<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মাছ মহান আল্লাহর দেওয়া নিয়ামত। পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন জায়গায় মাছের আলোচনা এসেছে। মহান আল্লাহ মাছের পেটে রেখে ইউনুস (আ.)-কে পরীক্ষা করেছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">তারপর বড় মাছ তাকে গিলে ফেলল। আর সে (নিজেকে) ধিক্কার দিচ্ছিল।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> (সুরা : সাফফাত, আয়াত : ১৪২)</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আবার মাছ দিয়ে মুসা (আ.)-কে শিক্ষা দান করেছেন। সুরা কাহফে সেই ঘটনা বিস্তারিত আকারে এসেছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মাছ ধরার ব্যাপারে আল্লাহর দেওয়া বিধান লঙ্ঘনের কারণে বনি ইসরাঈলকে শাস্তি দিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">তোমাদের মধ্যে যারা শনিবার সম্পর্কে সীমা লঙ্ঘন করেছিল, তোমরা তাদের নিশ্চিতভাবে জানো। আমি (আল্লাহ) তাদের (আজাবের আদেশ দিয়ে) বলেছিলাম, তোমরা ঘৃণিত বানর হয়ে যাও। আমি তা তাদের সমসাময়িক ও পরবর্তীদের জন্য দৃষ্টান্তস্বরূপ এবং মুত্তাকিদের জন্য উপদেশস্বরূপ করেছি।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">(সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ৬৫-৬৬)</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এনসাক্লোপিডিয়া অব ব্রিটানিকার তথ্য মতে, পৃথিবীতে প্রায় ৩৪ হাজার প্রজাতির মাছ আছে। যেহেতু মানুষ সাগরের খুব বেশি এলাকায় এখনো পৌঁছতে পারেনি; ফলে সাগরের অনাবিষ্কৃৃত এলাকাগুলোতে আরো কত রকমের মাছ মহান আল্লাহ রেখে দিয়েছেন, তার হিসাব বের করা দুষ্কর। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মহান আল্লাহ মাছের মাধ্যমেও মানুষের খাদ্যের চাহিদা পূরণ করে থাকেন। পৃথিবীর প্রায় সর্বত্রই মাছ মানুষের খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আর তিনিই সেই সত্তা, যিনি সমুদ্রকে নিয়োজিত করেছেন, যাতে তোমরা তা থেকে তাজা (মাছের) গোশত খেতে পারো এবং তা থেকে বের করতে পারো অলংকারাদি, যা তোমরা পরিধান করো। আর তুমি তাতে নৌযান দেখবে, তা পানি চিরে চলছে এবং যাতে তোমরা তাঁর অনুগ্রহ অন্বেষণ করতে পারো এবং যাতে তোমরা শুকরিয়া আদায় করো।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> (সুরা : নাহাল, আয়াত : ১৪)</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আর দুটি সমুদ্র সমান নয়; একটি খুবই সুমিষ্ট ও সুপেয়, আরেকটি অত্যন্ত লবণাক্ত আর প্রত্যেকটি থেকে তোমরা তাজা গোশত খাও এবং আহরণ করো অলংকার, যা তোমরা পরিধান করো। আর তুমি তাতে দেখো নৌযান পানি চিরে চলাচল করে। যাতে তোমরা আল্লাহর অনুগ্রহ তালাশ করো এবং যাতে তোমরা শোকর করো।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> (সুরা : ফাতির, আয়াত : ১২)</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মাছ এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামত, যার মাধ্যমে মহান আল্লাহ তাঁর জান্নাতি বান্দাদের প্রথম মেহমানদারি করবেন। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে সালাম (রা.) আল্লাহর রাসুল (সা.)-কে তিনটি প্রশ্ন করেছিলেন, তার মধ্যে একটি ছিল সর্বপ্রথম খাবার কী, যা জান্নাতবাসী খাবে? জবাবে রাসুল (সা.) বলেছেন, প্রথম খাবার, যা জান্নাতবাসীরা খাবেন, তাহলো মাছের কলিজার অতিরিক্ত অংশ। (বুখারি, হাদিস : ৩৩২৯)</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মাছ এমন একটি উপকারী নিয়ামত, যা থেকে গোটা পৃথিবীর মানুষ উপকৃত হচ্ছে, শুধু মাছকে কেন্দ্র করে বহু মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। ফুড অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন অব দ্য ইউনাইটেড ন্যাশনস  </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">FAO </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">-এর তথ্য মতে, পৃথিবীতে প্রায় ৬০০ মিলিয়ন মানুষের জীবন-জীবিকা মাছের সঙ্গে সম্পৃক্ত। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মাছ যে শুধু খাবারের চাহিদা পূরণেই উপকারী তা নয়, মাছের বিভিন্ন অংশ দিয়ে ওষুধ, প্রসাধনী, মিহি সুতা ইত্যাদি তৈরি করা হচ্ছে। এমনকি মাছের ফেলে দেওয়া উচ্ছিষ্ট বিক্রি করেও মানুষ কোটি কোটি টাকা উপার্জন করছে। গণমাধ্যমের তথ্য মতে, মাছের আঁশের বিশ্বব্যাপী নানা ধরনের ব্যবহার রয়েছে। মাছের আঁশে থাকে কোলাজেন, যা খাদ্য, ওষুধ, ফুড সাপ্লিমেন্ট ও কসমেটিকস শিল্পে ব্যবহার করা হয়। কোলাজেন নামের একটি পণ্য বিক্রি হয় ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে। চীন ও জাপানে এই আঁশ ব্যবহার করে বায়ো পাইজোইলেকট্রিক ন্যানো জেনারেটর তৈরি করা হয়, যেগুলো দ্বারা রিচার্জেবল ব্যাটারিতে চার্জ দেওয়া যায়। ঘরোয়া বিদ্যুৎ উৎপাদনেও এটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এ ছাড়া মাছের আঁশ ব্যাটারি তৈরি, বৈদ্যুতিক পণ্য, কৃত্রিম কর্নিয়া, মাছ ও পোলট্রি খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সুবহানাল্লাহ, এভাবে মহান আল্লাহ আমাদের প্রয়োজন পূরণে তাঁর শতকোটি মাখলুককে নিয়োজিত করে রেখেছেন। আমাদের উচিত, মহান আল্লাহর দেওয়া নিয়ামতের শোকর করা এবং একমাত্র তাঁরই ইবাদত করা। আল্লাহ সবাইকে তাওফিক দান করুন। আমিন।</span></span></span></span></span></p> <p> </p>