একদিকে বাজারে আলুর দাম কম, অন্যদিকে হিমাগারে নেই রাখার জায়গা। তাই আলু চাষি ও ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত পড়েছে। তাঁরা দিনের পর দিন লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও হিমাগারে আলু প্রবেশ করাতে পারছেন না। বিদেশে রপ্তানিও কমে গেছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
হিমাগারে জায়গা সংকট
আলু চাষি-ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত
প্রিয় দেশ ডেস্ক

কুড়িগ্রাম : কুড়িগ্রামের চারটি হিমাগারে মোট ধারণক্ষমতা ছয় লাখ ২০ হাজার বস্তা (প্রতি কেজি ৬৫ কেজি)। ধারণক্ষমতার প্রায় পুরোটাই পূরণ হয়ে গেছে।
এ বছর বীজের চড়া মূল্য ও অন্যান্য উপকরণের মূল্যবৃদ্ধির কারণে আলু উৎপাদনের খরচ বেশি পড়েছে।
সদর উপজেলার রায়পুর গ্রামের কৃষক দুলাল হোসেন ব্যাপারী জানান, হিমাগারের ফটকে এসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষার পরও আলুর বস্তা নিতে পারছেন না ভেতরে। হিমাগার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ধারণক্ষমতা শেষ হওয়ার কারণে তারা আলু নিতে পারছে না।
পাকুন্দিয়া (কিশোরগঞ্জ) : লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় উৎপাদন বেশি হওয়ায় বিড়ম্বনায় পড়েছেন কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার আলু চাষি ও ব্যবসায়ীরা। তাঁদের অভিযোগ, হিমাগারগুলোতে আলু রাখার মতো পর্যাপ্ত জায়গা না থাকার অজুহাত দেখিয়ে আলু নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে হিমাগার কর্তৃপক্ষ। ফলে হিমাগারগুলোর ফটকের সামনে ট্রাক ভর্তি আলু নিয়ে তাঁদের অপেক্ষা করতে হচ্ছে দিনের পর দিন।
তবে হিমাগার কর্তৃপক্ষের দাবি, বাজারে আলুর দাম কম থাকায় কৃষকরা বীজ আলুর পাশাপাশি ব্যবহারযোগ্য আলুও সংরক্ষণে ঝুঁকে পড়েছেন। ফলে আলু সংরক্ষণে হিমাগারে চাপ বেড়েছে, যা সামাল দিতে পারছে না তারা।
পাকুন্দিয়া পৌর সদরের কৃষক মো. তওহিদুল ইসলাম, মোছলেহ উদ্দীন, দেলোয়ার হোসেনসহ কয়েকজন বলেন, হিমাগারের ফটকের সামনে ট্রাক, ট্রলি ও ভ্যানগাড়িতে করে শত শত বস্তা আলু নিয়ে তাঁদের মতো কৃষক ও ব্যবসায়ীরা অপেক্ষা করছেন। কিন্তু ফটক খোলা হচ্ছে না।
এগারসিন্দুর কোল্ড স্টোরেজের ম্যানেজার মো. আলতাফ হোসেন বলেন, ‘আমরা আগাম স্লিপ দিইনি। যে আগে আসবে, সে-ই আলু সংরক্ষণের সুযোগ পাবে। এই নিয়মে আমরা স্লিপ বিতরণ করছি। এখন আমাদের ধারণক্ষমতা অনুযায়ী স্লিপ বিতরণ শেষ।
ফরিদপুর : ফরিদপুরের হিমাগারগুলোতেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। নিয়ম অনুযায়ী হিমাগারে আলু রাখার জন্য প্রতিবছর ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে বুকিং দিতে হয়। আলু রাখার মৌসুম মার্চ মাস থেকে নভেম্বর পর্যন্ত। এখানে আলু সংরক্ষণ করেন ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদাহ, মাগুরা, নীলফামারী, লালমনিরহাট, ঠাকুরগাঁও, রংপুর, দিনাজপুর ও রাজশাহী অঞ্চলের আলু ব্যবসায়ী ও কৃষকরা। আলু ছাড়াও ফল ব্যবসায়ীরা সারা বছরই কিছুদিনের জন্য বিভিন্ন ফল সংরক্ষণ করেন এখানে। সুবিধামতো সময়ে আবার কৃষক ও ব্যবসায়ীরা হিমাগার থেকে আলু ও ফল বিক্রির জন্য নিয়ে যান।
হিমাগার ঘুরে দেখা যায়, ফরিদপুর শহরের রাজবাড়ী রাস্তার মোড়ে হিমাগার ফটকের সামনে ট্রাক্টর, ভটভটি, ভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে আলু নিয়ে এসেছেন হিমাগারে রাখতে। কেউ কেউ তিন দিন, আবার কেউ পাঁচ দিন ধরে হিমাগারের বাইরের রাস্তায় অপেক্ষা করছেন। আগতদের বেশির ভাগই উত্তরবঙ্গ থেকে এসেছেন। পাঁচ-ছয় দিন ধরে অপেক্ষা করেও আলু সংরক্ষণ করতে না পেরে হতাশায় পড়েছেন কৃষকরা। আগে বুকিং দিয়েও আলু রাখতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেন বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী। প্রচণ্ড গরমে ট্রাকে বোঝাই করা আলু নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষায় থাকায় সেই আলু ট্রাকেই নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
সম্পর্কিত খবর

সন্ত্রাসী সংগঠন আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও গণহত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ

সন্ত্রাসী সংগঠন আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও গণহত্যার বিচারের দাবিতে গতকাল রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ছবি : কালের কণ্ঠ
।

শামা ওবায়েদ
সংস্কারের সঙ্গে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা
করুনফরিদপুর প্রতিনিধি

অন্তর্বর্তী সরকারকে আহবান জানিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ইসলাম রিংকু বলেছেন, ‘আপনারা এ দেশের একটি ক্রান্তিকালে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের আপনাদের ওপর ভরসা রয়েছে। আমরা সবাই চাই, আপনারা সফল হন। কিন্তু আপনাদের সফলতা তখনই হবে, যখন সংস্কার প্রক্রিয়ার সঙ্গে সঙ্গে আপনারা সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার এমএন একাডেমি স্কুল মাঠে নগরকান্দা উপজেলা বিএনপির আয়োজনে বিএনপির সাবেক মহাসচিব ও সাবেক মন্ত্রী কে এম ওবায়দুর রহমানের ১৮তম মৃত্যুবার্ষিকীর স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শামা ওবায়েদ এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘সংস্কারের অংশকে শেখ হাসিনা ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। এখন সংস্কারের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের যে প্রধান মৌলিক অধিকার, মানুষের ভোট দেওয়ার অধিকার, সেটি প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। তাহলেই আমরা একটি দুর্নীতিমুক্ত সংসদ পাব।

আবুল কাসেম ফজলুল হক
আমরা জনগণের স্বার্থে সংস্কার চাই
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেছেন, ‘আসলেই আমাদের রাষ্ট্রব্যবস্থার সংস্কার দরকার। সংস্কার হতে পারে সর্বজনীন কল্যাণে। আবার তা হতে পারে উচ্চ শ্রেণির লোকদের সুবিধা থেকে। আমরা জনগণের স্বার্থে সংস্কার চাই।
গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টি কেন্দ্রীয় পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত ইফতার মাহফিল ও ‘রাজনীতি কী এবং কেন?’ শীর্ষক আলোচনাসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, বাংলাদেশের জনমনে রাজনীতির প্রতি, রাজনৈতিক নেতাদের প্রতি এখন কোনো শ্রদ্ধাবোধ নেই। জনমনের এই অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে হবে।
বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টির আহ্বায়ক এম এ আলীম সরকার বলেন, ‘ক্ষমতাসীন ব্যক্তিরা ক্ষমতা অপব্যবহার করে বিরাট অঙ্কের টাকা আয় করেন। প্রকৃতপক্ষে রাজনীতিকেই তাঁরা অর্থ আয়ের অবলম্বন করে ফেলেন।
আলোচনাসভায় সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব লেখক অমূল্য কুমার বৈদ্যের সঞ্চালনায় অধ্যাপক ড. মো. শরীফ আব্দুল্লাহ হিস সাকী, শামীম ইসতিয়াক চৌধুরী, পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য প্রভাষক বিজন হালদার, প্রভাষক মহাসীন আলমগীর প্রমুখ বক্তব্য দেন।

২০২৪ সালে মৃত্যু ৯ হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশীর
- জাতিসংঘের তথ্য
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ বছর ছিল ২০২৪ সাল। বছরটিতে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন অভিবাসন রুটে প্রায় ৯ হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার এই কথা জানিয়েছে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসনবিষয়ক সংস্থা (আইওএম)। মৃত্যুর এই সংখ্যাকে ট্র্যাজেডি, অগ্রহণযোগ্য ও প্রতিরোধযোগ্য বলে অভিহিত করেছে সংস্থাটি।
আইওএম বলেছে, ২০২৪ সালে বিশ্বজুড়ে যাত্রাপথে আট হাজার ৯৩৮ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীর মৃত্যু হয়েছে। ২০১৪ সাল থেকে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মৃত্যুর হিসাব রাখতে শুরু করে সংস্থাটি। সেই হিসাবে ২০২৪ সালে সর্বোচ্চসংখ্যক অভিবাসনপ্রত্যাশী মারা গেছেন। ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে অন্তত ২০০ মানুষ বেশি প্রাণ হারিয়েছেন।
আইওএমের উপপরিচালক উগোচি ড্যানিয়েলস বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে অভিবাসী মৃত্যুর ক্রমবর্ধমান ঘটনা একই সঙ্গে অগ্রহণযোগ্য, আবার সেটি প্রতিরোধযোগ্যও। প্রতিটি সংখ্যার পেছনে একজন মানুষ থাকে, যার জন্য এই ক্ষতির মাত্রা ভয়াবহ।’
আইওএমের মিসিং মাইগ্র্যান্ট প্রজেক্ট অনুসারে, ২০২৪ সালে শুধু এশিয়া মহাদেশেই অন্তত দুই হাজার ৭৭৮ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী মারা গেছেন।