ঢাকা, রবিবার ১৬ মার্চ ২০২৫
২ চৈত্র ১৪৩১, ১৫ রমজান ১৪৪৬

ঢাকা, রবিবার ১৬ মার্চ ২০২৫
২ চৈত্র ১৪৩১, ১৫ রমজান ১৪৪৬

প্রিয়জনের সমাধিস্থলে অশ্রুসিক্ত স্বজনরা

মোবারক আজাদ
মোবারক আজাদ
শেয়ার
প্রিয়জনের সমাধিস্থলে অশ্রুসিক্ত স্বজনরা
বনানী সামরিক কবরস্থানে পিলখানা হত্যাকাণ্ডে শহীদ সেনা সদস্যের স্বজনরা গতকাল শ্রদ্ধা জানাতে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন। ছবি : কালের কণ্ঠ

পঁচাত্তর বছর বয়সী কোহিনূর বেগম। হাঁটাচলা সেভাবে করতে পারেন না। কিন্তু মনের জোরে মেয়ে মুন্নিসহ অন্যদের সহায়তায় হুইলচেয়ারে করে এসেছেন ছেলে শহীদ মেজর মিজানুর রহমানের সমাধিস্থলে। কবরের পাশে তিনি ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদছেন আর ছেলের জন্য মানুষের কাছে দোয়া চাইছেন।

অন্যদিকে শহীদ মেজর মমিনুল ইসলাম সরকারের সমাধিতে এসেছেন বাবা মফিজুল ইসলাম সরকার, মা মমিনুন্নেসা, দুই বোন ও তাঁদের সন্তানরা। তাঁরা বেদনার্ত, অশ্রুসিক্ত।

২০০৯ সালে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের শিকার সব সেনা অফিসারের শোকার্ত স্বজনরা গতকাল মঙ্গলবার সকালে বনানীর সামরিক কবরস্থানে শহীদদের সমাধিস্থলে আসেন। বৃদ্ধা মা-বাবা কেউ কেউ বলছেন, এটাই হয়তো শেষবারের মতো দেখা হবে ছেলের সমাধিস্থল।

সকাল ১০টার দিকে দেখা গেছে, কবরস্থানে ৭ নম্বর ব্লকের ৬৪২ নম্বর কবরটি শহীদ মেজর মিজানুর রহমানের। এর পাশেই বসে আছেন মা কোহিনূরসহ অন্য স্বজনরা। শহীদের বোন মুন্নি বলেন, এই বয়সে মাকে আনতে চাইনি, তার পরও মা বায়না ধরেছেন যেন নিয়ে আসি। সামনের বছর বাঁচেন কি না জানেন না, হয়তো এটাই শেষ দেখা হতে পারে ছেলের কবর।

তিনিও কথা বলতে বলতে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।

শহীদ মমিনুলের বাবা মফিজুল ইসলাম বলেন, এমন কোনো দিন নেই যে ছেলের কথা মনে না হয়। কত বড় বর্বরতায় এই হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে। বেঁচে থাকতে এর বিচার দেখে যেতে চাই এই দোয়া করি।

স্বামীর কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করছিলেন শহীদ মেজর মাহবুবুর রহমানের স্ত্রী রিতা রহমান জুলি।

পরে বলেন, আমরা খুব বেশি কিছু চাইনি। দীর্ঘদিন ধরে চেয়েছি শহীদি মর্যাদা এবং বিচারটা সুষ্ঠুভাবে হোক।

শহীদ কর্নেল কুদরত এলাহীর ছেলে অ্যাডভোকেট সাকিব রহমান বলেন, এত দিন ধরে আমাদের বাবা আর্মির লিস্টে শহীদ ছিলেন। এই প্রথম বাংলাদেশের এনলিস্টে শহীদ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ জন্য এই সরকারকে ধন্যবাদ দিতেই হয়।

তিনি বলেন, আমাদের (শহীদ পরিবার) প্রধানত দুটি দাবি ছিল, একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন, শহীদ সেনা দিবস হিসেবে ঘোষণা। একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে। কিন্তু তদন্ত যেন চলমান থাকে, সে ক্ষেত্রে আমরা যেন তার (হাসিনা) বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতে পারি। আমি আশা করব, এই তদন্ত কমিশন যেটা কিনা তদন্ত হবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের অধীনে। প্রকৃত অর্থে যারা দোষী আমরা তাদের যেন এখানে আনতে পারি।

শহীদ কর্নেল গুলজার উদ্দিন আহম্মেদের সমাধিস্থলের সামনে দোয়া শেষে অশ্রুসিক্ত নয়নে দাঁড়িয়েছিলেন স্ত্রী ফাতেমা সুলতানা। তিনি বলেন, আমার শহীদ স্বামী এবং আমাদের জন্য দোয়া রাখবেন, এর চেয়ে বেশি কিছু চাওয়ার নেই।

পিলখানায় হত্যাযজ্ঞে বাধাদানকারী শহীদ বিডিআরের কেন্দ্রীয় সুবেদার মেজর নূরুল ইসলামের ছেলে আশরাফুল আলম হান্নান। তিনি বলেন, শহীদ সেনা দিবস ঘোষণার মাধ্যমে পিলখানায় শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি জাতীয়ভাবে সম্মান দেওয়া হয়েছে। এই ঘোষণার মাধ্যমে আমাদের হৃদয়ের ক্ষত একটু হলেও কমেছে।

শহীদ কর্নেল এমদাদুল ইসলামের বন্ধু অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইউসুফ বলেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ডে যাঁরা শহীদ হয়েছেন, তাঁদের অধিকাংশকে আমি চিনতাম, অনেকে আমার সরাসরি বন্ধু। আজকে আল্লাহর কাছে হাজার শুকরিয়া যে আমাদের প্রথম চাওয়া পূরণ হয়েছে। আমরা শহীদ সেনা দিবস পালন করছি।

শহীদ কর্নেল মোহাম্মদ এমদাদুল ইসলামের ছেলে আফিফ আল ইসলাম বলেন, প্রতিবছর এই ফেব্রুয়ারি মাস এলেই চলতে, ফিরতে, খেতে ও ঘুমাতে গেলে বাবার কথা অনেক মনে হয়। কিন্তু বাবা তো আর আসবেন না। যারা এই হত্যাকাণ্ডে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে জড়িত, আমরা তাদের সুষ্ঠু বিচার চাই। জনগণ যেন জানতে পারে ওই দিন আসলে কী হয়েছিল। এই শহীদের স্ত্রী শামীমা আক্তার লুনাও প্রায়ই একই কথা ব্যক্ত করেন।

এর আগে সকাল ৯টায় রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষ থেকে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এরপর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান ও বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান নিজ নিজ বাহিনীর পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর বিজিবি ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা একে একে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পুরান ঢাকার পিলখানায় সেনা সদস্যদের হত্যার ঘটনা ঘটে। সেখানে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ মারা যান ৭৪ জন। হত্যার এই ঘটনাকে জাতীয়ভাবে স্বীকৃতিশহীদ সেনা দিবস হিসেবে পালনের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল শহীদ সেনা পরিবারের। সেটি বিগত সরকার করেনি। তবে অন্তর্বর্তী সরকার ২৫ ফেব্রুয়ারিকে জাতীয় শহীদ সেনা দিবস ঘোষণা করে।

প্রিয়জনের সমাধিস্থলে অশ্রুসিক্ত স্বজনরা

রাজধানীর বনানী সামরিক কবরস্থানে পিলখানা হত্যাকাণ্ডে শহীদ সেনা স্মৃতিস্তম্ভে গতকাল ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তিন বাহিনীর প্রধান। ছবি : কালের কণ্ঠ

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ঢাকার কেরানীগঞ্জ

জুলাই আন্দোলনে শহীদ সায়েমের কবর ভাঙচুর

কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধি
কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধি
শেয়ার
জুলাই আন্দোলনে শহীদ সায়েমের কবর ভাঙচুর

ঢাকার কেরানীগঞ্জে জুলাই আন্দোলনে শহীদ সায়েমের কবর ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক আওয়ামী লীগ নেতা ও তাঁর লোকজনের বিরুদ্ধে। গত শুক্রবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানায়, শুক্রবার জুমার নামাজের পর স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সিরাজুল ইসলাম বেশ কিছু লোক নিয়ে কেরানীগঞ্জ উপজেলার তেঘরিয়া ইউনিয়নের রসুলপুর কবরস্থানে যান। পরে সেখানে তাঁরা শহীদ সায়েমের নির্মীয়মাণ কবরটি ভাঙচুর করেন।

শহীদ সায়েমের মা শিউলি আক্তার জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় তাঁর এসএসসি পরীক্ষার্থী ছেলে সায়েম গত ১৯ জুলাই যাত্রাবাড়ীর কাজলা টোল প্লাজার সামনে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়। এরপর তাকে কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়ার রসুলপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়। গত দুই দিন আগে উপজেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে সরকারি খরচে কবরটি পাকা করার কাজও সম্পন্ন হয়। এ খবর পেয়ে আওয়ামী লীগের লোকজন কবরটি ভেঙে দিয়েছে।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতা সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, শহীদ সায়েমের মায়ের সঙ্গে কথা হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

মন্তব্য

বরিশালে ধর্ষণচেষ্টা মামলার আসামিকে পিটিয়ে হত্যা

নিজস্ব প্রতি‌বেদক, ব‌রিশাল
নিজস্ব প্রতি‌বেদক, ব‌রিশাল
শেয়ার
বরিশালে ধর্ষণচেষ্টা মামলার আসামিকে পিটিয়ে হত্যা

রিশাল নগরে এক শিশু ধর্ষণচেষ্টা মামলার আসামিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় লোকজনের বিরুদ্ধে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় এই ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তির নাম সুজন (২৩)। তিনি শহরের ধান গবেষণা রোডে ভাড়া বাসায় থাকতেন।

পেশায় অটোরিকশাচালক।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যার দিকে স্থানীয় লোকজন সুজনকে পিটিয়ে আহত করে। পরে তারা গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে থানায় হস্তান্তর করে। পুলিশ তাঁকে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির জন্য নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, শুক্রবার ধান গবেষণা রোডের এক শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন সুজন। এ ঘটনায় ওই দিনই শিশুর পরিবার থানায় সুজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মামলা করে। ঘটনার পর থেকে সুজন আত্মগোপনে ছিলেন। গতকাল সন্ধ্যার দিকে ধান গবেষণা রোডে স্থানীয় লোকজন তাঁকে ধরে বেধড়ক পিটুনি দিয়ে থানায় হস্তান্তর করে।

থানা পুলিশ সুজনকে রাত ৮টার দিকে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে।

মন্তব্য

ঢাকায় জাতিসংঘ হাউস উদ্বোধন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
ঢাকায় জাতিসংঘ হাউস উদ্বোধন

সফররত জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গতকাল শনিবার ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক কার্যালয়ের নতুন অফিসের (ইউএন হাউস ইন বাংলাদেশ) আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। সকালে এই উদ্বোধন শেষে বাংলাদেশে জাতিসংঘের কান্ট্রি টিমের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠক শেষে তিনি ভবনটি পরিদর্শন করেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, বাংলাদেশ-জাতিসংঘ সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে জাতিসংঘ ভবন প্রাঙ্গণে আয়োজিত আলোকচিত্র প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন গুতেরেস। তিনি জাতিসংঘের পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠানেও অংশ নেন।

পরে তিনি জাতিসংঘের বাংলাদেশ কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয় ও গৃহায়ণ এবং গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুয়েন লুইস।

বার্তা সংস্থা বাসস জানায়, বৈঠকে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশকে জাতিসংঘের সমর্থন অব্যাহত রাখার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। জাতিসংঘ শান্তি মিশনে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের অবদানের কথা স্মরণ করে গুতেরেস বলেন, তারা এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

এ সময় তিনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার উদ্যোগ নিয়েও আলোচনা করেন।

মন্তব্য

কক্সবাজারে সমন্বয়কের বাবাকে গুলি করে হত্যা

বিশেষ প্রতিনিধি, কক্সবাজার
বিশেষ প্রতিনিধি, কক্সবাজার
শেয়ার
কক্সবাজারে সমন্বয়কের বাবাকে গুলি করে হত্যা
হাবিবুল হুদা চৌধুরী

কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলায় আওয়ামী লীগ সমর্থকদের গুলিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক সাবেক সমন্বয়কের বাবা নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশ জানিয়েছে, গত শুক্রবার রাতে ইসলামাবাদ ইউনিয়নের সিকদারপাড়ায় জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে সৃষ্ট সংঘর্ষে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।

ঈদগাঁওয়ে নিহত ব্যক্তির নাম হাবিবুল হুদা চৌধুরী ওরফে কালু (৬০)। তিনি ইসলামাবাদ ইউনিয়নের সিকদারপাড়ার শামসুল হুদা চৌধুরীর ছেলে।

তাঁর ছেলে সাদিদুল হুদা ঈদগাঁও উপজেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক। নিহতের ছেলে অ্যাডভোকেট আবিদুল হুদা ও সাদিদুল হুদা জানান, তাঁদের সঙ্গে ইসলামাবাদ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আবদুর রাজ্জাকদের জমি নিয়ে বিরোধ চলছে। এর জের ধরে গত শুক্রবার পৌনে ১০টার দিকে আবদুর রাজ্জাকের লোকজন হাবিবুলের বাড়িতে আক্রমণ করে।

আবিদুল ও সাদিদুল অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ নেতা কিছুদিন আগে জেলখানা থেকে বেরিয়ে পরিকল্পিতভাবে তাঁদের বাবাকে হত্যা করেছেন।

হামলাকারীরা তাঁদের ঘরে গিয়ে বেশ কয়েকটি গুলি ছোড়ে। এ সময় তাঁদের ঘরের আরো দুই নারী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাঁরা জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

প্রতিপক্ষের রিদওয়ানুল হক জানান, তাঁদের কেনা একটি জায়গা নিয়ে হাবিবুল হুদাদের সঙ্গে বিরোধ চলছে।

এর জের ধরে শুক্রবার দুপুরে ঈদগাঁও থানা পুলিশের উপস্থিতিতে প্রতিপক্ষ জায়গাটি দখলের চেষ্টা করে। এ ঘটনায় তাঁর ভাই সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক বাধা দিলে পুলিশের সামনে তাঁকে মারধর করা হয়। পরে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। এর জের ধরেই রাতে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয় এবং হাবিবুল হুদা চৌধুরী গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে মারা গেছেন বলে রিদওয়ানুল পরে জেনেছেন।

এদিকে সাবেক সমন্বয়ক সাদিদুলের বাবাকে হত্যার প্রতিবাদে শুক্রবার মধ্যরাতের পর ছাত্ররা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছেন। তাঁরা অবিলম্বে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার দাবি করেছেন।

ঈদগাঁও থানার ওসি মশিউর রহমান জানান, জমির বিরোধের জের ধরে সৃষ্ট সংঘর্ষে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। হামলাকারীরা সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাকের লোক বলে তিনি প্রাথমিক তথ্যে জেনেছেন। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ