<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গত ২৪ নভেম্বর ২০২৪ আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে কপ২৯-এর (কনফারেন্স অব দ্য পার্টিজের ২৯তম সম্মেলন) বিশাল অনুষ্ঠান শেষ হলো। এই সম্মেলনে ১৯৬টি দেশ এবং প্রায় ৬৫ হাজার ডেলিগেট অংশগ্রহণ করে। অনলাইনে যুক্ত হন প্রায় চার হাজার ব্যক্তি। অংশগ্রহণকারীর সংখ্যার হিসাবে কপের ইতিহাসে এটি ছিল দ্বিতীয় বৃহত্তম সম্মেলন। গত বছর দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত কপ২৮-এর সম্মেলনে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মানুষ (প্রায় ৯৮ হাজার) অংশগ্রহণ করেছিল। সেটিই ছিল ২০২৪ পর্যন্ত কপের ইতিহাসে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যার হিসাবে সব থেকে বড় সম্মেলন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ বছর সম্মেলনটি ১১ নভেম্বর শুরু হয়ে ২২ নভেম্বর শেষ হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু জলবায়ু তহবিল নিয়ে সম্মেলনে উপস্থিত প্রতিনিধিরা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে না পারায় শেষ পর্যন্ত সম্মেলনটি ২৪ নভেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত গড়ায়। সম্মেলনের এক পর্যায়ে উন্নয়নশীল ও দ্বীপদেশগুলোর প্রতিনিধিরা চরম হতাশা প্রকাশ করে সম্মেলন থেকে ওয়াক আউট করেন। তারা অভিযোগ করেন যে জীবাশ্ম জ্বালানি উৎপাদনকারী দেশগুলো চুক্তিকে দুর্বল করার চেষ্টা করছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কপ২৯ শেষ হওয়ার পরের দিনই (২৫ নভেম্বর ২০২৪) প্রভাবশালী বিজ্ঞান জার্নাল একটি নিবন্ধ প্রকাশ করে। নিবন্ধটির আংশিক শিরোনাম হচ্ছে, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কপ২৯ কি একটি ঐতিহাসিক অগ্রগতি না অধঃপতন?</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">। মূলত যে কারণগুলোর জন্য গবেষকরা কপ২৯-কে অসফল বলে অভিহিত করছেন, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">১. জলবায়ু পরিবর্তন জনিত অভিযোজন ও প্রশমন কর্মকাণ্ডের জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল তৈরির প্রতিশ্রুতি আদায়ে অসফল হওয়া; ২. জীবাশ্ম জ্বালানি হ্রাসের লক্ষ্যমাত্রা বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি আদায় করতে ব্যর্থ হওয়া; ৩. নবায়নযোগ্য শক্তির লক্ষ্যমাত্রা বৃদ্ধির কার্যকর প্রতিশ্রুতি না পাওয়া এবং ৪. ধনী ও দরিদ্র দেশগুলোর মধ্যে অর্থায়নের দায়িত্বকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ফিরে আসা।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উপরোক্ত ১ নম্বর কারণের ব্যাখ্যায় বলা যায়</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কপ২৯-এ নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলো প্রস্তাব করেছিল যে ২০৩০ সাল পর্যন্ত তাদের বছরে ২.৪ ট্রিলিয়ন ডলার (এক ট্রিলিয়ন ডলার) করে অভিযোজন ও প্রশমন কর্মকাণ্ডের জন্য দেওয়া হোক। সম্মেলনে উপস্থাপিত একটি শক্তিশালী প্রতিবেদন (হাই লেভেল এক্সপার্ট গ্রুপ থেকে তৈরি) থেকে ধারণা নিয়ে অংশগ্রহণকারী মোট ৮০টি দেশ উপরোক্ত ২.৪ ট্রিলিয়নের কাছাকাছি ১.৩ ট্রিলিয়ন ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতির জন্য দাবি করেছিল। কিন্তু ২৪ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে সম্পাদিত কপ২৯-এর চূড়ান্ত চুক্তিতে ২০৩৫ সালের মধ্যে বছরে মাত্র ৩০০ বিলিয়ন ডলার পাওয়ার প্রতিশ্রুতি মিলেছে। দাবির তুলনায় প্রতিশ্রুত অর্থের পরিমাণ অনেক কম হওয়ায় অনেকের মধ্যে এটি হতাশা তৈরি করেছে বলে ধারণা করা যায়। এ ছাড়া অর্থ অনুদান হিসেবে, না ঋণ হিসেবে দেওয়া হবে এবং তা প্রকৃত দাবিদারদের হাতে পৌঁছাবে কি না, তা নিয়েও ধন্দ রয়ে যায়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><img alt="কপ২৯ থেকে কী পেল বিশ্ব" height="289" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/12 December/05-12-2024/1.jpg" style="float:left" width="321" />দ্বিতীয় কারণের ব্যাখ্যাটি এ রকম</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চুক্তিতে জীবাশ্ম জ্বালানি পর্যায়ক্রমিকভাবে নির্মূল করার ব্যাপারে কোনো ঐকমত্য অর্জিত হয়নি। ফলে চুক্তির এসংক্রান্ত ভাষা অত্যন্ত নরম ও দুর্বল হয়েছে বলে অনেক গবেষক মনে করেন। গবেষকরা বলছেন, এ ধরনের নরম ও দুর্বল ভাষা বৈশ্বিক উষ্ণতাকে প্যারিস চুক্তির ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে (প্রাক-শিল্প যুগের তুলনায়) সীমাবদ্ধ করার প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করে তুলবে। সুইজারল্যান্ড, মালদ্বীপ, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ কিছু দেশ এ ধরনের দুর্বল ভাষা ব্যবহার করার জন্য প্রতিবাদ করেছে। তারা বলেছে, জীবাশ্ম জ্বালানির বৈশ্বিক ব্যবহার কমিয়ে আনার জন্য চুক্তিতে যে ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে, তা খুবই দুর্বল।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তৃতীয় কারণের ব্যাখ্যায় বলা যায়, চুক্তিতে নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি বাধ্যতামূলক করার বিষয়ে তেল ও গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল দেশগুলো (যার মধ্যে আয়োজক দেশ আজারবাইজানও অন্তর্ভুক্ত) বিরোধিতা করেছে। ফলে এসংক্রান্ত চুক্তি </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পারলে পালন করব, না পারলে করব না</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> ধরনের হালকা বিষয়ে পরিণত হয়েছে বলে কেউ কেউ মনে করে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চতুর্থ কারণের ব্যাখ্যায় উল্লেখ করা যায়, এই সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী ধনী ও দরিদ্র/উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রতিনিধিদের মধ্যে জলবায়ু দায়িত্ব, আর্থিক প্রতিশ্রুতি এবং অগ্রাধিকারের ব্যাপারে দীর্ঘস্থায়ী বৈষম্য থাকায় ধনী দেশগুলোর সঙ্গে দরিদ্র/উন্নয়নশীল দেশগুলোর মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্বের বিষয় পুনরায় প্রকাশ পেয়েছে। ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও নাইজেরিয়ার মতো বৃহত্তম নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশগুলোর প্রতিনিধিরা ক্রুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন যে তারা একটি চুক্তিতে রাজি হতে বাধ্য হয়েছেন, যাতে কপ২৯ ব্যর্থতার মধ্যে শেষ না হয়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কপ২৯-এ উপরোক্ত বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়েও বলা যায়, এবারের সম্মেলনে কিছু সফলতার দিকও রয়েছে। বিশেষ করে কার্বন বাজার সম্পর্কিত বিষয়গুলো চূড়ান্তকরণ, অভিযোজন রোডম্যাপ (বাকু রোডম্যাপ) এবং ইএফটি (এনহ্যান্সড ট্রান্সপারেন্সি ফ্রেমওয়ার্ক : মানসম্মত অভিন্ন রিপোর্টিং) কপ২৯-এ সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছে। বিরুদ্ধ প্রচারও প্রতিরোধ করা গেছে। জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক লিখেছেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এটি ঠিক যে কারো কারো প্রতিরোধের কারণে আজকে রাতের এই চুক্তিটি যথেষ্ট হয়নি। যারা এখানে অগ্রযাত্রা থামাতে, জলবায়ু ন্যায্যতাকে রুখতে এবং আমাদের জাতিসংঘের বহুপক্ষীয় ব্যবস্থাকে দুর্বল করতে এসেছিলেন, তারা খুবই বাজেভাবে হেরে গেছেন।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> ইউরোপীয় ইউনিয়নের জলবায়ু কমিশনার ভপকে হুকস্ট্রা মনে করেন, তহবিলের অঙ্ক ট্রিলিয়ন ডলার না হলেও তা প্রথম পদক্ষেপ মেটানোর মতো।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস কপ২৯-এর ওয়ার্ল্ড লিডার্স ক্লাইমেট অ্যাকশন সামিটের উদ্বোধনী অধিবেশনে (১৩ নভেম্বর ২০২৪) শূন্য বর্জ্য ও শূন্য কার্বনের ওপর ভিত্তি করে একটি নতুন জীবনধারা গড়ে তোলার পরামর্শ দিয়েছেন। বাংলাদেশের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান কপ২৯-এ বাংলাদেশের প্রেস কনফারেন্সে নিউ কালেক্টিভ কোয়ান্টিফায়েড গোলের (এনসিকিউজি) আওতায় পর্যাপ্ত ও মানসম্পন্ন জলবায়ু অর্থায়নের ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন (২০ নভেম্বর ২০২৪)। তিনি অভিযোজন, প্রশমন এবং ক্ষয় ও ক্ষতিপূরণের জন্য ১.৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রতিশ্রুতির প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেন এবং অভিযোজন ও ক্ষয়-ক্ষতিপূরণের জন্য অনুদানভিত্তিক অর্থায়ন এবং প্রশমনের জন্য স্বল্প সুদের ঋণের প্রস্তাব দেন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জলবায়ু পরিবর্তন জনিত ঝুঁকিপূর্ণ শীর্ষ ১০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। সেই কারণে বাংলাদেশের জন্য কপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কপের জলবায়ু তহবিল, বৈষম্য দূরীকরণের জন্য বৈশ্বিক প্রচেষ্টা, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা শক্তিশালীকরণ, প্রযুক্তি স্থানান্তর, সক্ষমতা বৃদ্ধি, স্থানীয় উদ্যোগ প্রদর্শন, অভিবাসন, নিরাপত্তা মোকাবেলা ইত্যাদি বাংলাদেশের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ এবং প্রয়োজনীয়। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কপের বিরুদ্ধে যত সমালোচনাই (অস্পষ্ট ও দুর্বল চুক্তি, জীবাশ্ম জ্বালানির পক্ষের লবিস্টরা শক্তিশালী, কাজের গতি ধীর ইত্যাদি) করা হোক না কেন, দিনশেষে তার প্রয়োজনের দিকটি অস্বীকার করা যায় না। আজ বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন জনিত অবস্থা মোকাবেলার জন্য যেসব কর্মকাণ্ড চলমান, তার বেশির ভাগ নীতি, কৌশল কিংবা সুপারিশ প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে তৈরি হয়েছে কপ১ থেকে ২৮-এর মাধ্যমে। জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে বিশ্বব্যাপী সচেতনতা তৈরির মূলেও আছে কপের অবদান। কপের প্রধান ফোকাস জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশনের অধীনে হলেও এটি অন্যান্য বৈশ্বিক চুক্তি, বিশেষ করে জীববৈচিত্র্য কনভেনশন (সিবিডি) এবং জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের (এসডিজি) সঙ্গেও সম্পর্কিত।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আগামী বছর কপ৩০ অনুষ্ঠিত হবে ব্রাজিলের আমাজন অঞ্চলের বেলেম শহরে। কপ২৯-এ না নিতে পারা সিদ্ধান্তগুলো সেখানে নেওয়া যাবে বলে প্রত্যাশা করা যায়।</span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">লেখক : অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়</span></span></span></span></p> <p> </p>