<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কিশোরগঞ্জ জেলা শহরে প্রাথমিক পর্যায়ের সবচেয়ে পরিচিত স্কুলটির নাম সরকারি আদর্শ শিশু বিদ্যালয়। এ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় এক হাজার ৫০০। শিক্ষক আছেন ২১ জন। তাদের মধ্যে মাত্র ছয়জন শিক্ষক কিশোরগঞ্জ সদরের। বাকি সবাই হাওরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে বদলি হয়ে এসেছেন। এখানে শিক্ষকের কোনো শূন্যপদ নেই। অন্যদিকে হাওরের সুতারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকের পদ পাঁচটি। দীর্ঘদিন ধরে দুটি পদ শূন্য থাকায় পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে এখানে। শুধু এই স্কুল নয়, প্রত্যন্ত হাওর অঞ্চলের প্রায় প্রতিটি স্কুলেই শিক্ষক সংকট রয়েছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যোগাযোগ ও সুযোগ-সুবিধার ঘাটতির অজুহাতে প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকরা কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলের বিদ্যালয়গুলোতে বেশিদিন থাকেন না। বদলি হয়ে চলে যান জেলা শহর ও আশপাশের স্কুলগুলোতে। ফলে জেলা সদর ও আশপাশের উপজেলাগুলোতে খুব কমই শূন্য হয় শিক্ষকের পদ। এ কারণে চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে বহু বছর ধরে চরম বৈষম্যের শিকার হচ্ছে এখানকার চাকরিপ্রত্যাশীরা। অন্যদিকে বারবার পদ শূন্য হওয়ায় প্রতি নিয়োগেই চাকরির সুবিধা যাচ্ছে হাওর এলাকায়। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি, করিমগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি মো. শামছুল হক ফরহাদ বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নীতিমালা অমান্য করে অনিয়মের মাধ্যমে বদলি হয়ে ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম উপজেলাসহ হাওর এলাকায় নিয়োগপ্রাপ্ত অর্ধশতাধিক শিক্ষক করিমগঞ্জে চাকরি করছেন। এ কারণে উপজেলায় কখনো শিক্ষকের পদ শূন্য হয় না। ফলে করিমগঞ্জের শিক্ষিত ছেলেমেয়েরা চাকরি পাচ্ছে না।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">করিমগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্র জানিয়েছে, করিমগঞ্জের ১২৫টি স্কুলে বর্তমানে শিক্ষকসংখ্যা ৭৩২। এর প্রায় অর্ধেকেই বদলি হয়ে আসা শিক্ষক। আর কিশোরগঞ্জ সদরের ১৪৫টি স্কুলে বর্তমানে শিক্ষক রয়েছেন ৯৯৩ জন, যার ৭০ থেকে ৮০ শতাংশই বদলি হয়ে এসেছে। এই প্রবণতা এখনো তীব্র। ফলে এ দুই উপজেলার স্থানীয় লোকজন প্রাথমিক শিক্ষক পদে নিয়োগ পাচ্ছে না বহু বছর ধরে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">হাওরাঞ্চলের বিভিন্ন উপজেলা থেকে বদলি হয়ে সরকারি আদর্শ শিশু বিদ্যালয়ে চাকরি করছেন রোকেয়া বেগম, শেফালী বালা দেবী, পারভীন বেগম, স্বপ্না রাণী সাহা, মাফিয়া আক্তার, তানিয়া রিফাতসহ ১৪ জন। তাদের কাছে বদলি হয়ে আসার কারণ জানতে চাইলে তারা হাওরের যোগাযোগের সমস্যা, ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া, ভালো পরিবেশসহ নানা কারণের কথা উল্লেখ করে বলেন, সবাই চায় উন্নত এলাকায় পোস্টিং পেতে। আমরাও সুযোগ কাজে লাগিয়ে সদরে এসেছি।  </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে জানা গেছে, সর্বশেষ শিক্ষক নিয়োগে কিশোরগঞ্জ জেলার ১৩টি উপজেলায় চাকরি পেয়েছে ২৮৮ জন। এর মধ্যে কিশোরগঞ্জ সদর ও করিমগঞ্জ উপজেলায় চাকরি জুটেছে মাত্র দুজন করে। অন্যদিকে হাওর উপজেলা ইটনায় ৩৮ জন, মিঠামইনে ২৮ জন এবং অষ্টগ্রামে ৪০ জন শিক্ষকের চাকরি হয়েছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সদরসহ উজানের উপজেলায় স্থানীয় লোকজন শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হচ্ছে স্বীকার করে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মজিব আলম বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন মহল কঠোর হলে এ প্রবণতা কমতে পারে। বদলির কারণে বৈষম্য সৃষ্টি হোক, ব্যক্তিগতভাবে আমিও চাই না।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p>