অপতথ্য মোকাবেলায় গুতেরেসের সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

বাসস
বাসস
শেয়ার
অপতথ্য মোকাবেলায় গুতেরেসের সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা
ড. মুহাম্মদ ইউনূস

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস অপতথ্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জাতিসংঘের সহায়তা কামনা করেছেন। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় তিনি রাজধানীর একটি হোটেলে সফররত জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সম্মানে আয়োজিত ইফতার অনুষ্ঠানে বলেন, আমরা আপনার আশীর্বাদ চাই, বিশেষত একটি বিষয়েঅপতথ্যের বিরুদ্ধে, যা আমাদের ধ্বংস করছে।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, মানুষ কঠোর পরিশ্রম করে একটি স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে চায়। কিন্তু কিছু মানুষ তা পছন্দ করে না।

তিনি বলেন, অপতথ্য ছড়ানো থেকে আমাদের রক্ষা করুন, বাকিটা আমরা সামলে নিতে পারব।

জাতীয় ঐক্য প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শিক্ষার্থীরা যে ঐক্য তৈরি করেছে, তা দেশের সব পর্যায়ের জনগণের মধ্যে একটি অনন্য সংহতি সৃষ্টি করেছে।

তিনি বলেন, দেশের জনগণ অনেক বিষয়ে মতানৈক্য পোষণ করলেও একটি বিষয়ে তারা একমত, আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই। এতে আমাদের মধ্যে কোনো মতপার্থক্য নেই।

গত বছরের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত ছাত্র আন্দোলনকে ঐতিহাসিক আখ্যা দিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, শিক্ষার্থীদের কাছে অস্ত্র ছিল না, ছিল কেবল তাদের জীবন।

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা স্বাধীনতার জন্য, নিজেদের দেশ ফিরে পাওয়ার জন্য এবং নিজেদের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য আন্দোলনে নেমেছিল। তিনি বলেন, এটাই আমাদের নতুন বাংলাদেশ।

জাতিসংঘ মহাসচিবের বাংলাদেশ সফর প্রসঙ্গে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এই সফর বাংলাদেশের মানুষের জন্য আনন্দ বয়ে এনেছে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা এখনো রমজানের মাঝামাঝি সময়ে, কিন্তু আপনার এই সফর যেন আগেভাগেই আমাদের জন্য ঈদ এনে দিল। আপনার আগমনে আমাদের ঈদ এখনই শুরু হয়ে গেছে।

অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও বক্তব্য দেন।

চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে উচ্ছ্বসিত রোহিঙ্গারা, ঘরে ফেরার স্বপ্ন : ঘরে ফেরার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে রোহিঙ্গারা। সেই স্বপ্ন তৈরি করে দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

গত শুক্রবার রোহিঙ্গাদের উদ্দেশে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দেওয়া ভাষণ ১০ লক্ষাধিক আশ্রিত রোহিঙ্গা নারী-পুরুষের মধ্যে সাড়া ফেলেছে।

চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষাভাষী রোহিঙ্গারা সহজেই বুঝতে পেরেছেন প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য। বুঝতে পেরেছেন তিনি কী বলতে চেয়েছেন। জানতে পেরেছেন রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরার যে আকুতি, সে ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টা ও তাঁর সরকারের আন্তরিক উপলব্ধি।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত শুক্রবার কক্সবাজারের উখিয়ায় শরণার্থীশিবিরে লক্ষাধিক রোহিঙ্গা শরণার্থীর সঙ্গে ইফতার করেছেন। এ সময় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ইফতারের আগে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় টানা পাঁচ মিনিটের বেশি সময় কথা বলেন। তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) যখন আঞ্চলিক ভাষায় বক্তব্য রাখছিলেন তখন রোহিঙ্গারা আনন্দ-উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে। প্রধান উপদেষ্টার এই বক্তব্যকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন রোহিঙ্গা কমিউনিটির নেতা এবং কক্সবাজারের সুধীসমাজের প্রতিনিধিরা।

রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতারা মনে করছেন, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস শুধু বাংলাদেশের সরকারপ্রধান নন, তিনি বিশ্বনেতাও। তাই চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় দেওয়া বক্তব্যের মধ্য দিয়ে রোহিঙ্গা কমিউনিটির সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে যোগাযোগের একটা সংযোগ তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি রোহিঙ্গারা জাতিসংঘের মহাসচিবকে বলতে পেরেছে তাদের মনের কথাগুলো। ফলে শুক্রবার দুই নেতার সফরের মধ্য দিয়ে অনেক সমস্যার সমাধান হবে।

আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জোবায়ের বলেন, ২০১৭ সালে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার পর দেশি-বিদেশি অনেক বড় বড় নেতা আশ্রয়শিবির সফর করেছেন। কিন্তু ভাষা বুঝতে না পারার কারণে রোহিঙ্গারা এত দিন মনের কথাগুলো সরাসরি কোনো নেতাকে বলতে পারেনি। শুক্রবার অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস স্যারকে তারা মনের কথাগুলো বলতে পেরেছে। একই সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা যে বক্তব্য দিয়েছেন তাও রোহিঙ্গা কমিউনিটির লোকজন বুঝতে পেরেছে। আশা করি, এবার রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে অনেক দূর এগিয়ে যাবে।

প্রধান উপদেষ্টার আঞ্চলিক ভাষায় দেওয়া বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়ে আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-১) রোহিঙ্গা কমিউনিটির নেতা আলী হোসেন বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার দীর্ঘ আট বছর যে সমস্যার কথাগুলো বলতে পারিনি, শুক্রবার তা দুজন বিশ্বনেতাকে বলার সুযোগ হয়েছে। শুধু তা সম্ভব হয়েছে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস স্যারের কারণে।

শুধু রোহিঙ্গা নয়, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের দেওয়া চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষার বক্তব্যকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন কক্সবাজারের সুধীসমাজের প্রতিনিধিরা।

কক্সবাজার সিভিল সোসাইটির সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরী খোকা বলেন, রোহিঙ্গাদের ভাষার সঙ্গে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষার কিছুটা অমিল থাকলেও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের দেওয়া বক্তব্যটি রোহিঙ্গা কমিউনিটির প্রত্যেকটা মানুষ বুঝতে পেরেছে। এটা খুবই ইতিবাচক। কারণ এ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে একটা সংযোগ তৈরি করতে পেরেছেন প্রধান উপদেষ্টা, যা গত আট বছরে দেশি-বিদেশি কোনো নেতা করতে পারেননি।

কক্সবাজার হোটেল, গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম শিকদার বলেন, কক্সবাজারের পেশাজীবী এবং রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় যেভাবে বক্তব্য দিয়েছেন, শুনে মনে হয়েছে কক্সবাজার কিংবা রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের কয়েকটি ধাপ এগিয়ে গেছে। কারণ দেশি-বিদেশি কোনো নেতার সঙ্গে এভাবে আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলার সুযোগ অতীতে হয়নি। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বনেতাদের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের সরাসরি সংযোগ তৈরির মধ্য দিয়ে তাদের স্বদেশ মায়ানমারে প্রত্যাবাসন দ্রুত সম্ভব হবে।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় রোহিঙ্গাদের বয়ান তুলে ধরেন

রোহিঙ্গাদের (মায়ানমার থেকে) তাড়িয়ে দেওয়ার পর বাংলাদেশে এসে জাতিসংঘের মহাসচিব আমাদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। এখন এই মাসের ১৪ তারিখ আবার তিনি আমাদের সঙ্গে দেখা করতে ক্যাম্পে এসেছেন। আন্তোনিও গুতেরেসকে একটা কথাই বলেছি, বাংলাদেশ আমাদের (রোহিঙ্গাদের) দেশ নয়। এই ক্যাম্পে আর দীর্ঘ সময় থাকতে চাই না। এখন ক্যাম্প জীবনের আট বছর চলছে। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে আরাকানে নিরাপদ জোন করে দিন, আমরা স্বদেশে এক্ষনই চলে যেতে চাই। এটাই অনুরোধ করেছি জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের কাছে।

এ কথা প্রধান উপদেষ্টা আঞ্চলিক ভাষায় বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিব অনারার হাছে দুঁরি আইস্যেদে, অনারার এক্কানা সাহস অইবার লাই। তেঁই অনারারলাই আবার দুনিয়ার সামনে লড়াই গরিবু, যাতে অনারারে শান্তিপূর্ণভাবে অনারার দেশত পৌঁছাই দিত পারে। ইয়ান মস্ত বড় খুশির হতা। এই খুশির হতা আজিয়া আঁরা অনুভব গরির। আঁরা তাঁরে (আন্তোনিও গুতেরেস) ভীষণভাবে ধন্যবাদ জানাই। (জাতিসংঘ মহাসচিব আপনাদের কাছে এসেছেন আপনাদের সাহস দেওয়ার জন্য। শান্তিপূর্ণভাবে আপনাদের দেশে পৌঁছে দিতে তিনি লড়াই করবেন। এটি মস্তবড় খুশির কথা। এই খুশির কথা আজ আমরা অনুভব করছি। আমরা তাঁকে ভীষণভাবে ধন্যবাদ জানাই।)

প্রধান উপদেষ্টা চট্টগ্রামের ভাষায় আরো বলেন, তাঁরে কি হনঅ দেশত আনিত ফারেন না, তার দেশত। বনজঙ্গলর ভিতর ঢুকাইত পারিব না? পাইত্তো নঅ। তাঁরা সরকারঅর বড় বড় হর্তা অলর লই হতা কঅই। এ জঙ্গলর ভিতর যনর হতা নঅ। তেঁই (আন্তোনিও গুতেরেস) হস্ট গরি আইস্যে। নিজে রোজা রাইক্কে আজিয়া অনারারলাই। (তাঁকে কি কোনো দেশ আনতে পারছে তাঁদের দেশে? বনজঙ্গলে ঢোকাতে পারবে? পারবে না। তাঁরা সরকারের বড় বড় কর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। এই জঙ্গলের ভেতর যাওয়ার কথা নয়। তিনি কষ্ট করে এসেছেন। আজ আপনাদের জন্য নিজে রোজা রেখেছেন।)

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, তাঁরে (আন্তোনিও গুতেরেস) আঁরা বারেবারে যিয়ান বুঝাইতাম চাইর, তা অইল, ঈদ আইলে আঁঁরা বেয়াগগুন যাই দাদু-দাদির হবর জিয়ারত গরি। নানুনানির হবর জিয়ারত গরি। আত্মীয়-স্বজনর হবর জিয়ারত গরি। এই মানুষগুইন এডে আইয়েরে ঈদগান গরিবদে এই সুযোগ পাইত নঅ। ইতারার হবর জিয়ারত গরিবার হনঅ সুযোগ নাই। তাঁরে অনারা এক্কান দাওয়াত দঅন। দাওয়াত দিবেন যে কিল্লাই; সাম্মোর বছর ঈদর সমত যেন অনারার বাড়ির মইধ্যে তেঁই (আন্তোনিও গুতেরেস) আইয়ে। ইয়ুর মইধ্যে এহত্র হঅন এবং দাদু-দাদির হবরঅর মইধ্যে যাইয়েনে তাঁরে সংবর্ধনা দঅন। (তাঁকে (আন্তোনিও গুতেরেস) আমরা বারবার যেটি বোঝাতে চাইছি, তা হলো, ঈদ এলে আমরা সবাই দাদা-দাদির কবর জিয়ারত করি। নানা-নানির কবর জিয়ারত করি। আত্মীয়স্বজনের কবর জিয়ারত করি। এই মানুষগুলো (রোহিঙ্গা শরণার্থী) এখানে এসে সে সুযোগ পাচ্ছে না। তাঁদের কবর জিয়ারত করার সুযোগ নেই। তাঁকে (আন্তোনিও গুতেরেস) আপনারা দাওয়াত করুন। সামনের বছর ঈদের সময় যেন আপনাদের বাড়িতে তিনি আসেন। আপনাদের বাড়িতে একত্র হন এবং দাদা-দাদির কবর জিয়ারত করে তাঁকে সংবর্ধনা দেন।)

প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গাদের উদ্দেশে বলেন, আঁরা এতুগগুন মানুষ আইস্যি। তাঁরে আঁরা বুঝাইর, অনারাও বুঝাইতেন লাইগগুন। কেউ আঁরারে আইয়েরে ভাত হাবাই যঅক, ইয়ান ত আঁরা ন চাই। আঁরার তো নিজর ক্ষমতা আছে। ধনসম্পদ আছে, জায়গা-সম্পত্তি আছে। আঁরাতো গরিত পারির। আঁরারে দেশত যাইত ন দে বলি, আঁরা মাইনসের বোঝা অই গেইগই। আঁরার পুয়া ছা বড় অইতো চার। দাদা-দাদির হবরঅর পাশে, নিজর ঘরর পাশে, আত্মীয়-স্বজনর পাশে; ইয়ান আঁরা ন পারির। তাঁরে (আন্তোনিও গুতেরেস) আঁরা বুঝাইর। (আমরা এত মানুষ এসেছি। তাঁকে আমরা বুঝিয়েছি। আপনারাও বুঝাচ্ছেন, কেউ আমাদের এসে ভাত খাইয়ে যাক, তা আমরা চাই না। আমাদের নিজেদেরই ক্ষমতা আছে। ধনসম্পদ আছে। জায়গা-সম্পত্তি আছে। আমরাও করতে পারি। কিন্তু আমাদের দেশে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। আমরা এখন মানুষের বোঝা হয়ে গেছি। আমাদের ছেলেমেয়ে দাদা-দাদির কবরের পাশে, নিজের ঘরের পাশে, আত্মীয়-স্বজনের পাশে বড় হতে চায়, কিন্তু আমরা তা পারছি না। তাঁকে এসব বিষয় আমরা বোঝাব।)

এর আগে একই দিন বিকেলে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন আয়োজিত অপর মতবিনিময়সভায় ড. ইউনূস বলেন, আঁর হতা হইবাল্লাই ন আইয়ি, অনারাত্তুন জাইনত আইসসিদে

এ ছাড়া তিনি ওই সভায় আঞ্চলিক ভাষায় তরুণদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ভোট বিলম্বিত হবে না : ড. ইউনূস

    বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা ৭ বছর : উপদেষ্টা পরিষদ
বিশেষ প্রতিনিধি
বিশেষ প্রতিনিধি
শেয়ার
ভোট বিলম্বিত হবে না : ড. ইউনূস
ড. মুহাম্মদ ইউনূস

অন্তর্বর্তী সরকার নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং কোনো দাবির কারণে ভোট বিলম্বিত হবে না বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল বৃহস্পতিবার  ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের (আইসিজি) প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন। প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন ড. কমফোর্ট ইরো।

প্রতিনিধিদলকে অধ্যাপক ইউনূস নিশ্চিত করেছেন সরকার নির্বাচনের জন্য দুটি সম্ভাব্য সময়সূচি নির্ধারণ করেছে।

এই তারিখ পরিবর্তন করা হবে না।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, যদি রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের আগে সীমিতসংখ্যক সংস্কার চায়, তাহলে নির্বাচন এই বছরের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হবে। আর যদি বৃহত্তর সংস্কার কার্যক্রম প্রয়োজন হয়, তাহলে নির্বাচন আগামী বছরের জুনের মধ্যে সম্পন্ন হবে। নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের কোনো কারণ নেই।

আসন্ন নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে।

আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের দলটিকে নিষিদ্ধ করার কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের মধ্যে যাঁরা হত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধসহ অন্যান্য অপরাধে অভিযুক্ত, তাঁদের বাংলাদেশের আদালতে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।

ঐকমত্য কমিশন বৃহস্পতিবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সরকারের নীতিগুলো নির্ধারণে জুলাই সনদ চূড়ান্ত করে স্বাক্ষরের পরিকল্পনা রয়েছে।

ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের কর্মকর্তারা এই সপ্তাহে রোহিঙ্গা বিদ্রোহী নেতা আতাউল্লাহর গ্রেপ্তারের প্রশংসা করেন এবং এটিকে শরণার্থী ক্যাম্পে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিশ্রুতির প্রমাণ হিসেবে দেখেছেন।

বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা ৭ বছর : বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে মামলায় সর্বোচ্চ সাজা সাত বছর নির্ধারণ করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। গতকাল বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এটি পাস হয়।

পরে রাজধানীর হেয়ার রোডে এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এসব তথ্য জানান।

শফিকুল আলম বলেন, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ মামলাগুলোর ক্ষেত্রে নতুন কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

আগের আইনে নতুন কিছু সেকশন সংযুক্ত করে সর্বোচ্চ শাস্তি সাত বছর করা হয়েছে। এ ছাড়া এই মামলাগুলোর ক্ষেত্রে আরো যেসব পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব ছিল, সেগুলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, উপদেষ্টা পরিষদ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের সংশোধনী পাস করেছে। এই বিষয়ে আইন উপদেষ্টা সম্প্রতি বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। এরপর আমরা নারী সংগঠনগুলোর সঙ্গে আলাপ করেছি এবং তাদের মতামত আইনে অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে। এই আলোচনার ভিত্তিতে আজকের বৈঠকে সংশোধনী পাস হয়েছে।

প্রেস সচিব জানান, আইনে বলাত্কার-এর নতুন সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এই ধরনের মামলাগুলোর জন্য ডিএনএ টেস্টের বিলম্ব একটি বড় সমস্যা ছিল, সেই বিষয়েও পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, এটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের আওতায় থাকবে। তবে এটি একটি পৃথক সেকশনে বিচার হবে। এটি আলাদা অপরাধ নয়, একই অপরাধের আওতায় পৃথকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ডিএনএ টেস্ট দ্রুত করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অধ্যাদেশের সংশোধনী অনুমোদন : প্রেস সচিব জানান, পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অধ্যাদেশের সংশোধনী অনুমোদন পেয়েছে। সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও প্রতিযোগিতা বাড়ানোর উদ্দেশ্যে এবং সিন্ডিকেট ভাঙার জন্য এই সংশোধনী আনা হয়েছে। প্রাক্কলিত মূল্যের ১০ শতাংশের কম হলে টেন্ডার বাতিলের যে বিধান ছিল, তা বাতিল করা হয়েছে। আগের কাজের মূল্যায়নের জন্য যে ম্যাট্রিক্স ছিল, যা একই প্রতিষ্ঠান বারবার কাজ পেতে সহায়তা করছিল, তা পরিবর্তন করে নতুন সক্ষমতা ম্যাট্রিক্স চালু করা হবে। এতে সিন্ডিকেট ভাঙা সম্ভব হবে।

বর্তমানে ৬৫ শতাংশ কাজের দরপত্র বা টেন্ডার অনলাইনে হয় এবং এটি শতভাগে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, পরিত্যক্ত বাড়ি বরাদ্দপ্রাপ্তরা আগে নিজ নামে নামজারি করতে পারতেন না, সেই অসুবিধা দূর করতে আইনে সংশোধনী আনা হয়েছে।

সরকারি ছুটি ও অন্যান্য সিদ্ধান্ত : শফিকুল আলম জানান, জনসাধারণের সুবিধার্থে ৩ এপ্রিল এক দিন ঈদের ছুটি বাড়ানো হয়েছে। ফলে এবার ২৮ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ৯ দিন ছুটি পাচ্ছেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। চৈত্রসংক্রান্তিতে নির্বাহী আদেশে তিন পার্বত্য জেলায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। সাঁওতাল, গারো, খাসিয়া, জৈন্তাসহ সমতলের বাঙালি ছাড়া অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীও এই ছুটির আওতায় থাকবে।

ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক খুবই ভালো : প্রেস সচিব বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক খুবই ভালো। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের এই সাত মাসে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য আরো বেড়েছে। আমাদের সম্পর্ক ভালো, তবে ভিসার বিষয়ে কিছু জটিলতা আছে, যা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানাতে পারে। তবে আমরা ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক চাই এবং সেটি অবশ্যই ন্যায্যতা, সমতা ও মর্যাদাপূর্ণ সম্পর্ক হতে হবে।

চীনে প্রধান উপদেষ্টার সফর ঐতিহাসিক হতে যাচ্ছে : শফিকুল আলম বলেন, চীনে প্রধান উপদেষ্টার সফর একটি ঐতিহাসিক সফর হতে যাচ্ছে। চীন আমাদের তিনটি কৃষিপণ্য আম, কাঁঠাল ও পেয়ারা আমদানি করতে চায়। আমরা আশা করছি, চীনে রপ্তানির জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।

তিনি বলেন, আমের মান নিশ্চিত করতে এফএও বাংলাদেশকে চার মিলিয়ন ডলার দিচ্ছে। রপ্তানির জন্য কিছু স্ট্যান্ডার্ড বজায় রাখতে তারা আমাদের কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে। এর ফলে বাংলাদেশের আম চীনে ব্যাপকভাবে রপ্তানি করা যাবে।

শফিকুল আলম বলেন, প্রফেসর ইউনূস চাচ্ছেন চীনের স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশে এসে বিনিয়োগ করুক, যাতে আমাদের দেশে উন্নতমানের স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া যায়।

বিভিন্ন কমিশনের রিপোর্ট : সংবাদ সম্মেলনে ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, শনিবার গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন তাদের রিপোর্ট প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেবে। নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট আশা করছি এই মাসেই অথবা প্রধান উপদেষ্টার চীন সফর শেষে জমা হবে।

 

মন্তব্য

ঈদ যাত্রায় দুর্ভোগের শঙ্কা

জহিরুল ইসলাম
জহিরুল ইসলাম
শেয়ার
ঈদ যাত্রায় দুর্ভোগের শঙ্কা

ঈদের আনন্দ উদযাপনে রাজধানীবাসী দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রিয়জনের কাছে ছুটে যায়। ধারণা করা হচ্ছে, এবার পবিত্র ঈদুল ফিতরে এক কোটি ২০ লাখের মতো মানুষ রাজধানী ছেড়ে প্রিয়জনের কাছে যেতে পারে। তবে এবারের ঈদ যাত্রায়ও সড়কে ভোগান্তির আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। আবার একদিকে রয়েছে যানজটের ভোগান্তি, অন্যদিকে নিরাপত্তাঝুঁকি তো আছেই।

    

বিশেষ করে ঢাকা-টাঙ্গাইল, ঢাকা-সিলেটসহ পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কের ১৫৯টি স্পটে যানজটের আশঙ্কা করা হচ্ছে। আর বাইপাইল ও চন্দ্রা মোড়ে যানবাহনের প্রচণ্ড  চাপে রাজধানীর প্রবেশ ও বের হওয়ার পথে তীব্র যানজটে ঈদ যাত্রার ভোগান্তি আরো বাড়তে পারে।

তবে যানজট নিরসনে জননিরাপত্তা বিভাগ ঈদের আগে ও পরে  চিহ্নিত স্পটগুলোয় বিশেষ নজরদারি রাখতে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়কে কিছু পরামর্শ দিয়েছে। এ ছাড়া জাতীয় মহাসড়ক ও গুরুত্বপূর্ণ করিডরগুলোর সড়ক ঈদের সাত দিন আগেই মেরামত কিংবা সংস্কার করতে বলা হয়েছে।

এর মধ্যে রয়েছে, ঢাকা-বাইপাস (মদনপুর-ভুলতা-ভোগড়া-এন-১০৫), নবীনগর-চন্দ্রা (এন-৪৫০), ঢাকা-জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ (এন-৩), ঢাকা-জয়দেবপুর (এন-৩), ঢাকা (ভোগড়া)-চন্দ্রা-এলেঙ্গা, এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-বগুড়া-রংপুর, ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-গোপালগঞ্জ-খুলনা, ভাঙ্গা-বরিশাল। একই সঙ্গে রাজধানীর উত্তর ও দক্ষিণ সিটির আওতায় থাকা সড়কগুলো।

জননিরাপত্তা বিভাগের তথ্যানুযায়ী, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ৩৮ থেকে ৩৯টি সড়কের অবস্থা যথেষ্ট খারাপ, যা দ্রুত মেরামত প্রয়োজন। প্রতিবছর ঈদুল ফিতরে এক কোটি ২০ লাখের মতো মানুষ রাজধানী ছাড়ে, আর প্রায় ৩০ লাখ মানুষ রাজধানীতে প্রবেশ করে।

এমন পরিস্থিতিতে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে এবারের ঈদ যাত্রায়ও দুর্ভোগের শিকার হতে পারে যাত্রীসাধারণ।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক সূত্র জানায়, যানজটের আশঙ্কা করা চিহ্নিত ১৫৯টি স্পটের মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে রয়েছে ৪৯টি স্পট। ঢাকা-উত্তরবঙ্গ মহাসড়কে রয়েছে ৫৪টি স্পট। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে রয়েছে ছয়টি স্পট। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে রয়েছে ৪২টি স্পট এবং ঢাকা-পাটুরিয়া-আরিচা মহাসড়কে রয়েছে আটটি স্পট।

এর মধ্যে ঢাকা-টাঙ্গাইল, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে বেশি যানজটের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ঈদ যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে প্রায় ৭০০ পুলিশ সদস্য কাজ করবে। তবে ৩৮ থেকে ৩৯টি সড়কের অবস্থা বেশ খারাপ। যেগুলো দ্রুত মেরামত করা দরকার।

ঈদ যাত্রা নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ করতে সম্প্রতি আয়োজিত এক আন্তমন্ত্রণালয় সভায় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ঈদে এক কোটি ২০ লাখের মতো মানুষ রাজধানী ছেড়ে যাবে আর ৩০ লাখের মতো মানুষ রাজধানীতে আসবে। এই দেড় কোটি মানুষের ঈদের আনন্দের যাতায়াত যানজটসহ নানা কারণে নিরানন্দের হয়ে যায়। এসব বিষয়ে আমরা কাজ করছি।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব মো. সাইফুল আলম বলেন, ভাঙ্গা সড়ক আর যানজট আমরা প্রত্যাশা করি না। যানজটে যাত্রীদের ভোগান্তির পাশাপাশি আমাদেরও ক্ষতি হয়। যানজট বেশি হলে ট্রিপ কমে যায়। ফলে শুরু থেকে আমরা সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে বলে আসছি সমস্যা সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে।

 

 

 

উত্তরের পথে ১৩ কিলোমিটারের যানজটের আশঙ্কা

উত্তরের পথে ১৩ কিলোমিটারের যানজটের আশঙ্কা রয়েছে। উত্তরবঙ্গের প্রবেশপথ ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কের টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে সেতু পর্যন্ত এবারও যানজট হতে পারে। কারণ, এলেঙ্গা থেকে যমুনা সেতু পর্যন্ত মহাসড়কে উন্নয়নকাজ এখনো শেষ হয়নি। মাত্র ৪০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। ফলে যানজটে ভোগান্তির আশঙ্কা থাকছেই। আবার উত্তরবঙ্গসহ ময়মনসিংহের প্রায় ২৩ জেলার পণ্য ও যাত্রীবাহী যানবাহন চলাচল করে এই মহাসড়কে। স্বাভাবিকভাবে প্রতিদিন ১৮-২০ হাজার ছোট-বড় যান যমুনা সেতু দিয়ে পারাপার করে। তবে ঈদে যানবাহনের সংখ্যা দুই থেকে তিনগুণ বেড়ে ৫০ হাজার অতিক্রম করে। এতে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ, মহাসড়কে যান বিকল এবং দুর্ঘটনার কারণে ভোগান্তি তৈরি হয়।

তবে টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ প্রশাসন ঘরমুখো মানুষের ঈদ যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। মহাসড়কের গাজীপুরের চন্দ্রা থেকে যমুনা সেতু পর্যন্ত টাঙ্গাইল অংশে ৭ শতাধিক পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন।

 

ঢাকা-উত্তরবঙ্গ রুটের যেসব স্থানে যানজটের আশঙ্কা

ঢাকা-উত্তরবঙ্গ রুটের বাইপাইল মোড়, চন্দ্রা মোড়, গোড়াই মিলগেট, যমুনা সেতু পশ্চিম গোলচত্বর, ফেন্সিগেটের আগের অংশ, ফেন্সিগেট সার্ভিস লেন, মুলিবাড়ী আন্ডারপাসের আগে, কড্ডা ফ্লাইওভারের পশ্চিমে, কোনাবাড়ী আন্ডারপাসের আগে, হাটিকুমরুল পাঁচলিয়া বাসস্ট্যান্ড, হাটিকুমরুল ধোপাকান্দি ব্রিজ, হাটিকুমরুল গোলচত্বর, হাটিকুমরুল বাজার, ঘুরকা বেলতলা, ভূঁইয়াগাতী বাসস্ট্যান্ড, হোটেল হাইওয়ে অভি ভিলা, ষোলোমাইল, সিরাজগঞ্জ বাইপাস, জমজম দইঘর, বগুড়া বাজার থেকে সীমাবাড়ী কলেজ, পেন্টাগন হোটেল, ফুড ভিলেজ হোটেল, দাদপুর জামাই রোড, নিউ পাপিয়া হোটেল থেকে চাচা-ভাতিজা হোটেল, জোড়া ব্রিজ, চান্দাইকোনা গরুর হাট পর্যন্ত।

 

ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের যেসব স্থানে যানজটের আশঙ্কা

ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের কাচিকাটা টোলপ্লাজা, বনপাড়া বাইপাস, বনপাড়া বাজার, রাজশাহী-নাটোর মহাসড়কের বানেশ্বর বাজার, রাজশাহী, ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের ঘোগা বটতলা থেকে মোনায়েম কন্সট্রাকশন, ছনকা বাজার, শেরপুর মডেল মসজিদের সামনে, নয়ামাইল বাজার, মাঝিরা বাজার, ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের বগুড়া জেলার শাজাহানপুর থানার বনানী বাসস্ট্যান্ড, শাকপালা, বগুড়া জেলার সদর থানার জিয়া মেডিক্যাল কলেজ গেটের সামনে, তিন মাথা রেল ক্রসিং, চার মাথা ফ্লাইওভার ব্রিজের নিচে, বারোপুর বাসস্ট্যান্ড, মাটিডালি বিমানবন্দর মোড়, টিএমএসএসের সামনে, শিবগঞ্জ থানার মহাস্থান বাসস্ট্যান্ড ফ্লাইওভারের নিচে, মোকামতলা বাসস্ট্যান্ড ফ্লাইওভারের নিচে, মায়ামনি চৌরাস্তা মোড় থেকে গোবিন্দগঞ্জ ব্র্যাক অফিস, গাইবান্ধা, পলাশবাড়ী উপজেলা পোস্ট অফিস এবং শিল্পী রেস্তোরাঁ থেকে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর পর্যন্ত পলাশবাড়ী, গাইবান্ধা, পীরগঞ্জ উপজেলা বাস স্টপেজ থেকে সাসেক প্রকল্পের নির্মাণাধীন আন্ডারপাসের উত্তর প্রান্ত পর্যন্ত, বিশ মাইল, পীরগঞ্জ, রংপুর, বড় দরগাহ্ আন্ডারপাস, পীরগঞ্জ, রংপুর, শঠিবাড়ী আন্ডারপাস, শঠিবাড়ী বাজার এবং বাস স্টপেজ এলাকা, মিঠাপুকুর, রংপুরকে ঢাকা-উত্তরবঙ্গ মহাসড়কের যানজটের গুরুত্বপূর্ণ স্পট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

 

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ভোগাবে সিঙ্গেল লেন

দেশের অন্যতম ব্যস্ত মহাসড়ক ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ১৮ কিলোমিটার এলাকা পড়েছে রূপগঞ্জ অংশে। এ ১৮ কিলোমিটার এলাকায় স্বাভাবিক সময়েও দীর্ঘ যানজট থাকে। ঈদ যাত্রা শুরু হলে যানবাহন চলাচল কয়েক গুণ বেড়ে যাওয়ায় যানজটও বেড়ে যায় কয়েক গুণ। এবারও সড়কের এই অংশের যানজটে ঈদ যাত্রায় চরম ভোগান্তির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ভুলতা হাইওয়ে পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ আশরাফ উদ্দিন বলেন, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক সিঙ্গেল লেনের রাস্তা। চালকরা নিয়ম না মেনে গাড়ি চালানোয় যানজট লেগে থাকে।

অন্যদিকে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের কোম্পানীগঞ্জ অংশেও যানজটে ভোগান্তির আশঙ্কা করা হচ্ছে। কোম্পানীগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডের গাড়িগুলো টার্মিনালে না রেখে রাস্তার ওপরে রেখে যাত্রী ওঠানামা করানোয় এবং তিন চাকার বাহন মহাসড়কে চলাচল করায় যানজটের আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষ করে ব্যস্ততম এই মহাসড়কের কোম্পানীগঞ্জ থেকে দেবিদ্বার অংশে ঈদের সময় যানজট প্রকট আকার ধারণ করে।

ঢাকা-সিলেট ও কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশেও যানজটে ভুগতে হতে পারে যাত্রীদের। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে উন্নয়ন কাজ চলমান থাকায় এবং কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে কাজ বন্ধ থাকায় ভাঙাচুরা অংশে যানজটের আশঙ্কা রয়েছে।

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে এরই মধ্যে যানজট শুরু হয়েছে। তারাবো বিশ্বরোড, পাঁচদোনা, ভেলানগর, ইটাখোলা, ভৈরব চৌরাস্তা, আশুগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিশ্বরোড, মাধবপুর, ওলিপুর রেলগেট, হবিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক, দেবপাড়া বাজার, আউশকান্দি, শেরপুর ও গোয়ালাবাজার এবং শেরপুর টোলপ্লাজা এলাকায় প্রায় প্রতিদিন যানবাহনের দীর্ঘ সারি দেখা যাচ্ছে।

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নরসিংদী অংশে সাধারণত তুলনামূলক কম যানজট হয়। তবে এবার ছয় লেন প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় মাধবদী, পাঁচদোনা, ভেলানগর, ইটাখোলা, মরজাল ও বারৈচাএই সাতটি পয়েন্টে যানজটের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

নারায়ণগঞ্জ অংশের প্রায় ২২ কিলোমিটারজুড়ে ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে যানজটের আশঙ্কা রয়েছে। কাঁচপুর বাসস্ট্যান্ড, তারাবো বিশ্বরোড গোলচত্বর, রূপসী বাসস্ট্যান্ড, বরপা, গার্মেন্টসের মোড় ও গাউছিয়া স্ট্যান্ডে যানজট পরিস্থিতির আরো জটিল হতে পারে।

ঈদ যাত্রায় যানজটের ভোগান্তির বিষয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল কালের কণ্ঠকে বলেন, ঈদ যাত্রায় যাতে মানুষের ভোগান্তি কম হয় সে চেষ্টা সব সময় আমাদের থাকে। এবারও আমরা সেই চেষ্টা করছি।

 

(প্রতিবেদনটি তৈরিতে তথ্য দিয়েছেন, টাঙ্গাইল, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও রূপগঞ্জ প্রতিনিধি।)

মন্তব্য

সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তায় বাংলাদেশের পদক্ষেপে আশ্বস্ত যুক্তরাষ্ট্র

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তায় বাংলাদেশের পদক্ষেপে আশ্বস্ত যুক্তরাষ্ট্র

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করায় অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। অর্থাৎ বাংলাদেশের গৃহীত পদক্ষেপকে যুক্তরাষ্ট্র আস্থায় নিতে পেরেছে। ওয়াশিংটনে বুধবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস। 

উল্লেখ্য, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে ফের বাংলাদেশ প্রসঙ্গ উঠে এসেছে।

দেশটির স্থানীয় সময় বুধবার ব্রিফিংয়ের সময় এক সাংবাদিক বাংলাদেশ নিয়ে মার্কিন গোয়েন্দাপ্রধান তুলসী গ্যাবার্ডের সাম্প্রতিক মন্তব্য ও অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে কি নাএসব বিষয়ে প্রশ্ন করেছেন।

ওই প্রশ্নকারী বলেন, মার্কিন গোয়েন্দাপ্রধান তুলসী গ্যাবার্ড বাংলাদেশে ইসলামী চরমপন্থার ক্রমবর্ধমান হুমকি ও একটি ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা সম্পর্কে সতর্ক করেছেন। তবে তিনি (তুলসী) মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে সরাসরি দায়ী করেননি, ইউনূস সরকারও এসব উদ্বেগকে তীব্রভাবে অস্বীকার করেছেএগুলোকে অসত্য বলেও অভিহিত করেছে। এ ছাড়া বুধবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে খেলাফতপন্থী বিশাল একটি শোভাযাত্রা  হয়েছে বলে উল্লেখ করেন প্রশ্নকারী।

ওই সাংবাদিক আরো বলেন, মার্কিন সরকারের চলমান উদ্বেগের পরিপ্রেক্ষিতে, যুক্তরাষ্ট্র কি ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার মতো কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বিবেচনা করছে?

জবাবে ট্যামি ব্রুস বলেন, আমরা যেকোনো দেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতা বা বৈষম্যের ঘটনাকে জোরালোভাবে নিন্দা করি। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার সব মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যে পদক্ষেপ নিয়েছে, তা আমরা ইতিবাচকভাবে দেখছি। আমরা পরিস্থিতি নজরদারি করছি, এবং আমাদের প্রত্যাশা থাকবে, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার এই প্রচেষ্টা যেন অব্যাহত থাকে।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি তুলসী গ্যাবার্ড ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে দাবি করেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা এবং দেশটিতে ইসলামপন্থী সন্ত্রাসবাদের হুমকি ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠার আদর্শ ও লক্ষ্য থেকে উৎসারিত।

মার্কিন গোয়েন্দা প্রধান আরো বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সঙ্গে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে আলোচনা মাত্র শুরু হয়েছে, তবে ইসলামপন্থী সন্ত্রাসবাদের বিষয়টি এখনো মূল উদ্বেগের কেন্দ্রবিন্দু

গ্যাবার্ডের এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। সরকারের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে এই মন্তব্যগুলো দেশের ভাবমূর্তি এবং সুনামের জন্য বিভ্রান্তিকর ও ক্ষতিকারক।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, বাংলাদেশ সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে অব্যাহতভাবে কাজ করছে এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, সামাজিক সংস্কার ও অন্যান্য সন্ত্রাসবিরোধী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে। সূত্র : এপি

 

 

মন্তব্য

কাগজ আমদানিতে সর্বোচ্চ শুল্ক আরোপের প্রস্তাব

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
কাগজ আমদানিতে সর্বোচ্চ শুল্ক আরোপের প্রস্তাব

মিথ্যা ঘোষণা ও চোরাচালানের মাধ্যমে আমদানি এবং বন্ড সুবিধার অপব্যবহারের কারণে দেশীয় কাগজশিল্পে অস্তিত্ব হুমকির সম্মুখীন। ৮০টি কাগজ মিল বন্ধ হয়ে গেছে, বাকি ২৬টি ধুঁকছে। এমন প্রেক্ষাপটে আমদানি পর্যায়ে শুল্ক মওকুফের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার, বন্ডের অপব্যবহার রোধ ও বিভিন্ন ধরনের কাগজ আমদানিতে সর্বোচ্চ হারে শুল্ক আরোপের প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ পেপার মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমএ)। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের এনবিআর ভবনে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নের আগে অংশীজনদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত প্রাক-বাজেট আলোচনায় এসব বিষয় উঠে এসেছে।

বিপিএমএ জানায়, দেশের অর্থনীতিতে কাগজশিল্প এখন আমদানি বিকল্প, রপ্তানিমুখী ও পরিবেশবান্ধব শিল্পে পরিণত হয়েছে। দেশের পেপার মিলগুলো বছরে ১৬ লাখ মেট্রিক টন কাগজ উৎপাদনে সক্ষম। ৯ লাখ মেট্রিক টন কাগজ দিয়ে দেশের চাহিদা পূরণ করে বিশ্বের ৪০টি দেশেও রপ্তানি করা হচ্ছে। প্রতিবছর সরকারকে পাঁচ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব দেওয়ার পাশাপাশি এর ফলে সাশ্রয় হচ্ছে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা।

এই খাতের ওপর নির্ভরশীল প্রায় ৩০০টি সংযোগ শিল্প। এই খাতের সুরক্ষায় কাগজ আমদানির ক্ষেত্রে বর্তমানে প্রযোজ্য আমদানি শুল্ককাঠামো বহাল রাখার দাবি জানিয়েছে বিপিএমএ। দাবিতে আরো বলা হয়েছে, বন্ড সুবিধায় আমদানি করা কাগজ ও বোর্ড খোলাবাজারে বিক্রি হওয়ায় কাগজ উৎপাদনকারীরা অসম প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হচ্ছেন। এতে সরকারের রাজস্ব ক্ষতির পাশাপাশি শিল্প খাত বিপর্যস্ত হচ্ছে।

তাই প্রাপ্যতার অতিরিক্ত আমদানি বন্ধ করা ও খোলাবাজারে বিক্রি বন্ধে তদারকি করতে হবে।

মাইক্রো ক্যাপসুল, কালার ডেভেলপার, থেমাল কোটিং স্লারি, কাওলিন ক্লে আমদানিতে সিডি ও আরডি প্রত্যাহারের দাবি করা হয়েছে। এ ছাড়া গ্রেসপ্রুফ পেপার, গ্লাসিনি পেপার, থেমাল পেপার ও লিনার পেপার আমদানিতে সর্বোচ্চ হারে সিডি, আরডি ও ৩০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের দাবি জানানো হয়েছে।

একই দিনে উচ্চ করহার নতুন বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত করে উল্লেখ করে কোনো শর্ত ছাড়া করহার ২.৫০ শতাংশ হারে কমিয়ে প্রাইভেট লিমিটেড কম্পানির জন্য ২৫ শতাংশ করা ও পাবলিক ট্রেডেড কম্পানির জন্য ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)। এ ছাড়া সংগঠনটি  করমুক্ত আয়সীমা পাঁচ লাখ টাকা করা, সরবরাহ পর্যায়ে উৎস কর কমানো, রপ্তানি আয়ের উৎস কর ১ শতাংশ থেকে কমিয়ে ০.৫০ শতাংশ করা, রপ্তানির ক্ষেত্রে এইচএস কোড-সংক্রান্ত জটিলতা দূর করার প্রস্তাব করেছে।

সংগঠনটির সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী বলেন, গ্রস প্রফিট খাতভিত্তিক নির্ধারণ করা হয়ে থাকে, যা যুক্তিসংগত নয়। আবার গ্রস প্রফিট কমে গেলে বা ব্যবসায় লস হলে বিবেচনায় নেওয়া হয় না। এমনকি পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় বিক্রি কম হলেও কর কর্তৃপক্ষ তা বিবেচনায় নেয় না। এটি নিষ্পত্তি প্রয়োজন। ব্যবসায় ক্ষতি হওয়া সত্ত্বেও টার্নওভার কর নির্ধারণ করা হয়, যা প্রতিষ্ঠানের জন্য বোঝা।

সংগঠনগুলোর প্রস্তাব শুনে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন, ভ্যাট আদায়ে প্রতিষ্ঠানগুলো সহযোগিতা করে না। তারা প্রকৃত তথ্য লুকায়, আমরাও চেপে ধরি। এভাবে চলতে পারে না। পোশাক খাত দীর্ঘদিন ধরে বিশেষ কর সুবিধা পেয়ে আসছে। এখন তাদের রেগুলার রেটে আসা উচিত।

 

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ