<p>দেশের অর্থনীতির লাইফলাইন খ্যাত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মধ্যবর্তী কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে টানা বৃষ্টি ও বন্যার পানি জমে থাকার কারণে সড়কজুড়ে কার্পেটিং উঠে গিয়ে অসংখ্য বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। একটু বৃষ্টি হলেই সেগুলো ভরে যায় পানিতে। ব্যস্ততম মহাসড়কটি একাধিক স্থানে ছোট বড় অসংখ্য গর্ত থাকায় বৃষ্টির পানি জমে যেন মারণফাঁদে পরিণত হয়েছে। তবে কুমিল্লা সড়ক ও জনপথ বিভাগ জানিয়েছে দু-এক দিনের মধ্যেই এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।</p> <p>রাস্তায় খানাখন্দ থাকায় তীব্র ধাক্কায় অনেক সময় গাড়ির মূল্যবান জিনিসপত্র ভেঙে যায়। আবার অনেক যাত্রী আহত হয় এবং অসুস্থ হয়ে পড়ে। বাসচালকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এই সড়ক তো মহাসড়ক নয়, যেন মহানরক। এতে যাত্রীবাহী বাসসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচলে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটছে। প্রতিবছর বৃষ্টিতে মহাসড়কে ছোট-বড় গর্ত হয়। এ অবস্থায় একদিকে যানবাহন ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে, অন্যদিকে যাত্রীদের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।</p> <p>সরেজমিনে দেখা গেছে, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার প্রায় ৪৫ কিলোমিটার অংশেও একই অবস্থা। লাগাতার বর্ষণে মহাসড়কের কালিবাজার এলাকা হাঁটু পানিতে প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার লালবাগ থেকে পদুয়া পর্যন্ত পুরো সড়কজুড়ে ছোট বড় অনেক গর্ত। এসব গর্ত কোথাও ছোট আবার কোথাও বড় আকার ধারণ করায় ট্রাক, লরি ও কাভার্ড ভ্যানসহ প্রাইভেট গাড়ি বেশ ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে। পুরো গতিতে গাড়ি যেতে পারছে না, বরং গর্ত কাটিয়ে চলতে হিমশিম খাচ্ছে চালকরা।</p> <p>কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী রনি ও সোলেমান জানান, সন্ধ্যার পর চৌদ্দগ্রাম থেকে কুমিল্লা আসার পথে মহাসড়কের মিরশ্বানী এলাকায় একটি বড় গর্ততে বাইক নিয়ে পড়ে আহত হয়ে আজ তিন দিন তাঁরা হাসপাতালে। বৃষ্টির পানি গর্তে জমে থাকায় গর্ত বুঝতে পারেননি।</p> <p>চালকরা জানান, কোথাও বা বড় বড় গর্ত, কোথাও পিচ উঠে গেছে, আবার কোথাও ছোট ছোট অসংখ্য গর্ত তৈরি হয়েছে। সড়কটি ভাঙার কারণে প্রায়ই গাড়ি বিকল হয়ে দুর্ঘটনাকবলিত হচ্ছে। এতে মহাসড়কটিতে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। তার ওপরে ত্রাণের গাড়ির চাপ রয়েছে।</p> <p>ট্রাকচালক মো. কামাল মিয়া বলেন, ‘কয়েক দিন বন্যার পানি ও বৃষ্টির কারণে মহাসড়কে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়। আমি ঢাকা থেকে মালপত্র নিয়ে চট্টগ্রাম যাই। কিন্তু গত কয়েক দিন গর্তের কারণে রাতের বেলায় গাড়ি চালাতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। তার মধ্যে সামান্য বৃষ্টিতে গর্তগুলো বড় হওয়ায় এবং পিচঢালাই উঠে যাওয়ায় পানি আটকে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। ফলে প্রায় ভারী যানবাহন দেবে ও বিকল হয়ে অসহনীয় যানজটের সৃষ্টি করে।’</p> <p>ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চলাচলকারী তিশা পরিবহনের চালক রুস্তম আলী বলেন, ‘ভাঙা রাস্তার কারণেই এই মহাসড়কে প্রতিদিন কোথাও না কোথাও ঘটছে দুর্ঘটনা। বড় বড় গর্তগুলোতে আটকে পড়ার কারণে অনেক সময় গাড়ি বিকল হয়ে যায়। একই কারণে গাড়ির গতি অনেক ধীর হওয়ায় সময় অপচয় হয়, তৈরি হয় যানজট।’</p> <p>মিয়াবাজার হাইওয়ে থানা পুলিশের উপপরিদর্শক সুজন  জানান, গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে মহাসড়কের বিভিন্ন জায়গায় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে মহাসড়কে গাড়ি চলছে ধীরগতিতে।</p> <p>এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীতি চাকমা বলেন, ‘টানা বৃষ্টি ও বন্যার কারণে মহাসড়কের কিছু কিছু অংশে এমন খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। সংস্কার করা হচ্ছে,  দু-এক দিনেই সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।’</p> <p> </p>