<p>শীর্ষ আদালতের রায়ে বড় ধাক্কা খেল বিজেপি ও নরেন্দ্র মোদির সরকার। ২০১৮ সালে মোদি সরকার ইলেক্টোরাল বন্ড ব্যবস্থা চালু করেছিল। দেশটির সুপ্রিম কোর্ট বৃহস্পতিবার এক ঐতিহসিক রায়ে ‘ইলেক্টোরাল বন্ড’-কে অসাংবিধানিক ও বেআইনি বলে ঘোষণা করেছে। </p> <p>২০১৭ সালে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি এই ইলেক্টোরাল বন্ড আনার কথা ঘোষণা করেন। ২০১৮ সাল থেকে এই বন্ড ব্যবহার শুরু হয়। এই বন্ড এক ধরনের দলিল, যা দিয়ে ব্যক্তি বা কর্পোরেট সংস্থা রাজনৈতিক দলগুলোকে চাঁদা দিতে পারে। কেউ চাঁদা দিতে চাইলে ব্যাংক থেকে বন্ড কিনে রাজনৈতিক দলের হাতে তুলে দিতে পারেন। রাজনৈতিক দলগুলো নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে সেই বন্ড ভাঙিয়ে নেয়। এই বন্ড কে বা কারা কিনছেন, তাঁর পরিচয় সম্পূর্ণভাবে গোপন রাখা হয়। ১ হাজার, ১০ হাজার, ১ লাখ, ১০ লাখ ও ১ কোটি রূপি মূল্যের বন্ড পাওয়া যায়। হাতে পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোকে বন্ড ভাঙিয়ে নিতে হয়। বছরের নির্দিষ্ট সময়ে ব্যাংক থেকে বন্ড পাওয়া যায়।</p> <p>শীর্ষ আদালত বলেছে, রাজনৈতিক দলের অর্থ সংগ্রহের এই ব্যবস্থা ২০০৫ সালের তথ্য জানার অধিকার আইনের পরিপন্থী। জনসাধারণের জানার অধিকার আছে কারা রাজনৈতিক দলগুলোকে চাঁদা দিচ্ছে। দেশের নাগরিকদের কাছে রাজনৈতির দলের আয়-ব্যয় নিয়ে কোনো অসচ্ছতা থাকা উচিৎ নয়। </p> <p>বন্ড চালুর আগে নির্বাচন কমিশনের নিয়ম ছিল, রাজনৈতিক লেগুলোকে ২০ হাজার রুপির বেশি অর্থ দান করলে, তা চেকে দিতে হবে। এই নিয়ম ফাঁকি দিতে অনেকেই ২০ হাজার রুপি নগদে জমা করত। ফলে রাজনৈতিক দলগুলোও তাদের আয় গোপন করতে পারত। এভাবে কালো টাকা সাদা করে নেওয়ার সুযোগ পেতেন দাতারা। নির্বাচন কমিশন এই অনিয়ম আটকাতে এখন টাকার অঙ্ক কমিয়ে ২০০ রুপিতে করে দিয়েছে। ফলে রাজনৈতিক দলকে ২০০ বা তার বেশি অর্থ দিতে হলে চেকে অথবা অনলাইন দিতে হবে।</p> <p>শীর্ষ আদালতের রায় অনুযায়ী, এখন থেকে নির্বাচনী বন্ড আর গোপন থাকবে না।  জনগণ জানতে পারবে কে কোন দলকে অর্থায়ন করেছে। অর্থাৎ ইলেক্টোরাল বন্ড স্কিম বাতিল করা হবে না, তবে দাতার পরিচয় গোপন রাখার বিধানটি সরানো যেতে পারে। </p> <p>নির্বাচনী বন্ড চালু হওয়ার পরই স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল বিরোধী দল। তাঁদের অভিযোগ,  এই প্রক্রিয়াতে বাড়ছে অস্বচ্ছতা। বিশ্বের কোনো দেশেই এমন ব্যাবস্থা নেই, যেখানে রাজনৈতিক দল বন্ড ভাঙিয়ে অর্থ সংগ্রহ করে। কোন কর্পোরেট সংস্থা কাকে ভোটে সাহায্য করছে, তার বিনিময়ে ক্ষমতাসীন দলের থেকে কী সুবিধা পাচ্ছে সেই তথ্য জানার সুযোগ ছিল সাধারণ জনগণ বা ভোটারের। যেখানে শাসক দলের আর্থিক অনুদানের কোনো তথ্য ছিল না। তবে বিরোধী দলে কে কত অনুদান দিচ্ছেন তা জানা সম্ভব ছিল, এ নিয়ে মামলা দায়ের হয়েছিল। নির্বাচনী বন্ড আদৌ স্বচ্ছ কিনা তা নিয়েই এতদিন শুনানি চলছিল। আজ বৃহস্পতিবার ১৫ ফেব্রুয়ারি সেই মামলার রায় দেওয়া হলো।</p> <p>সূত্র: এই সময়</p>