<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">“</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বউটার সন্তান হইবে। ছেলেটার কত স্বপ্ন ছিল</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Arial Unicode MS Bold"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাপজান</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Arial Unicode MS Bold"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> ডাক শুনবে। সন্তানকে ভালো স্কুলে পড়ায়া মানুষের মতো মানুষ করিবে। আমার বুকের মানিকের এই স্বপ্ন আর পূরণ হইল না। সন্তানের মুখটা দেখা হইল না। সবাইরে ছাইড়া চইলা গেল আমার বুকের মানিক!</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">”</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিলাপ করে বারবার কথাগুলো বলে যাচ্ছিলেন মেরিনা বেগম। তাঁর ছেলে আল-আমিন রনি (২৪) গত ১৯ জুলাই ঢাকার মহাখালীতে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। পরদিন ২০ জুলাই তাঁর মরদেহ মা মেরিনা বেগমসহ স্বজনরা বাড়িতে নিয়ে আসে। বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার সলিয়াবাকপুর ইউনিয়নের পূর্ব বেতাল গ্রামে তাঁদের বাড়ি। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আল-আমিন রনি মহাখালীর মাল্টিব্র্যান্ড ওয়ার্কশপে কাজ করতেন। বাবা দুলাল হাওলাদার মারা গেছেন করোনাকালে। মা মেরিনা বেগম, অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মিম ও ছোট ভাই রহিমকে নিয়ে ঢাকার মহাখালী সাততলা বাউন্ডারি বস্তি এলাকায় থাকতেন রনি। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রনির আয় দিয়ে চলত চার সদস্যের এই পরিবার। ঘটনার দিন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে মায়ের কাছ থেকে ১০০ টাকা নিয়ে মহাখালীর বস্তি এলাকার বাসা থেকে বের হন রনি। বিকেল ৫টার দিকে মহাখালী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সংঘর্ষের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান তিনি। রাত ৮টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে গিয়ে তাঁর মরদেহ শনাক্ত করেন মা। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ ২০ জুলাই পূর্ব বেতাল গ্রামে আনা হয়। ওই দিন দিবাগত রাত ১টায় পারিবারিক কবরস্থানে মরদেহ দাফন করা হয়। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, রনি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। তিনি পরিবারের একমাত্র রোজগেরে ব্যক্তি। তাঁর আয়েই চলত সংসার। মাস শেষে কষ্টার্জিত উপার্জনের টাকা তিনি মায়ের হাতে তুলে দিতেন। দাদিও তাঁর ভরণ-পোষণে রনির ওপর নির্ভরশীল ছিলেন। রনির স্ত্রী ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্ব্বা। এখন এই অনাগত শিশুর ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন পরিবার। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আদরের নাতিকে হারিয়ে কান্না থামছে না রনির দাদি শতবর্ষী মরিয়ম বেগমের। বিলাপ করতে করতে জানান, একে একে তাঁর পাঁচ ছেলে মারা গেছে। নাতি রনিকে অবলম্বন করেই বেঁচে ছিলেন। এই মৃত্যু সইবেন কী করে? </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মাস্টার সিদ্দিকুর রহমান বলেন, রনির আয়ে চলত সংসার। তাঁকে হারিয়ে পরিবারটি এখন দিশাহারা। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে পরিবারটিকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন তিনি।</span></span></span></span></span></p>