উয়েফা নেশনস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে হোঁচট খেয়েছে পর্তুগাল। পুরো ম্যাচে নিজেদের ছায়া হয়ে ছিলেন রোনালদো-ফার্নান্দেজরা। ফলও পেয়েছে হাতেনাতে। ঘরের মাঠে রাসমুস হইলুন্দের গোলে জিতেছে ডেনমার্ক।
উয়েফা নেশনস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে হোঁচট খেয়েছে পর্তুগাল। পুরো ম্যাচে নিজেদের ছায়া হয়ে ছিলেন রোনালদো-ফার্নান্দেজরা। ফলও পেয়েছে হাতেনাতে। ঘরের মাঠে রাসমুস হইলুন্দের গোলে জিতেছে ডেনমার্ক।
কোপেনহেগেনে বৃহস্পতিবার পর্তুগালকে ১-০ গোলে হারিয়েছে ডেনমার্ক। ৭৮ মিনিটে ডেনমার্কের হয়ে একমাত্র গোলটি করেন রাসমুস হইলুন্দ। পুরো ম্যাচে ডেনমার্ক ২৩টি শট নিয়েছে, যার মধ্যে লক্ষ্যে ছিল ৯টি।
ম্যাচ শুরু হতেই বিপদে পড়তে যাচ্ছিল পর্তুগাল। গোলরক্ষক কস্তা শট নেওয়ার সময় পা বাড়িয়ে দেন সামনেই থাকা ডেনিশ ফরোয়ার্ড মিকা বিয়েরেথ, তার পায়ে লেগে বল গোলের দিকে ছুটছিল। স্লাইড করে গিয়ে বল ধরে বাইরে পাঠান কস্তা।
২৩তম মিনিটে পর্তুগালের ডি-বক্সে তাদের মিডফিল্ডার রেনাতো ভেইগার হাতে বল লাগলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। ক্রিস্তিয়ান এরিকসেনের স্পট কিক ডান দিকে ঝাঁপিয়ে রুখে দেন কস্তা। ৩৪তম মিনিটে উল্লেখযোগ্য প্রথম প্রচেষ্টা চালান ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, তবে তার হেড লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
৩৬ মিনিটে ডেনমার্ককে হতাশ করেন কস্তা। বিয়েরেথের শট দারুণ ক্ষিপ্রতায় রুখে দেন এই গোলরক্ষক। কিছুক্ষণের মধ্যে আবার ডেনিশদেন হানা, এই দফায় এরিকসেনের শট গোললাইনে ফেরান ডিফেন্ডার দিয়োগো দালোত।
দ্বিতীয়ার্ধের দশম মিনিটে আরেকটি দারুণ সেভ করেন কস্তা। গুস্তাভ ইসাকসেনের শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান তিনি। বদলি নামার নবম মিনিটে গোল পেতে পারতেন হইলুন্দ, তবে তার শট একটুর জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। প্রথমবার ব্যর্থ হলেও ৭৮তম মিনিটে কস্তার প্রতিরোধ ভাঙেনে এই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ফরোয়ার্ড। সতীর্থদের পাসিং ফুটবলে তৈরি হওয়া সুযোগ থেকে ঠাণ্ডা মাথায় প্লেসিং শটে বল জালে জড়ান হইলুন্দ। এরপর রোনালদোর পছন্দের সি...উ উদযাপনই করলেন তরুণ এই ফরোয়ার্ড। গোল খেয়েও জেগে উঠতে পারেনি পর্তুগাল। ডেনমার্কের বিপক্ষে টানা তিন জয়ের পর হারের স্বাদ পেল তারা।
২২ বছর বয়সী হইলুন্দ সম্প্রতি বলেছিলেন, আমি রোনালদোর কারণে ফুটবলের প্রেমে পড়েছিলাম। আজ রোনালদোর বিপক্ষে গোল করার পর রোনালদোর সি...উ উদযাপনই করলেন তরুণ এই ফরোয়ার্ড।
আগামী রোববার পর্তুগালের মাঠে হবে ফিরতি লেগের ম্যাচটি।
সম্পর্কিত খবর
দিন যত যাচ্ছে দলের সঙ্গে তত মানিয়ে দিচ্ছেন হামজা চৌধুরী। চার দিন আগে দলের সঙ্গে যোগ দিয়ে ইতোমধ্যে দলের সবার সঙ্গে মিশে গেছেন ২৭ বছরের এই মিডফিল্ডার। প্রিমিয়ার লিগ ও ইংল্যান্ডের বয়সভিত্তিক দলে খেলা অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এই ফুটবলারের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখছেন হৃদয়-সাদ উদ্দিনরা।
জওয়াহেরলাল নেহরু স্পোর্টস কমপ্লেক্সের টার্ফের মাঠে শনিবার অনুশীলনের ফাঁকে হামজাকে নিয়ে প্রশংসা করে মিডফিল্ডার মোহাম্মদ হৃদয় বলেছেন,'সবসময় ইতিবাচকভাবে আমরা সবাই সবার সাথে কথা বলছি।
হামজার সঙ্গে সময়টা বেশ উপভোগ করছেন জানালেন হৃদয়,'আসলে উনাকে (হামজা) নিয়ে যদি বলতে চাই, যদি উনাকে আমাকে ভোট দিতে বলা হয়, তাহলে আমি তাকে ১০০ তে ১০০-ই দিব। কেননা, আমাদের আর উনার মানে অনেক পার্থক্য।
অনুশীলনেও বেশ ফুরফুরে মেজাজে দেখা গেছে হামজাকে।
শিলংয়ে আসার পর থেকে একটার পর একটা ঝামেলা লেগেই আছে বাংলাদেশ ফুটবল দলের সঙ্গে। গত পরশু কলকাতা হয়ে শিলংয়ে যাওয়া বাংলাদেশের ফুটবলারদের লাগেজ পেতে অনেকটা দেরি হয়। দুপুরে হোটেলে উঠলেও কেউ কেউ লাগেজ পেয়েছেন রাতে। এছাড়া আগেই বুকিং করে রাখা হোটেলেও পর্যাপ্ত রুমের ব্যবস্থা না থাকায় লবিতেই অপেক্ষা করতে হয়েছে অনেককেই।
শুক্রবার বাংলাদেশ দল অনুশীলন করেছে উঁচু-নিচু, অসমান মাঠে। কোচ হাভিয়ের কাবরেরা যেটাকে প্রস্তুতির জন্য আদর্শ মাঠ মনে করেননি। আর আজ শনিবার খেলোয়াড়রা অনুশীলন করেছে টার্ফের মাঠে।
এসব ঘটনায় বিরক্ত পুরো টিম। শনিবার অনুশীলনের ফাঁকে রাইট ব্যাক সাদ উদ্দিন বিরক্ত আর লুকাতে পারেননি, ‘এটা আমাদের জন্য ডিস্টার্বিং। আমাদের আজ অনুশীলন করার কথা ছিল সাড়ে ৫টায়, সাড়ে চারটার দিকে আমাদের মিটিং ছিল, সেটা করে আমরা বেরিয়ে পড়েছিলাম। তখন কোচ আমাদের বললেন, অনুশীলন সাড়ে ৭টায়। এতে আমাদের একটু সমস্যা হচ্ছে, কেন না, যে সময় আমাদের অনুশীলনে যাওয়ার কথা, সেটা আমরা যেতে পারছি না।
২৫ মার্চ ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটি হবে ঘাসের মাঠে। এর দুই দিন আগে টার্ফে অনুশীলন করা মোটেও ভালো ব্যাপার নয়। তবু সব প্রতিবন্ধকতা দূরে ঠেলে সাফল্য পাওয়ায় আশাবাদী হাসান আল মামুন। তিনি বলেন, ‘আমরা তো টার্ফে অনুশীলন করতে চাইনি। ঘাসের মাঠ চেয়েছিলাম। কিন্তু ওদের সীমাবদ্ধতা বা অন্য কোনো কারণ হয়তো ছিল। এগুলো নিয়ে ভাবছি না। আমরা অনুশীলনে মনোযোগ রাখছি। অন্য কিছুতে নয়। প্রথম দিন থেকেই বলে এসেছি, ভারতে আমাদের এরকম সমস্যায় পড়তে হতে পারে। আমাদের প্রস্তত থাকতে হবে।’
টি-টোয়েন্টিতে দেড় শ ছাড়ানো দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে রেকর্ড বইয়ে তোলপাড় ফেলে দিয়েছেন পাকিস্তানের ব্যাটার সাহিবজাদা ফারহান। চলমান ন্যাশনাল টি-টোয়েন্টি কাপে পেশাওয়ার রিজিয়নের হয়ে ৭২ বলে অপরাজিত ১৬২ রানের ইনিংস খেলেন ২৯ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান।
মুলতান ক্রিকেট গ্রাউন্ডে শুক্রবার রাতে কোয়েটা রিজিয়নের বিপক্ষে দেড় শ ছাড়ানো ইনিংস খেলার পথে ১১ ছক্কা ও ১৪ চার মেরেছেন ফারহান। স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানের কোনো ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ, সব দল মিলিয়ে যৌথভাবে তৃতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস এটি।
ফারহানের সমান ১৬২ রানের ইনিংস আছে জিম্বাবুয়ের হ্যামিল্টন মাসাকাদজা, আফগানিস্তানের হজরতউল্লাহ জাজাই ও দক্ষিণ আফ্রিকার ব্রেভিসের। ফারহানের ওপরে আছেন সাবেক অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ ও ক্যারিবিয়ান মহাতারকা ক্রিস গেইল। ২০১৮ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৭৬ বলে ১৭২ রানের ইনিংস খেলেন ফিঞ্চ, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে যা সর্বোচ। ২০১৩ আইপিএলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে পুনে ওয়ারিয়র্সের বিপক্ষে ৬৬ বলে অপরাজিত ১৭৫ রানের ইনিংস খেলেন গেইল।
পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বোচ্চ ইনিংস ছিল এত দিন কামরান আকমলের। ২০১৭ সালে ন্যাশনাল টি-টোয়েন্টি কাপেই লাহোর হোয়াইটসের হয়ে ইসলামাবাদের বিপক্ষে ৭১ বলে অপরাজিত ১৫০ রানের ইনিংস খেলেছিলেন এই কিপার-ব্যাটসম্যান। এত দিন পাকিস্তানের মাটিতে কারও সর্বোচ্চ ইনিংসও ছিল সেটি।
ফারহান এবারের আসর শুরু করেন লাহোরের বিপক্ষে ৫৯ বলে অপরাজিত ১১৪ রানের ম্যাচ জয়ী ইনিংস খেলে।
ফারহানের জাতীয় দলের হয়ে তার টি-টোয়েন্টি অভিষেক হয় ২০১৮ সালে। প্রথম ম্যাচে শূন্য রানের পর দ্বিতীয়টিতে করেন ৩৯। পরের ম্যাচে ১ রানের পর বাদ পড়েন দল থেকে। তবে স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে ফারহানের চতুর্থ সেঞ্চুরি এটি।
লিওনেল মেসি, পাওলো দিবালা ও লাউতারো মার্তিনেজকে ছাড়াই শক্তিশালী উরুগুয়ের বিপক্ষে জয় পেয়েছে আর্জেন্টিনা। এ জয়ে ২০২৬ বিশ্বকাপে এক পা দিয়ে রাখল আলবিসেলেস্তেরা। দলের এমন জয়ে দারুণ উচ্ছ্বসিত প্রধান কোচ লিওনেল স্কালোনি।
দ্বিতীয়ার্ধে দলের হয়ে জয়সূচক গোলটি করেন মেসির জায়গায় খেলতে নামা থিয়াগো আলমাদা।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ী কোচ স্কালোনি বললেন,‘আমি কেন সন্তুষ্ট হব না? জয়ের জন্য নয়, যেভাবে তারা নিজেদের সবটুকু দিয়েছে তার জন্য। এটা এমন মাঠ, যেখানে খেলতে এসে প্রতিপক্ষের প্রবল চাপ সামলাতে হয়, যখন গোলের সুযোগ আসে, সেটা কাজে লাগাতে হয়। যখন রক্ষণ সামলানোর প্রয়োজন পড়ে তখন সেটা করতে হয়- এটা কঠিন।
‘জাতীয় দল মানে পুরো একটি দল, এখানে একজন অনুপস্থিত থাকলেও অন্য কেউ দায়িত্ব নেয়। আজ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় না থাকলেও আমরা আত্মবিশ্বাস নিয়ে মাঠে নেমেছি। পারফরম্যান্স ভিন্ন হতে পারে, কিন্তু দল আছে, নামের ওপরে গিয়েও,’ যোগ করেন এই আর্জেন্টাইন কোচ।
ম্যাচের শুরুতে উরুগুয়ের প্রবল চাপে রক্ষণ ছেড়ে সেভাবে বের হতে পারছিল না আর্জেন্টিনা।
কিভাবে বিরতিতে কৌশল বদলেছিলেন তার ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, ‘ওলিভেরার দিকে একটু বেশি এগিয়ে আসে জুলিয়ানো (সিমিওনে) এবং আরাহোর দিকে নাহুয়েল (মলিনা) ঝুঁকাতেই দলের পারফরম্যান্স ভালো হয়। খেলায় এমন মুহূর্ত আসে যখন প্রতিপক্ষের চাপ সামলাতে হয়, তখন ধৈর্য ধরে থাকতে হয়। দল জানত কখন সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।’
ব্রাজিলের বিপক্ষে পরবর্তী ম্যাচ সম্পর্কে স্কালোনি বলেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো খেলোয়াড়রা। তারা থাকলে আমরা আমাদের খেলার ধরন বজায় রাখতে পারব। শেষ মুহূর্তে রক্ষণাত্মক খেলতে হলেও খেলব। দেখা যাক সামনে কী হয়।’