‘আমি ছয় মাস ভয়াবহ নির্যাতনের মধ্যে স্ক্যাম সেন্টারে বন্দি ছিলাম। জীবন বাঁচাতে স্ক্যাম সেন্টারে কাজ করতে বাধ্য হই।’ এভাবে মায়ানমারে স্ক্যাম সেন্টারে কাটানো ভয়াবহ দিনগুলোর বর্ণনা দিয়েছেন চট্টগ্রামের বাসিন্দা মো. আলিফ। গত মঙ্গলবার রাতে দেশে ফেরেন তিনি।
‘আমি ছয় মাস ভয়াবহ নির্যাতনের মধ্যে স্ক্যাম সেন্টারে বন্দি ছিলাম। জীবন বাঁচাতে স্ক্যাম সেন্টারে কাজ করতে বাধ্য হই।’ এভাবে মায়ানমারে স্ক্যাম সেন্টারে কাটানো ভয়াবহ দিনগুলোর বর্ণনা দিয়েছেন চট্টগ্রামের বাসিন্দা মো. আলিফ। গত মঙ্গলবার রাতে দেশে ফেরেন তিনি।
আলিফ বলেন, ‘আমি দুবাইয়ে জাহাজে কাজ করতাম। আমাকে বেশি বেতনে ডাটা এন্ট্রির কাজের লোভ দেখিয়ে থাইল্যান্ড নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে মানবপাচারকারীরা থাই-মায়ানমার সীমান্তের ম্যাসটে নিয়ে যায়। ম্যাসটে আমাদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে স্ক্যাম সেন্টারে বিক্রি করে দেওয়া হয়।
আলিফের মতো আরো ১৭ বাংলাদেশি এভাবে মানবপাচারের শিকার হন। তাঁরা গত মঙ্গলবার রাত পৌঁনে ১টার দিকে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে ঢাকায় ফিরেছেন। বিমানবন্দরে তাঁদের জরুরি সহায়তা দেন ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের কর্মীরা।
ভুক্তভোগীরা জানান, ভালো চাকরি ও বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে মানবপাচারকারীরা দুবাইসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে এই বাংলাদেশিদের প্রথমে থাইল্যান্ডে নিয়ে যায়।
শরিফুল হাসান আরো বলেন, ‘সাইবার স্ক্যাম মানবপাচারের ভয়াবহ একটা ধরন। কম্পিউটার অপারেটর, টাইপিস্ট, কলসেন্টার অপারেটরসহ বিভিন্ন পদে আকর্ষণীয় বেতনের প্রলোভন দিয়ে নিয়োগের কথা বলে বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যমে প্রচার চালানো হয়। এরপর কৌশলে স্ক্যাম সেন্টারের ভেতরে নিয়ে গিয়ে তাদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে স্ক্যামের কাজ করানো হয়। নতুন ধরনের এই প্রতারণার বিষয়ে বিদেশগামীসহ সবার মধ্যে সচেতনতা দরকার।’
সম্পর্কিত খবর
সন্ত্রাসী সংগঠন আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও গণহত্যার বিচারের দাবিতে গতকাল রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ছবি : কালের কণ্ঠ
।
অন্তর্বর্তী সরকারকে আহবান জানিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ইসলাম রিংকু বলেছেন, ‘আপনারা এ দেশের একটি ক্রান্তিকালে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের আপনাদের ওপর ভরসা রয়েছে। আমরা সবাই চাই, আপনারা সফল হন। কিন্তু আপনাদের সফলতা তখনই হবে, যখন সংস্কার প্রক্রিয়ার সঙ্গে সঙ্গে আপনারা সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার এমএন একাডেমি স্কুল মাঠে নগরকান্দা উপজেলা বিএনপির আয়োজনে বিএনপির সাবেক মহাসচিব ও সাবেক মন্ত্রী কে এম ওবায়দুর রহমানের ১৮তম মৃত্যুবার্ষিকীর স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শামা ওবায়েদ এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘সংস্কারের অংশকে শেখ হাসিনা ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। এখন সংস্কারের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের যে প্রধান মৌলিক অধিকার, মানুষের ভোট দেওয়ার অধিকার, সেটি প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। তাহলেই আমরা একটি দুর্নীতিমুক্ত সংসদ পাব।
বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেছেন, ‘আসলেই আমাদের রাষ্ট্রব্যবস্থার সংস্কার দরকার। সংস্কার হতে পারে সর্বজনীন কল্যাণে। আবার তা হতে পারে উচ্চ শ্রেণির লোকদের সুবিধা থেকে। আমরা জনগণের স্বার্থে সংস্কার চাই।
গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টি কেন্দ্রীয় পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত ইফতার মাহফিল ও ‘রাজনীতি কী এবং কেন?’ শীর্ষক আলোচনাসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, বাংলাদেশের জনমনে রাজনীতির প্রতি, রাজনৈতিক নেতাদের প্রতি এখন কোনো শ্রদ্ধাবোধ নেই। জনমনের এই অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে হবে।
বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টির আহ্বায়ক এম এ আলীম সরকার বলেন, ‘ক্ষমতাসীন ব্যক্তিরা ক্ষমতা অপব্যবহার করে বিরাট অঙ্কের টাকা আয় করেন। প্রকৃতপক্ষে রাজনীতিকেই তাঁরা অর্থ আয়ের অবলম্বন করে ফেলেন।
আলোচনাসভায় সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব লেখক অমূল্য কুমার বৈদ্যের সঞ্চালনায় অধ্যাপক ড. মো. শরীফ আব্দুল্লাহ হিস সাকী, শামীম ইসতিয়াক চৌধুরী, পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য প্রভাষক বিজন হালদার, প্রভাষক মহাসীন আলমগীর প্রমুখ বক্তব্য দেন।
অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ বছর ছিল ২০২৪ সাল। বছরটিতে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন অভিবাসন রুটে প্রায় ৯ হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার এই কথা জানিয়েছে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসনবিষয়ক সংস্থা (আইওএম)। মৃত্যুর এই সংখ্যাকে ট্র্যাজেডি, অগ্রহণযোগ্য ও প্রতিরোধযোগ্য বলে অভিহিত করেছে সংস্থাটি।
আইওএম বলেছে, ২০২৪ সালে বিশ্বজুড়ে যাত্রাপথে আট হাজার ৯৩৮ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীর মৃত্যু হয়েছে। ২০১৪ সাল থেকে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মৃত্যুর হিসাব রাখতে শুরু করে সংস্থাটি। সেই হিসাবে ২০২৪ সালে সর্বোচ্চসংখ্যক অভিবাসনপ্রত্যাশী মারা গেছেন। ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে অন্তত ২০০ মানুষ বেশি প্রাণ হারিয়েছেন।
আইওএমের উপপরিচালক উগোচি ড্যানিয়েলস বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে অভিবাসী মৃত্যুর ক্রমবর্ধমান ঘটনা একই সঙ্গে অগ্রহণযোগ্য, আবার সেটি প্রতিরোধযোগ্যও। প্রতিটি সংখ্যার পেছনে একজন মানুষ থাকে, যার জন্য এই ক্ষতির মাত্রা ভয়াবহ।’
আইওএমের মিসিং মাইগ্র্যান্ট প্রজেক্ট অনুসারে, ২০২৪ সালে শুধু এশিয়া মহাদেশেই অন্তত দুই হাজার ৭৭৮ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী মারা গেছেন।