মিসর সফরে যাচ্ছেন ম্যাখোঁ, নজর মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির দিকে

  • আরববিশ্বে ফ্রান্সের ভূমিকা কী
  • বিশ্ব মঞ্চে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সুযোগ
  • ‘ফ্রান্স, ইইউ ও মিসরকে চাপ তৈরি করতে হবে’
ডয়চে ভেলে
ডয়চে ভেলে
শেয়ার
মিসর সফরে যাচ্ছেন ম্যাখোঁ, নজর মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির দিকে
প্যারিসের এলিসি প্রাসাদে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ (ডানে) ও মিসরীয় প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাতেহ আল-সিসি। ফাইল ছবি : এএফপি

মিসর সফরে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে দুই দেশের ঐতিহাসিক ঘনিষ্ঠ সম্পর্ককে কাজে লাগাতে চান। অন্যদিকে অ্যাক্টিভিস্টদের চাওয়া, কায়রোতে ম্যাখোঁ মানবাধিকারের পক্ষে কথা বলবেন।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ রবিবার তিন দিনের কায়রো সফরে যাচ্ছেন। মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাতেহ আল-সিসির সঙ্গে নানা ইস্যুতে বৈঠক করবেন তিনি।

২০১৭ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে ১১ বার কায়রো অথবা প্যারিসে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসেছেন এই দুই নেতা। তবে এবারের সফরকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।

ফরাসি প্রেসিডেন্টের দপ্তর এলিসি প্যালেসের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, ‘সিরিয়া ও প্রতিবেশী দেশ লিবিয়া, সুদান ও ইসরায়েল—আমরা এই অঞ্চলের সংকট নিয়ে কথা বলব।’

আরববিশ্বের সঙ্গে সেতুবন্ধ হিসেবে কাজ করার দীর্ঘদিনের ভূমিকা রয়েছে ফ্রান্সের।

ফলে এবারও মধ্যপ্রাচ্যে চলমান সংঘাতের সমাধানে ভূমিকা রাখার আশা করছে ফ্রান্স। তবে অধিকারকর্মীরা মানবাধিকারের ক্ষেত্রে মিসরের ভয়াবহ ইতিহাস তুলে ধরার জন্যও ম্যাখোঁর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছেন।

এই সফরের আনুষ্ঠানিক লক্ষ্য অর্থনৈতিক সহযোগিতা। কিন্তু বাস্তবে সবার দৃষ্টি রয়েছে গাজার দিকে।

ইসরায়েল সম্প্রতি হামাসের সঙ্গে করা যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে হামলা করার পর ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় পাল্টা অভিযান শুরু করে। হামাসের হামলায় এক হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত ও দুই শতাধিক মানুষ জিম্মি হয়। জিম্মিদের কয়েকজন এখনো হামাসের হাতে আটক রয়েছেন। অন্যদিকে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের আক্রমণে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও কিছু আরব রাষ্ট্রও হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে।

এলিসি প্যালিসের মুখপাত্র জানিয়েছেন, ‘আমরা একটি যুদ্ধবিরতি ও যুদ্ধের সম্ভাব্য সমাপ্তি নিয়ে কথা বলব।’ পাশাপাশি ফ্রান্স ও মিসরের মধ্যে একটি কৌশলগত অংশীদারি জোরদার করার লক্ষ্যও ম্যাখোঁর রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

আরববিশ্বে ফ্রান্সের ভূমিকা কী?
সাবেক সাংবাদিক ও বর্তমানে রাজনৈতিক পরামর্শদাতা এইকে কনসিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ এল কেই মনে করেন, ইইউভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে মিসর ও আরববিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগে ফ্রান্স এগিয়ে রয়েছে।

ডিডব্লিউকে তিনি বলেন, ‘কয়েক দশক ধরে ফরাসি-মিসরীয় সম্পর্ক চমৎকার। অনেক ফরাসি কম্পানি মিসরে সক্রিয় এবং সেখানে তাদের কয়েক হাজার কর্মী রয়েছে। এ ছাড়া ২০১৫ সালে প্রথম দেশ হিসেবে ২৪টি রাফায়েল যুদ্ধবিমান কিনেছিল মিসর, যা অন্যান্য দেশে বিমান রপ্তানির পথ প্রশস্ত করেছিল।’ এখনো ফরাসি সামরিক সরঞ্জামের অন্যতম প্রধান আমদানিকারক দেশ মিসর।

এই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ফ্রান্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট শার্ল ডি গলের মধ্যপ্রাচ্যনীতির সঙ্গে সম্পর্কিত। ১৯৫৮ থেকে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকা এই জেনারেল মধ্যপ্রাচ্যে মধ্যপন্থী কৌশল অনুসরণ করেছিলেন। এই কৌশলের ফলে রাষ্ট্র হিসেবে ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়া হলেও সেটি নিঃশর্ত ছিল না। ডি গল ইসরায়েলের নিন্দা জানিয়েছিলেন এবং ১৯৬৭ সালের জুনে মিসরে হামলা চালিয়ে ছয় দিনের যুদ্ধ শুরু করার পর ইসরায়েলের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করেছিলেন। আরব রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে আচরণের ক্ষেত্রে ডি গল সতর্ক অবস্থান নিয়েছিলেন।

এল কেই ব্যাখ্যা করেন, ‘আরববিশ্বে, বিশেষ করে মিসরে ফ্রান্সকে অত্যন্ত সম্মান দিয়ে দেখার এটি আরেকটি কারণ।’

১৯৯৫ সাল থেকে এলিসি প্যালেসে প্রবেশ ও সংবাদ সংগ্রহের অনুমতি রয়েছে সাংবাদিক খালেদ সাদ জাঘলুলের। এই প্রবণতাটি তিনিও প্রত্যক্ষ করেছেন।

মিসরীয় পরামর্শদাতা জাঘলুল ডিডব্লিউকে বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট জ্যাক শিরাক, নিকোলাস সারকোজি, ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ ও এখন ইমানুয়েল ম্যাখোঁ—সবাই সপ্তাহে অন্তত একবার কায়রোর সঙ্গে পরামর্শ করেছেন। ১৯৭৯ সালে মিসর ও ইসরায়েলের মধ্যে স্বাক্ষরিত শান্তিচুক্তির পর থেকে কায়রোকে একটি গ্রহণযোগ্য অংশীদার হিসেবে দেখা হয়ে আসছে।’

সেই সময় মিসর ছিল প্রথম আরবদেশ, যারা তথাকথিত ক্যাম্প ডেভিড চুক্তির অংশ হিসেবে ইসরায়েলকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়।

অনিশ্চিত রাজনৈতিক সময়ে মিসরে ফরাসি রাষ্ট্রীয় সফর
লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ফাওয়াজ গার্গেসের কাছে আসন্ন সফরের সময়কালটাও গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নেতৃত্বে শূন্যতার সময়ে পশ্চিমা নেতা হিসেবে বিশ্ব মঞ্চে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সুযোগ রয়েছে ম্যাখোঁর। যুক্তরাষ্ট্র এখন অসংলগ্ন বলে মনে হচ্ছে। জোট সরকার গঠনের আলোচনার নিজেদের সুশৃঙ্খল করার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে জার্মানি। ইতালি ও যুক্তরাজ্যের মতো মধ্যপ্রাচ্যে ফ্রান্সের উপস্থিতিও কম।’

মিসর এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে। দেশটির জনসংখ্যা প্রায় ১১ কোটি এবং আফ্রিকা, এশিয়া ও ইউরোপের সংযোগস্থলে এর অবস্থান। গার্গেস বলেন, ‘মিসরে যা ঘটে তার সুদূরপ্রসারী পরিণতি রয়েছে। অভিবাসনের দিক থেকে দেশটি গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে অনেক শরণার্থীকে গ্রহণ করে দেশটি। লিবিয়ার মতো শরণার্থীরা (ইউরোপের দিকে) এগিয়ে যায় না। এমন একটি অঞ্চলে স্থিতিশীলতার আশ্রয়স্থল হিসেবে মিসরকে দেখা হয়, যে অঞ্চলে গৃহযুদ্ধ ও সক্রিয় সন্ত্রাসী গোষ্ঠী রয়েছে।’

সাংবাদিক জাঘলুল বলেন, মিসর সব আঞ্চলিক সংঘাতে মধ্যস্থতার ভূমিকা নেয়। তিনি আরো বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে বলা হয়, মিসর ছাড়া আপনি যুদ্ধ বা শান্তি স্থাপন করতে পারবেন না, আরব রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে এই জাতি একটি অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।’

‘ফ্রান্স, ইইউ ও মিসরকে চাপ তৈরি করতে হবে’
মার্চের শুরুতে আরব লীগের ২২টি সদস্য রাষ্ট্র মিসরের রাজধানীতে বৈঠকে বসে। পাঁচ থেকে সাত বছরের মধ্যে গাজা পুনর্নির্মাণের পরিকল্পনায় একমত হয় দেশগুলো। একমত হওয়া অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে বাসিন্দাদের গাজাতেই থাকতে দেওয়া এবং পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে দিয়ে গাজা পরিচালিত করার সিদ্ধান্তও ছিল।

এই প্রস্তাবটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফিলিস্তিনিদের মিসর ও জর্দানে স্থানান্তরিত করার পরিকল্পনার সম্পূর্ণ বিপরীত।

এলিসির মুখপাত্র জানান, ‘আরব পরিকল্পনা আলোচনার জন্য একটি ভালো ভিত্তি, তবে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা ও গাজার ভবিষ্যৎ সরকার গঠনের ক্ষেত্রে এটি সম্প্রসারিত করা প্রয়োজন।’

তিনি আরো বলেন, এই সফরের ফলাফল পরবর্তীতে ওয়াশিংটনের কাছে উপস্থাপন করা হবে।

ফ্রান্স ও সৌদি আরবও এই জুনে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের ওপর একটি সম্মেলনের পরিকল্পনা করছে। সাদ জঘলুল আশা করেন, ম্যাখোঁর এই সফর ফলপ্রসূ হবে। তিনি বলেন, ‘যুদ্ধের অবসান ঘটাতে ফ্রান্স, ইইউ ও মিসরকে অবশ্যই চাপ তৈরি করতে হবে।’

এদিকে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ফ্রান্সকে মিসরের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ককে ভিন্নভাবে ব্যবহার করার আহ্বান জানাচ্ছে। আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থাটি ‘মানবাধিকার সংকট’ এবং দেশটির ‘বিরোধী রাজনীতিবিদ ও সাংবাদিকদের ওপর নিয়মতান্ত্রিক দমন’ সম্পর্কে সতর্ক করেছে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মিসর প্রতিনিধি লেনা কোলেট ডিডব্লিউকে বলেন, ‘চূড়ান্ত ঘোষণায় ম্যাখোঁর স্পষ্টভাবে মানবাধিকারের কথা উল্লেখ করা উচিত, রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দাবি করা উচিত এবং এই আগস্টে সংসদীয় নির্বাচন অবাধ ও গণতান্ত্রিকভাবে অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত।’

এলিসির সূত্র জানিয়েছে, সফরে মানবাধিকারের বিষয়টিও ‘উল্লেখ’ করা হবে।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ওয়াকফ আইন নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে বিক্ষোভে সহিংসতা, ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ওয়াকফ আইন নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে বিক্ষোভে সহিংসতা, ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ
ছবিসূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

ভারতে সম্প্রতি পাস হওয়া ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছে নানা শহরে। পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলায় বুধবার বিক্ষোভ থেকে আবারও সহিংসতার পাওয়া গেছে। গত মঙ্গলবারও ওই জেলার রঘুনাথপুরে সহিংসতা ঘটেছিল। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত চলা ওই সহিংসতায় পুলিশের বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়।

এ ছাড়া ভাঙচুর চালানো হয় কিছু আবাসিক ভবন ও দোকানে।

মুর্শিদাবাদ জেলার দুটি থানা এলাকায় পাঁচ জনের বেশি জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ওই এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। স্থানীয় সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, সুতির অজগরপাড়া এলাকায় বুধবার সকালে ১২ নম্বর জাতীয় মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ শুরু হয়।

অবরোধের ফলে জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। এসময় বিক্ষোকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। তারপরেই জনতার সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ শুরু হয়। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়া হয় বিক্ষোভ থেকে।
পুলিশ একাধিক কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়।

প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে ভারতের পার্লামেন্ট উত্তপ্ত তর্কবিতর্কের পর মুসলিম ওয়াকফ (সংশোধনী) বিলটি পাস হয় এবং ৫ই এপ্রিল শনিবার দেশটির রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু বিলটিতে সম্মতি দেওয়ায় এটি এখন ভারতের একটি আইনে পরিণত হয়েছে। তবে এই বিলটিকে চ্যালেঞ্জ করে অন্তত চারটি পিটিশন সুপ্রিম কোর্টে দাখিল করা হয় যেগুলো করেছেন এআইএমআইএম, কংগ্রেস, আম আদমি পার্টি বা আরজেডি-র মতো দলের নেতারা এবং অন্তত একটি সিভিল রাইটস গোষ্ঠী। এ ছাড়া মণিপুর, গুজরাত, তামিলনাড়ু, কর্ণাটক ও কলকাতাসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ হয়েছে।

এদিকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী উসকানিকে পা না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সবাইকে।

স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে, কয়েকদিন ধরেই ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে মুর্শিদাবাদের নানা জায়গায় বিক্ষোভ প্রদর্শন চলছিল। মঙ্গলবার বিকেল থেকে ওমরপুর মোড় থেকে ধুলিয়ান বাজার পর্যন্ত ১২ নম্বর জাতীয় মহাসড়কের নানা জায়গায় অবরোধ করেন মুসলিম ছাত্র ও যুব সংগঠনের বিক্ষোভকারীরা।
পুলিশ সেখানে গেলেই সংঘর্ষ শুরু হয়। রাত পর্যন্ত পুলিশ ওই এলাকার নানা রাস্তায় লাঠি নিয়ে বিক্ষোভকারীদের তাড়া করে।

এরপর পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এলাকায় পাঁচজনের বেশি মানুষের জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে। ভুয়া খবর বা গুজব যাতে না ছড়ায় তার জন্য ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ১১ই এপ্রিল শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পরিষেবা বন্ধ থাকবে।

রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এক বিবৃতিতে মঙ্গলবারের ঘটনার নিন্দা করে জানিয়ে বলেছেন, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর যে কোনো প্রচেষ্টাকে কঠোরভাবে দমন করা উচিত। অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের মুসলমান সমাজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা ও রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরি পুলিশের লাঠি চালানোর নিন্দা করেছেন।

সূত্র : বিবিসি বাংলা

মন্তব্য

আমেরিকা না ছাড়লে অবৈধ অভিবাসীদের দৈনিক ৯৯৮ ডলার জরিমানা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
আমেরিকা না ছাড়লে অবৈধ অভিবাসীদের দৈনিক ৯৯৮ ডলার জরিমানা
ছবিসূত্র : এএফপি

ট্রাম্প প্রশাসনের নির্বাসন আদেশের পরও অবৈধ অভিবাসীদের কেউ আমেরিকায় থাকলে প্রতিদিন তাকে ৯৯৮ ডলার পর্যন্ত জরিমানা করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। জরিমানার অর্থ না দিলে বাজেয়াপ্ত করা হবে সম্পত্তি। নথি বিশ্লেষণের পর বার্তা সংস্থা রয়টার্স বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে বলে এক প্রতিবেদেন জানানো হয়েছে।

১৯৯৬ সালের একটি আইনে এই জরিমানার বিধান আছে।

২০১৮ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে প্রথমবারের মতো কার্যকর করা হয়েছিল এ আইন। ট্রাম্প প্রশাসন পাঁচ বছর পর্যন্ত জরিমানা প্রয়োগের পরিকল্পনা করছে, যার ফলে ১ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি জরিমানা হতে পারে। যার ফলে ১ মিলিয়ন ডলারের বেশি জরিমানা হতে পারে।

ট্রাম্প প্রশাসনের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে জানিয়েছেন, ট্রাম্প প্রশাসন পাঁচ বছর পর্যন্ত জরিমানা প্রয়োগের পরিকল্পনা করছে, যার ফলে ১ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি জরিমানা হতে পারে।

রয়টার্স কর্তৃক পর্যালোচনা করা সরকারি ইমেল অনুসারে, ট্রাম্প প্রশাসন জরিমানা পরিশোধ না করা অভিবাসীদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার কথাও বিবেচনা করছে।

রয়টার্সের প্রশ্নের জবাবে মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের মুখপাত্র ট্রিসিয়া ম্যাকলাফলিন এক বিবৃতিতে বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাসকারী অভিবাসীদের ‘স্ব-নির্বাসন এবং এখনই দেশ ত্যাগ করতে’ সিবিপি ওয়ান নামে একটি মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করা উচিত।’

তিনি আরো বলেন, ‘যদি তারা তা না করে, তাহলে তাদের পরিণতি ভালো হবে না। এর মধ্যে রয়েছে, চূড়ান্ত নির্বাসন আদেশের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও অবস্থান করা প্রতিটি দিনের জন্য প্রতিদিন ৯৯৮ ডলার জরিমানার মুখোমুখি হবেন।

রয়টার্সের পর্যালোচনা করা ইমেলগুলো থেকে দেখা গেছে, হোয়াইট হাউস মার্কিন কাস্টমস এবং সীমান্ত সুরক্ষাকে জরিমানা, অর্থ প্রদান না করা অভিবাসীদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্তকরণ এবং তাদের সম্পদ বিক্রির বিষয়টি পরিচালনা করার জন্য চাপ দিয়েছে।
একটি ইমেল আরো বলা হয়েছে, বিচার বিভাগের জন্য আরেকটি বিকল্প হতে পারে নাগরিক সম্পদ বাজেয়াপ্তকরণ। 

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানুয়ারিতে ক্ষমতা গ্রহণের পর ব্যাপকভাবে অভিবাসন দমন শুরু করেন। প্রায় ১৪ লাখ অভিবাসীকে উদ্দেশ করে পরিকল্পিত জরিমানার প্রস্তাব আনা হয়েছে।

সূত্র : রয়টার্স
 

মন্তব্য

চীনে নার্সিংহোমে অগ্নিকাণ্ড, নিহত ২০

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
চীনে নার্সিংহোমে অগ্নিকাণ্ড, নিহত ২০
ছবিসূত্র : এএফপি

উত্তর চীনের হেবেই প্রদেশের একটি নার্সিংহোমে আগুন লেগে ২০ জন নিহত হয়েছেন। বেইজিংয়ের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া বুধবার জানিয়েছে এ খবর জানিয়েছে।  

এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানী বেইজিং থেকে প্রায় ১৮০ কিলোমিটার (১১২ মাইল) উত্তর-পূর্বে লংহুয়া কাউন্টির একটি নার্সিংহোমে মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে আগুন লাগে। সিনহুয়া জানিয়েছে, বুধবার ভোর ৩ টা নাগাদ বিশ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, ‘নার্সিংহোমে থাকা অন্যান্য বয়স্ক ব্যক্তিদের আরো পর্যবেক্ষণ এবং চিকিৎসার জন্য নিকটবর্তী হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।’ আগুন লাগার কারণ তদন্তাধীন রয়েছে বলে জানা গেছে।

কাউন্টি সরকার জানিয়েছে, নার্সিংহোমে আগুন লাগার জন্য দায়ি একজন ব্যক্তিকে পুলিশ আটক করেছে। ভবন নির্মাণের নিয়মে শিথিলতা এবং কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে প্রায়ই আবহেলার কারণে চীনে মারাত্মক অগ্নিকাণ্ড তুলনামূলকভাবে সাধারণ।

গত জানুয়ারিতে বেইজিংয়ের উত্তর-পশ্চিমে ঝাংজিয়াকো শহরের একটি সবজির বাজারে আগুন লেগে আটজন নিহত এবং ১৫ জন আহত হন। এর এক মাস আগে গত বছর পূর্ব চীনের রংচেং শহরে একটি নির্মাণস্থলে আগুন লেগে নয়জন মারা যান।

সূত্র : এএফপি
 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

আফগান শরণার্থীদের দেশ ছাড়তে বাধ্য করছে পাকিস্তান

ডয়চে ভেলে
ডয়চে ভেলে
শেয়ার
আফগান শরণার্থীদের দেশ ছাড়তে বাধ্য করছে পাকিস্তান
ছবিসূত্র : এএফপি

৩১ মার্চের মধ্যে অবৈধ আফগান নাগরিকদের দেশ ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছিল পাকিস্তান। বলপ্রোয়গ করে তাদের সীমান্ত পার করানো হচ্ছে বলে অভিযোগ। পাকিস্তানের বক্তব্য, আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতায় আসার পর প্রায় ৩০ লাখ আফগান শরণার্থী পাকিস্তানে আশ্রয় নিয়েছিলেন। ২০২৩ সাল থেকে ওই শরণার্থীদের আফগানিস্তানে পাঠানোর অভিযান শুরু করেছে পাকিস্তান।

এর আগেও রীতিমতো বলপ্রয়োগ করে বহু আফগানকে দেশে পাঠানো হয়েছিল। অনিচ্ছুকদের ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল।

সম্প্রতি ইসলামাবাদ জানিয়েছিল, ৩১ মার্চের মধ্যে সকল অবৈধ শরণার্থীকে দেশ ছাড়তে হবে। ওই তারিখ পেরিয়ে যাওয়ায় প্রশাসন নতুন করে অভিযান শুরু করেছে।

আফগান সিটিজেন কার্ড

পাকিস্তানে আশ্রয় নেওয়া প্রায় আট লাখ আফগান নাগরিককে একটি কার্ড দিয়েছিল দেশের প্রশাসন। এই কার্ডটিকে বলা হয় আফগান সিটিজেন কার্ড বা এসিসি। এই আট লাখ মানুষকে দেশ ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে পাকিস্তান। তারা স্বেচ্ছায় না গেলে আফগানিস্তানে তাদের জোর করে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, গত নয় দিনে অন্তত আট হাজার ৯০৬ জনকে  করেছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের প্রশাসন জানিয়েছে, নতুন করে অভিযান শুরু হয়েছে। অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের দেশ থেকে তাড়ানোই হলো এই অভিযানের মূল উদ্দেশ্য।

মানবাধিকার লঙ্ঘন

গত ১৮ মাসে পাকিস্তান ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন অন্তত আট লাখ ৪৫ হাজার আফগান। গোটা পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছে আফগানিস্তানের তালেবান সরকার।

পাকিস্তান যেভাবে আফগানদের দেশ ছাড়তে বাধ্য করছে, তার নিন্দা করেছে তালেবান। বলা হয়েছে, শরণার্থীদের সম্পত্তি, অর্থ নিয়ে আসার সুযোগটুকুও দেওয়া হচ্ছে না।

সংবাদসংস্থার কাছে বহু আফগান অভিযোগ করেছেন, পাকিস্তানের প্রশাসন তাদের বাড়ি ঘিরে ফেলছে। বাড়ি ছাড়ার সময় প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পর্যন্ত নিতে দেওয়া হচ্ছে না। কার্যত এক কাপড়ে তাদের ঘর ছাড়তে হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত কয়েকবছরে কাবুলের সঙ্গে ইসলামাবাদের সম্পর্ক ক্রমশ খারাপ হয়েছে। ইসলামাবাদের অভিযোগ, তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান তৈরির পিছনে আফগানিস্তানের তালেবানদের মদত আছে। এই দলটি পাকিস্তানে একের পর এক বিস্ফোরণ ঘটাচ্ছে। আফগানিস্তানের তালেবানদের এই দলটির ওপর আর কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই বলে অভিযোগ করেছে পাকিস্তান। অন্যদিকে, আফগান নাগরিকদের সঙ্গে পাকিস্তানের ব্যবহার নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে বিরক্ত কাবুল। গত কয়েকদিনে দুই দেশের সম্পর্ক আরো খারাপ হয়েছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ