পরীক্ষা সুষ্ঠু, সুন্দর ও নকলমুক্ত পরিবেশে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে পরীক্ষা কেন্দ্রের আশপাশে ১৪৪ ধারা জারি এবং ৩৪ দিন কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার মধ্য দিয়ে ১০ এপ্রিল শুরু হচ্ছে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা।
গত ১৬ মার্চ শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরার মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত জাতীয় মনিটরিং ও আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় জানিয়েছেন, এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে রয়েছে নানামুখী চ্যালেঞ্জ। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১৯ মার্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয় পৃথক দুটি পরিপত্র জারি করেছে ।
শনিবার (২২ মার্চ) ঢাকা বোর্ডের ওয়েবসাইটে পরিপত্রটি প্রকাশ করা হয়।
পরিপত্রে লিখিত পরীক্ষা চলাকালীন সারা দেশে ৩৪ দিন সব ধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশনা রয়েছে। ১৪৪ ধারা জারি করা হবে পরীক্ষা কেন্দ্রের আশপাশে, বন্ধ রাখতে হবে ফটোকপি মেশিন।
এ পরীক্ষার লিখিত বা তত্ত্বীয় পরীক্ষা ১০ এপ্রিল শুরু হয়ে শেষ হবে ১৩ মে। ব্যবহারিক পরীক্ষা ১৫ থেকে ২২ মে পর্যন্ত চলবে।
পরিপত্রে আরো বলা হয়েছে, পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে সব পরীক্ষার্থীকে অবশ্যই পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করে আসন গ্রহণ করতে হবে। অনিবার্য কারণে কোনো পরীক্ষার্থী নির্ধারিত সময়ের ৩০ মিনিটের পর পরীক্ষা কেন্দ্রে এলে রেজিস্টারে নাম, রোল নম্বর, প্রবেশের সময় ও বিলম্বের কারণ উল্লেখ করতে হবে।
এতে বলা হয়, বিলম্বে আসা পরীক্ষার্থীদের তালিকা প্রতিদিন কেন্দ্রের সচিব সংশ্লিষ্ট বোর্ডকে অবহিত করবে। তবে পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট পর কোনো পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ বা পরীক্ষা গ্রহণে অনুমতি দেওয়া যাবে না।
পরীক্ষা চলাকালীন এবং পরীক্ষা অনুষ্ঠানের আগে বা পরে পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষার্থী ও পরীক্ষসংশ্লিষ্ট কাজে নিয়োজিত ব্যক্তি ছাড়া অন্যদের প্রবেশ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ থাকবে। পরীক্ষার সময় পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশকারী অননুমোদিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া অনিবার্য কারণবশত কোনো পরীক্ষা দেরিতে শুরু করতে হলে যত মিনিট পর পরীক্ষা শুরু হবে, পরীক্ষার্থীদের সে সময় থেকে যথারীতি প্রশ্নপত্রে উল্লেখিত নির্ধারিত সময় যুক্ত হবে।
প্রশ্নপত্র ফাঁস কিংবা পরীক্ষার্থীদের কাছে উত্তর সরবরাহে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও জেলা প্রশাসনকে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
অন্যদিকে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁস সংক্রান্ত গুজব কিংবা এ কাজে তৎপর চক্রগুলোর কার্যক্রমের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো নজরদারি জোরদার করবে।
কেন্দ্র সচিব ছাড়া পরীক্ষাকেন্দ্রে অন্য কেউ মুঠোফোন ও মুঠোফোনের সুবিধাযুক্ত ঘুড়ি, কলম বা অননুমোদিত ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করতে পারবেন না। কেন্দ্রের সচিব ছবি তোলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধাবিহীন একটি সাধারণ (ফিচার) ফোন ব্যবহার করতে পারবেন।
অননুমোদিত ফোন/ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পরীক্ষা চলাকালীন এবং পরীক্ষা অনুষ্ঠানের আগে বা পরে পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষার্থী ও পরীক্ষসংশ্লিষ্ট কাজে নিয়োজিত ব্যক্তি ছাড়া অন্যদের প্রবেশ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ থাকবে। পরীক্ষার সময় পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশকারী অননুমোদিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া অনিবার্য কারণবশত কোনো পরীক্ষা দেরিতে শুরু করতে হলে যত মিনিট পর পরীক্ষা শুরু হবে, পরীক্ষার্থীদের সে সময় থেকে যথারীতি প্রশ্নপত্রে উল্লেখিত নির্ধারিত সময় যুক্ত হবে।
পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস এড়াতে ট্রেজারি/থানা/নিরাপত্তা হেফাজত হতে প্রশ্নপত্র গ্রহণ ও পরিবহনের কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা, শিক্ষক, কর্মচারীরা কোনো মুঠোফোন ব্যবহার করতে পারবেন না এবং প্রশ্নপত্র বহনের কাজে কালো কাঁচযুক্ত মাইক্রোবাস বা এরূপ কোনো যানবাহন ব্যবহার করা যাবে না। প্রতিটি কেন্দ্রের জন্য একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট/কর্মকর্তা (ট্যাগ অফিসার) নিয়োগ দিতে হবে। ট্রেজারি/থানা/নিরাপত্তা হেফাজত হতে কেন্দ্রের সচিব বা তার মনোনীত উপযুক্ত প্রতিনিধি ট্যাগ অফিসারসহ প্রশ্নসহ গ্রহণ করে পুলিশ পাহারায় কেন্দ্রে নিয়ে যাবেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট/কর্মকর্তার (ট্যাগ অফিসার) উপস্থিতি ছাড়া প্রশ্নপত্র ট্রেজারি/থানা/নিরাপত্তা হেফাজত থেকে বের করা যাবে না বা বহন করা যাবে না। ট্রেজারি/থানা/নিরাপত্তা হেফাজত থেকে পরীক্ষাকেন্দ্রে বহুমুখী নির্বাচনী প্রশ্নসহ রচনামূলক/সৃজনশীলের সব সেট প্রশ্নই নিতে হবে। প্রশ্নের সেট কোড পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে জানানো হবে। সে অনুযায়ী নির্ধারিত সেট কোডে পরীক্ষা গ্রহণ করতে হবে। কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ট্যাগ অফিসার), কেন্দ্র সচিব এবং পুলিশ কর্মকর্তার উপস্থিতি ও স্বাক্ষরে নির্ধারিত সেট কোড নিশ্চিত হয়ে বিধি অনুযায়ী প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খুলতে হবে।
পরিপত্রে আরো বলা হয়, পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হতে এ সময়কালে পরীক্ষাকেন্দ্রে ও প্রশ্ন পরিবহনে দায়িত্বপ্রাপ্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবে।
পরীক্ষা-সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য-উপাত্ত গণমাধ্যমসহ অন্যান্য মাধ্যমে উপস্থাপনের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে সভাপতি, আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি ও চেয়ারম্যান, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা দায়িত্ব পালন করবেন। পরীক্ষার ফল প্রকাশের ৭ দিনের মধ্যে পুনঃনিরীক্ষণের জন্য অনলাইনে এস এম এস-এর মাধ্যমে আবেদন করা হবে।