<p>ইতিহাসের সর্বনিম্ন পর্যায়ে এসে ঠেকেছে ভারতীয় রুপির মান। মার্কিন ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপির মান আরো কমে ৮৬ দশমিক ২০-এ দাঁড়িয়েছে। ডলারের শক্তিশালী অবস্থান ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ভারতীয় শেয়ারবাজার থেকে অর্থ প্রত্যাহার রুপির এই মান পতনের মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। আবার বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের মূল্যবৃদ্ধি ও দেশীয় শেয়ারবাজারের নেতিবাচক প্রবণতাও রুপির ওপর প্রভাব ফেলেছে।</p> <p>বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক সমীক্ষায় বলা হয়, ভারতীয় রুপি আরোও দুর্বল হয়ে ডলারের বিপরীতে ৮৬-তে নেমে যেতে পারে। মাত্র ২৪ ঘণ্টা পেরোতে না পেরোতেই, সেই আশঙ্কা সত্যি প্রমাণিত হয়। শুক্রবার ১৪ পয়সা পতন হয় রুপির। শুক্রবার ভারতীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ৩ জানুয়ারি শেষ হওয়া সপ্তাহে ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৫ দশমিক ৬৯৩ বিলিয়ন ডলার কমে ৬৩৪ দশমিক ৫৮৫ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে।</p> <p>দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন অনুসারে, শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) লেনদেন শুরু হয় ডলারপ্রতি ৮৫ দশমিক ৮৮ রুপিতে এবং শেষ হয় সর্বনিম্ন ৮৫ দশমিক ৯৮ রুপিতে। পতন রুখতে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজারে ডলার বিক্রি করছে। </p> <p>ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর আন্তর্জাতিক বাজারে ডলারের দাম বাড়ছে। বন্ডের বিপরীতে পাওয়া যাচ্ছে অতিরিক্ত মুনাফা। এসব কারণে দুর্বল হচ্ছে রুপির মান। এ ছাড়া বিদেশি বিনিয়োগকারীদের পুঁজিবাজারে শেয়ার বিক্রি করে দেওয়ার বড় কারণ বলে জানানো হয়েছে। জানুয়ারিতেই এখন পর্যন্ত ২১ হাজার ৩৫৭ কোটি রুপির শেয়ার বিক্রি করা হয়েছে।</p> <p>বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে ভারতের পুঁজিবাজার মহাসংকটে পড়েছে। রুপির এই দরপতনের পাশাপাশি শেয়ারবাজারেরও পতন হচ্ছে লাগাতার। শুক্রবার সেনসেক্স ২৪১ দশমিক ২০ পয়েন্ট পড়ে ৭৬ হাজারের দোরগোড়ায় চলে এসেছে; ৭৭ হাজার ৩৭৮ দশমিক ৯১ অঙ্কে নেমেছে। গত তিন দিনে সূচকটি পড়েছে মোট ৮২০ পয়েন্ট। বাজারের মূলধন কমেছে ১২ লাখ কোটি রুপি। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা মোট ১২ হাজার ৭৮৭ দশমিক ৭৩ কোটি রুপি পুঁজি তুলে নিয়েছে। সেটাই রুপির অবমূল্যায়নের অন্যতম কারণ।</p> <p>আইডিএফসি ফার্স্ট ব্যাংকের উপাত্ত অনুযায়ী, ২০২৪ সালের এপ্রিল থেকে নভেম্বর সময়ের মধ্যে ভারতের বাণিজ্যঘাটতি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৮ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে। পাশাপাশি ভারত থেকে বিপুল পরিমাণে বিদেশি বিনিয়োগ প্রত্যাহার করা হয়েছে, শেষ প্রান্তিকে যার পরিমাণ ছিল ১০ দশমিক ৩ বিলিয়ন (১ হাজার ৩০ কোটি) ডলার। এর আগের প্রান্তিকে ভারতে ২০ বিলিয়ন বা দুই হাজার কোটি ডলারের বিনিয়োগ এসেছিল। এসব কারণে রুপির ওপর চাপ সৃষ্টি হচ্ছে।</p>