<p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="letter-spacing:.1pt">রাত ৯:৪৫ মিনিট। ভূমি অফিসের কম্পিউটারে নামজারির কাজ করছেন অস্থায়ী ঝাড়ুদার রুবেল আহমেদ। টেবিলের ওপর রয়েছে একাধিক মৌজার আরএস ও এসএ খতিয়ান বই। নামজারির জন্য অনলাইনে আবেদন ও ফাইলের হার্ডকপি প্রস্তুত করছেন তিনি। এ সময় অফিসের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্রের রেকর্ড রুম ও ভূমি সহকারী কর্মকর্তার কক্ষ খুলে বিভিন্ন তথ্য নিচ্ছেন। পাবনার ভাঙ্গুড়া পৌর ভূমি অফিসের ঝাড়ুদার রুবেল আহমেদের গত বুধবারের এমন একটি ভিডিও কালের কণ্ঠে প্রতিনিধির হাতে এসেছে। অভিযোগ রয়েছে প্রায়ই গভীর রাত পর্যন্ত ভাঙ্গুড়া পৌর ভূমি অফিসে নামজারি ও মিস কেসসহ বিভিন্ন ধরনের কাজ করেন ঝাড়ুদার রুবেল আহমেদ। ভূমি মালিকদের সঙ্গে আর্থিক চুক্তিতে এসব কাজ করে দেন তিনি। আর্থিক সুবিধার ভাগ অফিসের অন্য কর্মচারীরাও নেন বলে অভিযোগ আছে। একজন অস্থায়ী ঝাড়ুদারের কাছে অফিসের এমন দায়িত্ব দেওয়ায় ভূমি অফিসের গুরুত্বপূর্ণ নথি ও অফিসের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত স্থানীয় বাসিন্দারা।</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="letter-spacing:.1pt">জানা যায়, উপজেলায় পাঁচটি ইউনিয়ন ও একটি পৌর ভূমি অফিস রয়েছে। প্রত্যেক অফিসে রয়েছে একজন করে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা ও একাধিক কর্মচারী। প্রায় এক যুগ আগে উপজেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্তে প্রত্যেক ভূমি অফিসে একজন করে ঝাড়ুদার অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়। প্রত্যেক ঝাড়ুদারকে উপজেলা প্রশাসন থেকে মাসিক তিন হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়া হয়। নিয়োগকালীন শর্তে উল্লেখ করা হয় এসব ঝাড়ুদার শুধু অফিস শুরু হওয়ার আগে এবং শেষে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করবেন।</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="letter-spacing:.1pt">কিন্তু ভূমি অফিসের কর্মকর্তারা এসব ঝাড়ুদারকে অফিস চলাকালীন সময়েও অফিসে বিভিন্ন কাজে লাগাতে শুরু করেন। পর্যায়ক্রমে ঝাড়ুদাররা অফিসের স্টাফ হিসেবে ভূমি মালিকদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলে বিভিন্ন আর্থিক সুবিধা নিতে শুরু করেন। অফিসের কোনো কাগজপত্রের ফটোকপি ভূমি মালিককে দিতে তাঁরা ১০০ টাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন পরিমাণে টাকা নেন। এমনকি অফিসের কর্মকর্তারাও এসব ঝাড়ুদারদের দিয়ে ঘুষের টাকা আদায় করেন বলে অভিযোগ ওঠে। </span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="letter-spacing:.1pt">সম্প্রতি ভাঙ্গুড়া পৌর ভূমি অফিসে একাধিক রাতে গিয়ে দেখা যায়, ভূমি অফিসের মূল ভবনের বাইরের গেট আটকানো থাকে। ভেতরে ভূমি সহকারী কর্মকর্তার কক্ষ, রেকর্ডরুমসহ অন্যান্য কক্ষে আলো জ্বালিয়ে রুবেল আহমেদ কাজ করছেন। বাইরে থেকে ডাকলে তিনি কক্ষের আলো নিভিয়ে চুপচাপ থাকেন। কিছুক্ষণ পর আবারও আলো জ্বালিয়ে কাজ করেন। কাজ শেষে গভীর রাতে তিনি অফিস ত্যাগ করেন বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="letter-spacing:.1pt">নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অফিসের পাশের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, রাত ৯টার পরে ঝাড়ুদার রুবেল অফিসে আসেন। রাত ১১টা, ১২টা, কখনো ১টা পর্যন্ত কাজ করেন। তবে এই অফিসে সবার প্রয়োজন থাকায় কেউ মুখ খুলে এটার প্রতিবাদ করেন না। </span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="letter-spacing:.1pt">অভিযোগের বিষয়ে ঝাড়ুদার রুবেল আহমেদ বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="letter-spacing:.1pt">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="letter-spacing:.1pt">অফিসের সবাই আমাকে কাজ করতে বলেন। তাই করি। কাজের চাপের কারণে রাতে একা অফিসে কাজ করি। ঘুষ লেনদেনের বিষয় তিনি অস্বীকার করেন।</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="letter-spacing:.1pt">এ বিষয়ে ভাঙ্গুড়া পৌর ভূমি অফিসের সহকারী কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="letter-spacing:.1pt">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="letter-spacing:.1pt">রুবেল ঝাড়ুদার হলেও কাজ ভালো বোঝে। তাই অফিশিয়াল কাজে সহযোগিতা করে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য অফিসের সব কক্ষের চাবি থাকে তার কাছে। তবে রাতে তাকে একাকী অফিসে এসে কাজ করতে বলা হয়নি। </span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="letter-spacing:.1pt">উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরাফাত হোসেন জানান, অফিসের কর্মকর্তা ছাড়া কোনো কর্মচারী অফিস খুলে একাকী কাজ করা যুক্তিসংগত নয়। আর সেটা রাতে তো কোনোভাবেই করা যাবে না। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p> </p>