তামাকপণ্যের ব্যবহার কমাতে বিদ্যমান ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন শক্তিশালী করা প্রয়োজন বলে মনে করেন দেশের খ্যাতনামা চিকিৎসকরা। তাঁরা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিশ্রুত ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে বিদ্যমান আইন দ্রুত সংশোধন করতে হবে।
গতকাল শনিবার সকালে ঢাকায় ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের উদ্যোগে বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির মিলনায়তনে ‘প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জন : তামাক নিয়ন্ত্রণে অগ্রগতি’ শীর্ষক মতবিনিময়সভায় এসব কথা বলা হয়।
সভায় ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক ডা. খন্দকার আব্দুল আউয়াল রিজভী বলেন, দেশে তিন কোটি ৭৮ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করেন।
আর কর্মক্ষেত্রসহ পাবলিক প্লেস (জনপরিসর) ও গণপরিবহনে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন তিন কোটি ৮৪ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ।
বর্তমানে দেশে প্রায় ১৫ লাখ মানুষ তামাকজনিত রোগে ভুগছেন। তাঁদের রক্ষায় দ্রুত বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করতে হবে।
সভায় ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের কারণে দেশে হৃদরোগ, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস, ক্যান্সার ও শাসতন্ত্রের দীর্ঘমেয়াদি রোগসহ অন্যান্য অসংক্রামক রোগ প্রতিনিয়ত বাড়ছে।
বর্তমানে দেশে মোট মৃত্যুর ৬৭ শতাংশই অসংক্রামক রোগের কারণে ঘটছে। আর এই অসংক্রামক রোগ সৃষ্টির কারণ মূলত ধূমপান ও তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার। তাই এই অকাল মৃত্যু ঠেকাতে তামাকপণ্যের ওপর কার্যকর কর আরোপ এবং বিদ্যমান আইন সংশোধন করতে হবে।
ক্যান্সার সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, তামাক ব্যবহারের ফলে মানবদেহে ক্যান্সারসহ বিভিন্ন মরণব্যাধির সৃষ্টি হয়।
একই সঙ্গে এই ক্ষতিকর দ্রব্য ব্যবহারের ফলে দেশে প্রতিবছর প্রায় এক লাখ ৬১ হাজার মানুষ মারা যায়।
তাই এই অকাল মৃত্যু কমিয়ে আনতে এবং তামাক ব্যবহার কমাতে তামাকে কর বাড়াতে হবে এবং বিদ্যমান আইন সংশোধন করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এফসিটিসির সঙ্গে অধিকতর সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে হবে।
সভায় আরো বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটি হাসপাতাল অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার হোমের পরিচালক অধ্যাপক ডা. এম এ হাই, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের অ্যান্টি ট্যোবাকো প্রগ্রামের কো-অর্ডিনেটর ডা. অরুণা সরকার প্রমুখ।