ঢাকা, বুধবার ১৯ মার্চ ২০২৫
৫ চৈত্র ১৪৩১, ১৮ রমজান ১৪৪৬

উসকানির অভিযোগে ফিলিস্তিনি সাংবাদিককে আটক করেছে ইসরায়েল

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
উসকানির অভিযোগে ফিলিস্তিনি সাংবাদিককে আটক করেছে ইসরায়েল
জেরুজালেমে ছেলের সঙ্গে আবদেল্লাতিফ। সূত্র: সিএনএন (পারিবারিক ছবি)।

ইসরায়েলি বিচারক মুক্তি দেওয়ার আদেশ দিলেও, ইসরায়েলি পুলিশ একজন সুপরিচিত ফিলিস্তিনি নারী সাংবাদিককে জেরুজালেমে আটক রাখার চেষ্টা করছে। যদিও তাকে ‘উসকানি’ এবং ‘সন্ত্রাসবাদের সমর্থন’ সম্পর্কিত অভিযোগে সোমবার আটক রাখা হয়েছে। আবদেল্লাতিফ এ সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

গতকাল সোমবার জেরুজালেমের একটি ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ভিডিও লিংকের মাধ্যমে আবদেল্লাতিফকে হাজির করা হয়।

যেখানে একজন বিচারক জিজ্ঞাসাবাদ এবং তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার জন্য তাকে আরো পাঁচ দিনের জন্য আটক রাখার পুলিশের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেন। 

তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট অনুসারে লতিফেহ আবদেল্লাতিফ একজন ফ্রিল্যান্স ফটোসাংবাদিক। যার কাজ রয়টার্স, এবিসি নিউজ, বিবিসি, আল জাজিরা এবং টিআরটিতে প্রকাশিত হয়েছে।

আরো পড়ুন
মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের সমাধি ঘিরে বিক্ষোভ-সংঘর্ষ, ভারতে কারফিউ জারি

মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের সমাধি ঘিরে বিক্ষোভ-সংঘর্ষ, ভারতে কারফিউ জারি

 

 

ইসরায়েলি পুলিশ জানিয়েছে, গত রবিবার জেরুজালেম জেলা পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে ‘সন্ত্রাসবাদের জন্য উসকানি এবং সমর্থনের সন্দেহে’ পুরাতন শহরে তার বাড়িতে গ্রেপ্তার করেছিলেন।

আবদেল্লাতিফের আইনজীবী এবং তার মা বলেছেন, বাড়ি ফেরার পথে রাস্তায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। অফিসাররা চিহ্নহীন যানবাহনে করে এসেছিল।

এক বিবৃতিতে পুলিশ আবদেল্লাতিফের প্রয়াত হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারের একটি ভিডিও পোস্ট করার দিকে ইঙ্গিত করেছে। যেখানে তিনি বলেছিলেন, ‘তিনি শহীদ হিসেবে মৃত্যুবরণ করতে চান।

’ 

বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, ‘এই ধরনের এবং অন্যান্য পোস্টগুলোতে স্পষ্ট যে, সন্দেহভাজন ব্যক্তি (আবদেল্লাতিফ) সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর কর্মকাণ্ডের প্রশংসা এবং মহিমান্বিত করছেন।’

আদালতে শুনানির পর আবদেল্লাতিফের আইনজীবী নাসের ওদেহ সিএনএনকে বলেন, ‘আদালত দেখেছেন, সাংবাদিক হিসেবে তার কাজের ভিত্তিতে এবং প্রতিরক্ষার ভিত্তিতে এই পোস্টগুলো তার পেশাগত কাজের অংশ। পোস্টগুলো ছয় মাসেরও বেশি পুরনো। তাকে আটকে রাখার কোনো প্রয়োজন নেই। তিনি জনসাধারণের জন্য বিপদ নয়।

’ তবে ইসরায়েলি পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে তার মুক্তি স্থগিত করার জন্য সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করে।

আইনজীবী বলেন, ‘পুলিশ কেন্দ্রীয় আদালতে আপিল জমা না দেওয়া পর্যন্ত মুক্তির সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখার অনুরোধ করেছে। বর্তমানে, আপিল প্রক্রিয়া কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত মুক্তির সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়েছে।’

গত রবিবার আবদেল্লাতিফকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পোস্ট সম্পর্কে তিন ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। 
আবদেল্লাতিফ এর আগেও ইসরায়েলি বাহিনীর দমন-পীড়নের শিকার হয়েছেন। 

আরো পড়ুন
গাজায় ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত, নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ২০০

গাজায় ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত, নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ২০০

 

২০২১ সালের মে মাসে অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমে একটি ছোট ছেলেকে আটকের ভিডিও করার কারণে ইসরায়েলি সেনারা তাকে মারধর করেন, মরিচের গুড়া ছিটিয়ে দেন এবং তার মাথার স্কার্ফ জোর করে খুলে ফেলেন। 

ঘটনার সময় আবদেল্লাতিফ ইসরায়েলি বাহিনীকে একটি শিশুকে আটক করতে দেখেন বলে জানান। শিশুটির বাবা ও অন্যান্য ফিলিস্তিনিরা এতে বাধা দিলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। আবদেল্লাতিফ তখন ঘটনাটি ভিডিও করার চেষ্টা করেন, কিন্তু ইসরায়েলি সেনারা তাকে ধাক্কা দেন, যদিও তিনি তাদের স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন যে তিনি একজন রিপোর্টার।

সেনারা তাকে উপেক্ষা করে পিছনে ঠেলে দিতে থাকে। তারপর তার হিজাব খুলে ফেলে এবং হাঁটুতে লাঠি দিয়ে আঘাত করে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ফিলিস্তিনিরা আবদেল্লাতিফকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসে, ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। এরপর তাদের বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সূত্র : সিএনএন, মিডল ইস্ট আই

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

শান্তিচুক্তির পরও উত্তপ্ত মণিপুর

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
শান্তিচুক্তির পরও উত্তপ্ত মণিপুর
ভারতের মণিপুরে সেনাবাহিনীর টহল। ছবি : সংগৃহীত

মার ও জোমি আদিবাসীদের সংঘর্ষে আরো একবার উত্তপ্ত হলো ভারতের মণিপুর রাজ্য। চুরাচান্দপুর জেলায় চলতি সপ্তাহের শুরু থেকেই মারদের এক নেতার ওপর হামলাকে কেন্দ্র করে অশান্তি শুরু হয়। সেই আবহে মঙ্গলবার রাতে ফের দুই আদিবাসী গোষ্ঠীর সংঘর্ষ বাধে জেলার বিস্তীর্ণ অংশজুড়ে। ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদন অনুসারে, সোমবার এলাকায় কারফিউ জারি হওয়ার পরই বৈঠকে বসেছিলেন মার ও জোমিদের প্রতিনিধিরা। দীর্ঘ বৈঠকের পর দুই পক্ষে শান্তিচুক্তিও হয়। কিন্তু তার ২৪ ঘণ্টা পেরোতে না পেরোতেই ফের সংঘর্ষ বাধে।

স্থানীয় সূত্রে জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাত থেকে সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে ওঠে চুরাচান্দপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা।

ছোড়া হয় পাথর, ভাঙচুর করা হয় বহু যানবাহন। কোথাও কোথাও গোলাগুলিও চলেছে। তবে ওই ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা এখন পর্যন্ত স্পষ্ট নয়।

গত রবিবার সন্ধ্যায় চুরাচান্দপুরের জেনহাঙে ভিকে মন্টেসরি স্কুল চত্বরের ভেতর মারদের সংগঠন মার ইনপুইয়ের সাধারণ সম্পাদক রিচার্ড মারের ওপর হামলা চালায় অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতিরা।

সেই হামলার পর থেকেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন মাররা। গোটা জেলায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। 
অভিযোগ, রিচার্ডের গাড়িতে ধাক্কা মেরেছিল আরেকটি গাড়ি। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিবাদ শুরু হয়। বিবাদ বাড়তে বাড়তে এক পর্যায়ে রিচার্ডের ওপর হামলা চালানো হয়।

রিচার্ডের ওপর হামলার খবর ছড়িয়ে পড়তেই প্রতিবাদে রাস্তায় নামে মাররা। পরিস্থিতি সামাল দিতে সোমবার সকাল থেকে ওই জেলায় ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতার (বিএনএসএস) ১৬৩ ধারা জারি করা হয়। চুরাচান্দপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক জানিয়ে দেন, নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকাকালীন অনুমতি ছাড়া কোনো মিছিল, সমাবেশের আয়োজন করা যাবে না। কেউ লাঠি, পাথর বা কোনো রকমের অস্ত্রও বহন করতে পারবে না।

২০২৩ সাল থেকেই কুকি ও মেইতেইদের দ্বন্দ্বে অশান্ত মণিপুর। রাষ্ট্রপতি শাসন জারির পর পরিস্থিতি খানিক নিয়ন্ত্রণে এলেও এখনো বিক্ষিপ্ত অশান্তি চলছে রাজ্যজুড়ে। চলতি মাসের শুরুতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর ‘অবাধ চলাচল’ নির্দেশের প্রতিবাদে মণিপুরের কুকি অধ্যুষিত এলাকায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়। গত ১৩ মার্চ ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হলেও কুকিরা জানিয়ে দেয়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশ তারা মানবে না৷ কুকিদের দাবিদাওয়া পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা ‘অবাধ চলাচলের’ বিরোধিতা করে যাবে।

মন্তব্য

কেনেডি হত্যা সম্পর্কিত চূড়ান্ত নথি প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
কেনেডি হত্যা সম্পর্কিত চূড়ান্ত নথি প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র
ছবিসূত্র : এএফপি

মার্কিন জাতীয় আর্কাইভ যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পর্কিত নথির চূড়ান্ত দলিল প্রকাশ করেছে। গতকাল মঙ্গলবার এই দলিল প্রকাশ করে। মৃত্যুর ৬০ বছরেরও বেশি সময় পরেও ষড়যন্ত্র তত্ত্বকে উসকে দিয়েছে এই মামলাটি।

আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা গ্রহণের পর জানুয়ারিতে জেএফকে হত্যাকাণ্ডের সব অবশিষ্ট রেকর্ড প্রকাশের আহ্বান জানিয়ে একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

যেখানে তার ভাই, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল রবার্ট এফ কেনেডি এবং নাগরিক অধিকার নেতা মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পর্কিত অবশিষ্ট ফাইলগুলো অসম্পাদিতভাবে প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আনুষ্ঠানিকভাবে জানুয়ারিতে ক্ষমতাগ্রহণ করেন ট্রাম্প। তার জারি করা একটি নির্বাহী আদেশ অনুসরণ করে কেনেডি হত্যাকাণ্ড সংক্রান্ত নথি প্রকাশ করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। শুধু কেনেডিই নয়, কেনেডির ভাই, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল রবার্ট এফ কেনেডি এবং নাগরিক অধিকার নেতা মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের হত্যার সঙ্গে সম্পর্কিত অবশিষ্ট নথিগুলো অসম্পাদিতভাবে প্রকাশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আর্কাইভস তাদের ওয়েবসাইটে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশ অনুসারে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট  জন এফ কেনেডি হত্যাকাণ্ডের নথি সংগ্রহের অংশ হিসেবে শ্রেণীবদ্ধকরণের জন্য পূর্বে আটকে রাখা সব নথি বা দলিল প্রকাশ করা হয়েছে।’

জাতীয় আর্কাইভস গত কয়েক দশক ধরে ১৯৬৩ সালের নভেম্বরে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট কেনেডির হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পর্কিত লাখ লাখ পৃষ্ঠার রেকর্ড প্রকাশ করেছে, কিন্তু জাতীয় নিরাপত্তা উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এবং ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের অনুরোধে হাজার হাজার নথি আটকে রাখা হয়েছিল।

ওয়ারেন কমিশন যারা প্রেসিডেন্টেকে গুলি চালানোর ঘটনা নিয়ে তদন্ত করেছিল। ওয়ারেন কমিশন এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে অত্যন্ত দক্ষ একজন শ্যুটার সাবেক মেরিন লি হার্ভে ওসওয়াল্ড একাই এই কাজ করেছিলেন।

কিন্তু এই আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্তটি টেক্সাসের ডালাসে কেনেডির হত্যার পেছনে আরো ভয়াবহ ষড়যন্ত্রের জড়িত থাকার জল্পনাকে থামাতে খুব একটা সাহায্য করেনি এবং সরকারি নথিগুলোর ধীরগতিতে প্রকাশ বিভিন্ন ষড়যন্ত্র তত্ত্বকে আরো বাড়িয়ে তুলেছে। 

১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বর টেক্সাসের ডালাসে নিহত হন জনএফ কেনেডি। কেনেডি হত্যার দুই দিন পর, ১৯৬৩ সালের ২৪ নভেম্বর একটি কাউন্টি কারাগারে স্থানান্তরিত হওয়ার সময়, ওসওয়াল্ডকে একজন ক্লাবের মালিক জ্যাক রুবি গুলি করে হত্যা করে। 

ইতোমধ্যে প্রকাশিত অনেক রেকর্ডই ছিল অপ্রচলিত গোয়েন্দা তথ্য। যার মধ্যে রয়েছে এফবিআই এজেন্টদের কাছ থেকে পাওয়া অসংখ্য তথ্য অনুসরণ করে এমন প্রতিবেদন যা কোনো ফলাফল দেয়নি।

এগুলোতে যা আছে তার বেশির ভাগই আগে থেকেই জানা ছিল। যেমন সিআইএ কিউবার ফিদেল কাস্ত্রোকে হত্যার জন্য বেশ কয়েকটি অদ্ভুত ষড়যন্ত্র তৈরি করেছিল।

সূত্র : এএফপি

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

জীবাশ্ম জ্বালানির গুরুতর প্রভাব, কোথায় দাঁড়িয়ে বিশ্বের উষ্ণায়ন?

ডয়চে ভেলে
ডয়চে ভেলে
শেয়ার
জীবাশ্ম জ্বালানির গুরুতর প্রভাব, কোথায় দাঁড়িয়ে বিশ্বের উষ্ণায়ন?
ছবিসূত্র : এএফপি

বিশ্ব আবহাওয়া দপ্তর বা ডাব্লিউএমও-এর তথ্য বলছে, ২০২৪ ছিল উষ্ণতম বছর। জলবায়ু পরিবর্তনই তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণ। গত ১২ মাসের হিসেবও খুব একটা আশাব্যাঞ্জক নয়। 

১৮৫০ থেকে ১৯০০ সালের তুলনায় গত এক বছরে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা এক দশমিক ৫৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস (দুই দশমিক ৭৮ ফারেনহাইট) বেশি থেকেছে।

এর আগে এতটা ব্যাপক হারে ফসিল ফুয়েল বা জীবাশ্ম থেকে তৈরি জ্বালানির ব্যবহার ছিল না। বর্তমান তাপমাত্রা ২০২৩ এর রেকর্ডকেও ছাপিয়ে গেছে।

প্যারিস জলবায়ু চুক্তি অনুসারে সরকারগুলো বিশ্বের উষ্ণায়নকে শিল্পযুগের আগের পর্যায়ের তুলনায় দুই ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের মধ্যে রাখার অঙ্গিকার করেছিল। একইসঙ্গে তারা উষ্ণায়নের মাত্রাকে এক দশমিক পাঁচ ডিগ্রির নিচে রাখতে চেষ্টা চালাবে বলেও জানিয়েছিল।

উষ্ণায়নের গড় তাপমাত্রা দশক ধরে মাপা হয়।

ডাব্লিউএমও বার্ষিক রিপোর্টে প্যারিসের লক্ষ্যমাত্রা না ছাড়ালেও উদ্বেগের যথেষ্ট কারণ আছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এই রিপোর্ট অনুযায়ী বর্তমানে দীর্ঘমেয়াদী উষ্ণায়ন এক দশমিক ৩৪ থেকে এক দশমিক ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রয়েছে।

জীবাশ্ম জ্বালানির প্রভাব গুরুতর

জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে তৈরি কার্বন ডাই অক্সাইড আমাদের ক্ষতির পরিমাণ বাড়াচ্ছে বলে জানাচ্ছেন গবেষকরা।

তাদের মতে কার্বন ডাই অক্সাইড বিগত ২০ লক্ষ বছরের তুলনায় বেশি জমা হচ্ছে।

ডাব্লিউএমও-এর প্রধান সেলেস্টে সাউলোর মতে, এই নতুন তথ্য আমাদের জীবন, অর্থনীতি এবং সর্বোপরি পৃথিবীর জন্য যথেষ্ট উদ্বেগের। ডাব্লিউএমও-র রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৪ এর তাপমাত্রার পরিবর্তনের পিছনে শৈত্য প্রবাহ লা নিনা থেকে উষ্ণ প্রবাহ এল নিনোতে পরিবর্তনই দায়ি। যদিও গবেষকদের মতে হাওয়ার উষ্ণতা বৃদ্ধি আসলে একটা বড় পরিবর্তনের অংশ মাত্র।

আরো পড়ুন
নাইট্রোজেন গ্যাস দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

নাইট্রোজেন গ্যাস দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

 

 

এই উষ্ণায়নের প্রভাব পড়ছে সামুদ্রিক ইকোসিস্টেমে।

এর ফলে সমুদ্রের জীববৈচিত্র হ্রাস পাচ্ছে। সমুদ্রের কার্বন শোষণের ক্ষমতা কমছে। একই ভাবে তাপমাত্রা বাড়ার জন্য সামুদ্রিক ঝড় তৈরি হচ্ছে। পানিতে অ্যাসিড বেড়ে যাওয়ার কারণে মাছেদের ক্ষতি হচ্ছে, যার প্রভাব পড়ছে মৎস্যজীবীদের ওপর। উপরন্তু, সমুদ্র-স্তর বেড়ে যাওয়ার কারণে উপকূলবর্তী অঞ্চলের স্বাভাবিক জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

পরিবেশ-বান্ধব জ্বালানি কি পারবে পৃথিবীকে রক্ষা করতে?

২০২৩-এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী বিশ্বের সামগ্রিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৩০ শতাংশ সৌর ও বায়ু শক্তির সাহায্যে তৈরি হয়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের কথা বললেও সে দেশে সৌরশক্তির ব্যবহার বাড়ছে। গত বছরের তথ্য অনুযায়ী সৌরশক্তি দিয়ে দেশের সাত শতাংশ বিদ্যুৎ প্রয়োজন মিটতে পারে। পরিবেশ বান্ধব শক্তি ব্যবহারের ব্যয় বিগত কয়েক বছরে অনেক কমেছে। তা সত্ত্বেও চিন্তিত বিশ্বের বৈজ্ঞানিকরা। 

আরো পড়ুন
ট্রান্সজেন্ডার নিয়ে ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের ওপর আদালতের স্থগিতাদেশ

ট্রান্সজেন্ডার নিয়ে ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের ওপর আদালতের স্থগিতাদেশ

 

ডাব্লিউএমও-এর রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পরে যুক্তরাজ্যের জাতীয় আবহাওয়া ও জলবায়ু দপ্তরের প্রধান বিজ্ঞানী স্টিফেন বেলচার জানিয়েছেন, ‘পৃথিবীর শরীর ভাল নেই।’ তিনি আরো জানান এই পরিস্থিতিতেই সাবধান না হলে বন্যা বা খরার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্ভবনা ক্রমশই বাড়বে।

মন্তব্য

নাইট্রোজেন গ্যাস দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
নাইট্রোজেন গ্যাস দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর
ছবিসূত্র : এএফপি

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লুইসিয়ানা রাজ্যে একজন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বন্দিকে নাইট্রোজেন গ্যাস ব্যবহার করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার এই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। ১৯৯৬ সালে মেরি ‘মলি’ এলিয়টকে অপহরণ, ধর্ষণ এবং হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত ৪৬ বছর বয়সী জেসি হফম্যানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। যা ১৫ বছরের বিরতির পর লুইসিয়ানায় প্রথম।

 

এর আগে শুধু প্রতিবেশী আলাবামায় নাইট্রোজেন গ্যাস ব্যবহৃত হত। তবে জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞরা নাইট্রোজেন গ্যাস প্রয়োগে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার বিষয়টি এক ধরণের নির্যাতনের সঙ্গে তুলনা করেন। হফম্যানের আইনজীবীরা তার মৃত্যুদণ্ড স্থগিত করার জন্য সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিলেন, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি।

আরো পড়ুন
ট্রান্সজেন্ডার নিয়ে ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের ওপর আদালতের স্থগিতাদেশ

ট্রান্সজেন্ডার নিয়ে ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের ওপর আদালতের স্থগিতাদেশ

 

স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিবৃতিতে হফম্যানের দুই আইনজীবী মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার কথা স্বীকার করেছেন।

তবে রাজ্য কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে তা নিশ্চিত করেনি।

আইনজীবী সেসেলিয়া ক্যাপেল বলেন, ‘রাষ্ট্র একটি নতুন প্রোটোকল জারি করে এবং মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের তারিখ নির্ধারণ করে তাকে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে সক্ষম হয়েছে। সতর্কতার সঙ্গে যাতে বিচারিক পর্যালোচনা রোধ করা যায় এবং প্রক্রিয়াটি গোপন রাখা যায়।’

এই সপ্তাহে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আরো তিনটি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার কথা রয়েছে।

যার মধ্যে একটি বুধবার অ্যারিজোনায় এবং আরো দুটি বৃহস্পতিবার ফ্লোরিডা এবং ওকলাহোমাতে কার্যকর করার কথা রয়েছে। তিনটিই প্রাণঘাতী ইনজেকশনের মাধ্যমে কার্যকর করা হবে। 

বছরের শুরু থেকে দেশে আরো ছয়টি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি আলাবামায় নাইট্রোজেন ইনহেলেশনের মাধ্যমে এবং একটি দক্ষিণ ক্যারোলিনায় ফায়ারিং স্কোয়াডের মাধ্যমে। বাকী সবগুলো প্রাণঘাতী ইনজেকশনের মাধ্যমে কার্যকর করা হয়।

 

২০২৪ সালের ২৫ জানুয়ারি আলাবামায় কেনেথ স্মিথের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল, যা ছিল বিশ্বের প্রথম নাইট্রোজেন ইনহেলেশনের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড। এ ঘটনায় তখন ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছিল। এরপর থেকে রাজ্যে আরো তিনটি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।

 মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি রাজ্যের মধ্যে ২৩টিতে মৃত্যুদণ্ড বাতিল করা হয়েছে। অন্য ছয়টি রাজ্যে (অ্যারিজোনা, ক্যালিফোর্নিয়া, ওহিও, ওরেগন, পেনসিলভানিয়া এবং টেনেসি) মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ওপর স্থগিতাদেশ রয়েছে। 

সূত্র : এএফপি

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ