যেন আত্মীয়-স্বজন পুনর্বাসন কেন্দ্র

উবায়দুল্লাহ বাদল
উবায়দুল্লাহ বাদল
শেয়ার
যেন আত্মীয়-স্বজন পুনর্বাসন কেন্দ্র

ইসলামিক ফাউন্ডেশনে (ইফা) গত ১৫ বছরে নিয়োগ ও পদোন্নতিতে সীমাহীন দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ জন্য দুই সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। শিগগিরই আরেকটি কমিটি গঠন করা হবে। এ দুই কমিটি সরকারি এই প্রতিষ্ঠানের সব ধরনের অবৈধ নিয়োগ ও দুর্নীতি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় সুপারিশ করবে।

সুপারিশের আলোকে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেবে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

এমন পরিস্থিতিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থাভাজন মহাপরিচালক (ডিজি) সামীম মোহাম্মদ আফজালের সময় নিয়োগ পাওয়া তাঁর আত্মীয়-স্বজন এবং আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের রাতের ঘুম হারাম।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সামীম মোহাম্মদ আফজাল ২০০৯ সালের শুরুতে নিয়োগ পেয়ে ২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। এর মধ্যে ২০১২ সালে প্রতিষ্ঠানটির রাজস্ব খাতভুক্ত প্রথম শ্রেণির ১২টি পদে ৪৭ জনকে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি করে নিয়োগ দেওয়া হয়।

এই নিয়োগে কোনো বিধি-বিধান মানা হয়নি।

জানতে চাইলে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনে ফ্যাসিস্টের দোসর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চিহ্নিত করতে একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে দুই সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া শিগগিরই নিয়োগের অনিয়ম ও দুর্নীতি খুঁজতে আরেকটি শক্তিশালী কমিটি গঠন করা হবে। বিষয়টি প্রতিষ্ঠানটির বোর্ড অব গভর্ন্যান্সের মিটিংয়ে আলোচনা হয়েছে।

কে কার আত্মীয়সব খুঁজে বের করা হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০১২ সালের ওই নিয়োগের সুপারিশপত্রে সই করেননি কমিটির সদস্যসচিব, জনপ্রশাসন, অর্থ ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কোনো প্রতিনিধি। লিখিত পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বরপ্রাপ্তদের মৌখিক পরীক্ষায় ফেল করানো এবং সর্বনিম্ন নম্বরপ্রাপ্তদের সর্বোচ্চ নম্বর দেওয়া হয়েছে। নিয়োগের যোগ্যতা ছিল ছাত্রলীগের পরিচয়।

শুধু ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা থেকেই আটজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নিয়োগ কমিটির প্রভাবশালী দুই সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী ও সামীম আফজালের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়।

এই নিয়োগের সিলেকশন কমিটির কার্যবিবরণী ঘেঁটে পাওয়া গেছে নানা অনিয়ম, যা কালের কণ্ঠের কাছে সংরক্ষিত আছে।

সই নেই সদস্যসচিবসহ তিন সদস্যের : নিয়োগ কমিটির কার্যবিবরণীতে সই নেই কমিটির সদস্যসচিব, জনপ্রশাসন, অর্থ ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কোনো প্রতিনিধির। নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ করে কমিটির সদস্যসচিব রেজাউল করিম স্বাক্ষর করেননি। এই কর্মকর্তা পরে অতিরিক্ত সচিব হিসেবে অবসরে যান। এ বিষয়ে কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ওই নিয়োগে কোনো নিয়ম-নীতিই মানা হয়নি। এ কারণে আমিসহ চারজন (জনপ্রশাসন, অর্থ বিভাগ ও ধর্ম মন্ত্রণালয়) প্রতিনিধি কার্যবিবরণীতে সই দিইনি।

সুপারিশকারীই অনুমোদনকারী : ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ডিজিকে সভাপতি, সচিবকে সদস্যসচিব ও বোর্ড অব গভর্ন্যান্সের পাঁচজন সদস্য এবং তৎকালীন ডিজির অনুগত ছয় পরিচালক নিয়ে গঠিত হয় নিয়োগ কমিটি।

এই কমিটির সদস্য উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী। তিনি বর্তমানে কারাবন্দি। গোলাম মওলা নকশেবন্দী ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য। বর্তমানে তিনি পলাতক। মিছবাহুর রহমান চৌধুরী ছিলেন গত ১৫ বছর ফ্যাসিস্টের সহযোগী। তিনিও পলাতক। সিরাজউদ্দিন আহমেদ ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চেয়েও পাননি। আওয়ামীপন্থী সচিব আজিজুর রহমান বর্তমানে মৃত। ডিজিসহ এই পাঁচজন নিয়োগ কমিটির সদস্য হিসেবে নিয়োগের সুপারিশপত্রে সই করেন। আবার বোর্ড অব গভর্ন্যান্সের সভায় উপস্থিত থেকে তাঁরাই ওই সুপারিশ অনুমোদন করেন।

এ ব্যাপারে নিয়োগের সুপারিশপত্রে স্বাক্ষরকারী ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তৎকালীন পরিচালক ডা. খিজির হায়াত খান কালের কণ্ঠকে বলেন, ওই নিয়োগটি নিয়ম মেনে করা হয়নি। এ নিয়ে বড় ধরনের বিতর্ক ছিল।

নম্বরপত্র ঘষামাজা ও অভিজ্ঞতার জাল সনদ : এই নিয়োগে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ডিজি সামীম মোহাম্মদ আফজালের ভাগনি ফাহমিদা বেগম লিখিত পরীক্ষায় ৬০ নম্বরে পেয়েছেন ৩০। কিন্তু ২৮ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষায় পান ২৮ নম্বর। তাঁর নম্বরপত্রে ঘষামাজা ছিল। ডিজির ভাতিজা শাহ আলমকে উৎপাদন ব্যবস্থাপক পদে চাকরি দেওয়া হয়েছে। এই পদে বয়সসীমা চাওয়া হয় ৩০ বছর। কিন্তু এসএসসির সনদ অনুযায়ী তাঁর বয়স এর চেয়ে বেশি। তাঁর শিক্ষা সনদ ঘষামাজা করা হয়েছে। অভিজ্ঞতার সনদও জাল।

মৌখিক পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর : সিলেকশন কমিটির কার্যবিবরণীতে দেখা যায়, সহকারী পরিচালক পদে নিয়োগপ্রাপ্ত কমপক্ষে আটজনকে মৌখিক পরীক্ষায় ২৮ নম্বরে ২৮ দেওয়া হয়েছে। লিখিত ৬০ নম্বরের পরীক্ষায় তাঁরা ৩০ থেকে সর্বোচ্চ ৩৫ পেয়েছেন। মৌখিক পরীক্ষায় ২৮ নম্বরের মধ্যে অন্তত ১২ জনকে ২৭ নম্বরের বেশি দেওয়া হয়েছে, যা অস্বাভাবিক। গবেষণা কর্মকর্তা পদে এস এম ফরিদ হোসেন লিখিত পরীক্ষায় সর্বোচ্চ ৪৪ নম্বর পেয়েছেন। অথচ তাঁকে মৌখিক পরীক্ষায় ৭.২৫ নম্বর দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে লিখিত পরীক্ষায় ৩৩ নম্বরপ্রাপ্ত সাদিয়া শারমিনকে মৌখিক পরীক্ষায় সর্বোচ্চ ২১.১৩ নম্বর দিয়ে তাঁকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

স্টোর অফিসার পদে নিয়োগপ্রাপ্ত জামাল হোসাইন লিখিত পরীক্ষায় ৩০ নম্বর পেয়েছেন। তাঁকে মৌখিক পরীক্ষায় ২৫.৬৬ নম্বর দেওয়া হয়েছে। অথচ ওই পদে লিখিত পরীক্ষায় ৪৪.৫০ নম্বরপ্রাপ্ত আরিফ এলাহী শিশিরকে মৌখিকে ১০ নম্বর দেওয়া হয়েছে। পরিকল্পনা কর্মকর্তা পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হোমায়রা আখতার লিখিত পরীক্ষায় ৪১.৫০ নম্বর পেয়েছেন। তাঁকে মৌখিকে দেওয়া হয়েছে ২৩.১৪ নম্বর। অথচ ওই পদে লিখিত পরীক্ষায় ৪৮ নম্বরপ্রাপ্ত আবদুল মতিনকে মৌখিকে ৯ নম্বর দেওয়া হয়েছে।

আত্মীয়-স্বজনের ছড়াছড়ি : নিয়োগ কমিটির কোনো সদস্যের আত্মীয় পরীক্ষায় অংশ নিলে তা ঘোষণা দেওয়ার বিধান রয়েছে। মোকতাদির চৌধুরী নিয়োগ কমিটির সদস্য হয়ে আপন ভাতিজা সুজন আহমেদ চৌধুরী, আত্মীয় ফারুক আহমেদ ও তহমিনা ইয়াসমিনকে সহকারী পরিচালক পদে নিয়োগ দেন।

ডিজি সামীম আফজাল তাঁর ভাগনি ফাহমিদা বেগম ও ভাতিজা শাহ আলমকে নিয়োগ দেন। নিয়োগ কমিটির সদস্য তাহের হোসেন তাঁর স্ত্রীর বোনের মেয়ে শাহিনা আক্তারকে প্রকাশনা কর্মকর্তা পদে নিয়োগ দেন।

এ ছাড়া ডিজির ছেলের গৃহশিক্ষক আতিয়ার রহমানকে প্রগ্রাম অফিসার পদে, ডিজির সম্বন্ধীর ভাগনে মোস্তাফিজুর রহমানকে সহকারী পরিচালক পদে, তৎকালীন উপপরিচালক (পার্সো) এ বি এম শফিকুল ইসলামের আত্মীয় হোমায়রা বেগমকে পরিকল্পনা কর্মকর্তা পদে, তৎকালীন উপপরিচালক এ কে এম মফিজুর রহমানের ভাতিজা আশেকুর রহমানকে সহকারী পরিচালক পদে, তৎকালীন উপপরিচালক রাশিদা আক্তারের দেবর মশিউর রহমানকে সহকারী পরিচালক পদে, সহকারী পরিচালক আজাদ আলীর ভাতিজি সৈয়দা সাবিহা ইসলামকে সহকারী পরিচালক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়।

দলীয় পরিচয়ে নিয়োগ : এই নিয়োগটি ছিল পুরোপুরি দলীয়। নিয়োগ পাওয়া সহকারী পরিচালক সাইফুল ইসলাম শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নেতা। মশিউর রহমান ভূঁইয়া, তহমিনা ইয়াসমিন ও মোস্তাফিজুর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতা। রিজাউল করিম, সাখাওয়াত হোসেন, সাহাবুদ্দিন ও মহিউদ্দিন পাটোয়ারী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা, মোস্তাফিজুর রহমান কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতা এবং মশিউর রহমান (সমাজবিজ্ঞান প্রশিক্ষক) হাজী দানেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন।

এ ছাড়া আওয়ামী লীগ সমর্থিত ছাত্রসেনার কেন্দ্রীয় নেতা মনিরুজ্জামান, জাকের হোসেন, আবদুল্লাহ আল মামুন ও জামাল উদ্দিনকে দলীয় পরিচয় ও সুপারিশে নিয়োগ দেওয়া হয়।

প্যানেল থেকে নিয়োগের কোনো বিধান না থাকলেও সহকারী পরিচালক মশিউর রহমান, জাকের হোসাইন, আশেকুর রহমান, ফারুক আহমেদ ও সৈয়দ সাবিহা ইসলামকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এই নিয়োগে মেধাক্রম অনুসরণ করা হয়নি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সর্বাধিক নিয়োগ : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা থেকে কমপক্ষে আটজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাঁরা হলেন সহকারী পরিচালক সুজন আহমেদ চৌধুরী, ফারুক আহমেদ, মনিরুজ্জামান, আশেকুর রহমান, সৈয়দ সাবিহা ইসলাম, তহমিনা ইয়াসমিন (মৌলভীবাজার জেলা কোটায় নিয়োগকৃত), ফাহমিদা বেগম (কক্সবাজার জেলা কোটায় নিয়োগকৃত) ও উৎপাদন ব্যবস্থাপক পদে নিয়োগকৃত শাহ আলম।

এ ছাড়া সহকারী পরিচালক চাঁদপুরের আবদুল্লাহ আল মামুনকে গাজীপুর জেলা কোটায় চাকরি দেওয়া হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে ইসলামিক ফাউন্ডেশন জাতীয় শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি এম এ বারী বলেন, এই নিয়োগে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে। মৌখিক পরীক্ষায় পেনসিল দিয়ে নম্বর দেওয়া হয়, নম্বরপত্র ঘষামাজা করা হয়। অনেকের শিক্ষা সনদ ও অভিজ্ঞতার সনদ জাল। অনেককে মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অবিলম্বে এই নিয়োগ বাতিল করা উচিত।

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

সবিশেষ

দুই আমিরাতি জেন-জির বই সাড়া জাগাল

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
দুই আমিরাতি জেন-জির বই সাড়া জাগাল

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক প্রকাশনা সংস্থা ক্রিয়েটিভ করপোরেশন মিডিয়া থেকে প্রকাশিত দ্য আর্ট অব মিরাকলস বইটি এরই মধ্যে বিশ্বের জেন-জি প্রজন্মকে বেশ নাড়া দিতে পেরেছে। বইটির লেখক দুই বোন আয়েশা হাসান ও ইউমুনা হাসান। দুজনই আমিরাতি জেন-জি। যুক্তরাষ্ট্রেই থাকেন।

তাঁরা শুধু বইটির মাধ্যমে বিশ্বের জেন-জি প্রজন্মকে কাছে টানছেন না, জেন-জিদের চিন্তাধারায়ও বিবর্তন আনার সক্ষমতা দেখাতে পেরেছেন।

ভাবতে অবাক লাগে, এই দুই বোনের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে যা বলা হচ্ছে, তার সংক্ষিপ্ত রূপ হলো : এই দুই আমিরাতি জেন-জি প্রমাণ করতে পেরেছেন, তাঁদের পক্ষেও নতুন প্রজন্মের আইকনে পরিণত হওয়া অবাস্তব কিছু নয়। কারণ তাঁরা এখন স্বাপ্নিক, চিন্তক, যেকোনো বয়সী চেঞ্জমেকারদের আগ্রহ বাড়াতে পেরেছেন। বিশেষ করে নিজে খাঁটি থাকা সত্ত্বেও আধুনিকতার বিশৃঙ্খলার মধ্যে পড়ে যারা হা-পিত্যেশ করছেন, তাদের হতাশা কাটানোর এক উজ্জীবিত মন্ত্র হতে পারে দ্য আর্ট অব মিরাকলস বইটি।

আয়েশা ও ইউমুনা তাঁদের বইতে এটা বিমূর্ত করার চেষ্টা করেছেন, মানুষের বয়স একটা সংখ্যা ছাড়া আর কিছুই নয়। অর্থাত্ তাঁরা বোঝাতে চাইছেন, এমন কোনো আইন নেই, যার মাধ্যমে দাবি করা যেতে পারে, জ্ঞানী বিবেচিত হতে হলে অন্তত মাথার চুল আগে পাকাতে হবে। তাঁদের চিন্তাধারার ইতিবাচকতা হচ্ছে, এই দুই বোনের চিন্তাধারায় শুধু জেন-জি প্রজন্মই আকৃষ্ট হচ্ছে না, সব বয়সী মানুষই প্রভাবিত হচ্ছে।

টিকটক ফিড আর ইনস্ট্রাগ্রাম স্টোরিজুড়ে এখন দ্য আর্ট অব মিরাকলস বইটির প্রশংসা।

কোটিপতি ইনফ্লুয়েন্সার, হলিউড আইকন, বিভিন্ন বহুজাতিক কম্পানির সিইও, স্পোর্টস লিজেন্ড, এমনকি সাধারণ চিন্তকরাও মেনে নিচ্ছেন, বইটির চিন্তাধারার প্রভাব বেশ গভীর ও বাস্তব। সূত্র : খালিজ টাইমস

 

 

মন্তব্য

ভোজ্যতেলের সরবরাহে স্বস্তি, দাম কমেছে মুরগির

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
ভোজ্যতেলের সরবরাহে স্বস্তি, দাম কমেছে মুরগির

রাজধানীসহ সারা দেশের বাজারগুলোতে তিন মাস ধরে চলা ভোজ্যতেলের সংকট এখন অনেকটাই কেটে গেছে। ভোজ্যতেল সরবরাহকারী কম্পানিগুলো তেলের সরবরাহ বাড়ানোয় দোকানগুলোতে পর্যাপ্ত তেল পাওয়া যাচ্ছে। চাহিদামতো এক লিটার, দুই লিটার ও পাঁচ লিটার সয়াবিন তেলের বোতল কিনতে পারছেন ভোক্তারা। বাজারে চাহিদা কমায় কমেছে মুরগির দামও।

তবে মৌসুম না হওয়ায় বাজারগুলোতে পটোল, করলা, ঢেঁড়সসহ কয়েকটি সবজি চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। এই তিনটি সবজি ১০০ টাকার নিচে কেনা যাচ্ছে না। আগের বাড়তি দরেই বাজারে বেগুন বিক্রি হলেও শসা ও লেবুর দাম কিছুটা কমেছে। এর পরও লেবুর দাম ক্রেতার নাগালের বাইরে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মহাখালী কাঁচাবাজার, বাড্ডাসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে এবং বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারের প্রতিটি দোকানেই পর্যাপ্ত তেলের সরবরাহ আছে। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল সরকার নির্ধারিত দর ১৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বোতলজাত তেলের সরবরাহ বাড়ায় খোলা তেলের দামও কিছুটা কমেছে।

কারওয়ান বাজারের মেসার্স হাজী স্টোরের বিক্রেতা মো. কামাল গাজী গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, বাজারে এখন তেলের অভাব নেই, কিন্তু বিক্রির জন্য কাস্টমার পাচ্ছি না। কারণ রোজার প্রথম দিকে বোতলজাত তেল না পেয়ে অনেকে খোলা তেল কিনে নিয়েছে। এতে বাজারে এখন পর্যাপ্ত বোতলজাত তেল থাকলেও সে তুলনায় চাহিদা নেই। এখন একসঙ্গে প্রতিটি কম্পানির ডিলাররা তেল দিয়ে যাচ্ছেন বলেও তিনি জানান।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সোনালি মুরগির দাম দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে মানভেদে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কমেছে।

সোনালি মুরগি মানভেদে প্রতি কেজি ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা। তবে সোনালি মুরগির দাম যে হারে কমেছে, ব্রয়লার মুরগির দাম সে অনুপাতে কমেনি। কেজিতে ২০ টাকা কমে ব্রয়লার মুরগি ১৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

কারওয়ান বাজারের মুরগি বিক্রেতা মো. শহিদ কালের কণ্ঠকে বলেন, বাজারে মুরগির চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় দাম কমেছে। ব্রয়লার মুরগির চেয়ে সোনালি মুরগির দাম বেশি কমেছে।

সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মৌসুম না হওয়ার কারণে কয়েকটি সবজি চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। পটোল কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, করলা ১০০ টাকা, ঢেঁড়স ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি।

ইফতারে শরবতে লেবুর বাড়তি চাহিদা থাকার সুযোগে রোজার প্রথম দিকে অস্বাভাবিক দাম বেড়ে যায়। পরে ক্রেতা কমে যাওয়ায় বাজারে লেবুর বিক্রি কিছুটা কমে আসে। এখন হালিতে দাম কিছুটা কমে মাঝারি সাইজের লেবুর হালি ৫০ থেকে ৬০ টাকা। তবে বড় সাইজের লেবুর হালি এখনো ৮০ থেকে ১০০ টাকা। বেগুন মানভেদে ৮০ থেকে ১০০ টাকা, দেশি শসা ৬০ থেকে ৭০ টাকা, হাইব্রিড শসা ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। রোজার শুরুতে দেশি শসার দাম কেজিতে ১০০ থেকে ১২০ টাকায় ওঠে। ভালো মানের বেগুন কেজি ছিল ১২০ টাকা। টমেটো ৩০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৮০ টাকা কেজি। লম্বা লাউ প্রতি পিস ৫০ থেকে ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা। ফুলকপি প্রতি পিস ৩০ থেকে ৪০ টাকা।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি মানভেদে ৩৫ থেকে ৫০ টাকা, ছোলা মানভেদে ১০০ থেকে ১১৫ টাকা, বেসন মানভেদে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, চিনি ১২০ টাকা, আলু ২০ টাকা, দেশি আদা কেজি ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, দেশি নতুন রসুন ১২০ থেকে ১৫০ টাকা, আমদানীকৃত রসুন ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা কেজি।

 

 

মন্তব্য

বিশেষ বিসিএসের মাধ্যমে দুই হাজার চিকিৎসক নিয়োগের উদ্যোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
বিশেষ বিসিএসের মাধ্যমে দুই হাজার চিকিৎসক নিয়োগের উদ্যোগ

জরুরি ভিত্তিতে বিশেষ বিসিএসের মাধ্যমে দুই হাজার চিকিৎসক নিয়োগের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। গতকাল বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ডা. সায়েদুর রহমান এ কথা জানান।

ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, হাইকোর্ট প্রিফিক্স হিসেবে ডাক্তার পদবি ব্যবহার করার বিষয়ে দীর্ঘ ১২ বছর ধরে চলা রিটের রায় প্রদান করেছেন, যা এ সম্পর্কিত সব ধরনের বিভ্রান্তি, দ্বিধা ও অস্বস্তি দূর করতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। এ ছাড়া ৪৫, ৪৬ এবং ৪৭ বিসিএসে যথাক্রমে ৪৫০, এক হাজার ৬৮২ ও এক হাজার ৩৩১ জন চিকিৎসক নিয়োগের উদ্যোগ চলমান আছে।

ডা. সায়েদুর বলেন, তিনটি বিসিএস চলমান থাকা সত্ত্বেও দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে চিকিৎসকের ঘাটতি প্রকট আকার ধারণ করায় একটি বিশেষ বিসিএসের মাধ্যমে জরুরি ভিত্তিতে দুই হাজার চিকিৎসক নিয়োগে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে গত ৯ মার্চ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

সব ক্যাডারের জন্য বয়সসীমা ৩২ করা হলে আনুপাতিক হারে বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারের ক্ষেত্রে তা ৩৪ হওয়ার কথা থাকলেও সেটি এবার করা হয়নি। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি নিয়ে অনুরোধ জানালেও সেটি গৃহীত হয়নি বলে জানান প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ এই সহকারী।

স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইনটি সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনার পর চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে জানিয়ে অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান বলেন, সেটিতে সংস্কার কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে কিছু বিষয় অন্তর্ভুক্তি, বর্জন বা পরিমার্জনে কমিশনের চূড়ান্ত রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে, যা শিগগির পাওয়া যাবে।

চিকিৎসকসহ অন্যান্য সেবাদানকারীদের দীর্ঘদিনের বঞ্চনা ও বৈষম্যেরও অবসান করার চেষ্টা করা হয়েছে জানিয়ে ডা. সায়েদুর আরো বলেন, প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ পদে বঞ্চিত ও বৈষম্যের শিকারদের মধ্য থেকে দক্ষতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে পদায়ন করা হয়েছে। পদোন্নতিযোগ্য বিশেষজ্ঞদের পদোন্নতি দানের জন্য বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চসংখ্যক সুপারনিউমারি পদ সৃষ্টির কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। চিকিৎসকদের জন্য নেওয়া উদ্যোগগুলোর পাশাপাশি আমরা নার্সসহ অন্যান্য সব সহায়ক জনশক্তির নিয়োগের প্রক্রিয়াকেও গতিশীল করেছি যেন সম্ভাব্য স্বল্পতম সময়ে সব শূন্যপদ পূরণ করা যায়।

 

মন্তব্য

১৩ মাসে ২৬০১ বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে বিএসএফ

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
১৩ মাসে ২৬০১ বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে বিএসএফ

ভারতে প্রবেশের চেষ্টার সময় গত ১৩ মাসে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকা থেকে দুই হাজার ৬০১ বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। বুধবার ভারতের সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় এক প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানিয়েছেন দেশটির স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই।

লিখিত প্রশ্নের জবাবে ভারতের এই মন্ত্রী রাজ্যসভায় বলেন, ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সীমান্তে মোট দুই হাজার ৬০১ জন বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়।

দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, কেবল গত জানুয়ারিতেই সীমান্ত থেকে অনুপ্রবেশকারী ১৭৬ বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের অবৈধ কার্যক্রম প্রতিরোধে বিএসএফের মিশন অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।

প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই বলেন, গত বছরের ডিসেম্বরে ২৫৩, নভেম্বরে ৩১০, অক্টোবরে ৩৩১, সেপ্টেম্বরে ৩০০, আগস্টে ২১৪, জুলাইতে ২৬৭ ও জুনে ২৪৭ জন বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে বিএসএফ।

তবে গত বছরের মে মাসে সবচেয়ে কমসংখ্যক বাংলাদেশি ভারতে প্রবেশের চেষ্টার সময় গ্রেপ্তার হয়েছে। ওই মাসে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতে ৩২ জন বাংলাদেশি গ্রেপ্তার হয়।

এ ছাড়া ওই বছরের এপ্রিলে ৯১, মার্চে ১১৮, ফেব্রুয়ারিতে ১২৪ এবং গত বছরের জানুয়ারিতে ১৩৮ বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করে বিএসএফ। সূত্র : এনডিটিভি

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ