ঢাকায় শেষ দিন অনুশীলন করেও ২৩ জনের স্কোয়াড চূড়ান্ত করতে পারেননি কাবরেরা। শিলং গেছেন ২৪ খেলোয়াড়। শেষ মুহূর্তে দল থেকে বাদ পড়েছেন ডিফেন্ডার তাজউদ্দিন, উইঙ্গার আরিফ হোসেন ও স্ট্রাইকার পিয়াস আহমেদ। পিয়াসের বাদ পড়াটা অবাক করার মতোই।
কারণ তিনি ছাড়া দলে পুরোদস্তুর স্ট্রাইকার আর মাত্র একজনই—আল আমিন। এই একজনেই ভরসা রেখে গতকাল ভারতে পা রেখেছেন হাভিয়ের কাবরেরা।
আল আমিন ও পিয়াসের খেলার ধরন আলাদা। প্রতিপক্ষকে প্রেস করে ট্রানজিশনে আল আমিন দ্রুতগতির, ফিনিশিংয়েও ভালো।
তুলনায় পিয়াস বক্সের খেলোয়াড়, স্ট্রাইকারসুলভ উচ্চতাও আছে। ম্যাচ পরিস্থিতিতে কাবরেরা তাঁকে ব্যবহার করতে পারেন বলেই মনে করা হচ্ছিল। যেমনটা মালদ্বীপের বিপক্ষে সর্বশেষ ম্যাচে করেছিলেন। কিন্তু কাবরেরা সেই বিকল্প ছেঁটে ফেলেছেন, শিলংয়ের বিমান ধরেছেন একজন মাত্র স্ট্রাইকার নিয়ে।
আক্রমণভাগের অন্যরা ফয়সাল আহমেদ, রাকিব হোসেন, শাহরিয়ার ইমন ও মোহাম্মদ ইব্রাহিম—প্রত্যেকেই উইঙ্গার। মাঝমাঠ যথেষ্ট ভারী। দলে হামজা চৌধুরীর মতো বিশ্বমানের খেলোয়াড় যোগ হয়েছেন। তাঁর সঙ্গে আরো আট মিডফিল্ডার—জামাল ভূঁইয়া, মোহাম্মদ হৃদয়, কাজেম শাহ, মো. সোহেল রানা, সোহেল রানা, চন্দন রায়, মজিবুর রহমান ও শেখ মোরসালিন। অবশ্য বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় হামজাকে নিয়ে প্রথম দিনের অনুশীলনেও স্প্যানিশ কোচকে ততটা আক্রমণাত্মক ছক সাজাতে দেখা যায়নি।
শুরুতে ফয়সাল, রাকিবকে ওপরে রেখে স্ট্রাইকার ছাড়াই খেলিয়েছেন। দ্বিতীয়ার্ধে আল আমিনকে যোগ করলেও ফরমেশন ছিল ৪-১-৪-১। ডান প্রান্তে খেলেন শাহরিয়ার ইমন। মাঝমাঠে জামাল ভূইয়া, মোহাম্মদ হৃদয়; হামজাকে হোল্ডিং মিডফিল্ডেই রেখেছেন তিনি।
এর আগে সহকারী কোচ হাসান আল মামুন আভাস দিয়েছেন, ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ তারকার সহজাত রক্ষণগুণ ও পাসিং সামর্থ্য মাথায় রেখে তাঁকে ‘ডিপ লায়িং মিডফিল্ডার’ হিসেবে খেলানো হতে পারে, যাতে নিচ থেকে খেলার নাটাইটা ঘোরাতে পারেন। সুনীল ছেত্রীদের জন্য এই হামজাই বড় চ্যালেঞ্জ। তবে জিতে ফিরতে হলে আক্রমণভাগে রাকিব, মোরসালিনদেরও জ্বলে উঠতে হবে। ছেত্রীকে ফিরিয়ে হাতেনাতে ফল পেয়েছেন ভারতীয় কোচ মানোলো মার্কেস। গত পরশু শিলংয়ের একই মাঠে মালদ্বীপকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে তাঁর দল। হেডে অসাধারণ এক গোল করে ফেরাটাও রাঙিয়েছেন ছেত্রী। তবে ম্যাচ শেষে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে কঠিন এক লড়াইয়ের আভাসই দিয়েছেন ভারতীয় কোচ, ‘হামজা অসাধারণ খেলোয়াড়। সে এই মুহূর্তে প্রিমিয়ার লিগে না থাকলেও চ্যাম্পিয়নিশপ লিগে নিয়মিত খেলছে। আর বাংলাদেশ দলটাও এখন অনেক ভালো। কারণ ওরা একই কোচের অধীনে তিন কি চার বছর ধরে একসঙ্গে খেলছে।’ মালদ্বীপের বিপক্ষে জয়ের বিপরীতে চোটের দুঃসংবাদও অবশ্য হজম করতে হয়েছে ভারতকে। আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডার ব্রেন্ডন ফার্নান্দেজ চোটে পড়েছেন। অফ দ্য বল মাঠে পড়ে গিয়ে চোট পান তিনি। সেটি শিলংয়ের মাঠ নিয়েও ভাবিয়ে তুলতে পারে বাংলাদেশকে। কারণ এর আগে ইন্ডিয়ান সুপার লিগের ম্যাচেও একাধিক খেলোয়াড়কে এভাবে পিছলে পড়তে দেখা গেছে নতুন তৈরি এই মাঠটিতে।
হামজাকে নিয়ে বাংলাদেশ অবশ্য সব চ্যালেঞ্জই পেরিয়ে যেতে চায়। গতকাল দেশ ছাড়ার আগে সিনিয়র খেলোয়াড় তপু বর্মণ যেমন বলেছেন, ‘জেতার মানসিকতা নিয়েই আমরা যাচ্ছি। সামনের কয়েকটা দিন ওখানকার কন্ডিশনের সঙ্গেও মানিয়ে নিতে পারব আশা করি।’
বাংলাদেশ দল
গোলরক্ষক : মিতুল মারমা, সুজন হোসেন, মেহেদী হাসান। রক্ষণভাগ : শাকিল আহাদ, রহমত মিয়া, শাকিল হোসেন, ইসা ফয়সাল, তারিক কাজী, তপু বর্মণ, সাদ উদ্দিন। মধ্যমাঠ : হামজা চৌধুরী, জামাল ভূঁইয়া, মোহাম্মদ হৃদয়, কাজেম শাহ, মো. সোহেল রানা, সোহেল রানা, চন্দন রায়, মজিবুর রহমান, শেখ মোরসালিন। আক্রমণভাগ : ফয়সাল আহমেদ, রাকিব হোসেন, শাহরিয়ার ইমন, মোহাম্মদ ইব্রাহিম ও আল আমিন।