রাশিয়ার শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা সের্গেই শোইগু মঙ্গলবার ইন্দোনেশিয়ায় দেশটির প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো ও তার প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেছেন। মস্কো ও জাকার্তার প্রতিরক্ষা সম্পর্ক জোরদারের চেষ্টার মধ্যে তাদের বৈঠক হলো।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ ইন্দোনেশিয়া নিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করে, ইউক্রেন সংকট বা যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে প্রভাব বিস্তারের প্রতিযোগিতায় কোনো পক্ষ নেয়নি তারা। অন্যদিকে রাশিয়ার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও বর্তমানে রুশ নিরাপত্তা কাউন্সিলের সেক্রেটারি শোইগু ২০২২ সালে ইউক্রেনে রুশ সেনা পাঠানোর সিদ্ধান্তে প্রভাবশালী হিসেবে বিবেচিত এবং প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র।
ইন্দোনেশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এদিন বলা হয়েছে, শোইগু মঙ্গলবার সকালে রাজধানী জাকার্তায় প্রতিরক্ষামন্ত্রী সাফরি স্যামসোয়েদ্দিনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এরপর বিকেলে প্রেসিডেনশিয়াল প্যালেসে প্রেসিডেন্ট প্রাবোও তাকে স্বাগত জানান বলে প্যালেসের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, ‘এই সফর ইন্দোনেশিয়া ও রাশিয়ার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, বিশেষ করে নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে জোরদারের একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। তারা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিয়ে বিভিন্ন কৌশলগত বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
’
প্রেসিডেনশিয়াল প্যালেস আরো জানিয়েছে, এই সফর ‘ভবিষ্যতে সহযোগিতার আরো বিস্তৃত সুযোগ উন্মোচন করেছে’ এবং উভয় দেশ ‘তাদের কৌশলগত অংশীদারি জোরদারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
সম্প্রতি দায়িত্ব নেওয়া প্রেসিডেন্ট প্রাবোও বৈশ্বিক মঞ্চে আরো সাহসী ভূমিকা পালনের অঙ্গীকার করেছেন এবং জুলাই মাসে পুতিনের সঙ্গে আলোচনার জন্য মস্কো সফর করেছেন। এ ছাড়া গত নভেম্বরে ইন্দোনেশিয়া ও রাশিয়া তাদের প্রথম যৌথ নৌ মহড়া পরিচালনা করে। রাশিয়া সেই মহড়ায় তিনটি কর্ভেট শ্রেণির যুদ্ধজাহাজ, একটি মাঝারি ট্যাংকার জাহাজ, একটি সামরিক হেলিকপ্টার ও একটি টাগবোট পাঠায়।
এই মহড়া ইন্দোনেশিয়ার প্রধান দ্বীপ জাভার পূর্ব অংশে অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে জাকার্তার সঙ্গে মস্কোর বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য সম্পর্ক রয়েছে। তবে ২০১৪ সালে রাশিয়ার ক্রিমিয়া দখল ও ইউক্রেনে আক্রমণ শুরুর পর সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বড় ধরনের অস্ত্র আমদানি স্থগিত রয়েছে। তবু ২০১৯ সালে প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে প্রাবোও ২০১৮ সালে চুক্তিবদ্ধ ১.১ বিলিয়ন ডলারের রুশ যুদ্ধবিমান ক্রয়ের চুক্তি টিকিয়ে রেখেছেন, যদিও এতে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার হুমকি রয়েছে।
সূত্র : এএফপি