<p>বিড়াল পানিকে চরম ভয় পায়। চেষ্টা করে পানির স্পর্শ এড়িয়ে চলতে। এক ফোঁটা পানির ছিটাও তাদের বিরক্ত করে তোলে। এদের এই আচরণ দেখতে যেমন অদ্ভুত, তেমনই রহস্যময়। অনেকেরই মনে হতে পারে, কেন বিড়াল পানি এত অপছন্দ করে? বিজ্ঞান এবং ব্যবহারিক বিদ্যার বিশেষজ্ঞদের মতে, এই আচরণের পেছনে রয়েছে বেশ কিছু বৈজ্ঞানিক কারণ এবং অভিযোজনের ইতিহাস।</p> <p><strong>শুষ্ক পরিবেশে অভিযোজন</strong><br /> বিড়াল ফিলাইন পরিবারের সদস্য। অবশ্য বাঘ এবং অন্যান্য বড় ফিলাইনরাও রয়েছে। এই পরিবারটির বেশিরভাগ সদস্যই শুষ্ক পরিবেশে অভিযোজিত হয়েছে। প্রাচীনকালে যেসব বিড়ালের পূর্বপুরুষরা মরুভূমি বা শুষ্ক অঞ্চলে বাস করত, তাদের কাছে পানি ছিলবিরল জিনিস। পান করার জন্য প্রয়োজন ছিল, কিন্তু গায়ে লাগানোর জন্য মোটেও নয়। ফলে, এই শুষ্ক অঞ্চলে অভিযোজিত হওয়া বিড়ালরা পানির প্রতি বিরূপ হয়ে উঠেছে।</p> <p><strong>শরীরের পশম এবং ভেজার অসুবিধা</strong><br /> বিড়ালের পানির প্রতি এই ভয় এবং বিরক্তির অন্যতম কারণ হলো তাদের শরীরের পশম। বিড়ালের লোম একবার ভিজে গেলে শুকাতে অনেক সময় নেয়। ভিজে থাকা লোমে ময়লা আটকে যায় এবং এটি তাদের জন্য খুবই অস্বস্তিকর হয়। আবার, ভিজে গেলে পশম ভারী হয়ে যায়, যা তাদের চলাচলে বিঘ্ন ঘটায় এবং শিকার ধরার সময়ও এটি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।</p> <p><strong>স্পর্শকাতর ত্বক</strong><br /> বিড়ালের ত্বক কুকুরের তুলনায় অনেক বেশি স্পর্শকাতর। দীর্ঘ সময় পানির ত্বক সংস্পর্শে থাকলে এটি শীতল হয়ে যায় এবং শীতকাতুরে প্রকৃতির কারণে বিড়াল এতে খুব অস্বস্তি বোধ করে। এই কারণেও তারা পানিকে এড়িয়ে চলে।</p> <p><strong>বিশেষ কিছু প্রজাতির ব্যতিক্রম</strong><br /> যদিও অধিকাংশ বিড়াল পানি অপছন্দ করে, তবুও কিছু বিশেষ প্রজাতি যেমন মেরিন কুন, তুর্কিশ ভ্যান ইত্যাদি বিড়াল সাঁতার কাটতে ভালোবাসে। এই প্রজাতির বিড়ালদের পশম পানিরোধী এবং দ্রুত শুকিয়ে যায়। ফলে এদের মধ্যে পানিভীতি কাজ করে না।</p> <p><strong>থাবা</strong><br /> বিড়াল এবং কুকুরের মধ্যে আরো একটি উল্লেখযোগ্য পার্থক্য হলো তাদের থাবার গঠন। কুকুরের লোম সহজেই শুকিয়ে যায় এবং তাদের থাবা পানিতে ভেসে থাকার উপযোগী। অন্যদিকে, বিড়ালের থাবা সমতলে চলাচলের জন্য উপযুক্ত। থাবা পানিতে ভারসাম্য হারায় এবং তাদের জন্য সমস্যার সৃষ্টি করে।</p>