মার্কিন নির্বাচনের গুরুত্বপূর্ণ একটি চিত্র ফুটে ওঠে বিভিন্ন সংখ্যার মাধ্যমে, যা ভোটার সংখ্যা, সুইং স্টেট, ইলেকটোরাল কলেজ ভোটসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ উপাদানকে তুলে ধরে। এই প্রতিবেদনে সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো নির্বাচনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংখ্যা, যা শুধু প্রার্থীদের ভাগ্যই নয়, বরং গোটা দেশের ভবিষ্যতের দিকও নির্ধারণ করতে পারে।
২
যুক্তরাষ্ট্রে এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কিছু স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও অন্তত একজন—রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র, কিছু বিতর্কিত শিরোনামে জড়িয়ে পড়েন। শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের প্রতিযোগিতা প্রধান দুই দলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ।
ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প এক বিভক্ত আমেরিকার নেতৃত্বের জন্য লড়ছেন।
আরো পড়ুন
‘ট্রাম্প জিতলে ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন পুনর্বিবেচনা করবে ইউরোপ’
৫
নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৫ নভেম্বর। দেশটিতে ঐতিহ্যগতভাবে নভেম্বরের প্রথম সোমবারের পরবর্তী মঙ্গলবার নির্বাচিত অনুষ্ঠিত হয়।
৭
যুক্তরাষ্ট্রে সুইং স্টেটের সংখ্যা সাত।
এসব অঙ্গরাজ্য কোনো নির্দিষ্ট দলের প্রতি পক্ষপাতী নয়। ফলে সেখানকার ভোট যেকোনো প্রার্থীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্প আরিজোনা, জর্জিয়া, মিশিগান, নেভাডা, নর্থ ক্যারোলাইনা, পেনসিলভানিয়া ও উইসকনসিনের ভোটারদের সমর্থন পেতে কঠোর প্রচারণা চালাচ্ছেন। কারণ এই অঙ্গরাজ্যগুলোর সামান্য কয়েকটি ভোটও নির্বাচনের ফল নির্ধারণ করতে পারে।
আরো পড়ুন
মার্কিন নির্বাচনকে ঘিরে ভুয়া ‘রুশ’ ভিডিও, এফবিআইয়ের সতর্কতা
৩৪ ও ৪৩৫
নির্বাচনের দিন শুধু প্রেসিডেন্ট নন, কংগ্রেসের নিয়ন্ত্রণও ভোটারদের সিদ্ধান্তে নির্ভর করছে। ৩৪টি সিনেট আসন ও হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের ৪৩৫টি আসন নিয়ে লড়াই হবে। হাউসের সদস্যরা দুই বছরের মেয়াদে নির্বাচিত হন। বর্তমানে সেখানে রিপাবলিকানদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে, কিন্তু কমলা হ্যারিসের ডেমোক্র্যাটরা এটি পরিবর্তন করতে চায়।
অন্যদিকে সিনেটে ১০০টির মধ্যে ৩৪টি আসন রয়েছে, যার মেয়াদ ছয় বছর।
রিপাবলিকানরা সেখানে ডেমোক্র্যাটদের সংক্ষিপ্ত সংখ্যাগরিষ্ঠতাকে উল্টে দিতে চাইছে।
৫৩৮
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পরোক্ষ পদ্ধতি ইলেকটোরাল কলেজ। প্রত্যেক অঙ্গরাজ্যের ইলেকটর সংখ্যা হাউসে তাদের প্রতিনিধি সংখ্যা (জনসংখ্যা অনুযায়ী পরিবর্তিত) এবং দুটি সিনেট আসন যোগ করে নির্ধারিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, ছোট রাজ্য ভার্মন্টের মাত্র তিনটি ইলেকটোরাল ভোট রয়েছে, অন্যদিকে বৃহৎ ক্যালিফোর্নিয়ার আছে ৫৪টি।
দেশজুড়ে মোট ৫৩৮টি ইলেকটর রয়েছে, যা ৫০টি অঙ্গরাজ্য ও ডিস্ট্রিক্ট অব কলম্বিয়াজুড়ে ছড়িয়ে আছে। প্রেসিডেন্ট হতে হলে একজন প্রার্থীকে এর মধ্যে কমপক্ষে ২৭০টি ভোট জিততে হবে।
আরো পড়ুন
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থীদের খরচ কত, কিভাবে অর্থ আসে
৭৭৪,০০০
পিউ রিসার্চ সেন্টারের মতে, ২০২০ সালের নির্বাচনে সাত লাখ ৭৪ হাজার জন কর্মী নির্বাচন প্রক্রিয়াকে নির্বিঘ্নে পরিচালনা করতে কাজ করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনকর্মীদের তিনটি ধরন রয়েছে।
প্রধানত পোল কর্মীরা ভোটারদের অভ্যর্থনা, ভাষা সহায়তা, ভোট দেওয়ার সরঞ্জাম স্থাপন, ভোটার আইডি ও নিবন্ধন যাচাইয়ের কাজ করেন।
নির্বাচন কর্মকর্তা নির্বাচন প্রক্রিয়ার তদারকি ও পোল কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেন।
পোল ওয়াচাররা সাধারণত রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে ভোট গণনা পর্যবেক্ষণ করেন। এ বছর ট্রাম্পের নির্দ্বিধায় ফল মেনে না নেওয়ার অঙ্গীকারের কারণে এটি বিশেষভাবে বিতর্কিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আগেই অনেক কর্মী নভেম্বরে ৫ তারিখের নির্বাচনের আগে চাপ ও হুমকির মুখোমুখি হচ্ছেন বলে এএফপিকে জানিয়েছেন।
৭৫ মিলিয়ন
২ নভেম্বর পর্যন্ত ইউনিভার্সিটি অব ফ্লোরিডার ডাটাবেইস অনুযায়ী, ৭৫ মিলিয়নের বেশি আমেরিকান আগাম ভোট দিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ অঙ্গরাজ্যে ব্যক্তিগতভাবে ভোটদান বা মেইল-ইন ভোটের সুযোগ রয়েছে, যাতে ভোটাররা কাজের শিডিউল বা অন্যান্য সমস্যার কারণে নির্বাচনের দিনে ভোট দিতে না পারলেও আগাম ভোট দিতে পারেন।
২৪৪ মিলিয়ন
বাইপার্টিসান পলিসি সেন্টারের মতে, ২০২৪ সালে ২৪৪ মিলিয়ন আমেরিকান ভোট দেওয়ার যোগ্য। অবশ্য এদের মধ্যে কতজন আসলে ভোট দেবেন, তা জানা যাবে নির্বাচনের পরেই। তবে পিউ রিসার্চ সেন্টার জানিয়েছে, ২০১৮ ও ২০২২ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচন এবং ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সাম্প্রতিক দশকগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ ভোটার উপস্থিতি দেখা গেছে।
পিউর তথ্যানুসারে, ২০২০ সালের নির্বাচনে যোগ্য ভোটারদের দুই-তৃতীয়াংশ (৬৬ শতাংশ) ভোট দিয়েছিলেন, যা ১৯০০ সালের পর থেকে যেকোনো জাতীয় নির্বাচনের সর্বোচ্চ হার। আদমশুমারি ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, সংখ্যাটি প্রায় ১৫৫ মিলিয়ন ভোটারের সমান।
সূত্র : এএফপি