ঢাকা, বুধবার ০৯ এপ্রিল ২০২৫
২৬ চৈত্র ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৬

ঢাকা, বুধবার ০৯ এপ্রিল ২০২৫
২৬ চৈত্র ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৬

ভুলবশত সালভাদরে পাঠানো ব্যক্তিকে যুক্তরাষ্ট্রে ফেরাতে আদালতের নির্দেশ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ভুলবশত সালভাদরে পাঠানো ব্যক্তিকে যুক্তরাষ্ট্রে ফেরাতে আদালতের নির্দেশ
কিলমার আব্রেগো গার্সিয়া। ছবি : সংগৃহীত

একজন মার্কিন ফেডারেল বিচারক শুক্রবার একজন সালভাদরান অভিবাসীকে যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। ওই ব্যক্তিকে গত মাসে ভুল করে এল সালভাদরে একটি কুখ্যাত কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। ওয়াশিংটন থেকে বাংলাদেশ সময় শনিবার এএফপি এ খবর জানিয়েছে।

১৫ মার্চ ট্রাম্প প্রশাসন একদল অবৈধ অভিবাসীকে এল সালভাদরে পাঠায়, যাদের মধ্যে ছিলেন পূর্বাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য মেরিল্যান্ডে বসবাসকারী ২৯ বছর বয়সী কিলমার আব্রেগো গার্সিয়া।

বিচার বিভাগের আইনজীবীরা আদালতে দায়েরকৃত নথিতে স্বীকার করেছেন, আব্রেগো গার্সিয়া এক মার্কিন নাগরিককে বিয়ে করেছেন। তাকে ‘প্রশাসনিক ত্রুটির’ কারণে নির্বাসিত করা হয়েছিল।

জরুরি আদালতের শুনানিতে শুক্রবার ফেডারেল বিচারক পলা জিনিস বলেন, আব্রেগো গার্সিয়াকে গত ১২ মার্চ ‘আইনি ভিত্তি ছাড়াই’ হেফাজতে নেওয়া হয়েছিল এবং তিন দিন পর ‘কোনো প্রক্রিয়া বা আইনি যুক্তি ছাড়াই’ তাকে নির্বাসিত করা হয়েছিল। এ সময় তিনি আগামী ৭ এপ্রিল স্থানীয় সময় রাত ১১ টা ৫৯ মিনিটের মধ্যে তাকে যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দেন।

বিচারক হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ ও অন্যান্য সংস্থাগুলোকে দেওয়া তার আদেশে বলেছেন, এল সালভাদরে তার অব্যাহত উপস্থিতি, স্পষ্টতই তার অপূরণীয় ক্ষতি।

এদিকে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট এক্সে এক পোস্টে বিচারকের রায়ের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি এল সালভাদরার প্রেসিডেন্ট নাইব বুকেলের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আমরা বিচারককে প্রেসিডেন্ট নায়েব বুকেলের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিচ্ছি। কারণ আমরা জানি না, এল সালভাদর দেশের ওপর বিচারকের এখতিয়ার বা কর্তৃত্ব রয়েছে।

অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কঠোর ব্যবস্থার অংশ হিসেবে গত ১৫ মার্চ তিনটি বিমানে করে অবৈধ অভিবাসীদের এল সালভাদরে পাঠানো হয়েছিল। ট্রাম্প প্রশাসনের অভিযোগ, বেশির ভাগ নির্বাসিত ব্যক্তি ভেনিজুয়েলার গ্যাং ট্রেন ডি আরাগুয়ার সদস্য এবং তাদের সংক্ষিপ্ত বহিষ্কারকে ন্যায্যতা দেওয়ার জন্য তারা অল্প পরিচিত ১৭৯৮ এলিয়েন শত্রু আইন প্রয়োগ করেছে।

অন্যদিকে বহিষ্কৃত অভিবাসীদের বেশ কয়েকজনের আইনজীবী বলেছেন, তাদের মক্কেলরা ট্রেন ডি আরাগুয়ার সদস্য ছিলেন না। তারা কোনো অপরাধও করেননি এবং মূলত তাদের ট্যাটুর কারণেই তাদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল। 

আব্রেগো গার্সিয়া ২০১৯ সাল থেকে সুরক্ষিত আইনি মর্যাদায় যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছিলেন।

তখন একজন বিচারক রায় দিয়েছিলেন, তাকে বহিষ্কার করা উচিত নয়। কারণ তাকে এল সালভাদরে ক্ষতিগ্রস্থ করা হতে পারে।

অপ্রকাশিত প্রমাণের বরাত দিয়ে হোয়াইট হাউস এই সপ্তাহের শুরুতে জোর দিয়ে বলেছিল, আব্রেগো গার্সিয়া সালভাদরান গ্যাং এমএস-১৩-এর সদস্য ছিলেন।

হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট বলেন, ‘প্রশাসনের অবস্থান হলো, যে ব্যক্তিকে এল সালভাদরে নির্বাসিত করা হয়েছিল, সে নৃশংস ও নিষ্ঠুর এমএস-১৩ গ্যাংয়ের সদস্য ছিল।’

আরেক ফেডারেল বিচারক জেমস বোসবার্গ ট্রাম্প প্রশাসনকে এলিয়েন এনিমিজ অ্যাক্টের অধীনে আরো নির্বাসন কার্যকর করতে নিষেধ করেছেন, যা পূর্বে শুধু ১৮১২ সালের যুদ্ধ, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত হয়েছিল।

ট্রাম্প প্রশাসন এল সালভাদরের কারাগারে অভিযুক্ত গ্যাং সদস্যদের শিকলবদ্ধ ও মাথা ন্যাড়া করার ছবি ব্যবহার করেছে, যা অবৈধ অভিবাসন দমনে তাদের কঠোর পদক্ষেপের প্রমাণ হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

আমেরিকা না ছাড়লে অবৈধ অভিবাসীদের দৈনিক ৯৯৮ ডলার জরিমানা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
আমেরিকা না ছাড়লে অবৈধ অভিবাসীদের দৈনিক ৯৯৮ ডলার জরিমানা
ছবিসূত্র : এএফপি

ট্রাম্প প্রশাসনের নির্বাসন আদেশের পরও অবৈধ অভিবাসীদের কেউ আমেরিকায় থাকলে প্রতিদিন তাকে ৯৯৮ ডলার পর্যন্ত জরিমানা করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। জরিমানার অর্থ না দিলে বাজেয়াপ্ত করা হবে সম্পত্তি। নথি বিশ্লেষণের পর বার্তা সংস্থা রয়টার্স বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে বলে এক প্রতিবেদেন জানানো হয়েছে।

১৯৯৬ সালের একটি আইনে এই জরিমানার বিধান আছে।

২০১৮ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে প্রথমবারের মতো কার্যকর করা হয়েছিল এ আইন। ট্রাম্প প্রশাসন পাঁচ বছর পর্যন্ত জরিমানা প্রয়োগের পরিকল্পনা করছে, যার ফলে ১ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি জরিমানা হতে পারে। যার ফলে ১ মিলিয়ন ডলারের বেশি জরিমানা হতে পারে।

ট্রাম্প প্রশাসনের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে জানিয়েছেন, ট্রাম্প প্রশাসন পাঁচ বছর পর্যন্ত জরিমানা প্রয়োগের পরিকল্পনা করছে, যার ফলে ১ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি জরিমানা হতে পারে।

রয়টার্স কর্তৃক পর্যালোচনা করা সরকারি ইমেল অনুসারে, ট্রাম্প প্রশাসন জরিমানা পরিশোধ না করা অভিবাসীদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার কথাও বিবেচনা করছে।

রয়টার্সের প্রশ্নের জবাবে মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের মুখপাত্র ট্রিসিয়া ম্যাকলাফলিন এক বিবৃতিতে বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাসকারী অভিবাসীদের ‘স্ব-নির্বাসন এবং এখনই দেশ ত্যাগ করতে’ সিবিপি ওয়ান নামে একটি মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করা উচিত।’

তিনি আরো বলেন, ‘যদি তারা তা না করে, তাহলে তাদের পরিণতি ভালো হবে না। এর মধ্যে রয়েছে, চূড়ান্ত নির্বাসন আদেশের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও অবস্থান করা প্রতিটি দিনের জন্য প্রতিদিন ৯৯৮ ডলার জরিমানার মুখোমুখি হবেন।

রয়টার্সের পর্যালোচনা করা ইমেলগুলো থেকে দেখা গেছে, হোয়াইট হাউস মার্কিন কাস্টমস এবং সীমান্ত সুরক্ষাকে জরিমানা, অর্থ প্রদান না করা অভিবাসীদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্তকরণ এবং তাদের সম্পদ বিক্রির বিষয়টি পরিচালনা করার জন্য চাপ দিয়েছে।
একটি ইমেল আরো বলা হয়েছে, বিচার বিভাগের জন্য আরেকটি বিকল্প হতে পারে নাগরিক সম্পদ বাজেয়াপ্তকরণ। 

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানুয়ারিতে ক্ষমতা গ্রহণের পর ব্যাপকভাবে অভিবাসন দমন শুরু করেন। প্রায় ১৪ লাখ অভিবাসীকে উদ্দেশ করে পরিকল্পিত জরিমানার প্রস্তাব আনা হয়েছে।

সূত্র : রয়টার্স
 

মন্তব্য

চীনে নার্সিংহোমে অগ্নিকাণ্ড, নিহত ২০

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
চীনে নার্সিংহোমে অগ্নিকাণ্ড, নিহত ২০
ছবিসূত্র : এএফপি

উত্তর চীনের হেবেই প্রদেশের একটি নার্সিংহোমে আগুন লেগে ২০ জন নিহত হয়েছেন। বেইজিংয়ের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া বুধবার জানিয়েছে এ খবর জানিয়েছে।  

এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানী বেইজিং থেকে প্রায় ১৮০ কিলোমিটার (১১২ মাইল) উত্তর-পূর্বে লংহুয়া কাউন্টির একটি নার্সিংহোমে মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে আগুন লাগে। সিনহুয়া জানিয়েছে, বুধবার ভোর ৩ টা নাগাদ বিশ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, ‘নার্সিংহোমে থাকা অন্যান্য বয়স্ক ব্যক্তিদের আরো পর্যবেক্ষণ এবং চিকিৎসার জন্য নিকটবর্তী হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।’ আগুন লাগার কারণ তদন্তাধীন রয়েছে বলে জানা গেছে।

কাউন্টি সরকার জানিয়েছে, নার্সিংহোমে আগুন লাগার জন্য দায়ি একজন ব্যক্তিকে পুলিশ আটক করেছে। ভবন নির্মাণের নিয়মে শিথিলতা এবং কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে প্রায়ই আবহেলার কারণে চীনে মারাত্মক অগ্নিকাণ্ড তুলনামূলকভাবে সাধারণ।

গত জানুয়ারিতে বেইজিংয়ের উত্তর-পশ্চিমে ঝাংজিয়াকো শহরের একটি সবজির বাজারে আগুন লেগে আটজন নিহত এবং ১৫ জন আহত হন। এর এক মাস আগে গত বছর পূর্ব চীনের রংচেং শহরে একটি নির্মাণস্থলে আগুন লেগে নয়জন মারা যান।

সূত্র : এএফপি
 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

আফগান শরণার্থীদের দেশ ছাড়তে বাধ্য করছে পাকিস্তান

ডয়চে ভেলে
ডয়চে ভেলে
শেয়ার
আফগান শরণার্থীদের দেশ ছাড়তে বাধ্য করছে পাকিস্তান
ছবিসূত্র : এএফপি

৩১ মার্চের মধ্যে অবৈধ আফগান নাগরিকদের দেশ ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছিল পাকিস্তান। বলপ্রোয়গ করে তাদের সীমান্ত পার করানো হচ্ছে বলে অভিযোগ। পাকিস্তানের বক্তব্য, আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতায় আসার পর প্রায় ৩০ লাখ আফগান শরণার্থী পাকিস্তানে আশ্রয় নিয়েছিলেন। ২০২৩ সাল থেকে ওই শরণার্থীদের আফগানিস্তানে পাঠানোর অভিযান শুরু করেছে পাকিস্তান।

এর আগেও রীতিমতো বলপ্রয়োগ করে বহু আফগানকে দেশে পাঠানো হয়েছিল। অনিচ্ছুকদের ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল।

সম্প্রতি ইসলামাবাদ জানিয়েছিল, ৩১ মার্চের মধ্যে সকল অবৈধ শরণার্থীকে দেশ ছাড়তে হবে। ওই তারিখ পেরিয়ে যাওয়ায় প্রশাসন নতুন করে অভিযান শুরু করেছে।

আফগান সিটিজেন কার্ড

পাকিস্তানে আশ্রয় নেওয়া প্রায় আট লাখ আফগান নাগরিককে একটি কার্ড দিয়েছিল দেশের প্রশাসন। এই কার্ডটিকে বলা হয় আফগান সিটিজেন কার্ড বা এসিসি। এই আট লাখ মানুষকে দেশ ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে পাকিস্তান। তারা স্বেচ্ছায় না গেলে আফগানিস্তানে তাদের জোর করে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, গত নয় দিনে অন্তত আট হাজার ৯০৬ জনকে  করেছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের প্রশাসন জানিয়েছে, নতুন করে অভিযান শুরু হয়েছে। অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের দেশ থেকে তাড়ানোই হলো এই অভিযানের মূল উদ্দেশ্য।

মানবাধিকার লঙ্ঘন

গত ১৮ মাসে পাকিস্তান ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন অন্তত আট লাখ ৪৫ হাজার আফগান। গোটা পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছে আফগানিস্তানের তালেবান সরকার।

পাকিস্তান যেভাবে আফগানদের দেশ ছাড়তে বাধ্য করছে, তার নিন্দা করেছে তালেবান। বলা হয়েছে, শরণার্থীদের সম্পত্তি, অর্থ নিয়ে আসার সুযোগটুকুও দেওয়া হচ্ছে না।

সংবাদসংস্থার কাছে বহু আফগান অভিযোগ করেছেন, পাকিস্তানের প্রশাসন তাদের বাড়ি ঘিরে ফেলছে। বাড়ি ছাড়ার সময় প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পর্যন্ত নিতে দেওয়া হচ্ছে না। কার্যত এক কাপড়ে তাদের ঘর ছাড়তে হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত কয়েকবছরে কাবুলের সঙ্গে ইসলামাবাদের সম্পর্ক ক্রমশ খারাপ হয়েছে। ইসলামাবাদের অভিযোগ, তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান তৈরির পিছনে আফগানিস্তানের তালেবানদের মদত আছে। এই দলটি পাকিস্তানে একের পর এক বিস্ফোরণ ঘটাচ্ছে। আফগানিস্তানের তালেবানদের এই দলটির ওপর আর কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই বলে অভিযোগ করেছে পাকিস্তান। অন্যদিকে, আফগান নাগরিকদের সঙ্গে পাকিস্তানের ব্যবহার নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে বিরক্ত কাবুল। গত কয়েকদিনে দুই দেশের সম্পর্ক আরো খারাপ হয়েছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।

মন্তব্য

সুদানে মার্কিন সহায়তা বন্ধে কমলো স্বাস্থ্যসেবা, শিশুসহ প্রাণ গেল ৮ রোগীর

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
সুদানে মার্কিন সহায়তা বন্ধে কমলো স্বাস্থ্যসেবা, শিশুসহ প্রাণ গেল ৮ রোগীর
ছবিসূত্র : এএফপি

কলেরার চিকিৎসার জন্য তিন ঘন্টা হেঁটেও চিকিৎসা না পেয়ে দক্ষিণ সুদানে আটজন মারা গেছেন, তাদের মধ্যে পাঁচ শিশুও রয়েছে। আজ বুধবার যুক্তরাজ্যভিত্তিক দাতব্য সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন এই খবর জানিয়েছে। মার্কিন সাহায্য কর্তনের ফলে স্থানীয় স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ হয়ে গেছে। কলেরা রোগে আক্রান্ত হওয়ায় চিকিৎসা নিতে তিন ঘন্টা হেঁটে যাওয়ার সময় তাদের মৃত্যু হয়।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ জানুয়ারি ক্ষমতায় নেওয়ার পর খরচ কমানোর জন্য নানা ধরনের সহায়তা বন্ধ করতে শুরু করেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এমন পদক্ষেপ পর মৃত্যুর ঘটনা এই প্রথম। সেভ দ্য চিলড্রেন এই বছরের শুরু পর্যন্ত পূর্ব দক্ষিণ সুদানের জংলেই রাজ্যে ২৭টি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানকে সহায়তা করেছিল। কিন্তু মার্কিন সহায়তা কর্তনের ফলে সাতটি সম্পূর্ণভাবে এবং ২০টি আংশিকভাবে বন্ধ হয়ে যায় বলে সংস্থাটি এক বিবৃতিতে বলেছে।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, দক্ষিণ সুদানে মার্কিন অর্থায়নে পরিচালিত পরিবহন পরিষেবাও তহবিলের অভাবে বন্ধ হয়ে যায়, যার ফলে আটজন কলেরা রোগীকে নিকটতম স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে চিকিৎসার জন্য প্রায় ৪০° সেলসিয়াস (১০৪° ফারেনহাইট) তাপে হেঁটে যেতে হয়েছিল।

মৃত তিন শিশুর বয়স ৫ বছরের কম। 

দক্ষিণ সুদানে সেভ দ্য চিলড্রেনের কান্ট্রি ডিরেক্টর ক্রিস্টোফার নিয়ামান্ডি বলেছেন, ‘অন্যান্য দেশের ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের নেওয়া সিদ্ধান্তের ফলে মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যে শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটল, বিশ্বব্যাপী এ নিয়ে নৈতিক ক্ষোভ থাকা উচিত।’ 

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, ইউএসএআইডির ৯০ শতাংশেরও বেশি চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। এর ফলে আগামী বছরগুলোতে অপুষ্টি, এইডস, যক্ষ্মা, ম্যালেরিয়া এবং অন্যান্য রোগের কারণে লাখ লাখ মানুষ মৃত্যুর মুখে পড়তে পারে।

 

দক্ষিণ সুদানের প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষের এক তৃতীয়াংশেরও বেশি লোক সংঘাত বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, ফেব্রুয়ারিতে উত্তর-পূর্বে লড়াই শুরু হওয়ার পর দেশটি একটি নতুন গৃহযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যেতে পারে। গত অক্টোবরে কলেরা প্রাদুর্ভাব ঘোষণা করা হয়েছিল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, গত মাসে ২২ হাজারের বেশি রোগীর ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে, যার ফলে শত শত মানুষ মারা গেছে।

আরো পড়ুন
থাইল্যান্ডে রাজতন্ত্র অবমাননার জন্য মার্কিন শিক্ষক গ্রেপ্তার

থাইল্যান্ডে রাজতন্ত্র অবমাননার জন্য মার্কিন শিক্ষক গ্রেপ্তার

 

এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, সেভ দ্য চিলড্রেনের এই প্রতিবেদন করা মৃত্যুর তথ্য তাদের কাছে নেই।

একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘দক্ষিণ সুদানে জীবন রক্ষাকারী সহায়তা প্রদানকারী অনেক মার্কিন সরকারের কর্মসূচি সক্রিয় রয়েছে, তবে চিকিৎসা পরিষেবার জন্য দেওয়া সহায়তা দেশটির নেতারা ব্যবহার করছে।’

ওই মুখপাত্র আরো বলেছেন, আমরা আমেরিকান করদাতাদের এমন সহায়তা প্রদানের জন্য বলব না, যা দক্ষিণ সুদানের রাজনৈতিক নেতাদের দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং দুর্নীতিগ্রস্ত আচরণকে সমর্থন দেন, যদিও জরুরি জীবন রক্ষাকারী কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। দক্ষিণ সুদানের সরকারের বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে কিন্তু রাষ্ট্রপতি সালভা দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করেছে। দেশটিতে মানবিক সহায়তা প্রায়ই বেসরকারি সংস্থাগুলোর মাধ্যমে পরিচালিত হয়, মূলত দুর্নীতির উদ্বেগের কারণে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ত্রাণ হ্রাস ছাড়াও, অন্যান্য দাতারা ধীরে ধীরে অনুদান কমিয়ে দেওয়ার ফলে দক্ষিণ সুদানে মানবিক সহায়তার ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। কান্ট্রি ডিরেক্টর ক্রিস্টোফার নিয়ামান্ডি বলেছেন, সেভ দ্য চিলড্রেন ২০২৫ সালে দেশে ৩০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করার প্রত্যাশা করছে, যা গত বছর ৫০ মিলিয়ন ডলার ছিল।

সূত্র : রয়টার্স

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ