<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে পৃথক দুটি দুর্নীতির অভিযোগের অনুসন্ধান থেমে আছে। মূলত দুটি সরকারি সংস্থা এ বিষয়ে মতামত না দেওয়ায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কাজ শুরু করতে পারছে না। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৫০০ কোটি ডলারের বেশি আত্মসাৎ এবং নিজ ও পরিবারের পাঁচজনের নামে মোট ৬০ কাঠা প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এসব দুর্নীতির বিষয়ে মতামত চেয়ে অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে দুদক থেকে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মতামত চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। দুটি সংস্থারই মতামত না আসায় অভিযোগ দুটির অনুসন্ধান কার্যক্রম এখনো শুরু করতে পারেনি কমিশন। তবে দুদকের শিডিউলভুক্ত অপরাধের ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে আইনগত কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুদকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুর্নীতির পৃথক দুটি অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগ আইনানুগ হয়েছে, নাকি আইনবহির্ভুত হয়েছে সে বিষয়ে রাজউক এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মতামত চাওয়া হয়েছে। যেহেতু বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিদেশি অর্থায়ন রয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশের সঙ্গে অন্য দেশের সম্পর্কেরও বিষয় রয়েছে। এসব বিষয় বিবেচনা করে এই মতামত চাওয়া হয়েছে। মতামত পেলেই পৃথক দুটি অনুসন্ধান শুরু হওয়ার কথা।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এসব বিষয়ে দুদকের সাবেক মহাপরিচালক (আইন অনুবিভাগ) ও সাবেক জেলা জজ মো. মঈদুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দুদকের শিডিউলভুক্ত যেকোনো অপরাধের ক্ষেত্রে কমিশন চাইলেই এর অনুসন্ধান শুরু করতে পারে। শিডিউলভুক্ত অপরাধের অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে পূর্ব অনুমতি বা অন্য কোনো আইনি বাধা নেই। দুদক নিজেই ঠিক করবে দুর্নীতি হয়েছে কি না। এ ক্ষেত্রে দুদকের মতামত চাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত। অনুসন্ধানের স্বার্থে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চাওয়া যেতে পারে। এটা অনুসন্ধান না করার জন্য লোক-দেখানো কৌশল।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মতামতের বিষয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোকাব্বির হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দুদকের মতামত চেয়ে এমন কোনো চিঠি আমরা এখনো পাইনি। পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে দুদক চাইলেই অনুসন্ধান শুরু করতে পারে। এ ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের মতামতের প্রয়োজন নেই। আর যদি কোনো মতামত চাওয়া হয়, তবে ইআরডির মতামত চাওয়া যেতে পারে। দুদক তার আইন অনুসারে কাজ করবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. ছিদ্দিকুর রহমান সরকারের (অব.) সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। সংস্থাটির লিয়াঁজো অফিসার মাহফুজ রেজা এ সম্পর্কে কিছু জানেন না বলে জানান। এ ছাড়া সংস্থাটির পরিচালক মোহাম্মদ মনির হোসেন হাওলাদারের মুঠোফোনে বারবার কল করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p> <p style="text-align:left"><strong><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রূপপুর নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ </span></span></span></span></span></strong></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দেশের সবচেয়ে বড় ও ব্যয়বহুল প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৫০০ কোটি ডলারের বেশি আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। গত ১৭ আগস্ট প্রকাশিত গ্লোবাল ডিফেন্স কর্পের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়। প্রতিবেদনটি দুদকের নজরে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা-রোসাট্রম মালয়েশিয়ার একটি ব্যাংকের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে এ অর্থ আত্মসাতের সুযোগ করে দেয়। যাতে মধ্যস্থতা করেন ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিক। এতে আরো বলা হয়, রাশিয়ার সহযোগিতায় বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নির্মাণে খরচ ধরা হয় এক হাজার ২৬৫ কোটি ডলার। মালয়েশিয়ার একটি ব্যাংকের মাধ্যমে এই বাজেট থেকে ৫০০ কোটি ডলার প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা রোসাট্রম শেখ হাসিনাকে দেওয়ার সুযোগ করে দেয় বলে উল্লেখ করা হয়। এতে সহায়তা করেন নিজের ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিক। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আর এ মধ্যস্থতার বিনিময়ে পাচার করা অর্থের ৩০ শতাংশ টিউলিপসহ শেখ রেহানা ও পরিবারের কয়েকজন সদস্য পেয়েছেন বলেও উল্লেখ করা হয়। ২০০৯ সালে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রচ্ছায়া লিমিটেড</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> নামে একটি ভুয়া কম্পানি চালু করেন টিউলিপ সিদ্দিক, তাঁর মা শেখ রেহানা ও চাচা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক। যুক্তরাষ্ট্রেও জুমানা ইনভেস্টমেন্ট নামে একটি কম্পানি রয়েছে তাদের। এই কম্পানির মাধ্যমেই বিভিন্ন দেশের অফশোর অ্যাকাউন্টে অর্থপাচার করতেন শেখ হাসিনা। এমন অভিযোগও করা হয় ওই প্রতিবেদনে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অবশ্য এটি প্রকাশের পরদিন রুশ রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি করপোরেশন (রোসাট্রম) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে অভিযোগটি অস্বীকার করেছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গণমাধ্যমে প্রকাশিত/প্রচারিত অসত্য তথ্যগুলো রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পকে কলঙ্কিত করার একটি প্রয়াস হিসেবে বিবেচনা করছি। এই প্রকল্প বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ঘাটতি সমস্যার সমাধান এবং জনগণের কল্যাণের স্বার্থে বাস্তবায়িত হচ্ছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p> <p style="text-align:left"><strong><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রাজউকের প্লট বরাদ্দে দুর্নীতি</span></span></span></span></span></strong></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পরিকল্পিত শহর গড়তে পূর্বাচলকে বেছে নেয় রাজউক। আবেদনকারীদের মধ্যে লটারি করে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে সবার জন্যই একই পদ্ধতি নয়। সরকারি সিদ্ধান্তে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নামে প্লট বরাদ্দ দিতে আইনে একটি ধারা যোগ করা হয়। এই ধারা ব্যবহার করেই নানা সময়ে ইচ্ছামতো প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এমনকি এই তালিকায় ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের পাঁচ সদস্যও। প্রত্যেকের নামে ১০ কাঠা করে ছয়টি প্লট (মোট ৬০ কাঠা) বরাদ্দ দেওয়া হয়। রাজউকের তৃতীয় মডিফিকেশন ম্যাপে সামাজিক অবকাঠামোর জন্য জায়গাটি বরাদ্দ ছিল। তবে ২০১২ সালে চতুর্থ মডিফিকেশনে সেখানে প্লট তৈরি করা হয়। বালু নদীর পারে পূর্বাচল প্রকল্পের ডিপ্লোমেটিক জোনের ২৭ নম্বর সেক্টরে ২০৩ নম্বর রোডের একটি প্লট শেখ হাসিনাকে বরাদ্দ দেওয়া হয়। পাশেই শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববির প্লট। পরের প্লটটি নেন শেখ রেহানা। পরের দুটি প্লট শেখ হাসিনার দুই সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নামে। সর্বশেষ প্লটটি বরাদ্দ দেওয়া হয় শেখ রেহানার মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকের নামে। কাঠাপ্রতি তিন লাখ টাকা হিসাবে প্রতিটি প্লটের মূল্য নির্ধারণ করা হয় ৩০ লাখ টাকা। ৬০ কাঠার মোট মূল্য এক কোটি ৮০ লাখ টাকা পরিশোধ করেন শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। ২০২২ সালের ৩ আগস্ট প্লটগুলোর বরাদ্দপত্র ইস্যু করে রাজউক। বরাদ্দ দেওয়ার পরপরই প্রাচীর দিয়ে পুরো ৬০ কাঠা প্লটের চারপাশ ঘিরে ফেলা হয়। এসবের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছিলেন আনসার সদস্যরা।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এদিকে গত ২৪ অক্টোবর এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ শেখ হাসিনাসহ অন্যদের নামে প্লট বরাদ্দের অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দেন।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p> <p style="text-align:left"> </p> <p style="text-align:left"> </p>