<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের দাম নিয়ে মানুষ, বিশেষ করে নিম্নবিত্ত ও নির্দিষ্ট আয়ের মানুষ অনেকটা দিশাহারা। পরিবারের সদস্যদের মুখে ন্যূনতম আহার জোগানো কষ্টকর হয়ে পড়েছে। সরকার অনেক পণ্যের শুল্ক কমিয়েছে, কিন্তু বাজারে তারও কোনো প্রভাব পড়ছে না। এর প্রধান কারণ ব্যবসায়ীদের অযৌক্তিক মুনাফার লোভ। ডিমের দাম কমাতে সরকার সাড়ে চার কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেয়। আমদানি করা প্রতিটি ডিমের দাম পড়ে সাত টাকার মতো। তার পরও বাজারে ডিম বিক্রি হতে থাকে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা ডজন দরে। অর্থাৎ একটি ডিমের দাম প্রায় ১৬ টাকা। এই অবস্থায় সরকারের বিভিন্ন সংস্থা নড়েচড়ে বসে। ডিম উৎপাদক ও পাইকারি বিক্রেতাদের নিয়ে বসে। বাজার মনিটরিং জোরদার করে। তার ফলও ফলতে দেখা যায়। ফার্মগুলো সরাসরি পাইকারি বাজারে ডিম সরবরাহ শুরু করে। বিক্রেতারাও যৌক্তিক মুনাফার মধ্যে আসে। ৪০ টাকার কমে শনিবার ঢাকার বিভিন্ন বাজারে ডিম বিক্রি হয় ১৫০ টাকা ডজন দরে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাজার মনিটরিং জোরদার হলে যে বাজারে তার প্রভাব পড়ে, ডিমের বাজারই তা প্রমাণ করে। কিন্তু শুধু তো ডিম নয়, একটি সংসারে প্রতিদিন আরো অনেক খাদ্যপণ্যের প্রয়োজন হয়। প্রধান প্রয়োজন চালের। বাজারে চালের দাম একটু একটু করে বাড়ছেই। শুল্ক কমানোর পরও কমছে না চিনির দাম। কমছে না আলু-পেঁয়াজের দাম। আদা, রসুনের দামও বাড়তি। বন্যা ও বৃষ্টি কমে আসায় সবজির বাজারেও দাম কিছুটা কমতির দিকে, কিন্তু তার পরও তা বেশির ভাগ ক্রেতার নাগালের বাইরে। ভোক্তারা ক্রয়ের পরিমাণ অর্ধেক বা তার চেয়েও কমিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে, কিন্তু এই অবস্থায় মানুষের পক্ষে বেশিদিন চলা সম্ভব নয়। পাশাপাশি সরকারের প্রতি মানুষের ক্ষোভ বাড়তে থাকবে। এ কারণে গত শনিবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সংলাপের সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছেন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সাধারণ বিশ্লেষণেই দেখা যায়, আমাদের বাজারে কোনো ধরনের যুক্তি বা নীতি-নৈতিকতার বালাই নেই। কোনো কারণে বাজারে কোনো পণ্যের কিছুটা সংকট হলে অথবা অবৈধ মজুদের মাধ্যমে কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হলে লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বাড়তে থাকে। আর এ জন্য ব্যবসায়ীদের অজুহাতের অভাব হয় না। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, ডলারের মূল্যবৃদ্ধি</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আরো কত কি! কিন্তু কোন কারণে কতটা দাম বাড়ছে তার ব্যাখ্যা কেউ দেন না বা দিতে চান না। পবিত্র রমজান, ঈদ বা অন্য কোনো উৎসবের আগেও দেখা যায় প্রায় সব খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যায়। এর কারণ কী? অনেক ব্যবসায়ী রাস্তায় রাস্তায় চাঁদাবাজি, এমনকি বৃষ্টি, খরার মতো নানা অজুহাতও দিয়ে থাকেন। বাস্তবে দেখা যায়, কারওয়ান বাজারের পাইকারি দোকান থেকে কিনে ১০০ গজ দূরের খুচরা বাজারে নিয়ে দাম হাঁকা হয় দ্বিগুণের কাছাকাছি। আবার সবজির দাম বেশি হলেও কৃষক যে বেশি অর্থ পান, তা নয়। ঢাকার বাজারে বেগুনের দাম যখন দেড় শ টাকার বেশি, তখনো মানিকগঞ্জের কৃষক ৪০ থেকে ৫০ টাকার বেশি পান না। সব লাভ নিয়ে নেয় মধ্যস্বত্বভোগীরা। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা যথার্থই বলেছেন, ডিমসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের মূল্য অত্যধিক বৃদ্ধির জন্য প্রধানত দায়ী মধ্যস্বত্বভোগীরা। এই মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য কমাতে হবে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ভোক্তার স্বার্থ রক্ষা করার দায়িত্ব সরকারের। বাজার নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকে আরো তৎপর হতে হবে। বাজারে সরকারের হস্তক্ষেপ আরো বাড়াতে হবে।</span></span></span></span></p>