<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাঁশের বাঁশির সুমধুর সুর মুগ্ধ করে যে কাউকেই। বাঁশ দিয়ে শুধু বাঁশিই নয়, তৈরি হয় আরো নানা পণ্য। বাঁশের মতো বেত দিয়েও তৈরি হয় অনেক রকম জিনিস। বাঁশ ও বেতের তৈরি নান্দনিক এসব জিনিসপত্র গ্রামবাংলার অনেক পুরনো একটি শিল্প। এই শিল্প আমাদের নিজস্ব ঐতিহ্য। একসময় বাংলার ঘরে ঘরে তৈরি হতো বাঁশ ও বেতের পণ্য। বাঁশ ও বেত দিয়ে তৈরি হয় কুলা, চালুন, খাঁচা, মাচা, মই, চাঁটাই, ঢোল, গোলা, ওড়া, বাউনি, ঝুড়ি, ডুলা, মোড়া, মাছ ধরার চাঁই, মাথাল, সোফাসেট, বইপত্র রাখার র‌্যাকসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র। এ ছাড়া বাঁশ দিয়ে ঘরও তৈরি করা যায়। ১৮৩১ সালে তিতুমীর বাঁশ দিয়ে কেল্লা তৈরি করে বিখ্যাত হয়ে আছেন। মানুষের নিত্যদিনের ব্যবহার থেকে শুরু করে নানা কাজে ব্যবহৃত হয় এসব পণ্য। অনেকে এসব জিনিস বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যুগের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বাঁশ ও বেতের পণ্যের ব্যবহার এখন অনেক কমে গেছে। বাঁশ ও বেতের উৎপাদন কমে যাওয়ায় এসব সামগ্রী তৈরিতে খরচের পরিমাণও বেড়েছে। এতে এই শিল্পের মতো ধুঁকছে এর সঙ্গে জড়িত মানুষের জীবন। অনেকেই বাপ-দাদার আমলের পেশা ত্যাগ করে অন্য পেশা বেছে নিচ্ছেন। বিভিন্ন সংকটে ধীরে ধীরে চাপা পড়ছে এই শিল্পের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির ধারা। এখন প্লাস্টিকের তৈরি বিভিন্ন পণ্যের ব্যবহারই বেশি দেখা যায়। তবে আশার কথা হচ্ছে, দিন দিন শৌখিন মানুষের ঘরে বাঁশ ও বেতের তৈরি জিনিসের ব্যবহার বাড়ছে। মাছ ধরার পলো বা মাছ রাখার ঝুড়ি ব্যবহার কমলেও আলো ধরার সরঞ্জাম হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বেতের তৈরি ল্যাম্পশেড। শুধু বাড়ির অন্দরেই নয়, বিয়ের অনুষ্ঠান, রাস্তার সজ্জা, রেস্তোরাঁর ইন্টেরিয়র কিংবা ভেন্যু ডেকোরেশনে বেতের ঝুড়ি, পলো, চালনি ব্যবহৃত হচ্ছে আলোকসজ্জার অংশ হিসেবে। এ ছাড়া বিভিন্ন আকারে, বিভিন্ন ডিজাইনে নিত্যনতুন পেন্ডেন্ট ল্যাম্প বা ওয়াল লাইটেও বাড়ছে বেতের ব্যবহার। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাঁশ ও বেত শিল্প রক্ষায় পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধীনে নীলফামারীর ডোমারে নির্মাণ করা হয়েছে আঞ্চলিক বাঁশ গবেষণা কেন্দ্র ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। বিভিন্ন জেলার ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প করপোরেশন বাঁশ-বেতের শিল্পের আরো সম্প্রসারণের জন্য নানা উদ্যোগে নিচ্ছে। দেশীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে মেলার আয়োজন করে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করছে। বাংলার ঐতিহ্য বাঁশ ও বেতের সামগ্রী টিকিয়ে রাখতে এই শিল্পের সঙ্গে জড়িতদের আর্থিক সাহায্য করতে হবে।</span></span></span></span></p>