<p>মডেলিংয়ে উজ্জ্বল মুখ সৈয়দা তৌহিদা হক তিথি। ২০১৬ সালে ইন্দো বাংলা বিউটি কনটেস্ট প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন তিথি। এরপর মডেল হিসেবে শোবিজে ক‌্যারিয়ার শুরু করেন। ২০১৬ সাল থেকে দেশের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পোশাকের মডেল হিসেবে কাজ করছেন অমনি। ‘ব্যাড বয়েজ’ নামের একটি ওয়েব সিরিজে অভিনয় করেছেন। পোকা নামের একটি গানের মিউজিক ভিডিওতে মডেল হিসেবে কাজ করে বেশ প্রশংসিত হয়েছেন। ক্যারিয়ারের বয়স আট, এরই মধ্যে নিজেকে প্রথম সারির মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। সম্প্রতি প্রচারে এসেছে তাঁর অভিনীত নতুন একটি বিজ্ঞাপনচিত্র। এর সূত্র ধরে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন কামরুল ইসলাম।</p> <p><strong>নতুন বিজ্ঞাপনচিত্র</strong></p> <p>প্রচারে আসা বিজ্ঞাপনচিত্রটি একটি খাদ্যপণ্যের। নির্মাণ করেছেন আদনান আল রাজীব। এতে কেবিন ক্রুর অবতারে দেখা গেছে তিথিকে। তিনি বলেন, ‘রানআউট ফিল্মসের (নির্মাতা প্রতিষ্ঠান) সঙ্গে আগেও কাজ হয়েছে। এবারও ভালো লেগেছে বিজ্ঞাপনচিত্রটি করে। শুটিং অ্যারেঞ্জমেন্ট, গান, সহশিল্পী সব মিলে আমার কাছে ভালো লেগেছে। এ ছাড়া সম্প্রতি আরো একটি বিজ্ঞাপনচিত্র এসেছে, সেখানে আমি একাই অভিনয় করেছি।’ </p> <p><strong>বিরতি ভেঙে ফেরা</strong></p> <p>তিথির শুরুটা ২০১৬ সালে, ইন্দো-বাংলা বিউটি কনটেস্ট দিয়ে। বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ মিলিয়ে প্রতিযোগিতাটি হয়েছিল, সেখানে তিনি প্রথম হয়েছিলেন। এরপর থেকেই ফটোশুট, মডেলিং করে আসছেন। মাঝখানে বছর তিনেক ছিলেন বিরতিতে। ফিরলেন এ বছরের জানুয়ারিতে।</p> <p>কেন বিরতি নিয়েছিলেন? জবাবে তিথি বলেন, ‘ব্যক্তিগত কিছু কারণ ছিল। এর মধ্যে আবার করোনা মহামারি আসে। তখন অন্তর্জালনির্ভর প্রচারণা বেড়ে গিয়েছিল। ফলে আমরা যারা মডেলিং, ফটোশুট করতাম, তাঁদের কাজও কমে যায়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর যেসব কাজ আসত, পারিশ্রমিক কম বলত। সে কারণে করতাম না। একটা অবস্থানে পৌঁছানোর পর তো এর কমে কাজ করা যায় না। দরকার হলে কম কাজ হোক, তবু ভালো কাজ করতে চাই।’ </p> <p><strong>নজর এখন অভিনয়ে</strong></p> <p>তৌহিদা জানান, করোনার আগে তাঁর মডেলিং ব্যস্ততা ছিল তুঙ্গে। প্রত্যেক দিনই থাকত শুটিং। মাসে বড়জোর দুই-তিন দিন জোর করেই ছুটি নিতেন। এখন সে তুলনায় কম কাজ করেন। এ নিয়ে তাঁর ভাষ্য, ‘এখনো যদি রেম্যুনারেশন কমাই, তাহলে প্রতিদিন কাজ করতে পারব। কিন্তু সেটা আমি চাই না। তা ছাড়া এখন আমি ভিজুয়ালে মনোযোগী হতে চাইছি। মডেলিং তো অনেক দিন করলাম। আগে বিজ্ঞাপনচিত্রের প্রচুর অফার পেতাম; কিন্তু করতাম না। এখন চিত্রনাট্য পড়ে, ভালো-মন্দ বুঝে কাজ করছি। অভিনয়ের দিকে মনোযোগী হচ্ছি।’ </p> <p><strong>প্রসঙ্গ মাসুদ রানা</strong></p> <p>২০২০ সালের শুরুর দিকেই জাজ মাল্টিমিডিয়ার প্রযোজনায় সৈকত নাসিরের ‘মাসুদ রানা’ ছবিতে যুক্ত হয়েছিলেন। এর পরই চলে আসে করোনা মহামারি। ছবিটিরও আর আপডেট পাওয়া যায়নি। অভিনেত্রী বললেন, ‘শুটিং কিছুটা বাকি ছিল, মাস ছয়েক আগে সেটাও সম্পন্ন হয়েছে। তবে চার বছর আগের চিত্রনাট্য কিংবা শুটিং এখন উপযুক্ত না-ও হতে পারে। এই সময়ের মধ্যে অনেক কিছুতে পরিবর্তন এসেছে। এ কারণে জাজ মাল্টিমিডিয়া চাচ্ছে সময়োপযোগী করে তবেই ছবিটা মুক্তি দিতে। হয়তো কিছু দৃশ্য পুনরায় শুটিং করবে, পোস্ট প্রডাকশনে আরো সময় দেবে।’ </p> <p><strong>অন্য কোনো ছবি</strong></p> <p>শুধু ‘মাসুদ রানা’ নয়, সে সময় জাজ মাল্টিমিডিয়ার আরো দুটি ছবিতে যুক্ত হয়েছিলেন তিথি। সেগুলোর কী খবর? তিথি জানান, সেগুলোও হাতে আছে। এর মধ্যে একটি ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের, অন্যটি ভিন্ন গল্পের। তবে ছবিগুলোর চিত্রনাট্য নিয়ে এখনো ঘষামাজা চলছে। এর বাইরে কোনো ছবি করছেন?</p> <p> ‘অনেক প্রস্তাব এসেছে, এখনো আসে। তবে আগ্রহী নই। কারণ আমি এ জায়গায় এখনো নবীন। জাজের মাধ্যমে আগে অভিষেক হোক। পরে বুঝেশুনে এগোব’—বললেন তিথি।</p> <p><strong>পর্দায় নেই বিভাজন</strong></p> <p>মডেলিংয়ে লম্বা সময় কাটিয়ে অভিনয়ে ব্যস্ত হতে চাইছেন। তবে ছোট পর্দা নাকি বড় পর্দা, তা নিয়ে ভাবিত নন তিনি। তিথির ভাষ্য, ‘মডেলিং আমার ভালোবাসার জায়গা। অভিনয়ের প্রতিও আমার ভালোলাগা আছে। তবে একটা সময় অভিনয় অনেক কঠিন মনে হতো, এ জন্য প্রশিক্ষণও নিচ্ছি। আশা করছি ভালো কিছুই হবে। নাটক, ওটিটি কিংবা সিনেমা যেখানেই ভালো গল্প পাব, করব। বড় কিংবা ছোট পর্দা নিয়ে আমার কাছে বিভাজন নেই।’</p> <p><strong>ভাইরাল নয়, চাই প্রশান্তি</strong></p> <p>আগে এমনও হতো, একটি বিজ্ঞাপনচিত্র করেই তারকা হওয়া যেত। কিন্তু মডেলিংয়ের সে প্রভাব এখন খুব একটা নেই। তবে তিথি জানান, তিনি বিপুল জনপ্রিয়তা কিংবা ভাইরাল হওয়ার জন্য কাজ করেন না। তাঁর কাছে মানসিক প্রশান্তি গুরুত্বপূর্ণ। ‘এমন অনেক বিজ্ঞাপনচিত্রও ভাইরাল হয়ে যায়, যেটা হয়তো আপনার-আমার ভালো লাগে না। নেতিবাচক জিনিস আজকাল বেশি ভাইরাল হয়। এটা নিয়ে আমি ভাবিত নই। কাজটাকে আমি ভালোবাসি। ভালো মানুষ, ভালো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করি। দিনশেষে নিজের কাজটা দেখলে মনে প্রশান্তি পাই, মুখে হাসি ফোটে। কোনো শপিং মলে গিয়ে নিজের বড় একটা ছবি দেখলে ভালো লাগে। ভাইরাল হতে হবে, এটা ভাবি না। তবু আমার কোনো কাজ ভাইরাল হলে সেটা যেন ইতিবাচকভাবেই হয়।’</p>