<p>সাধারণ মানুষের আকাঙ্ক্ষাকে উপেক্ষা করে রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয়ের মাধ্যমে নিজের পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের নামে জাতীয় পর্যায়ে অনেক প্রতিষ্ঠান গড়েছিলেন ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আবার সেসব প্রতিষ্ঠানে দান করলে করদাতাদের জন্য আয়কর রেয়াতের আইনও চালু করা হয়েছিল। এবার এখান থেকে সরে এলো ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। গত বৃহস্পতিবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) জারি করা প্রজ্ঞাপন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।</p> <p>২০২৩ সালের আয়কর আইন অনুযায়ী, মোট ১৫টি খাতে বিনিয়োগ ও দান করলে একজন করদাতা আয়কর রেয়াত পান। এর মধ্যে ‘জাতির পিতার স্মরণে প্রতিষ্ঠিত কোনো জাতীয় পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানে কোনো করদাতা কর্তৃক অনুদান হিসেবে প্রদত্ত যেকোনো পরিমাণের অর্থ’ উল্লেখ আছে।</p> <p>এ খাতে দান করলে কর রেয়াত পাওয়ার রাজনৈতিক সুবিধা তুলে দিয়েছে এনবিআর। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনবিআরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আওয়ামী শাসনামলে সারা দেশে শেখ মুজিবের নামে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে। তাঁর স্মরণে প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানে দান করলে কর রেয়াতের বিধান রাখতে বাধ্য হয়েছিল এনবিআর। এখন সরকার মনে করছে এটা প্রাসঙ্গিকতা হারিয়েছে। তাই এই আইন বাতিল করা হয়েছে।’</p> <p>এখন পর্যন্ত কোনো করদাতা এ খাতে দান করে কোনো রেয়াত নিয়েছেন কি না, তার সঠিক কোনো তথ্য এনবিআরের কাছে নেই। তবে অন্তত ১০টি কর অঞ্চলের বিভিন্ন পদের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করা হলে তাঁরা জানান, ‘আমরা কোনো করদাতাকে এ খাতে দান করে কর রেয়াত নিতে দেখিনি।’</p> <p>এ ধরনের আইনকে প্রশ্নবিদ্ধ ও খুবই উদ্দেশ্যমূলক বলে মনে করেন সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘গত ১৬ বছর দেশে ছিল চোরের শাসন। তাঁদের মূল উদ্দেশ্যই চুরি করা ও টাকা পাচার করা। চুরি ও লুটপাটের সঙ্গে যাঁরা জড়িত ছিলেন, তাঁদের সুযোগ দিতেই এ ব্যবস্থা করা হয়েছিল। চোরদের পুনর্বাসন করার একটা ব্যবস্থাই ছিল এই দান-খয়রাতি।’</p> <p> </p>