ক্যাডার ও নন-ক্যাডার বাছাইয়ে করণীয়

  • ৪৭তম বিসিএসের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। এর মাধ্যমে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে ক্যাডার পদে নিয়োগ পাবেন ৩,৪৮৭ জন। এ ছাড়া নন-ক্যাডার পদ রয়েছে ২০১টি। এই বিসিএসে প্রার্থীদের করণীয় ও দরকারি বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন চার বিসিএসের চারজন ক্যাডার
শেয়ার
ক্যাডার ও নন-ক্যাডার বাছাইয়ে করণীয়
ছবি : কালের কণ্ঠ

https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/12 December/28-12-2024/2/kalerkantho-ca-1a.jpg৪৭তম বিসিএসের আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হবে ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪ থেকে। চলবে ৩০ জানুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত। ক্যাডার ও নন-ক্যাডার পছন্দক্রম নিয়ে প্রার্থীরা দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকেন। আবেদনের আগেই দরকারি তথ্য জেনে করণীয় ঠিক করুন

 

বিসিএস ক্যাডার তালিকা বাছাইয়ের আগে কিছু বিষয় জেনে নেওয়া জরুরি।

যেমনপছন্দের তালিকায় কয়টি ক্যাডার নির্বাচন করা যায়, ক্যাডার বণ্টন কিভাবে, কোন ক্যাডারের কী কাজ, সুযোগ-সুবিধা কেমন ইত্যাদি। আবেদনের সময় ক্যাডারের পাশাপাশি নন-ক্যাডার পছন্দক্রমও সাজাতে হয়। ক্যাডার ও নন-ক্যাডার তালিকা সাজাতে ভুল হলে বা সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে চাকরিজীবনে আফসোস করতে হতে পারে।

 

ক্যাডার বাছাই

বিসিএসে জেনারেল ও টেকনিক্যাল/প্রফেশনালএ দুই ক্যাটাগরিতে মোট ২৬টি ক্যাডার রয়েছে।

একজন প্রার্থী সব জেনারেল ক্যাডার (মোট জেনারেল ক্যাডারের সংখ্যা ১৪টি) এবং পঠিত বিষয় সম্পর্কিত টেকনিক্যাল/ প্রফেশনাল ক্যাডারে (এটি কারো ক্ষেত্রে এক বা একাধিক হতে পারে, কারো ক্ষেত্রে একটিও নয়) আবেদন করতে পারবেন। আরো সহজ করে বললে, একজন প্রার্থী আবেদন ফরমের দ্বিতীয় পৃষ্ঠায় শিক্ষাগত যোগ্যতার ছক পূরণ করলেই তৃতীয় পৃষ্ঠায় তার জন্য প্রযোজ্য ক্যাডার তালিকা দেখতে পাবেন। যেমনআইন বিষয়ে স্নাতক করা প্রার্থী বিসিএস আবেদন ফরমের তৃতীয় পৃষ্ঠায় ক্যাডার (মোট ১৪টি) নির্বাচন করতে পারবেন। আইন বিষয়ের কোনো টেকনিক্যাল/প্রফেশনাল ক্যাডার না থাকায় তার মোট ক্যাডারের সংখ্যা ১৪টিই থাকবে।
আবার এমবিবিএস সম্পন্ন করা একজন প্রার্থী মোট ১৬টি ক্যাডারে আবেদন করতে পারবেন। অর্থাৎ তিনি ১৪টি জেনারেল ক্যাডারের পাশাপাশি স্বাস্থ্য ক্যাডার ও পরিবার পরিকল্পনা টেকনিক্যাল কাডার বাছাইয়ের সুযোগ পাবেন।

 

ক্যাডার বণ্টন প্রক্রিয়া

অনেক প্রার্থী মনে করেন, ক্যাডারের পদসংখ্যা বেশি থাকলে অথবা পছন্দক্রমে নির্দিষ্ট কোনো ক্যাডার আগে রাখলে সেই ক্যাডার পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এটা ভুল ধারণা। বিসিএস লিখিত পরীক্ষার ৯০০ নম্বর ও মৌখিক পরীক্ষার ১০০ নম্বর, অর্থাৎ মোট ১০০০ নম্বর।

এই নম্বরের ওপর প্রার্থীদের মেধাতালিকা তৈরি ও ক্যাডার পদ বণ্টন করা হয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, সম্মিলিত মেধাতালিকায় যে প্রার্থী প্রথম হবেন, তিনি পছন্দক্রমের প্রথম ক্যাডারটিই পাবেন। ধরুন, সম্মিলিত মেধাতালিকায় ১১তম প্রার্থীর প্রথম পছন্দ পররাষ্ট্র ক্যাডার। এরই মধ্যে পররাষ্ট্র ক্যাডারের পদ বণ্টন শেষ (পররাষ্ট্র ক্যাডারের মোট পদ যদি ১০টি হয়)। তখন দেখা হবে তার পছন্দক্রমের দ্বিতীয় ক্যাডার কোনটি। যেহেতু আগের ১০টি পদই পররাষ্ট্র ক্যাডার দ্বারা পূরণ হয়েছে, অন্য কোনো ক্যাডারে কাউকেই সুপারিশ করা হয়নি; তাই প্রশাসন, পুলিশ বা অন্য যেকোনো ক্যাডার তিনি সহজেই পেয়ে যাবেন। ধরুন, সম্মিলিত মেধাতালিকার ১০০তম প্রার্থীর পছন্দক্রম পররাষ্ট্র>পুলিশ> প্রশাসন। দেখা গেল, আগের ৯৯ জন প্রার্থী থেকে পররাষ্ট্র ও পুলিশ ক্যাডারের সব পদ পূরণ করা হয়ে গেছে। তখন ওই প্রার্থী তাঁর পছন্দক্রমের তৃতীয় ক্যাডার অর্থাৎ প্রশাসন ক্যাডারের কোনো পদ শূন্য থাকলে পাবেন। তা না হলে তার পছন্দক্রমের চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ ক্যাডারগুলোতে পদ শূন্য আছে কি না সেগুলো পর্যায়ক্রমে দেখা হবে।

 

ক্যাডার নির্বাচনের আগে

ক্যাডার পছন্দক্রম নির্ধারণের আগে প্রতিটি ক্যাডারের দায়িত্ব ও কাজ, পদায়ন ও সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। বিসিএসের গাইডলাইনসংবলিত বই বা সহায়িকা, সংবাদপত্রের ফিচার এবং ফেসবুক ও ইউটিউব থেকে ক্যাডারগুলো সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য জেনে নিতে পারেন। এরপর প্রার্থীর ব্যক্তিগত আগ্রহের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ক্যাডারগুলো প্রথমে এবং তুলনামূলক কম সামঞ্জস্যপূর্ণ ক্যাডারগুলো পরবর্তীতে দিয়ে পছন্দক্রম সাজাতে পারেন।

 

পদায়ন

চাকরির ধরন অনুযায়ী কিছু ক্যাডারে নিজ জেলায় কখনো পদায়ন হয় না, আবার কিছু ক্যাডারে শূন্যপদ সাপেক্ষে নিজ জেলায় পদায়ন সম্ভব। পরিবারকে সময় দেওয়াসহ নিজ জেলায় কর্মস্থলকে অগ্রাধিকার মনে করলে সেই ক্যাডারগুলোকেই বেছে নিতে হবে। নিজ জেলায় পদায়ন পেতে চাইলে স্বাস্থ্য, সাধারণ শিক্ষা, কারিগরি শিক্ষা, ডাক, পরিবার পরিকল্পনা প্রভৃতি ক্যাডারগুলো পছন্দক্রমে রাখতে পারেন। অন্যদিকে কিছু ক্যাডারে উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে পদায়ন হতে পারে, আবার কিছু ক্যাডারে বিভাগের বাইরে পদায়ন নেই। অনেকেই নাগরিক সুবিধার জন্য বিভাগীয় শহরে পদায়ন পছন্দ করেন আবার অনেকেই বড় শহরের যানজট এড়িয়ে মফস্বল শহরে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। তাই ক্যাডারের পদায়নস্থল জেনে ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ মিলিয়ে নিতে হবে। বিভাগীয় পর্যায়ে পদায়নের জন্য পররাষ্ট্র, নিরীক্ষা ও হিসাব, বাণিজ্য, রেলওয়ে পরিবহন ও বাণিজ্যিক ক্যাডার রাখতে পারেন। উপজেলা পর্যায়ে পদায়নের জন্য রাখতে পারেনপ্রশাসন, পরিবার পরিকল্পনা, সাধারণ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, মৎস্য, পশুসম্পদ ও বন।

 

https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/12 December/28-12-2024/2/kalerkantho-sp-3a.jpgপদোন্নতি

অনেক ক্যাডারে ৯ম গ্রেড থেকে গ্রেড-১/২ পর্যন্ত অনায়াসে যাওয়ার সুযোগ আছে, আবার অনেক ক্যাডারে গ্রেড-৩/৪ থেকেই অবসরে যেতে হয়। তাই ক্যাডার পছন্দক্রম নির্বাচনের আগে সেই ক্যাডারের সর্বোচ্চ পদোন্নতির সম্ভাবনা সম্পর্কে জেনে নিন। পদোন্নতি বিবেচনায় পররাষ্ট্র, প্রশাসন, পুলিশ, নিরীক্ষা ও হিসাব, কর, কৃষি, গণপূর্ত, সড়ক ও জনপথ প্রভৃতি ক্যাডার পছন্দক্রমে রাখতে পারেন।

 

কর্মপরিবেশ ও সুযোগ-সুবিধা

ক্যাডারভেদে চাকরির ক্ষেত্র ও কর্মপরিবেশ ভিন্ন ভিন্ন। গাড়ি, কোয়ার্টার, আর্থিক প্রণোদনা, বৈদেশিক প্রশিক্ষণের সুযোগ ইত্যাদিরও তারতম্য নির্ভর করে ক্যাডার বা চাকরির ধরনের ওপর। কর্মপরিবেশ আর সুযোগ-সুবিধার ওপর একজন ক্যাডারের সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিও গড়ে ওঠে। এ ক্ষেত্রে পররাষ্ট্র, প্রশাসন, পুলিশ, নিরীক্ষা ও হিসাব, গণপূর্ত, সড়ক ও জনপথ প্রভৃতি ক্যাডার পছন্দক্রমে রাখতে পারেন।

 

একাডেমিক জ্ঞানের সঙ্গে সম্পর্ক

অনেক প্রার্থীই কর্মক্ষেত্রে একাডেমিক জ্ঞান প্রয়োগ করতে পছন্দ করেন। আবার অনেকে একাডেমিক বৃত্ত থেকে বের হয়ে ভিন্ন ক্ষেত্রে নিজেকে প্রতিষ্ঠার ব্যাপারেও কৌতূহলী থাকেন। একাডেমিক জ্ঞান প্রয়োগের জন্য প্রফেশনাল/টেকনিক্যাল ক্যাডারগুলো পছন্দক্রমের প্রথম দিকে রাখতে পারেন।

 

 

কাজের সুযোগ ও কাজের চাপ

বিভিন্ন দপ্তরে ও বিভিন্ন ধরনের কাজের সুযোগ কর্মক্ষেত্রকে উপভোগ্য করে তোলে অনেকের কাছে। এ ক্ষেত্রে প্রশাসন, নিরীক্ষা ও হিসাব, তথ্য-সাধারণ ক্যাডারগুলো পছন্দক্রমের প্রথম দিকে রাখতে পারেন। তবে কাজের সুযোগ বেশি থাকলে কাজের চাপও বেশি হবে। সব কিছু মাথায় রেখে ক্যাডার নির্বাচন করুন। আবেদনের আগেই পছন্দের ক্যাডার তালিকার খসড়া করুন।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

আড়াই শ বেসামরিক কর্মী নেবে নৌবাহিনী

    চট্টগ্রাম ও খুলনা নৌ অঞ্চলের জন্য ৩২ ধরনের পদে ২৫২ জন বেসামরিক কর্মচারী নিয়োগ দেবে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। আবেদন করতে হবে অনলাইনে, ৫ এপ্রিল ২০২৫-এর মধ্যে। বিস্তারিত জানাচ্ছেন সাজিদ মাহমুদ
শেয়ার
আড়াই শ বেসামরিক কর্মী নেবে নৌবাহিনী

নিয়োগ পরীক্ষা

প্রার্থী নির্বাচন করা হবে লিখিত, ব্যাবহারিক (প্রযোজ্য হলে) ও মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে। লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হতে পারে এমসিকিউ পদ্ধতিতে। তবে পদভেদে রচনামূলক প্রশ্নও থাকতে পারে। সাধারণত বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও সাধারণ জ্ঞানএই চার বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়।

পদভেদে ৭০ থেকে ৮০ নম্বরের প্রশ্ন থাকতে পারে। পরীক্ষার সময় পদভেদে এক থেকে দেড় ঘণ্টা।

 

পরীক্ষার প্রস্তুতি

জনবল নেওয়া হবে ১৩তম থেকে ২০তম গ্রেডে। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পদের পরীক্ষায় প্রস্তুতি নিতে হবে বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও সাধারণ জ্ঞান বিষয়ে মাধ্যমিক শ্রেণির পাঠ্যবই থেকে।

অন্যান্য গ্রেডের ক্ষেত্রে পদভিত্তিক যোগ্যতা অনুযায়ী প্রস্তুতি নিতে হবে।  অর্থাৎ এইচএসসি বা সমমানের পদের প্রস্তুতি নিতে হবে এইচএসসির পাঠ্যবই থেকে।

বাংলা বিষয়ে ব্যাকরণ, সাহিত্য, গদ্য ও পদ্য অংশ, ইংরেজি বিষয়ে গ্রামারের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় থেকে প্রস্তুতি নিতে হবে। গণিত বিষয়ে পাটিগণিত, বীজগণিত ও জ্যামিতি থেকে প্রশ্ন করা হতে পারে।

সাধারণ জ্ঞান বিষয়ে সমসাময়িক বিষয় (জাতীয় ও আন্তর্জাতিক), দৈনন্দিন বিজ্ঞান ইত্যাদি বিষয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে। পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি বিগত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র অনুযায়ী প্রস্তুতি নিতে পারেন।

 

পদ ও যোগ্যতা

জুনিয়র সায়েন্টিফিক অ্যাসিস্ট্যান্ট ১ জনপদার্থবিজ্ঞান/রসায়নে দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের ফলসহ স্নাতক পাস। উচ্চমান সহকারী ৭,  স্টোর হাউজম্যান ১০ এবং স্টোর হাউজ সহকারী ৩ জনস্নাতক বা সমমান পাস। সাঁটমুদ্রাক্ষরিক-কাম-কম্পিউটার অপারেটর ৬ জনদ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের ফলসহ স্নাতক পাস এবং কম্পিউটার টাইপিংয়ে নির্ধারিত গতি।

ল্যাবরেটরি অ্যাসিস্ট্যান্ট ৪ জনবিজ্ঞানে রসায়নসহ স্নাতক পাস। সহকারী এক্সামিনার ৩ জনরসায়ন, গণিত, পদার্থসহ বিজ্ঞানে স্নাতক পাস। ক্যাশিয়ার ১ জনবাণিজ্যে স্নাতক পাস। লাইব্রেরি অ্যাসিস্ট্যান্ট ৪ জনএইচএসসি পাস এবং লাইব্রেরি বিজ্ঞানে ডিপ্লোমা। নার্স ৪ জনএইচএসসি পাস এবং তিন বছরের নার্সিং ডিপ্লোমা। অফিস সহকারী-কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক ৫৩ জনদ্বিতীয় বিভাগ বা সমমানের জিপিএ পেয়ে এইচএসসি বা সমমান পাস এবং কম্পিউটার টাইপিংয়ে নির্ধারিত গতি। স্টোরম্যান ২০ এবং জুনিয়র টাইমকিপার ১ জনএইচএসসি পাস। টেলিফোন অপারেটর ৮ জনএইচএসসি পাস এবং সংশ্লিষ্ট কাজে অভিজ্ঞ। মোয়াজ্জিন ১ জনআলীম পাস। ডার্করুম টেকনিশিয়ান ১, কম্পোজিটর ১, মিডওয়াইফ ১ জনএইচএসসি পাস এবং সংশ্লিষ্ট কাজে ৩ বছরের অভিজ্ঞতা। ল্যাবরেটরী অ্যাটেনডেন্ট ৯ জনবিজ্ঞানে এসএসসি পাস। বাইন্ডার ২ জনএসএসসি পাস এবং তিন বছরের অভিজ্ঞতা। ট্রেসার ৪ জনএসএসসি এবং সংশ্লিষ্ট ট্রেড কোর্স পাস। আয়া ৩ জনএসএসসি পাস এবং সংশ্লিষ্ট কাজে দক্ষ। এমটি ক্লিনার ১ জনজেএসসি পাস এবং সংশ্লিষ্ট কাজে দক্ষ। ফায়ারম্যান ১৪ জনএসএসসি পাস এবং প্রয়োজনীয় শারীরিক যোগ্যতা। অফিস সহায়ক ১৬ জনএসএসসি পাস। লস্কর ১ জনঅষ্টম শ্রেণি বা সমমান পাস এবং সংশ্লিষ্ট কাজে দক্ষ। ওয়ার্ডবয় ৩, ফিল্ড হেলথ ওয়ার্কার ১, অদক্ষ শ্রমিক ৪৯, খাকরব ১৭, ওয়াসারম্যান ২ এবং বারবার ১ জনঅষ্টম শ্রেণি বা সমমান পাস। ৫ এপ্রিল ২০২৫ তারিখ অনুযায়ী প্রার্থীর বয়স হতে হবে ১৮ থেকে ৩২ বছর।

 

বেতন-ভাতা

জাতীয় বেতন স্কেল-২০১৫ অনুযায়ী মাসিক বেতন ও অন্যান্য সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাবেন নিয়োগপ্রাপ্তরা।

 

আবেদন: http://bndcp.teletalk.com.bd

মন্তব্য
ভাইভা অভিজ্ঞতা

দ্রব্যমূল্য বেড়ে গেলে কী কী পদক্ষেপ নেবেন?

    জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগে পড়াশোনা করেছেন শরিফুল ইসলাম। তিনি ৪৩তম বিসিএসে প্রথমবার অংশ নিয়েই ‘অডিট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস’ ক্যাডার হয়েছেন। তাঁর ভাইভা অভিজ্ঞতা শুনেছেন এম এম মুজাহিদ উদ্দীন
শেয়ার
দ্রব্যমূল্য বেড়ে গেলে কী কী পদক্ষেপ নেবেন?
শরিফুল ইসলাম

চেয়ারম্যান: এমবিএ করেছেন?

আমি: জি স্যার।

So then what are you doing now?

-Sir, mainly I am preparing myself for Government job and recently I have been... (আমতা-আমতা করছিলাম)

So you want to say, ‘You have been recommended?’

- Yes sir, recently I have been recommended as Officer in Bangladesh Krishi Bank.

Ok fine. Are you comfortable in English or Bangla?

স্যার, বাংলায় বেশি কমফোর্টেবল।

ওকে, মূল্যস্ফীতি ও মুদ্রাস্ফীতির মধ্যে পার্থক্যটা কী আসলে?

মূল্যস্ফীতি মানে কোনো পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়া, আর মুদ্রাস্ফীতি হলো মুদ্রার অবমূল্যায়ন।

আচ্ছা, মনিটরিং পলিসি ও ফিসক্যাল পলিসি কিভাবে প্রণীত হয়?

ফিসক্যাল পলিসি সরকার তৈরি করে।

এখানে সরকারের যাবতীয় আয়-ব্যয় বিবরণী ও উন্নয়ন পরিকল্পনা থাকে। যেমনবাজেট প্রণয়ন। অন্যদিকে মনিটরিং পলিসি তৈরি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখানে বাংলাদেশের মুদ্রাবাজার কিভাবে নিয়ন্ত্রিত হবে, তা উল্লেখ থাকে।
যেমনব্যাংক ঋণের সুদের হার ঠিক করে দেওয়া, ডলারে মূল্য বাজারভিত্তিক করা বা না করা ইত্যাদি।

 

এক্সটার্নাল ১: দ্রব্যমূল্য বেড়ে গেলে মার্কেটিংয়ের ছাত্র হিসেবে কী কী পদক্ষেপ নেবেন?

ম্যাম, আমি মনে করি বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে কার্যকরী বিপণন ব্যবস্থা হাতে নিতে হবে। যেমনপ্রান্তিক পর্যায়ে কৃষকরা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহায়তায় ট্রাকে করে ন্যায্য দামে ডিম বিক্রি শুরু করেছে। এভাবে সব পর্যায়ের উদ্যোক্তরা এগিয়ে এলে সিন্ডিকেট ভেঙে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।

কিন্তু এর পরও তো দাম বাড়ে। সিন্ডিকেট ভাঙার পরও দাম বাড়ে কেন?

ম্যাম, মজুদদারি ও অসাধু ব্যবসায়ীদের জন্য।

প্ল্যান ও স্ট্র্যাটেজির মধ্যে কোনটা আগে?

—‘প্ল্যান হচ্ছে ভবিষ্যতে কিভাবে কাজ করব তার একটা রূপরেখা তৈরি করা। আর স্ট্র্যাটেজি হচ্ছে সেই প্ল্যান বাস্তবায়ন করার কৌশল। প্ল্যান আগে করা হয়, স্ট্র্যাটেজি পরে।

 

এক্সটার্নাল ২: আচ্ছা, পত্রিকায় এসেছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর ডি ক্যাটাগরির গভর্নর। কী কী কারণে ডি ক্যাটাগরিতে রাখা হয়েছে? টু দ্য পয়েন্ট বলবেন।

স্যার, বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে না পারা, ব্যাংকিং খাতে অব্যবস্থাপনা, ডলারের দাম বাজারভিত্তিক না করা ইত্যাদি। (অনুমান করে বলেছি)

আচ্ছা, আপনি যে ব্যাংকিং খাতে অব্যবস্থাপনার কথা বললেন। এটা রোধে আইএমএফ কী কী পদক্ষেপ নিতে বলেছিল?

ডলারের মূল্য বাজারভিত্তিক করতে বলেছিল।

সেটা তো এখন বলেছে। আগে কী বলেছে?

স্যার, এই মুহূর্তে মনে পড়ছে না।

 

চেয়ারম্যান: শরীফুল, আপনার ভাইভা শেষ।

মন্তব্য

পরিসংখ্যান ব্যুরোর ৭৩৮ পদে চাকরির সুযোগ

    পৃথক দুটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে পরিসংখ্যান ব্যুরো। একটি বিজ্ঞপ্তিতে ছয় ধরনের পদে ২৬৬ জন এবং অন্যটিতে ২০ ধরনের পদে ৪৭২ জন নিয়োগের কথা বলা হয়েছে। অনলাইনে আবেদন করতে হবে ৫ এপ্রিল ২০২৫ তারিখের মধ্যে। নিয়োগ পরীক্ষার পদ্ধতি, প্রস্তুতি, পদবিন্যাস ও যোগ্যতা নিয়ে লিখেছেন সাজিদ মাহমুদ
শেয়ার
পরিসংখ্যান ব্যুরোর ৭৩৮ পদে চাকরির সুযোগ
ছবি : কালের কণ্ঠ

দায়িত্ব কী

আবেদনের আগে উল্লেখযোগ্য পদগুলোর কাজ বা দায়িত্ব জেনে নেওয়া জরুরি। পরিসংখ্যান সহকারী এবং জুনিয়র পরিসংখ্যান সহকারী পদের কর্মীর মূল কাজবিভিন্ন শুমারির জন্য সংশ্লিষ্ট উৎসগুলো থেকে পরিসংখ্যানসংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা। এরপর সেগুলো সফটওয়্যারে এন্ট্রি বা সংরক্ষণ করা। ডাটা বিশ্লেষণ, সংগৃহীত তথ্য পর্যালোচনা, ডাটা ক্লোনিং, পরিসংখ্যানগত তথ্য সংরক্ষণ ও ব্যবস্থা্পনাও করতে হয় কর্মীদের।

এ ছাড়া উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাজেও সহায়তা করতে হয়। চেইনম্যান পদের মূল কাজ মাঠ পর্যায়ের জরিপ ও তথ্য সংগ্রহে সহায়তা করা। মূল তথ্য সংগ্রহকারীদের বিভিন্ন পরিমাপ, তথ্য লিপিবদ্ধ, এলাকাভিত্তিক মানচিত্র প্রস্তুত ও মাপজোখ করতে হয় এই পদের কর্মীদের।

 

পরীক্ষা কেমন হতে পারে

লিখিত, ব্যাবহারিক (প্রযোজ্য হলে) ও মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে জনবল নিয়োগ দেওয়া হবে।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর বিগত কয়েক বছরের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র নিরীক্ষা করে দেখা গেছে, লিখিত পরীক্ষা হয়েছে এমসিকিউ পদ্ধতিতে। জুনিয়র পরিসংখ্যান সহকারী পদের ২০২১ সালের এমসিকিউ পরীক্ষা হয়েছে ৮০ নম্বরে, সময় ছিল ৯০ মিনিট। একই বছরের পরিসংখ্যান সহকারী পদের এমসিকিউ পরীক্ষার নম্বর ছিল ৮০। জুনিয়র পরিসংখ্যান সহকারী পদের ২০১৯ সালের লিখিত পরীক্ষার নম্বর ছিল ৭০।
এ ছাড়াও চেইনম্যান পদের ২০২১ সালের পরীক্ষা হয়েছে এমসিকিউ পদ্ধতিতে, ৪০ নম্বরে। সময় ছিল এক ঘণ্টা। বিগত বছরগুলোতে তৃতীয় শ্রেণির পদগুলোতে ৯০ মিনিটে ৮০ নম্বর এবং ৪র্থ শ্রেণির পদগুলোতে এক ঘণ্টায় ৪০ নম্বরের পরীক্ষা হয়েছে। সব পদের ক্ষেত্রেই বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও সাধারণ জ্ঞান বিষয়ে প্রশ্ন থাকে। প্রতিটি বিষয়ের গড় নম্বর ১৫-২০।

 

পরীক্ষার প্রস্তুতি

বিবিএসের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির নিয়োগ পরীক্ষায় অষ্টম-দশম শ্রেণির পাঠ্যবই অনুসারে প্রস্তুতি নিতে হবে। সাধারণত মাধ্যমিক শ্রেণির পাঠ্যবই থেকেই বেশির ভাগ প্রশ্ন করা হয়। এ ছাড়াও সমসাময়িক বিষয়সহ সাধারণ জ্ঞানে নিজেকে আপডেট রাখতে হবে। নিয়োগ পরীক্ষায় ভালো করার জন্য বিগত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র অনুযায়ী প্রস্তুতি নিতে হবে। বাজারে পরিসংখ্যান ব্যুারোর তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতিমূলক সহায়ক বই পাওয়া যায়। ভালো প্রস্তুতির জন্য সহায়ক বইও সংগ্রহে রাখতে পারেন।

পরিসংখ্যান সহকারী ও জুনিয়র পরিসংখ্যান সহকারী ও চেইনম্যান পদের পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ সব বিষয়বস্তুর ওপর দখল থাকতে হবে। বাংলা ব্যাকরণ অংশের বাক্য রচনা, সমাস, কারক, ভাষা, সন্ধিবিচ্ছেদ, এক কথায় প্রকাশ, বাগধারা, প্রবাদ-প্রবচন থেকে বেশি প্রশ্ন আসে। গদ্য ও পদ্য অংশ থেকেও প্রশ্ন আসে, তবে কম। ইংরেজি গ্রামার অংশে Transformation of verbs, Phrase & idiom, Translation, Fill in the blank, sentence making, Correction, Narration, Voice, Sprats of speech খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গণিতের পাটিগণিতে লসাগু, গসাগু, শতাংশ, গড় নির্ণয়, শতকরা, সুদকষা, অনুপাত ও সমানুপাত এবং বীজগণিতে উৎপাদক, মান নির্ণয় অধ্যায় গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণ জ্ঞানে ভালো করতে সাম্প্রতিক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার পাশাপাশি বাংলাদেশ, বিজ্ঞান, কম্পিউটার, ইতিহাস, সংস্কৃতির ভালো জানাশোনা থাকতে হবে।

 

পদ ও যোগ্যতা

সিনিয়র নকশাবিদ ৪ জনভূগোল/ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞানে দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানসহ স্নাতক। পরিসংখ্যান সহকারী ৮৫, জুনিয়র পরিসংখ্যান সহকারী ২২৬, ইনুমারেটর ৪, এডিটিং অ্যান্ড কোডিং অ্যাসিস্ট্যান্ট ১১ এবং নকশাবিদ ৩ জনপরিসংখ্যান/অর্থনীতি/গণিতসহ কমপক্ষে দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানসহ স্নাতক। কম্পিউটার অপারেটর ১০ জনবিজ্ঞানে স্নাতক বা সমমান। হিসাবরক্ষক ১ জনবাণিজ্যে কমপক্ষে দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানসহ স্নাতক। উচ্চমান সহকারী ৮ জনস্নাতক বা সমমান। ক্যাশিয়ার ২ জনবাণিজ্যে কমপক্ষে দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানসহ স্নাতক। সাঁট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর ৯ জনন্যূনতম এইচএসসি বা সমমান। জুনিয়র নকশাবিদ ৯ জনড্রাফটসম্যানশিপে ডিপ্লোমা। কম্পোজিটর ৪ জনস্নাতক বা সমমান। স্টোর কিপার ১ জনস্নাতক বা সমমান। ডাটা এন্ট্রি/কন্ট্রোল অপারেটর ৪২ জনন্যূনতম এইচএসসি বা সমমান। ডুয়াল ডাটা অপারেটর ১২ জনএইচএসসি বা সমমান। কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক ১০ জনএইচএসসি বা সমমান। অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক ২৩ জনন্যূনতম এইচএসসি বা সমমান পাস। বুক বাইন্ডার ৩ জনএইচএসসি বা সমমান এবং বই বাঁধাইয়ের কাজে ৩ বছরের অভিজ্ঞতা। গাড়িচালক ৫ জনজেএসসি বা সমমানের এবং হালকা বা ভারী গাড়ী চালনার বৈধ লাইসেন্সধারী। সহকারী স্টোরকিপার ২ জনএইচএসসি পাস। মেশিনম্যান ৩ জনএইচএসসি পাস এবং প্রিন্টিং প্রেসে সহকারী পদে দুই বছরের অভিজ্ঞতা। মেশিনম্যান কাম ক্লিনার দুজনএইচএসসি এবং প্রিন্টিং প্রেসে সহকারী পদে দুই বছরের অভিজ্ঞতা। প্যাকার তিনজনএইচএসসি এবং প্যাকিংয়ে দুই বছরের অভিজ্ঞতা। চেইনম্যান ১৭৯ জনএসএসসি। অফিস সহায়ক ৭৭ জনএসএসসি।

 

আবেদন: http://bbs.teletalk.com.bd

মন্তব্য

ওরাকলে বাংলাদেশি তরুণ সুদীপ্ত

    মার্কিন বহুজাতিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ওরাকলে চাকরি পেয়েছেন সুদীপ্ত কর। তিনি সেখানে প্রিন্সিপাল অ্যাপ্লায়েড সায়েন্টিস্ট হিসেবে কর্মরত। এর আগে ইন্টেল, অ্যামাজনের মতো প্রতিষ্ঠানেও কাজ করেছেন। তাঁর চাকরি পাওয়ার অভিজ্ঞতাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন আব্দুন নুর নাহিদ
শেয়ার
ওরাকলে বাংলাদেশি তরুণ সুদীপ্ত
সুদীপ্ত কর

মার্কিন বহুজাতিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ওরাকলে চাকরি পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার! কিভাবে সুযোগ পেলেন?

আমি প্রায় পাঁচ বছর অ্যামাজনে কাজ করেছি। সেখানে ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যালেক্সার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) টিমে সিনিয়র অ্যাপ্লায়েড সায়েন্টিস্ট হিসেবে কর্মরত ছিলাম। এক পর্যায়ে মনে হলো, ক্যারিয়ার উন্নয়নের গতি ধীর হয়ে আসছে, নতুন কিছু করা উচিত। এদিকে ওরাকল থেকে প্রস্তাব পেয়ে ই-মেইলে তাদের সঙ্গে কথাবার্তা হয়।

এরপর প্রিন্সিপাল অ্যাপ্লায়েড সায়েন্টিস্ট পদে ইন্টারভিউর তারিখ ঠিক করা হয়। ইন্টারভিউ ভালো হওয়ায় তারা আমাকে চাকরির অফার করে। এর মাসখানেক পর সেখানে যোগ দিই।

 

বাছাই প্রক্রিয়া কয়টি ধাপে হয়েছে? কী কী প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে?

আন্তর্জাতিক শীর্ষ পর্যায়ের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোতে সাধারণত দুই থেকে চার রাউন্ডে ইন্টারভিউ হয়।

প্রথমে হায়ারিং ম্যানেজারের সঙ্গে মিটিং হয়। এখানে চাকরিপ্রার্থীর কাজের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা নিয়ে আলোচনা হয়। একই সঙ্গে ম্যানেজার তাঁর টিম কী নিয়ে কাজ করে, প্রার্থী যোগ দিলে কী কী করতে পারবে, টিমের কাজের রীতি কেমন, এসব নিয়েও ধারণা দেন। এই মিটিংয়ে যদি দুই পক্ষই আশ্বস্ত হয়, তাহলে দ্বিতীয় রাউন্ডের ইন্টারভিউ হয়।

সেখানে টিমের একজন বিজ্ঞানী প্রার্থীর প্রযুক্তিগত দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন করে বোঝার চেষ্টা করেন, প্রার্থীর প্রয়োজনীয় দক্ষতা আছে কি না। আমার ক্ষেত্রে ন্যাচরাল ল্যাংগুয়েজ প্রসেসিং, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, মেশিন লার্নিং, লার্জ ল্যাংগুয়েজ মডেল নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। এই রাউন্ডে ভালো করলে পরের রাউন্ডে (অনসাইট) যাওয়ার সুযোগ হয়। সেখানে সাধারণত পাঁচজন কর্মকর্তা এক ঘণ্টা করে মোট পাঁচ ঘণ্টা ইন্টারভিউ নেন। সেটা এক দিনেও হতে পারে, আবার পর পর দুই দিনেও হতে পারে।

সেখানে প্রযুক্তিগত দক্ষতার পাশাপাশি আচরণগত দক্ষতারও পরীক্ষা নেওয়া হয়।

 

বিদেশি প্রতিষ্ঠানে চাকরি পেতে চ্যালেঞ্জ কী কী?

আমি স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে আমেরিকায় পড়তে এসেছি। ইউনিভার্সিটি অব হিউস্টনে পিএইচডি করে চাকরিতে ঢুকেছি। আমার কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ মনে হয়েছে, ইমিগ্রেশন ও ভিসার জটিলতা। আমেরিকায় চাকরি করতে হলে এইচওয়ানবি (ওয়ার্ক পারমিট) ভিসা নিতে হয়। এটার জন্য এইচওয়ানবি ভিসা স্পন্সর করেএমন প্রতিষ্ঠান দরকার হয়। খুব কম প্রতিষ্ঠানই এটা করে থাকে। একদিন সকালে অফিসে গিয়ে হয়তো দেখবেন আপনার চাকরিটা নেই! এমন অহরহ হচ্ছে। চাকরি হারানোর পর ৬০ দিনের মধ্যে নতুন চাকরি না পেলে এইচওয়ানবি ভিসা বাতিল হয়ে যায়। আরেকটা চ্যালেঞ্জকমিউনিকেশন স্কিল। মানুষের সামনে উপস্থাপনা, তাদের সামনে কথা বলা, পেশাগত নেটওয়ার্ক তৈরি, ক্রিটিক্যাল রাইটিং, নিয়োগকর্তার কাছে নিজের অভিজ্ঞতা ঠিকঠাক তুলে ধরাএসব যোগ্যতা অনেকেরই নেই। প্রার্থীদের বড় একটি অংশ ঠিকমতো একটা প্রফেশনাল ই-মেইল লিখতে পারে না, সিভি বানাতে পারে না।

 

প্রিন্সিপাল অ্যাপ্লায়েড সায়েন্টিস্টের কাজ কী? সারা বিশ্বে এই পদের সুযোগ কেমন?

এটা একটা টেকনিক্যাল লিডারশিপ রোল বা পদ। প্রতিষ্ঠানের প্রযুক্তিগত সমস্যা সমাধানের গতিপথ ডিজাইন করা এবং সেটা সমাধানের জন্য সিনিয়র এবং জুনিয়র সায়েন্টিস্টদের নেতৃত্ব দেওয়াই এই পদের মূল কাজ। এ ছাড়া দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রতিষ্ঠানের কর্মকৌশল নির্ধারণে সাহায্য করাও এই দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। জুনিয়র এবং সিনিয়র লেভেলে প্রজেক্ট ডেলিভারি করা মূল দায়িত্ব। আর প্রিন্সিপাল লেভেলে ভিশন ডেভেলপ করা এবং সেটার জন্য দীর্ঘ বা স্বল্প মেয়াদে কী ধরনের গবেষণা করা উচিত, সেটার পরিকল্পনা করতে হয়। প্রতিষ্ঠানভেদে এই পদকে স্টাফ সায়েন্টিস্টও বলা হয়।

 

ওরাকলের আগে কোথায় কোথায় কাজ করেছেন?

দেশে পড়াশোনা করেছি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে। আমার বিভাগেই (সিএসই) গবেষক হিসেবে দুই বছর চাকরি করেছি বাংলা সার্চ ইঞ্জিন পিপীলিকা প্রজেক্টে। এরপর আমি চলে আসি যুক্তরাষ্ট্রে পিএইচডি করতে। আমার গবেষণার বিষয়বস্তু ছিল ন্যাচারাল ল্যাংগুয়েজ প্রসেসিং, ডিপ লার্নিং। পিএইচডি করার সময় আমি ইন্টেল, জেনারেল ইলেকট্রনিকস এবং অ্যামাজনে ইন্টার্নশিপ করেছি। তারপর পিএইচডি সম্পন্ন করে অ্যামাজনে যোগ দিই অ্যাপ্লায়েড সায়েন্টিস্ট হিসেবে। সেখানে প্রায় পাঁচ বছর চাকরি করেছি। সর্বশেষ যোগ দিই ওরাকলে।

 

যারা বিশ্বের প্রথম সারির আইটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতে চায়, তারা কিভাবে নিজেদের প্রস্তুত করবে? এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশিদের জন্য চ্যালেঞ্জ কী কী?

প্রতিদিন নিজের স্কিল নিয়ে কাজ করতে হবে, পড়াশোনা ঠিকমতো করতে হবে। নিজের স্কিল নিয়ে কাজ করতে করতে এক্সপার্ট হয়ে গেলে চাকরি খোঁজার কষ্ট করতে হয় না। এ যুগে অনেক কিছুই অনলাইনে শেখা যায়। আমিও অনেক কিছু অনলাইনে শিখেছি। আমি বাংলাদেশিদের জন্য আলাদা কোনো চ্যালেঞ্জ দেখছি না। পড়াশোনায় ভালো হলে বিশ্ববিদ্যালয় (পাবলিক) পর্যন্ত বিনা খরচায় পড়া যায়। তবে এটা ঠিক, বাংলাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিবেশ শিক্ষার্থীবান্ধব নয়। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পরিবেশ নষ্ট করছে রাজনীতি

 

এখন আন্তর্জাতিক চাকরির বাজারে কোন কোন দক্ষতার কর্মীদের চহিদা সবচেয়ে বেশি? কিভাবে এসব দক্ষতা অর্জন করা সম্ভব?

বর্তমানে এআইনির্ভর প্রযুক্তির দক্ষতার অনেক চাহিদা। এ ধরনের সফটওয়্যার নিয়ে কাজ জানা থাকলে বহু উপায়ে অর্থ উপার্জন করা সম্ভব। ইন্টারনেটে এগুলো শেখার প্রচুর ফ্রি রিসোর্স অনলাইনে পাওয়া যায়। নিয়মিত চর্চা করতে হবে। যাঁরা কম্পিউটার বিজ্ঞান বা প্রযুক্তি নিয়ে পড়াশোনা করেন, তাঁদের জন্য প্রগ্রামিং ভালোমতো শেখা, ডাটা স্ট্রাকচার এবং অ্যালগরিদমে দক্ষ হওয়া, প্রচুর প্রজেক্ট করে প্র্যাকটিক্যাল অভিজ্ঞতা অর্জন করা খুব জরুরি। আমি যখন পিএইচডি করতে আমেরিকায় আসি, তখন অনেক কিছু প্রথমবারের মতো জানতে পারি। আমার অসংখ্যবার আফসোস হয়েছে, ইশ! এগুলো যদি আমি দেশে থাকা অবস্থাতেই জানতাম তাহলে ক্যারিয়ারে হয়তো আরো ভালো করতে পারতাম। তাই সময় পেলে এই বিষয়গুলো নিয়ে অনলাইনে লেখালেখি করি, ভিডিও তৈরি করি।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ