ডায়াবেটিসের লক্ষণ দেখা দেয় শরীরের যেসব অঙ্গে

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ডায়াবেটিসের লক্ষণ দেখা দেয় শরীরের যেসব অঙ্গে
সংগৃহীত ছবি

বর্তমান সময়ে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। প্রায় প্রতিটি ঘরে ঘরেই এমন রোগী আছে। ডায়াবেটিস হলে বারবার পানির পিপাসা, ঘন ঘন প্রস্রাব, ক্লান্তি, ঝাপসা দৃষ্টি ও অনিচ্ছাকৃত ওজন কমে যেতে পারে।

রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে গেলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে এর প্রভাব পড়ে।

রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি বেড়ে গেলে শরীরের ক্ষুদ্র রক্তনালিগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে বিভিন্ন অঙ্গে সহজে রক্ত পৌঁছাতে পারে না।

এ কারণে ডায়াবেটিস হলে শরীরের গুরুতর সব অঙ্গে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। চলুন, তবে জেনে নেওয়া যাক ডায়াবেটিসের কারণে শরীরের কোন কোন অঙ্গে কী কী প্রভাব পড়ে ও লক্ষণ দেখা দেয়—

আরো পড়ুন
ডায়াবেটিক রোগীরা যেভাবে রোজা রাখবেন

ডায়াবেটিক রোগীরা যেভাবে রোজা রাখবেন

 

চোখ

রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি হলে রেটিনার রক্তনালিগুলোতে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে।

এর ফলে ঝাপসা দৃষ্টি, ছানি, গ্লকোমা, এমনকি গুরুতর ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথিও হতে পারে।

রেটিনোপ্যাথির কারণে রেটিনার পরিবর্তন ঘটে। যদি এর সঠিক চিকিৎসা না করা হয় তাহলে ডায়াবেটিক রোগীদের দৃষ্টিশক্তি কমে যায়। এমনকি তারা অন্ধত্ব বরণও করতে পারে।

পা

ডায়াবেটিসের কারণে পায়ে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। এ ক্ষেত্রে স্নায়ুর ক্ষতি হয়। ফলে পায়ে সংবেদন অনুভব করতে পারে না। ডায়াবেটিসের কারণে পায়ে রক্ত সঞ্চালনে ব্যাঘাত ঘটে। এর ফলে পায়ের বিভিন্ন ক্ষত সারানো কঠিন হয়ে পড়ে।

এর থেকেই ডায়াবেটিক ফুট বা ঘা হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যদি ঘা বা সংক্রমণের চিকিৎসা করা না হয়, তাহলে অঙ্গচ্ছেদ পর্যন্ত হতে পারে।

আরো পড়ুন
স্বাস্থ্যকর খাবারের নামে বিষ খাচ্ছেন না তো

স্বাস্থ্যকর খাবারের নামে বিষ খাচ্ছেন না তো

 

কিডনি

কিডনি শরীরের একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। এটি শরীর থেকে সব ধরনের টক্সিন ও বর্জ্য ফিল্টার করতে সাহায্য করে। কিডনিতে থাকা একাধিক ক্ষুদ্র রক্তনালি বিশেষ এই অঙ্গের কার্যকারিতায় সাহায্য করে।

রক্তে শর্করা বেড়ে যাওয়ার কারণে কিডনির রক্তনালিতেও ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। এর থেকেই ডায়াবেটিক রোগীর কিডনির সমস্যা বাড়ে। যা ডায়াবেটিক নেফ্রোপ্যাথি নামে পরিচিত।

এর উপসর্গগুলোর মধ্যে আছে- প্রস্রাবে প্রোটিন, বারবার প্রস্রাবের বেগ, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের অবনতি, পা, গোড়ালি, হাত ও চোখ ফুলে যাওয়া, বমি বমি ভাব, বমি, ক্লান্তিসহ অনেক কিছু।

আরো পড়ুন
গরমে লেবুপানি খেলে দূরে থাকবে যেসব রোগ

গরমে লেবুপানি খেলে দূরে থাকবে যেসব রোগ

 

স্নায়ু

ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি ও নেফ্রোপ্যাথির মতো উচ্চ রক্তে শর্করাও ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি নামক স্নায়ুর ক্ষতির কারণ হতে পারে।

এই অবস্থার কারণে অসাড়তা বা ব্যথা বা তাপমাত্রা অনুভব করার ক্ষমতা কমে যায়। এ ছাড়া জ্বালাপোড়া, তীক্ষ্ণ ব্যথা, স্পর্শে সংবেদনশীলতা ও গুরুতর পায়ের আলসার, সংক্রমণ ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিতে পারে।

হার্ট

রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে হার্টের রক্তনালিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ কারণে ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের মধ্যে স্ট্রোক ও হৃদরোগসহ কার্ডিওভাস্কুলার জটিলতার ঝুঁকিতে থাকে।

আরো পড়ুন
না ঘুমিয়ে একটানা কত দিন থাকা যায়

না ঘুমিয়ে একটানা কত দিন থাকা যায়

 

এ ছাড়া ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) অনুসারে, ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের উচ্চ রক্তচাপসহ হৃদরোগের ঝুঁকি বেশি থাকে।

মাড়ি

মাড়ির রোগকে পিরিওডন্টাল রোগ বলে। রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে মাড়িতে রক্তপ্রবাহ কমে যায় ও পেশিগুলো দুর্বল হয়ে যায়। এ জন্য মাড়ি থেকে রক্তপাত ও প্রচণ্ড ব্যথা হতে পারে।

ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাবেন যেভাবে

স্বাস্থ্যকর জীবনধারা অনুসরণ করার মাধ্যমে রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। ডায়াবেটিসসহ দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতার ঝুঁকি কমাতে অবশ্যই স্বাস্থ্যকর, পুষ্টিকর ও কম প্রক্রিয়াজাত খাবার খেতে হবে।

আরো পড়ুন
নারকেলের দুধে কী উপকার, জেনে খাচ্ছেন তো?

নারকেলের দুধে কী উপকার, জেনে খাচ্ছেন তো?

 

এর পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে হবে। এ জন্য নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে। এ ছাড়া ধূমপান ও অ্যালকোহল সেবন এড়াতে হবে। এ ছাড়া ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো নিয়মিত চেকআপ করানো ও ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলা।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

অতিরিক্ত পেইনকিলার সেবনে স্বাস্থ্যের যে ক্ষতি

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
অতিরিক্ত পেইনকিলার সেবনে স্বাস্থ্যের যে ক্ষতি
সংগৃহীত ছবি

সামান্য মাথা ব্যথা থেকে শুরু করে কোমরে বা হাতেপায়ে বাতের ব্যথাসহ নানা কারণে অনেকেই পেইনকিলার খেয়ে থাকেন। অনেকের আবার এই অভ্যাস দীর্ঘদিনের। তবে সাময়িকভাবে ব্যথানাশক ওষুধ (পেইনকিলার) ক্ষতিকারক না হলেও দীর্ঘদিন সেবনে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি দেখা দিতে পারে।

সাধারণত ব্যথানাশক ওষুধগুলোকে এনএসএইডস এবং ওপিওয়েড—এই দুই গ্রুপে ভাগ করা হয়।

স্বাস্থ্যঝুঁকি

ব্যথানাশক হিসেবে আইবুপ্রফেন, ন্যাপ্রক্সেন, ডাইক্লফেনাক— এই ওষুধগুলো বেশি ব্যবহৃত হয়। এর মধ্যে প্যারাসিটামলসহ কিছু ওষুধ ওটিসি হিসেবে স্বীকৃত। অর্থাৎ এ ধরনের ওষুধ কেনার জন্য কোনো রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনের প্রয়োজন হয় না। তবে অতিরিক্ত ডোজে নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে একাধারে দীর্ঘদিন এ ওষুধ সেবন করলে এর মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে।

আরো পড়ুন
স্বাস্থ্যকর খাবারের নামে বিষ খাচ্ছেন না তো

স্বাস্থ্যকর খাবারের নামে বিষ খাচ্ছেন না তো

 

তীব্র ব্যথার ক্ষেত্রে ওপিওয়েড ওষুধ ব্যবহার করা হয়। এনএসএইডের তুলনায় এর ব্যবহার বেশ সীমিত বললেই চলে। এর কারণে ওপিয়েড আসক্তি, বিষণ্নতা, কোষ্ঠকাঠিন্যসহ বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে।

স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে করণীয়

গ্যাস্ট্রিক আলসারের ঝুঁকি এড়াতে ব্যথার ওষুধ খেতে হবে ভরা পেটে এবং খাওয়ার আগে অবশ্যই গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খেতে হবে।

একই গ্রুপের দুটি ব্যথার ওষুধ একসঙ্গে বা একাধিক ডোজ খাওয়া উচিত নয়। এতে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বাড়ে।

যেমন—দিনে প্যারাসিটামল ৫শ মিলিগ্রামের আটটি ট্যাবলেটের বেশি সেবনে লিভারের ক্ষতি হতে পারে। ৬৫ বছরের বেশি বয়স্কদের ক্ষেত্রে ব্যথার ওষুধ ব্যবহারে বিশেষ সতর্ক হতে হবে।

আরো পড়ুন
নতুন যে আপডেট নিয়ে আসছে টেলিগ্রাম

নতুন যে আপডেট নিয়ে আসছে টেলিগ্রাম

 

আগে থেকে কিডনি, লিভারের সমস্যা বা পেটে আলসার আছে কি না, ভালোভাবে জেনে নিতে হবে।

এ ছাড়া রোগী নিয়মিত অন্য কোনো ওষুধ খায় কি না সেটাও জানা জরুরি।

মন্তব্য
কিডনি ফাউন্ডেশনের আলোচনাসভায় বক্তারা

প্রতিকার ও প্রতিরোধই কিডনি রোগ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায়

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
প্রতিকার ও প্রতিরোধই কিডনি রোগ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায়
ছবি : কালের কণ্ঠ

‘কিডনি রোগীর সংখ্যা প্রতিবছর বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশে ১০ বছর পূর্বে কিডনি রোগী ছিল ১৮ শতাংশ, ২০২৩ সালে বেড়ে হয়েছে প্রায় ২৪ শতাংশ। ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ বৃদ্ধি পাওয়া এর প্রধান কারণ। ২০১১ সালে ডায়াবেটিসের রোগী ছিল ৮০ লাখ, যা ২০১৮ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ১০ লাখে।

তেমনি ২০১১ সালে উচ্চ রক্তচাপের রোগী ছিল ১ কোটি ৮০ লাখ, বর্তমানে বেড়ে হয়েছে ২ কোটির ওপরে। এসব রোগের কোনো উপসর্গ না থাকাই প্রধান সমস্যা। ফলে রোগীরা চিকিৎসকের কাছে পরামর্শ নেওয়ার প্রয়োজন মনে করেন না।’ আজ বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) বিশ্ব কিডনি দিবস উপলক্ষে কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট আয়োজিত আলোচনাসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
 

বক্তারা আরো বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে, মাত্র ৪০ শতাংশ মানুষ জানে না তার ডায়াবেটিস আছে। আর ৬০ শতাংশ মানুষ জানে না তারা উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে। ৯০ শতাংশ মানুষ জানেই না তাদের প্রস্রাব দিয়ে আমিষ নির্গত হয়। এর ফলে নিজের অজান্তেই তারা দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে (ক্রনিক কিডনি ডিজিজ) আক্রান্ত হচ্ছে।

তখন পরীক্ষা নিরীক্ষায় দেখা যায়, দুটো কিডনিই ৭০-৮০ শতাংশ বিকল হয়ে পড়েছে। এই পর্যায়ে চিকিৎসা করে কিডনি বিকল রোগের অগ্রগতি কমানো সম্ভব হয় না। ফলে ৫-৬ বছরের মধ্যে ওই রোগীদের দুটো কিডনিই ৯০ ভাগের উপর বিকল হয়ে যায়। মূলত উপসর্গ না থাকায় তারা বিশ্বাসই করেন না যে, তাদের দুটো কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে। তাই কিডনি রোগ থেকে বাঁচতে হলে প্রতিকার ও প্রতিরোধই একমাত্র উপায়।

কিডনি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আর রশিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. সৈয়দ জাকির হোসেন এবং ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ডিপার্টমেন্ট অফ এপিডেমিওলজি অ্যান্ড রিসার্চের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল ও রিচার্স ইনস্টিটিউটের মেজর জেনারেল (অব.) অধ্যাপক জিয়াউদ্দিন আহম্মেদ, মহাসচিব অধ্যাপক ডা. রুহুল আমিন রুবেল, ব্যবস্থাপনা পরিচালক টিনী ফেরদৌস রশিদ প্রমুখ। 

জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান বলেন, ‘বর্তমানে দেশে ১ কোটির ওপরে ডায়াবেটিক রোগী রয়েছে এবং  সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে একে রোধ করা দরকার।’ 

অধ্যাপক ডা. সৈয়দ জাকির হোসেন বলেন, ‘বর্তমান সরকার নন-কমিউনিকেবল ডিজিজের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে এবং কিছু কিছু কমিউনিটি ক্লিনিকে বিনা মূল্যে ওষুধ প্রদান করা হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতিটি জেলায় ১০ বেডের ডায়ালাইসিস ইউনিট চালুর পরিকল্পনা করা রয়েছে।’

অধ্যাপক হারুন আর রশিদ বলেন, ‘কিডনি রোগের প্রধান তিনটি কারণের মধ্যে প্রথম ডায়াবেটিস, দ্বিতীয়ত উচ্চ রক্তচাপ এবং তৃতীয় কারণ নেফ্রাইটিস। দেশে নেফ্রাইটিস দিন দিন কমলেও অসংক্রামক রোগ ডায়াবেটিস ও উচ্চরক্তচাপের রোগী বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে।’

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

কিডনি রোগ কি দীর্ঘস্থায়ী? যেভাবে বুঝবেন

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
কিডনি রোগ কি দীর্ঘস্থায়ী? যেভাবে বুঝবেন
সংগৃহীত ছবি

প্রতিবছর মার্চ মাসের দ্বিতীয় বৃহস্পতিবার বিশ্ব কিডনি দিবস পালিত হয়। এই বছর ১৩ই মার্চ কিডনি সম্পর্কিত রোগ ও সংক্রমণ এবং তা প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিশ্ব কিডনি দিবস পালিত হচ্ছে। অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে, এই রোগ কি দীর্ঘস্থায়ী? এর থেকে কি প্রতিকারের উপায় নেই? আর সেসব প্রশ্নের উত্তর জানতে বিস্তারিত পড়ুন এই প্রতিবেদনে।

কিডনি রোগ কি দীর্ঘস্থায়ী

বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ একটি ক্রমবর্ধমান অবস্থা যেখানে কিডনি ধীরে ধীরে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সঠিকভাবে কাজ করার ক্ষমতা হারায়।

কিডনি রক্ত থেকে বর্জ্য, অতিরিক্ত তরল ও টক্সিন ফিল্টার করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ ছাড়া শরীরের সামগ্রিক ভারসাম্য বজায় রাখে।

আরো পড়ুন
নারকেলের দুধে কী উপকার, জেনে খাচ্ছেন তো?

নারকেলের দুধে কী উপকার, জেনে খাচ্ছেন তো?

 

দীর্ঘস্থায়ী এই রোগের ফলে কিডনি তার কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলে। যার ফলে শরীরে ক্ষতিকারক পদার্থ জমা হয়।

এই রোগকে পাঁচটি পর্যায়ে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়। চূড়ান্ত পর্যায়, যা এন্ড-স্টেজ রেনাল ডিজিজ (ইএসআরডি) নামে পরিচিত। এতে ডায়ালিসিস বা কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন হয়। এই রোগটি প্রায়শই ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও গ্লোমেরুলোনেফ্রাইটিসের মতো অবস্থার কারণে হয়, যার ফলে এর অগ্রগতি ধীর করার জন্য প্রাথমিক শনাক্তকরণ এবং ব্যবস্থাপনা অপরিহার্য।

সতর্ক থাকার জন্য প্রাথমিক সংকেত

নেফ্রোলজিস্টরা জানিয়েছেন, কিডনির দীর্ঘস্থায়ী রোগের লক্ষণগুলো প্রায়শই ধীরে ধীরে বিকাশ লাভ করে এবং প্রাথমিক পর্যায়ে লক্ষণীয় নাও হতে পারে। অবস্থা অগ্রসর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যক্তিরা ক্লান্তি, পা ও পায়ে ফোলা (শোথ), ঘন ঘন প্রস্রাব (বিশেষ করে রাতে), ক্রমাগত চুলকানি, পেশীতে ক্রাম্পস, বমি বমি ভাব এবং মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করতে অসুবিধা অনুভব করতে পারে। উচ্চ রক্তচাপ, ক্ষুধামন্দা ও শ্বাসকষ্টও এর ইঙ্গিত হতে পারে।

উন্নত পর্যায়ে এই রোগ তীব্র তরল ধারণ, রক্তাল্পতা ও বিপাকীয় ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি করতে পারে। যেহেতু উল্লেখযোগ্য কিডনি ক্ষতি হওয়ার আগ পর্যন্ত লক্ষণগুলো প্রকাশ নাও হতে পারে, তাই প্রাথমিক নির্ণয়ের জন্য নিয়মিত চেকআপ এবং কিডনি ফাংশন পরীক্ষা অপরিহার্য।

আরো পড়ুন
ধূমপানে কি চুল পড়ার সমস্যা বাড়ে?

ধূমপানে কি চুল পড়ার সমস্যা বাড়ে?

 

ঝুঁকির কারণ

কিছু মানুষ অন্যদের তুলনায় কিডনির দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকিতে বেশি থাকেন। বিশেষ করে ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ব্যক্তিরা। যাদের পরিবারে কিডনি রোগের ইতিহাস আছে, স্থূলতা, হৃদরোগ বা লুপাস আছে তাদেরও ঝুঁকি বেশি। দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ বয়স্কদের মধ্যে বেশি দেখা যায়।

তবে ধূমপান, খারাপ খাদ্য ও ব্যায়ামের অভাবের মতো জীবনযাত্রার কারণে যেকোনো বয়সে কিডনি ক্ষয়কে ত্বরান্বিত করতে পারে। তদুপরি, চিকিৎসা পরামর্শ ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে ব্যথা নিরাময়কারী ওষুধ বা কিছু অ্যান্টিবায়োটিক সেবনকারী ব্যক্তিরা অজান্তেই কিডনি ক্ষতির দিকে এগিয়ে যেতে পারেন।

চিকিৎসা কী

যদিও এই অবস্থার কোনো প্রতিকার নেই, তবে খাদ্যতালিকাগত পরিবর্তন ও চিকিৎসাগত হস্তক্ষেপের মাধ্যমে এর অগ্রগতি নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এই রোগের চিকিৎসা রোগের পর্যায় ও অন্তর্নিহিত কারণগুলোর ওপর নির্ভর করে। কিডনি ক্ষতি ধীর করার জন্য ওষুধ রক্তচাপ, রক্তে শর্করার মাত্রা ও কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

আরো পড়ুন
শিশুরা চিপস খেলে কি আসলেই ক্ষতি হয়?

শিশুরা চিপস খেলে কি আসলেই ক্ষতি হয়?

 

সোডিয়াম, পটাসিয়াম ও প্রোটিনের পরিমাণ কমিয়ে খাদ্যতালিকাগত সমন্বয় কিডনির ওপর চাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে। তীব্র ক্ষেত্রে রক্ত থেকে বর্জ্য ফিল্টার করার জন্য ডায়ালিসিসের প্রয়োজন হয়, অথবা কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন হতে পারে।

প্রতিরোধের উপায়

  • সুষম খাদ্য, নিয়মিত ব্যায়াম ও নির্ধারিত ওষুধের মাধ্যমে রক্তে শর্করার মাত্রা ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
  • পর্যাপ্ত পানি পান করা, লবণ ও প্রক্রিয়াজাত খাবারের পরিমাণ সীমাবদ্ধ করা, অতিরিক্ত অ্যালকোহল ও তামাকের ব্যবহার এড়িয়ে চলা এবং ওভার-দ্য-কাউন্টার পেইনকিলারের পরিমাণ কমিয়ে কিডনির কার্যকারিতা রক্ষা করা যায়।
  • ফল, সবজি, পুরো শস্য ও লিন প্রোটিনে সমৃদ্ধ খাদ্য সামগ্রিক কিডনি স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
  • বিশেষ করে ঝুঁকির মধ্যে থাকা ব্যক্তিদের জন্য নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা কিডনি ক্ষতির সম্ভাবনা কমাতে প্রাথমিক শনাক্তকরণ এবং সময়োপযোগী হস্তক্ষেপের সুযোগ করে দেয়।
আরো পড়ুন
নতুন যে আপডেট নিয়ে আসছে টেলিগ্রাম

নতুন যে আপডেট নিয়ে আসছে টেলিগ্রাম

 

এই প্রতিবেদনের তথ্যগুলো পরামর্শমূলক। সাধারণ তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। বিস্তারিত জানতে বা পরবর্তী যেকোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।

সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস

মন্তব্য

গরমে লেবুপানি খেলে দূরে থাকবে যেসব রোগ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
গরমে লেবুপানি খেলে দূরে থাকবে যেসব রোগ
সংগৃহীত ছবি

খাবারের প্রভাব সবসময়ই সরাসরি আমাদের স্বাস্থ্যের উপর পড়ে। তাই স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা খাদ্যতালিকায় স্বাস্থ্যকর খাবার অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দেন। লেবু এর মধ্যে একটি, যা অনেকেই তাদের খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেন। পুষ্টিকর এই ফল আপনার খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করলে কেবল হৃদরোগের উন্নতি হয় না, বরং ক্যান্সারও প্রতিরোধ হয়।

এই সময়ে প্রায় সবার ঘরেই লেবু পাওয়া যায়। তা ছাড়া হোটেল হোক বা রেস্তোরাঁ, লেবু ছাড়া এগুলো অসম্পূর্ণ। বেকড খাবার, সস, সালাদ ড্রেসিং, ম্যারিনেট, পানীয় এবং মিষ্টান্নগুলোতে স্বাদ যোগ করার জন্য মানুষ সাধারণত অল্প পরিমাণে লেবু বা টক ব্যবহার করে। তবে টক স্বাদের কারণে এগুলো খুব কমই খাওয়া হয়।

তবে জেনে নিন এই টক ফলের উপকারী দিকগুলো।

আরো পড়ুন
নারকেলের দুধে কী উপকার, জেনে খাচ্ছেন তো?

নারকেলের দুধে কী উপকার, জেনে খাচ্ছেন তো?

 

স্ট্রোক প্রতিরোধে: অনেক গবেষণায় জানা গেছে, সাইট্রাস ফলের মধ্যে উপস্থিত ফ্ল্যাভোনয়েড নারীদের ইস্কেমিক স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে।

শরীরকে হাইড্রেট করে: গ্রীষ্মে লেবু পানি পান করে শরীরকে হাইড্রেটেড রাখা যায়। লেবুতে প্রচুর ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ পাওয়া যায়, যা শরীরকে তাপ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: গ্রীষ্মকালে লেবুপানি পান করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী থাকে। লেবুতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি পাওয়া যায়। ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করতে সাহায্য করতে পারে।

ওজন কমাতে: প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক গ্লাস লেবুপানি পান করুন। লেবুপানি আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে।

লেবুতে থাকা পেকটিন ফাইবার শরীরকে ক্ষুধার্ত বোধ করতে দেয় না। লেবুর রস শরীর থেকে চর্বি ঝরিয়ে ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে।

আরো পড়ুন
ধূমপানে কি চুল পড়ার সমস্যা বাড়ে?

ধূমপানে কি চুল পড়ার সমস্যা বাড়ে?

 

রক্তচাপ: রক্তচাপ রোগীদের জন্য লেবুপানি খুবই উপকারী বলে মনে করা হয়। লেবুতে উপস্থিত ভিটামিন সি রক্তচাপ ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে।

হজম প্রক্রিয়া সহজ করে: লেবুর রসে বিট লবণ মিশিয়ে পান করলে হজমের সমস্যা দূর হতে পারে। লেবুর রস হাইড্রোক্লোরিক এসিড এবং পিত্ত নিঃসরণ বৃদ্ধি করে, যা পেটের গ্যাস দূর করতে সাহায্য করে।

ত্বককে সুন্দর করে: লেবু ত্বকের জন্যও খুবই উপকারী। গ্রীষ্মে প্রতিদিন লেবুপানি খাওয়া ত্বকের জন্য ভালো বলে মনে করা হয়। এতে উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি ত্বককে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া থেকে রক্ষা করতে পারে।

আরো পড়ুন
নতুন যে আপডেট নিয়ে আসছে টেলিগ্রাম

নতুন যে আপডেট নিয়ে আসছে টেলিগ্রাম

 

সূত্র : ইটিভি

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ