক্যালসিয়াম ও প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার,

ডাল, ভুট্টা, মটরশুটি খাদ্যতালিকায় রাখু্ন,

দুধ, দই, পনিরের মতো দুগ্ধজাত পণ্য গ্রহণ করুন,

মৌসুমি ফল ও সবুজ শাকসবজি বেশি করে খাওয়া ভালো,

অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধে নিয়মিত ব্যায়াম ও পুষ্টিকর খাবারই সবচেয়ে কার্যকর উপায়। হাড়ের যত্ন নিন, সুস্থ থাকুন।

সূত্র : নিউজ ১৮ বাংলা

মন্তব্য

সুইসাইড ডিজিজ কী, এর ফলে কী হয়

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
সুইসাইড ডিজিজ কী, এর ফলে কী হয়
সংগৃহীত ছবি

সুইসাইড ডিজিজ। নাম শুনলে মনে হতে পারে হয়তো কোনো মানসিক রোগ। মানসিক অবসাদের ফলে বারবার আত্মহত্যা করার চেষ্টা করার মতো। তবে বিষয়টা মোটেও তেমন নয়।

বরং এই রোগের সঙ্গে মনের খুব একটা সংযোগ নেই। বিষয়টা একটা দৈহিক রোগ।

এই রোগে আক্রান্ত হলে মুখের এক পাশে শুরু হয় তীব্র ব্যথা। যা কখনো কখনো রীতিমতো অসহনীয় হয়ে ওঠে।

এমনকি কথা বলা, হাসা, খাবার বা পানি খাওয়াটাও হয়ে ওঠে অসহনীয়। মুখে পানির ঝাপটা দেওয়া, শেভ করা, দাঁত ব্রাশ করার সময় হয় ব্যথা। মোট কথা ব্যথায় ব্যথায় অস্থির হয়ে ওঠে জীবন।

প্রতিদিনের স্বাভাবিক কাজের সময়ই ব্যথা শুরু হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যথার ধরন ভীষণ কষ্টদায়ক বলে কেউ কেউ একে সুইসাইড ডিজিজ বলে থাকেন। তবে চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় এই রোগের নাম ‘ট্রাইজেমিনাল নিউরালজিয়া’।

আরো পড়ুন
এসি রুমে বসেই ধূমপান, হতে পারে যে বিপদ

এসি রুমে বসেই ধূমপান, হতে পারে যে বিপদ

 

কী হয় এই রোগের প্রভাবে

মুখের স্বাভাবিকতার জন্য যেসব স্নায়ু কাজ করে, তারই একটি হলো ট্রাইজেমিনাল স্নায়ু। কোনো কারণে এই স্নায়ুর ওপর চাপ সৃষ্টি হলে তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়। হয়তো একটি ধমনি ওই স্নায়ুকে বেশ চেপে রাখে।

সেই চাপের কারণেই তীব্র ব্যথা অনুভব করেন রোগী। কোনো টিউমার যদি স্নায়ুটিকে চাপ দেয়, তাহলেও এমনটা হতে পারে। অন্যান্য কিছু স্নায়বিক রোগেও এমন সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।

কেন এই স্নায়ুর ওপর অস্বাভাবিক চাপ সৃষ্টি হয়, অধিকাংশ ক্ষেত্রে তার কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। নির্দিষ্ট কোনো জীবনপদ্ধতি এর জন্য দায়ী নয়। যে কেউ এ রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। তবে এ রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা খুব একটা বেশি নয়।

আরো পড়ুন
সানস্ক্রিন খাবেন, নাকি মাখবেন? কোনটিতে উপকার

সানস্ক্রিন খাবেন, নাকি মাখবেন? কোনটিতে উপকার

 

কী করবেন

ঘরোয়া চিকিৎসায় এই ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে না। এর জন্য প্রয়োজন বিশেষ ধরনের ওষুধ। জীবনধারায় কোনো পরিবর্তন এনে রোগের তীব্রতা কমানো সম্ভব হয় না। সুস্থ থাকতে তাই ওষুধ সেবন ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই। মনে রাখবেন এটা এক ধরনের স্নায়ু জনিত রোগ। তাই ফেলে না রেখে অবিলম্বে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

আরো পড়ুন
বৈশাখে বাড়িতে রান্না করতে পারেন কয়েক পদের ইলিশ

বৈশাখে বাড়িতে রান্না করতে পারেন কয়েক পদের ইলিশ

 

সূত্র : টিভি নাইন বাংলা

মন্তব্য

পপকর্ন লাংস কী, যে কারণে সাবধান হবেন ধূমপায়ীরা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
পপকর্ন লাংস কী, যে কারণে সাবধান হবেন ধূমপায়ীরা
সংগৃহীত ছবি

মাত্র সতেরো বছর বয়স। অথচ এই সময়ে দিনরাত কেশে যাচ্ছে। আবার কখনো কখনো শ্বাসকষ্টও হচ্ছে। কাশির কারণ জানতে ঘন ঘন চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছে।

চিকিৎসকও ভুরি ভুরি অ্যান্টিবায়োটিক দিয়েছেন। কেউ দিয়েছেন কফের সিরাপ, আবার কেউ অ্যান্টি অ্যালির্জিক ওষুধ। তাতেও লাভ হয়নি। বারবার পরীক্ষা নিরীক্ষার পর জানা যায় হার্টের অসুখ নয়, ‘পপকর্ন লাংস’-এর মতো ফুসফুসের বিরল রোগে ভুগছে সে।
আর এই রোগই এখন চিন্তা বাড়াচ্ছে চিকিৎসকদের।

চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় ‘পপকর্ন লাংস’ রোগটিকে ‘ব্রঙ্কিওলাইটিস অবলিটেরানস’ বলা হয়। ফুসফুসের বিরল রোগটি ‘পপকর্ন লাংস’ নামে পরিচিতির কারণ হচ্ছে, পপকর্ন মাইক্রোওয়েভে তৈরির সময় ডায়াসিটাইল নামে একটি রাসায়নিক নির্গত হয়। ওই রাসায়নিক শরীরে প্রবেশ করলে ফুসফুসের সংক্রমণ হয়।

তাই এই রোগটি ‘পপকর্ন লাংস’ নামে পরিচিত। চিকিৎসকদের মতে, যারা অতিরিক্ত ধূমপান করেন অথবা ধুলো-ধোঁয়া বেশি রয়েছে এমন জায়গায় থাকেন, তারা এই ধরনের সমস্যায় বেশি ভোগেন।

আরো পড়ুন
গাজর রান্না করে খাওয়া ভালো, নাকি কাঁচা

গাজর রান্না করে খাওয়া ভালো, নাকি কাঁচা

 

পপকর্ন ফুসফুসের লক্ষণ ও উপসর্গ

‘ব্রঙ্কিওলাইটিস ওব্লিটারানস’ (বিও) বা পপকর্ন ফুসফুসের উপসর্গ যেমন কাশি, শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা, কাঁপুনি দিয়ে জ্বর, বমিভাব, দুর্বলতা ও শ্বাসকষ্ট, এগুলো যথাযথ চিকিৎসার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। তাই দেরি না করে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করা গুরুত্বপূর্ণ। ভেপিংয়ের ফলে সৃষ্ট লাইপয়েড নিউমোনিয়া সাধারণ নিউমোনিয়া থেকে আলাদা।

এটি ফ্যাটি এসিড সংক্রমণের পরিবর্তে ফুসফুসে প্রবেশ করে।

এই রোগ হলে একজন ব্যক্তি ক্রমাগত কাশি, শ্বাস নিতে অসুবিধা এবং কাশি থেকে রক্ত ​​​​বা রক্তযুক্ত শ্লেষ্মার মতো লক্ষণগুলো দেখা দিতে পারে। নিউমোথোরাক্স, বা ফুসফুসের ক্ষতি তখনই ঘটে যখন ফুসফুসে একটি ছিদ্র থাকে, যা অক্সিজেনকে বেরিয়ে যেতে দেয়। ধূমপান ও ভেপিং এক্ষেত্রে ভীষণ ক্ষতিকর।

হার্ভার্ড হেলথের মতে, পপকর্ন ফুসফুসের সাধারণ লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে শ্বাসকষ্ট, এবং কাশি যা হাঁপানি বা ঠান্ডা লাগার সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। এই রোগের দ্রুত নির্ণয় জরুরি।

আরো পড়ুন
৬০০ অতিথিকে খাওয়াতে পারবে না কনের পরিবার, বিয়ে ভেঙে দিলেন বর!

৬০০ অতিথিকে খাওয়াতে পারবে না কনের পরিবার, বিয়ে ভেঙে দিলেন বর!

 

কিভাবে এলো এই রোগ

আমেরিকার নেভাডার বাসিন্দা ব্রায়ান কালেন। ১৪ বছর বয়স থেকে সে ই-সিগারেটের নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ে। তার ফলে প্রায় প্রতিদিনই সে ব্যাটারিচালিত যন্ত্রের সাহায্যে ভেপার নিত। ভেপিংয়ের ফলে অ্যাসিটালডিহাইড নামে এক যৌগ তার ফুসফুসে প্রবেশ করত। তার ফলে ক্ষতি হয়েছে ফুসফুসের। সে কারণে এমন বিরল রোগে কিশোরী আক্রান্ত হয়েছে বলেই জানা গেছে।

ফাইবার বা প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি এই ব্যাটারিচালিত ই-সিগারেটের মধ্যে একটি প্রকোষ্ঠ থাকে। তার মধ্যে ভরা থাকে বিশেষ ধরনের তরল মিশ্রণ। যন্ত্রটি গরম হয়ে ওই তরলের বাষ্পীভবন ঘটায় এবং ব্যবহারকারী সেই বাষ্প টেনে নেন ফুসফুসে। এই পদ্ধতিকে বলে ‘ভেপিং’। এই বাষ্পেই মিশে থাকে অ্যাসিটালডিহাইড নামে এক ধরনের যৌগ, যা ফুসফুস ছারখার করে দেয়। ই-সিগারেটের তরল মিশ্রণের (ই-লিকুইড) মধ্যে থাকে প্রপেলিন গ্লাইসল, গ্লিসারিন, পলিইথিলিন গ্লাইসল, নানাবিধ ফ্লেভার এবং নিকোটিন, যা ফুসফুসের ক্যানসারের কারণও হয়ে উঠতে পারে।

বলে রাখা ভালো, এর আগে ওই কিশোরী করোনাতেও আক্রান্ত হয়েছিল। সে সময় চিকিৎসক তাকে ই-সিগারেট ছাড়তে পরামর্শ দিয়েছিলেন। তবে সে পরামর্শ কানে নেয়নি। সে কারণেই সম্ভবত অতি দ্রুত ফুসফুসের সমস্যা গুরুতর আকার ধারণ করে বলেই দাবি চিকিৎসকদের। তাদের ধারণা, গত তিন বছর ধরেই নীরবে ফুসফুসে বাসা বেঁধেছিল এই বিরল রোগ। এটি কারো কারো ক্ষেত্রে প্রাণঘাতীও হয়ে উঠতে পারে। তাই চিকিৎসকদের মতে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ধূমপানের মতো কুঅভ্যাস ছেড়ে দেওয়াই ভালো।

আরো পড়ুন
বৈশাখে পাতে রাখতে পারেন ভাপা সরষে ইলিশ

বৈশাখে পাতে রাখতে পারেন ভাপা সরষে ইলিশ

 

ঝুঁকি কাদের

ডায়াসিটাইল বা অন্যান্য ক্ষতিকারক রাসায়নিকের আশেপাশে থাকা ব্যক্তিরা, যাদের ফুসফুস প্রতিস্থাপন করা হয়েছে বা শ্বাসযন্ত্রের গুরুতর সংক্রমণ রয়েছে এবং যাদের অটোইমিউন রোগ রয়েছে তাদের ক্ষেত্রেই এই রোগের ঝুঁকি বেশি।

কখনো কখনো রাসায়নিক এক্সপোজার বা অটোইমিউন রোগসহ বিভিন্ন কারণে ফুসফুসের প্রদাহ, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ছোট শ্বাসনালীকে ক্ষতি করে, যা পপকর্ন ফুসফুসের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

আরো পড়ুন
সানস্ক্রিন খাবেন, নাকি মাখবেন? কোনটিতে উপকার

সানস্ক্রিন খাবেন, নাকি মাখবেন? কোনটিতে উপকার

 

রোগ নির্ণয়

  • পপকর্ন ফুসফুস রোগের চিকিৎসার জন্য প্রাথমিক রোগ নির্ণয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
  • রোগ নির্ণয়ের সর্বপ্রথম ধাপ হলো রোগীর মেডিক্যাল হিস্ট্রি এবং শারীরিক পরীক্ষা শেষ লক্ষণ এবং ক্ষতিকারক পদার্থের সম্ভাব্য এক্সপোজার নিয়ে আলোচনা করা।
  • ফুসফুসের কার্যকারিতা দেখে নিতে ফুসফুসের ক্ষমতা ও বায়ুপ্রবাহের মাত্রার দিকে খেয়াল রাখা।
  • ফোর্সড অসিলোমেট্রি (এফওটি) বা ইমপালস অসিলোমেট্রি পরীক্ষা।
  • ভেতরে কী চলছে, তা বোঝার জন্য বুকের এক্স-রে বা সিটি স্ক্যান করা।
  • বায়োপসির জন্য টিস্যুর নমুনা পরীক্ষা ও সংগ্রহ করতে শ্বাসনালি দিয়ে ক্যামেরাসহ একটি নমনীয় টিউব ঢুকিয়ে ব্রঙ্কোস্কোপি করা হয়।
আরো পড়ুন
ব্রিদিং এক্সারসাইজে কী উপকার

ব্রিদিং এক্সারসাইজে কী উপকার

 

পপকর্ন ফুসফুসের চিকিৎসা

  • চিকিৎসকরা বলছেন, ওষুধ থেকে শুরু করে অক্সিজেন থেরাপি পর্যন্ত বিভিন্ন পদ্ধতির মাধ্যমে পপকর্ন ফুসফুসের রোগের চিকিৎসা করা যেতে পারে।
  • ফোলা কমাতে প্রিডনিসোনের মতো ওষুধ লাগবে।
  • অ্যালবুটেরলের মতো ইনহেলার রোগীকে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে সাহায্য করে।
  • অক্সিজেন থেরাপি রোগীকে নিঃশ্বাসের কষ্ট লাঘব করবে।
  • খুব গুরুতর ক্ষেত্রে রোগীর ফুসফুস প্রতিস্থাপন করা যেতে পারে, কিন্তু এটি শুধু রোগীর জীবনের শেষ পর্যায়ে দাঁড়িয়েই করা হয়।
আরো পড়ুন
পুরনো ও গুরুত্বপূর্ণ মেইল সহজে খুঁজে বের করবে জিমেইল

পুরনো ও গুরুত্বপূর্ণ মেইল সহজে খুঁজে বের করবে জিমেইল

 

সূত্র : আনন্দবাজার, হিন্দুস্তান টাইমস।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ