<p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">নবীজির বীর সাহাবির অন্যতম একজন হজরত আমর ইবনে আস (রা.)। ইসলাম গ্রহণের আগে তিনি ছিলেন নবীজি ও মুসলমানের কট্টর বিরোধী। সেই তিনিই আল্লাহর রহমতে ইসলামের পরম বন্ধু হয়ে উঠলেন।  </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">হজরত আমর ইবনে আস (রা.) নিজের ইসলাম গ্রহণের পটভূমি নিজেই বর্ণনা করেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন যে নাজাশী বাদশাহর দাওয়াতে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। প্রথমে বিষয়টি তিনি গোপন রাখেন। পরবর্তী সময়ে হাবশা থেকে মদিনায় গিয়ে তিনি নবীজি (সা.)-এর হাতে বায়াত গ্রহণ করেন। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">তিনি বলেন, মক্কা বিজয়ের কিছুকাল আগে [অষ্টম হিজরির সফর মাসে (আত-ত্বাবাক্বাতুল কুবরা : ৭/৩৪২ পৃ.)] আমি রাসুল (সা.)-এর হাতে ইসলামের বায়াতের জন্য হাবশা থেকে রওনা হলাম মদিনার উদ্দেশে। পথে দেখা হলো খালিদ ইবনে ওয়ালীদের সঙ্গে। তিনি মক্কা থেকে মদিনায় যাচ্ছিলেন। আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, কোথায় যাচ্ছেন? তিনি বললেন, আল্লাহর কসম! আমার দৃঢ়বিশ্বাস এই ব্যক্তি নবী। এই মুহূর্তে কালক্ষেপণ না করে দ্রুত ইসলাম গ্রহণ করা উচিত। ইসলাম নিয়ে দ্বিধা-সংশয় আর কত দিন! বললাম, আমিও তো এই উদ্দেশ্যে। দুজন একসঙ্গে মদিনায় পৌঁছে রাসুল (সা.)-এর খিদমতে উপস্থিত হলাম। আমাদের দেখে রাসুল (সা.)-এর চেহারা মুবারক উজ্জ্বল হয়ে গেল। খালিদ ইবনে ওয়ালীদ আগে বেড়ে ইসলাম গ্রহণ করলেন এবং রাসুল (সা.)-এর হাতে বায়াত হয়ে গেলেন। এরপর আমি সামনে বাড়লাম এবং বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি ইসলাম গ্রহণ করব, তবে শর্ত আছে। রাসুল (সা.) বিস্মিত কণ্ঠে বললেন, শর্ত! কী শর্ত? বললাম, আমার অতীতের পাপরাশি যদি মাফ হয়। রাসুল (সা.) ইরশাদ করলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ইসলাম অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেয়। অনুরূপ হিজরতও।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> অতঃপর আমি ইসলামের ঘোষণা দিলাম এবং রাসুল (সা.)-এর হাতে বায়াত (শপথ) করলাম।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">(সিরাতু ইবনে হিশাম : ২/২৭৬</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">—</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">২৭৬,</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া : ৪/১৪১</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">—</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">১৪২, আত-ত্বাবাক্বাতুল কুবরা : ৭/৩৪২, আল-কামিল ফিত তারিখ : ২/১০৮</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">—</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">১০৯)</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ইসলাম গ্রহণের পর তিনি ফিরে যান মক্কায়। কিছুদিন পর আবার মদিনায় হিজরত করেন। আমর ইসলাম গ্রহণের আগে যেমন মুসলমানদের বিরুদ্ধে ছিলেন চরম, ইসলাম গ্রহণের পর কাফিরদের বিরুদ্ধে হলেন চরম। তাই কাফিরদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন যুদ্ধে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">হজরত আমর (রা.)-এর ইসলাম গ্রহণের পরও একাধিক যুদ্ধ সংঘটিত হয়। তবে সেসব যুদ্ধে তাঁর অংশ গ্রহণ সম্পর্কে তেমন কিছু জানা যায় না। অবশ্য একাধিক ক্ষুদ্র অভিযান যে তাঁর নেতৃত্বে পরিচালিত হয়, তা ইতিহাস থেকে জানা যায়। যেমন</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">—</span></span></span> </span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">(ক) অষ্টম হিজরির জুমাদাল উখরা মাসে রাসুল (সা.) বনু কুযাআহ গোত্রের বিরুদ্ধে তাঁর নেতৃত্বে মুসলিম বাহিনী পাঠান। সেই বাহিনীতে হজরত আবু বকর ও উমর (রা.)-এর মতো প্রখ্যাত সাহাবিরাও ছিলেন। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">(খ) মক্কা বিজয়ের পর বিভিন্ন গোত্রের মূর্তি ভাঙার জন্য রাসুল (সা.) কয়েকটি বাহিনী বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠান। বনু হুজাইলের একটি মূর্তিশালার নাম ছিল সুওয়া। আমর (রা.)-কে এই মূর্তিশালা ভাঙার দায়িত্ব দিয়ে পাঠান।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">(গ) মক্কা বিজয়ের পর রাসুল (সা.) আরব উপদ্বীপের আশপাশের রাজা-বাদশাহর কাছে ইসলামের দাওয়াতি চিঠি পাঠান। এমন একটি চিঠি আমরের মাধ্যমে উমানের শাসকের কাছে পাঠান। চিঠি পেয়ে উমানের শাসক ইসলাম গ্রহণ করেন। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">রাসুল (সা.) আমরকে উমানের গভর্নর নিযুক্ত করেন। দ্বিতীয় খলিফা হজরত উমর (রা.) তাঁকে উমান থেকে সরিয়ে ফিলিস্তিনের সেক্টরে নিয়োগ করেন। তাঁর নেতৃত্বে সিরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল বিজয় হয়। সিরিয়া বিজয়ের পর আমর (রা.) উমর (রা.)-এর কাছে মিসরে অভিযান পরিচালনার অনুমতি চাইলেন। অনুমতির পর তিনি তাঁর ক্ষুদ্র বাহিনী নিয়ে মিসর রওনা হলেন। খলিফা তাঁর সাহায্যে যুবাইর ইবনে আউওয়াম (রা.)-এর নেতৃত্বে একটি বাহিনী পাঠান। তিনি বীরত্ব ও সাহসিকতার সঙ্গে অভিযান পরিচালনা করলেন এবং একের পর এক মিসরের এলাকাগুলো জয় করলেন। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মিসর বিজয়ের পর উমর (রা.) তাঁকে মিসরের গভর্নর নিয়োগ করেন। এরপর উসমান (রা.)-এর আমলে মিসরের গভর্নর থেকে অব্যাহতি পেয়ে বেশ কয়েক বছর মদিনা আর সিরিয়ায় কাটানোর পর মুয়াবিয়া (রা.) আবার তাঁকে ৩৯ হিজরির শেষের দিকে মিসরের গভর্নর নিয়োগ করেন। মৃত্যু পর্যন্ত (দুই-তিন বছর) সে পদে বহাল ছিলেন।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">(আত-ত্বাবাক্বাতুল কুবরা : ৭/৩৪২, ক্র.৪০০৬, ৪/১৯৫পৃ., ক্র.৪৪৬)</span></span></span></span></span></p>