<p>নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নকে (ইইউ) যুক্তরাষ্ট্র থেকে তেল ও গ্যাস আমদানি বাড়াতে হবে, নতুবা তাদের রপ্তানি পণ্যে—বিশেষ করে গাড়ি ও যন্ত্রপাতির ওপর শুল্ক আরোপ করা হবে।</p> <p>শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফরমে এক পোস্টে বলেছেন, ‘আমি ইউরোপীয় ইউনিয়নকে বলেছি, আমাদের সঙ্গে তাদের বিশাল ঘাটতি পূরণ করতে হলে আমাদের তেল ও গ্যাস বৃহৎ পরিসরে ক্রয় করতে হবে। অন্যথায় শুল্ক আরোপই হবে একমাত্র পথ!’</p> <p>আগামী ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিতে যাওয়া ট্রাম্প এরই মধ্যে কানাডা, মেক্সিকো এবং চীনের বিরুদ্ধে কঠোর শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন। এতে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে অস্থিরতা সৃষ্টির শঙ্কা রয়েছে। ট্রাম্প জানিয়েছেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর বিশ্বব্যাপী আমদানির ওপর ১০ শতাংশ এবং চীনের পণ্যের ওপর ৬০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন।</p> <p>ইইউর একজন মুখপাত্র বলেছেন, তারা আলোচনার জন্য প্রস্তুত। তিনি উল্লেখ করেন, ইইউ এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিপুল পরিমাণে তেল ও গ্যাস আমদানি করছে। তবে যদি যুক্তরাষ্ট্র উৎপাদন না বাড়ায় বা এশিয়ার মতো বড় ক্রেতাদের সরবরাহ সীমিত না হয়, তাহলে অতিরিক্ত আমদানি সম্ভব নয়।</p> <p>যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি তথ্য মতে, এখনই যুক্তরাষ্ট্রের তেল-গ্যাসের বড় ক্রেতা ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ২০২২ সালে ইইউ থেকে যুক্তরাষ্ট্র পণ্য আমদানি করেছিল ৫৩ হাজার ৩৩০ কোটি ডলারের। বিপরীতে ইইউতে যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানি ছিল ৩৫ হাজার ৮০ কোটি ডলারের। ফলে সে বছর ইইউর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ২০ হাজার ২৫০ কোটি ডলার।</p> <p>২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র ইইউর সঙ্গে ২০৮ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের পণ্য বাণিজ্যে ঘাটতিতে ছিল। পরিষেবা খাতে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বৃত্ত থাকলেও ট্রাম্প পণ্য বাণিজ্যেই বেশি জোর দিচ্ছেন। বিশেষ করে, ইউরোপ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানীকৃত গাড়ি নিয়ে তিনি বেশ অসন্তুষ্ট, কারণ যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইউরোপে গাড়ি রপ্তানির পরিমাণ খুবই কম। জার্মানি ও ইতালির গাড়ি রপ্তানির ওপর বর্তমানে ২ দশমিক ৫ শতাংশ শুল্ক রয়েছে, যা ট্রাম্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী চার গুণ বাড়তে পারে।</p> <p>বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের শুল্ক হুমকি ইউরোপীয় দেশগুলোতে সম্ভাব্য বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কা বাড়িয়েছে। এই শুল্ক ইইউর অর্থনীতিতে আরো চাপ সৃষ্টি করতে পারে।</p>