<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">পূর্বাঞ্চলে পানিতে বাংলাদেশকে ভাসিয়ে দিয়ে ভারত এখন আলোচনার কেন্দ্রে। ঠিক এই সময়ে দেশটি ফারাক্কার ১০৯টি গেট খুলে দিয়ে নতুন করে বাংলাদেশের মানুষের মনে ভয় ধরিয়ে দিয়েছে। শেখ হাসিনাকে ঘিরে উভয় দেশের রাজনীতির উত্তাপের মধ্যে নতুন করে ফারাক্কার বাঁধ খুলে পানি ছেড়ে দেওয়ায় দেশ দুটির সম্পর্কের বাঁধেও ফাটল ধরে কি না</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">—</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">তৈরি হচ্ছে এই সন্দেহ। বিভিন্ন গণমাধ্যমের বরাতে ভারত বলছে, বিহারের গঙ্গায় পানির স্তর অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার ফারাক্কা ব্যারাজের ১০৯টি গেটের সব খুলে দেওয়া হয়েছে। ফারাক্কা ব্যারাজে পানির স্তর বিপৎসীমার ৭২ ফুট অতিক্রম করেছে। এখন সেখানে পানির উচ্চতা ৭৬ ফুট রয়েছে বলে জানা গেছে। তবে ফারাক্কার গেট খোলার জন্য এখনই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়নি এবং নিয়ন্ত্রিতভাবে ১০৯টি গেট খোলার কারণে সামনেও বন্যা হবে কি না তা শিগগিরই বলা যাচ্ছে না।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এদিকে ভারত বাংলাদেশে বন্যা না হওয়া ও পানিপ্রবাহ না বাড়ার কথা বললেও এ দেশের মানুষের ভীতি কাটছে না। কারণ এরই মধ্যে পূর্বাঞ্চলে ত্রিপুরা, আসাম ও মেঘালয়ের বাড়তি পানির চাপে সিলেট থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত ব্যাপক বন্যা চলছে। এর ফলে দেশের নদ-নদীর পানি বেড়ে এখানে আকস্মিক বন্যা হয়েছে। মানুষ মারাত্মক বিপর্যয়ের মধ্যে রয়েছে। বন্যার ফলে বিপুল সম্পদের ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে এই ধারণা তৈরি হয়েছে যে ভারত ইচ্ছা করে পানি ছেড়ে দিয়ে এখানে বন্যা তৈরি করেছে। এমন ধারণার প্রেক্ষাপটে এ দেশের ভেতরেও ভারতের মতো বাঁধ দেওয়া যায় কি না, বাংলাদেশের মানুষের পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই দাবিও উঠেছে। বাঁধ ছেড়ে দিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে ডুবিয়ে দেওয়ার সমালোচনা যখন তুঙ্গে, তখন অবশ্য ভারত তা বিবৃতি দিয়ে অস্বীকার করেছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">জানা যায়, ফারাক্কা থেকে আসা পানি গঙ্গা হয়ে বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় পদ্মা নদীতে প্রবেশ করে পাংখা পয়েন্ট দিয়ে। গতকাল সোমবার সেখানে পানির স্তর বিপৎসীমার নিচেই ছিল বলে জানা গেছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এদিকে গতকাল রাতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ফারাক্কায় যেভাবে পানি ছাড়া হচ্ছে তা স্বাভাবিক এবং এ ক্ষেত্রে নিয়ম অনুযায়ী বাংলাদেশকে তথ্য জানানো হয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ভারতীয় সূত্র গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, ফারাক্কা ব্যারাজে গঙ্গার পানির স্তর বিপৎসীমা (৭২ ফুট) ছাড়িয়ে ৭৬ ফুটে উঠেছে। সূত্রটি জানিয়েছে, বন্যা হওয়া এড়াতে সব গেট একই উচ্চতায় খোলা হয়নি। তবে একই সঙ্গে সতর্ক করে দিয়ে বলা হয়েছে, বিহারে গঙ্গায় যদি পানির মাত্রা বাড়তে থাকে তাহলে আগামী কয়েক দিনে কী হবে, তা এখনই বলা সম্ভব নয়।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ভারতীয় সংবাদবিষয়ক ওয়েবসাইট নিউজ১৮ লিখেছে, প্রবল বৃষ্টি এবং বিহার ও ঝাড়খণ্ড থেকে পানি ছাড়ার কারণে ফারাক্কায় পানির চাপ বেড়েছে। পানির স্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় ১১ লাখ কিউসেক পানি ছাড়া হয়েছে। এই পানি ছাড়ার ফলে গঙ্গা থেকে পানি ঢুকছে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন গ্রামে ও মাঠে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">উজানে ফারাক্কা বাঁধ খুলে দেওয়ার খবরে বাংলাদেশে পদ্মাপারের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। গতকাল বিকেল থেকে অনেকেই বাড়িতে শুকনা খাবার মজুদ শুরু করেন। </span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">পাউবোর বক্তব্য</span></span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ফারাক্কা বাঁধের গেট খোলার বিষয়ে আমরা এখনো কিছু জানি না। তবে উজানে ভারতের গঙ্গা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে পানি স্থিতিশীল রয়েছে। আমাদের দেশেও গঙ্গা (পদ্মা) নদীর পানি বিভিন্ন পয়েন্টে স্বাভাবিক পর্যায়ে আছে। এখনো বিপৎসীমার অন্তত দুই মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি। আমরা সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত পানি বৃদ্ধির অস্বাভাবিক কোনো প্রবণতা দেখছি না। আগামী তিন থেকে চার দিন দেশে গঙ্গা-পদ্মার প্রবাহ স্থিতিশীল থাকতে পারে। আপাতত আমরা বন্যার ঝুঁকি দেখছি না গঙ্গা-পদ্মা সংলগ্ন এলাকায়।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">গতকাল রাতে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিবের দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, বছরের এই সময়ে ফারাক্কার বাঁধের গেট খোলাই থাকে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ভারতের গঙ্গা নদী পদ্মা নাম ধারণ করে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার পাংখা এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। পাউবোর উত্তরাঞ্চলীয় পানিবিজ্ঞান পরিমাপ বিভাগ গতকাল রাতে জানিয়েছে, পাংখা পয়েন্টে গতকাল সকাল ৬টা ও সকাল ৯টায় পানির উচ্চতা পাওয়া গেছে ২০.৪৮ মিটার। বিকেল ৩টায় তা হয় ২০.৫০ মিটার। পাংখায় পদ্মার পানির বিপৎসীমা ২২.০৫ মিটার। সেই হিসাবে তখনো বিৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল পদ্মা।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">অন্যদিকে রাজশাহী নগরের বড়কুটি পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানির বিপৎসীমা ১৮.৫ মিটার। সেখানে সোমবার সকাল ৬টায় পানির উচ্চতা পাওয়া গেছে ১৬.২৭ মিটার। বিকেল ৩টায় পানির উচ্চতা পাওয়া যায় ১৬.৩০ মিটার। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">রাজশাহীর শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে চারঘাট উপজেলার সারদায় পদ্মার পানির বিপৎসীমা ১৬.৯২ মিটার। গতকাল সকাল ৬টায় এখানে পানির উচ্চতা ১৫.৫ মিটার এবং বিকেল ৩টায় পানির উচ্চতা পাওয়া গেছে ১৫.৬ মিটার। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">গতকাল সন্ধ্যায় রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মখলেছুর রহমান বলেন, আগামী তিন দিন গঙ্গা-পদ্মা নদীর পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকবে। তবে যদি এভাবে পানি বাড়তেই থাকে তাহলে তিন দিন পর থেকে পরিস্থিতি খারাপের দিকে যেতে পারে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">উত্তরাঞ্চলীয় পানিবিজ্ঞান পরিমাপ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল করিম বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আমরা সাধারণত ১০ দিনের জন্য নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিই। আগামী ১০ দিনের মধ্যে পদ্মার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করার সম্ভাবনা কম। আরো দুই-তিন দিন পার হলে প্রকৃত অবস্থা বোঝা যাবে।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ভারতের বক্তব্য</span></span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল বলেছেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আমরা ফারাক্কা ব্যারাজের গেট খোলার বিষয়ে মিডিয়া রিপোর্ট দেখেছি, যার মাধ্যমে গঙ্গা/পদ্মা নদীর প্রাকৃতিক গতিপথে ১১ লাখ কিউসেক পানি প্রবাহিত হবে। এটি একটি স্বাভাবিক মৌসুমি ঘটনা, যা উজানে ভারি বৃষ্টিপাতের ফলে প্রবাহ বৃদ্ধির কারণে ঘটে। প্রটোকল অনুযায়ী তথ্য-উপাত্ত নিয়মিত এবং সময়মতো বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট যৌথ নদী কমিশন কর্মকর্তাদের অবগত করা হয়। এবারও তাই করা হয়েছে।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p> </p>