রাজধানীসহ সারা দেশের বাজারগুলোতে তিন মাস ধরে চলা ভোজ্যতেলের সংকট এখন অনেকটাই কেটে গেছে। ভোজ্যতেল সরবরাহকারী কম্পানিগুলো তেলের সরবরাহ বাড়ানোয় দোকানগুলোতে পর্যাপ্ত তেল পাওয়া যাচ্ছে। চাহিদামতো এক লিটার, দুই লিটার ও পাঁচ লিটার সয়াবিন তেলের বোতল কিনতে পারছেন ভোক্তারা। বাজারে চাহিদা কমায় কমেছে মুরগির দামও।
তবে মৌসুম না হওয়ায় বাজারগুলোতে পটোল, করলা, ঢেঁড়সসহ কয়েকটি সবজি চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। এই তিনটি সবজি ১০০ টাকার নিচে কেনা যাচ্ছে না। আগের বাড়তি দরেই বাজারে বেগুন বিক্রি হলেও শসা ও লেবুর দাম কিছুটা কমেছে। এর পরও লেবুর দাম ক্রেতার নাগালের বাইরে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মহাখালী কাঁচাবাজার, বাড্ডাসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে এবং বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারের প্রতিটি দোকানেই পর্যাপ্ত তেলের সরবরাহ আছে। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল সরকার নির্ধারিত দর ১৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বোতলজাত তেলের সরবরাহ বাড়ায় খোলা তেলের দামও কিছুটা কমেছে।
কারওয়ান বাজারের মেসার্স হাজী স্টোরের বিক্রেতা মো. কামাল গাজী গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, বাজারে এখন তেলের অভাব নেই, কিন্তু বিক্রির জন্য কাস্টমার পাচ্ছি না। কারণ রোজার প্রথম দিকে বোতলজাত তেল না পেয়ে অনেকে খোলা তেল কিনে নিয়েছে। এতে বাজারে এখন পর্যাপ্ত বোতলজাত তেল থাকলেও সে তুলনায় চাহিদা নেই। এখন একসঙ্গে প্রতিটি কম্পানির ডিলাররা তেল দিয়ে যাচ্ছেন বলেও তিনি জানান।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সোনালি মুরগির দাম দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে মানভেদে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কমেছে।
সোনালি মুরগি মানভেদে প্রতি কেজি ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা। তবে সোনালি মুরগির দাম যে হারে কমেছে, ব্রয়লার মুরগির দাম সে অনুপাতে কমেনি। কেজিতে ২০ টাকা কমে ব্রয়লার মুরগি ১৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ান বাজারের মুরগি বিক্রেতা মো. শহিদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বাজারে মুরগির চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় দাম কমেছে। ব্রয়লার মুরগির চেয়ে সোনালি মুরগির দাম বেশি কমেছে।’
সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মৌসুম না হওয়ার কারণে কয়েকটি সবজি চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। পটোল কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, করলা ১০০ টাকা, ঢেঁড়স ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি।
ইফতারে শরবতে লেবুর বাড়তি চাহিদা থাকার সুযোগে রোজার প্রথম দিকে অস্বাভাবিক দাম বেড়ে যায়। পরে ক্রেতা কমে যাওয়ায় বাজারে লেবুর বিক্রি কিছুটা কমে আসে। এখন হালিতে দাম কিছুটা কমে মাঝারি সাইজের লেবুর হালি ৫০ থেকে ৬০ টাকা। তবে বড় সাইজের লেবুর হালি এখনো ৮০ থেকে ১০০ টাকা। বেগুন মানভেদে ৮০ থেকে ১০০ টাকা, দেশি শসা ৬০ থেকে ৭০ টাকা, হাইব্রিড শসা ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। রোজার শুরুতে দেশি শসার দাম কেজিতে ১০০ থেকে ১২০ টাকায় ওঠে। ভালো মানের বেগুন কেজি ছিল ১২০ টাকা। টমেটো ৩০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৮০ টাকা কেজি। লম্বা লাউ প্রতি পিস ৫০ থেকে ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা। ফুলকপি প্রতি পিস ৩০ থেকে ৪০ টাকা।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি মানভেদে ৩৫ থেকে ৫০ টাকা, ছোলা মানভেদে ১০০ থেকে ১১৫ টাকা, বেসন মানভেদে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, চিনি ১২০ টাকা, আলু ২০ টাকা, দেশি আদা কেজি ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, দেশি নতুন রসুন ১২০ থেকে ১৫০ টাকা, আমদানীকৃত রসুন ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা কেজি।