ঢাকা, সোমবার ১৭ মার্চ ২০২৫
৩ চৈত্র ১৪৩১, ১৬ রমজান ১৪৪৬

ঢাকা, সোমবার ১৭ মার্চ ২০২৫
৩ চৈত্র ১৪৩১, ১৬ রমজান ১৪৪৬
অভিমত

আইন-শৃঙ্খলার অবনতির সুযোগ নিচ্ছে কেউ কেউ

  • ড. মুহাম্মদ উমর ফারুক
শেয়ার
আইন-শৃঙ্খলার অবনতির সুযোগ নিচ্ছে কেউ কেউ
মুহাম্মদ উমর ফারুক

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী ৫ আগস্ট-পরবর্তী আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এখনো সেভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। তাই বিভিন্ন ক্ষেত্রে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। ফলে দেশে বিভিন্ন ধরনের সহিংসতা  বাড়ছে। রাজনৈতিক, সামাজিক অস্থিরতা, পারিবারিক অস্থিরতাসহ নানা কারণে এখন দেশে একটা অরাজক পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

সব মিলিয়ে দেশের পরিবেশ-পরিস্থিতি স্বাভাবিক নেই, যার সুযোগ নিচ্ছে কেউ কেউ। এতে ঘরে-বাইরে সব ক্ষেত্রে অপরাধ বাড়ার প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। ফলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে সব কিছু নেই।

যদিও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালাচ্ছে, তবে সেই চেষ্টা আরো বাড়াতে হবে এবং কঠোর হতে হবে।

একই সঙ্গে তদন্তকাজে পক্ষপাতিত্ব ও রাজনৈতিক প্রভাব থেকে দূরে থাকতে হবে। বর্তমানে যারা সহিংসতা করছে, তাদের দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় আনতে হবে এবং আগেও যারা রাজনৈতিকসহ বিভিন্ন সহিংসতায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ছিল তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনতে হবে।

তবে সব ধরনের অপরাধ কেন হচ্ছে, কোন কোন এলাকায় হচ্ছেএগুলো বিশ্লেষণ করে সেভাবে কাজ করতে হবে। কারণ দেশের একেক এলাকায় একেক ধরনের অপরাধ বেশি ঘটে।

তবে আমাদের দেশে জনসংখ্যার তুলনায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সংখ্যা, বিশেষ করে পুলিশ সদস্য খুব কম। আমাদের পার্শ্ববর্তী কয়েকটি দেশেও জনসংখার তুলনায় আমাদের চেয়ে অনুপাতে তাদের পুলিশ সদস্য বেশি। তাই সরকারের উচিত জনসংখ্যার বিবেচনায় বাহিনীতে আরো লোক যুক্ত করা। একই সঙ্গে সব আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মনোবল ফেরানো।

এখন প্রায়ই শোনা যাচ্ছে, নানা সংগঠন, ছাত্র সমন্বয়ক, রাজনৈতিক দলের পরিচয়ে কিছু ব্যক্তি চাঁদাবাজি ও অপহরণের মতো ঘটনা ঘটাচ্ছে।

এখন কে কোন সংগঠন, রাজনৈতিক দল বা সমন্বয়ক, কার কী পরিচয়এগুলো বিবেচনা না করে যে অপরাধ করছে, তাকে শাস্তির আওতায় আনা জরুরি। অপরাধী যে-ই হোক, তার দল, মত কিংবা রাজনৈতিক পরিচয় এখন বিবেচনায় নেওয়া উচিত নয়।

বিশেষ করে কমিউনিটি পুলিশ ব্যবস্থাকে কার্যকর করার মাধ্যমে সামাজিকভাবে উদ্ভূত বিভিন্ন সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। এ ছাড়া উঠান বৈঠকের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে আশ্বস্ত করা যেতে পারে, অন্যায়ভাবে কাউকে হয়রানি করা হবে না। অন্যদিকে কেউ অপরাধ করলে তাকেও ছাড় দেওয়া হবে না।

এভাবেই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী সব ধরনের সহিংসতা রোধে কাজ করতে পারে। সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে উঠান বৈঠক করে নতুন করে জানান দিতে হবে আইন সবার জন্য সমান এবং এই নীতিতে সরকার চলছে। অন্যদিকে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পারিবারিকসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সচেতনতামূলক বিভিন্ন ধরনের সভা ও সেমিনার নিয়মিত করতে করতে পারে। কারণ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার ক্ষেত্রে এসব প্রতিষ্ঠানও অন্যতম ভূমিকা রাখতে পারে। 

লেখক : অধ্যাপক, ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগ,

মাওলানা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ঢাকার কেরানীগঞ্জ

জুলাই আন্দোলনে শহীদ সায়েমের কবর ভাঙচুর

কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধি
কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধি
শেয়ার
জুলাই আন্দোলনে শহীদ সায়েমের কবর ভাঙচুর

ঢাকার কেরানীগঞ্জে জুলাই আন্দোলনে শহীদ সায়েমের কবর ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক আওয়ামী লীগ নেতা ও তাঁর লোকজনের বিরুদ্ধে। গত শুক্রবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানায়, শুক্রবার জুমার নামাজের পর স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সিরাজুল ইসলাম বেশ কিছু লোক নিয়ে কেরানীগঞ্জ উপজেলার তেঘরিয়া ইউনিয়নের রসুলপুর কবরস্থানে যান। পরে সেখানে তাঁরা শহীদ সায়েমের নির্মীয়মাণ কবরটি ভাঙচুর করেন।

শহীদ সায়েমের মা শিউলি আক্তার জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় তাঁর এসএসসি পরীক্ষার্থী ছেলে সায়েম গত ১৯ জুলাই যাত্রাবাড়ীর কাজলা টোল প্লাজার সামনে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়। এরপর তাকে কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়ার রসুলপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়। গত দুই দিন আগে উপজেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে সরকারি খরচে কবরটি পাকা করার কাজও সম্পন্ন হয়। এ খবর পেয়ে আওয়ামী লীগের লোকজন কবরটি ভেঙে দিয়েছে।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতা সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, শহীদ সায়েমের মায়ের সঙ্গে কথা হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

মন্তব্য

বরিশালে ধর্ষণচেষ্টা মামলার আসামিকে পিটিয়ে হত্যা

নিজস্ব প্রতি‌বেদক, ব‌রিশাল
নিজস্ব প্রতি‌বেদক, ব‌রিশাল
শেয়ার
বরিশালে ধর্ষণচেষ্টা মামলার আসামিকে পিটিয়ে হত্যা

রিশাল নগরে এক শিশু ধর্ষণচেষ্টা মামলার আসামিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় লোকজনের বিরুদ্ধে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় এই ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তির নাম সুজন (২৩)। তিনি শহরের ধান গবেষণা রোডে ভাড়া বাসায় থাকতেন।

পেশায় অটোরিকশাচালক।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যার দিকে স্থানীয় লোকজন সুজনকে পিটিয়ে আহত করে। পরে তারা গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে থানায় হস্তান্তর করে। পুলিশ তাঁকে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির জন্য নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, শুক্রবার ধান গবেষণা রোডের এক শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন সুজন। এ ঘটনায় ওই দিনই শিশুর পরিবার থানায় সুজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মামলা করে। ঘটনার পর থেকে সুজন আত্মগোপনে ছিলেন। গতকাল সন্ধ্যার দিকে ধান গবেষণা রোডে স্থানীয় লোকজন তাঁকে ধরে বেধড়ক পিটুনি দিয়ে থানায় হস্তান্তর করে।

থানা পুলিশ সুজনকে রাত ৮টার দিকে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে।

মন্তব্য

ঢাকায় জাতিসংঘ হাউস উদ্বোধন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
ঢাকায় জাতিসংঘ হাউস উদ্বোধন

সফররত জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গতকাল শনিবার ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক কার্যালয়ের নতুন অফিসের (ইউএন হাউস ইন বাংলাদেশ) আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। সকালে এই উদ্বোধন শেষে বাংলাদেশে জাতিসংঘের কান্ট্রি টিমের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠক শেষে তিনি ভবনটি পরিদর্শন করেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, বাংলাদেশ-জাতিসংঘ সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে জাতিসংঘ ভবন প্রাঙ্গণে আয়োজিত আলোকচিত্র প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন গুতেরেস। তিনি জাতিসংঘের পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠানেও অংশ নেন।

পরে তিনি জাতিসংঘের বাংলাদেশ কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয় ও গৃহায়ণ এবং গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুয়েন লুইস।

বার্তা সংস্থা বাসস জানায়, বৈঠকে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশকে জাতিসংঘের সমর্থন অব্যাহত রাখার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। জাতিসংঘ শান্তি মিশনে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের অবদানের কথা স্মরণ করে গুতেরেস বলেন, তারা এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

এ সময় তিনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার উদ্যোগ নিয়েও আলোচনা করেন।

মন্তব্য

কক্সবাজারে সমন্বয়কের বাবাকে গুলি করে হত্যা

বিশেষ প্রতিনিধি, কক্সবাজার
বিশেষ প্রতিনিধি, কক্সবাজার
শেয়ার
কক্সবাজারে সমন্বয়কের বাবাকে গুলি করে হত্যা
হাবিবুল হুদা চৌধুরী

কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলায় আওয়ামী লীগ সমর্থকদের গুলিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক সাবেক সমন্বয়কের বাবা নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশ জানিয়েছে, গত শুক্রবার রাতে ইসলামাবাদ ইউনিয়নের সিকদারপাড়ায় জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে সৃষ্ট সংঘর্ষে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।

ঈদগাঁওয়ে নিহত ব্যক্তির নাম হাবিবুল হুদা চৌধুরী ওরফে কালু (৬০)। তিনি ইসলামাবাদ ইউনিয়নের সিকদারপাড়ার শামসুল হুদা চৌধুরীর ছেলে।

তাঁর ছেলে সাদিদুল হুদা ঈদগাঁও উপজেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক। নিহতের ছেলে অ্যাডভোকেট আবিদুল হুদা ও সাদিদুল হুদা জানান, তাঁদের সঙ্গে ইসলামাবাদ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আবদুর রাজ্জাকদের জমি নিয়ে বিরোধ চলছে। এর জের ধরে গত শুক্রবার পৌনে ১০টার দিকে আবদুর রাজ্জাকের লোকজন হাবিবুলের বাড়িতে আক্রমণ করে।

আবিদুল ও সাদিদুল অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ নেতা কিছুদিন আগে জেলখানা থেকে বেরিয়ে পরিকল্পিতভাবে তাঁদের বাবাকে হত্যা করেছেন।

হামলাকারীরা তাঁদের ঘরে গিয়ে বেশ কয়েকটি গুলি ছোড়ে। এ সময় তাঁদের ঘরের আরো দুই নারী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাঁরা জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

প্রতিপক্ষের রিদওয়ানুল হক জানান, তাঁদের কেনা একটি জায়গা নিয়ে হাবিবুল হুদাদের সঙ্গে বিরোধ চলছে।

এর জের ধরে শুক্রবার দুপুরে ঈদগাঁও থানা পুলিশের উপস্থিতিতে প্রতিপক্ষ জায়গাটি দখলের চেষ্টা করে। এ ঘটনায় তাঁর ভাই সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক বাধা দিলে পুলিশের সামনে তাঁকে মারধর করা হয়। পরে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। এর জের ধরেই রাতে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয় এবং হাবিবুল হুদা চৌধুরী গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে মারা গেছেন বলে রিদওয়ানুল পরে জেনেছেন।

এদিকে সাবেক সমন্বয়ক সাদিদুলের বাবাকে হত্যার প্রতিবাদে শুক্রবার মধ্যরাতের পর ছাত্ররা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছেন। তাঁরা অবিলম্বে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার দাবি করেছেন।

ঈদগাঁও থানার ওসি মশিউর রহমান জানান, জমির বিরোধের জের ধরে সৃষ্ট সংঘর্ষে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। হামলাকারীরা সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাকের লোক বলে তিনি প্রাথমিক তথ্যে জেনেছেন। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ