।
সম্পর্কিত খবর
রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সেখানকার ১৬ নম্বর সেক্টর থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত কর্মকর্তার নাম আহসান উল্লাহ হাসান। মরদেহ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্র বলছে, আহসান উল্লাহ হাসান হা-মীম গ্রুপের দ্যাটস ইট স্পোর্টস ওয়্যার লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক ছিলেন। তাঁর বাসা তুরাগ থানা এলাকার চণ্ডালভোগে।
এই গাড়ি চালান।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে দলটি। গতকাল মঙ্গলবার এনসিপি থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই দাবি জানানো হয়। এ সময় দলটির পক্ষ থেকে এই হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নোয়াখালীর হাতিয়ায় পথসভা চলাকালে আব্দুল হান্নান মাসউদের ওপর যে হামলা হয়, সেই হামলায় মাসউদসহ প্রায় ৫০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে ঠিক একই কায়দায় স্লোগান দিয়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করা হতো। বিএনপির নেতাকর্মীরাও দীর্ঘদিন ধরে পতিত ফ্যাসিবাদী দল আওয়ামী লীগ কর্তৃক ঠিক একইভাবে নির্যাতিত হয়েছেন। ফলে অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে আমরা এই ধরনের সংস্কৃতির পুনরাবৃত্তি চাই না।
হাতিয়ায় সংবাদ সম্মেলন
নোয়াখালী প্রতিনিধি জানান, আব্দুল হান্নান মাসউদের ওপর বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলার প্রতিবাদে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে হাতিয়া শহরের ধানসিঁড়ি রিসোর্টে সংবাদ সম্মেলন করেছেন এনসিপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক হাফিজুর রহমান বলেন, ‘সোমবার ইফতারের পর উপজেলার জাহাজমারা বাজারে পথসভায় হান্নান মাসউদ বক্তব্য দিচ্ছিলেন। এ সময় বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মী দা, রামদা, ইটপাটকেল ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রসহ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে একটি মিছিল নিয়ে আসে। তাদের প্রায় সবাই বিএনপির বর্তমান কমিটির নেতাকর্মী, তিন-চারজন বহিষ্কৃত সদস্যও ছিল।
হামলায় বিএনপির লজ্জিত হওয়া উচিত : সারজিস
জাতীয় নাগরিক পার্টির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদের ওপরে হামলার ঘটনায় বিএনপির লজ্জিত হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন দলটির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। গতকাল মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন। ফেসবুক পোস্টে সারজিস আলম বলেন, ‘গত ১৬ বছরে স্বৈরাচারী আমলে দল হিসেবে বিএনপি সবচেয়ে বেশি অন্যায় ও জুলুমের শিকার হয়েছে। অতঃপর হান্নান মাসুদের মতো কিছু অকুতোভয়, আপসহীন, সাহসী তরুণদের হাত ধরে ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় বিএনপিসহ বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো সেই স্বৈরাচারী দুঃশাসন থেকে মুক্তি পেয়েছে।
ভারতের কিছু গণমাধ্যমে সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। মঙ্গলবার রাতে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক প্রতিবাদলিপিতে এ উদ্বেগের কথা জানানো হয়। তাতে বলা হয়েছে, দি ইকোনমিক টাইমস ও দি ইন্ডিয়া টুডেসহ ভারতের কিছু সংবাদমাধ্যমে সম্প্রতি প্রকাশিত একের পর এক ভিত্তিহীন ও মনগড়া প্রতিবেদন গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। ওই সব প্রতিবেদনে সেনাবাহিনীর ভেতরে অভ্যুত্থানের সম্ভাবনা এবং শৃঙ্খলা (চেইন অব কমান্ড) ভেঙে পড়ার কথা বলা হয়েছে।
প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা স্পষ্টভাবে বলছি যে সেনাপ্রধানের দক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী শক্তিশালী, ঐক্যবদ্ধ ও সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে পুরোপুরি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছে। আমাদের চেইন অব কমান্ড শক্তিশালী রয়েছে এবং জ্যেষ্ঠ জেনারেলরাসহ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সব সদস্য সংবিধান, চেইন অব কমান্ড ও বাংলাদেশের জনগণের প্রতি আনুগত্যে অবিচল রয়েছে। সেনাবাহিনীর মধ্যে অনৈক্য বা আনুগত্যহীনতার যেকোনো অভিযোগ পুরোপুরি বানোয়াট ও বিদ্বেষপূর্ণ।
আইএসপিআর বলেছে, ‘এটা বিশেষভাবে উদ্বেগের যে দি ইকোনমিক টাইমস বারবার এ ধরনের অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। সর্বশেষ এই প্রতিবেদনের মাত্র এক মাস আগেও ২০২৫ সালের ২৬ জানুয়ারি এই গণমাধ্যমে একই ধরনের মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছিল। পেশাগত এ আচরণের কারণে এসব সংবাদমাধ্যমের উদ্দেশ্য ও বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন ওঠে। এ ছাড়া বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল ও কয়েকটি অখ্যাত টেলিভিশন চ্যানেল এসব মিথ্যা প্রচার করেছে, যাতে অপপ্রচার আরো তীব্র হয়েছে।
প্রতিবাদলিপিতে আরো বলা হয়েছে, ‘আমরা এসব সংবাদমাধ্যম, বিশেষ করে ভারতভিত্তিক সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতি ভালো সাংবাদিকতার চর্চা করার এবং যাচাই না করে ও চটকদার সংবাদ প্রকাশ না করার আহ্বান জানাচ্ছি। আশা করা হচ্ছে যে এমন প্রতিবেদন প্রকাশ করার আগে তারা আইএসপিআরের কাছ থেকে মন্তব্য ও ব্যাখ্যা চাইবে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নিয়ে সঠিক ও আনুষ্ঠানিক তথ্য সরবরাহ করার জন্য আইএসপিআর সব সময় প্রস্তুত রয়েছে।’
আইএসপিআর বলেছে, ‘দেশের সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা ও নিরাপত্তা রক্ষার প্রতিশ্রুতিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অবিচল রয়েছে।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রয়োজনীয় প্রার্থী দেবে নতুন রাজনৈতিক দল ‘জনতার দল’। দলটির প্রার্থী হতে অবশ্যই তাঁকে সৎ, দক্ষ, সাহসী ও দেশপ্রেমিক হতে হবে। দেশের বিরাজমান আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে ১৫ দিনের কৌশলও দিয়েছে দলটি। দেশের রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন ও দেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে পরিকল্পিতভাবে কাজ করবে জনতার দল।
গতকাল মঙ্গলবার রাজনৈতিক এ দলটির প্রধান কার্যালয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়। রাজধানীর বনানীর ৮ নম্বর রোডে জনতার দলের প্রধান কার্যালয় হিসেবে গতকাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করল দলটি। এদিন দলের সদস্যসচিবের দায়িত্ব গ্রহণ করেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ আজম খান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জনতার দলের প্রধান সমন্বয়ক এবং মুখপাত্র ডেল এইচ খান ও অন্যরা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. শামীম কামাল বলেন, ৫৪ বছরের রাজনৈতিক ইতিহাসে দেশে পেশাজীবীদের সুস্থ ও সুন্দর দল হিসেবে কাজ করবে জনতার দল। আমরা ঈদের পরই দেশব্যাপী কার্যক্রম পরিচালনা করব। আমাদের লক্ষ্য আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা। প্রতিটি নির্বাচনে গড়পড়তা কোনো প্রার্থী থাকবে না।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে আমাদের দলের রেজিস্ট্রেশন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় সব শর্ত মেনেই আমরা এই কার্যক্রম পরিচালনা করব। আমাদের সঙ্গে সারা দেশের মানুষের পাশাপাশি বহির্বিশ্বের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ যোগ দেওয়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
জনতার দলের সদস্যসচিব আজম খান বলেন, জুলাই বিপ্লবের পর দেশে একটা ইতিবাচক রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরি হয়েছে। দেশের সব ধরনের পেশাজীবী আমাদের জনতার দলের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশে ইতিবাচক রাজনীতি প্রতিষ্ঠা হোক—এই দৃঢ় আশা নিয়ে আমি এই দলের দায়িত্ব নিয়েছি। আমরা রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন আনতে চাই। আমাদের অভিষ্ঠ লক্ষ্যে পৌঁছাতে আমাদের দলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মী কাজ করবে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আবাসসহ নানা বিষয়ে আমরা পরিবর্তন আনব। ঈদের পর সাধারণ মানুষের যোগদান কার্যক্রম শুরু হবে।
দেশের চলমান আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের দল থেকে এরই মধ্যে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে, ১৫ দিনের মধ্যে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করা সম্ভব। কিন্তু সেটি করা হচ্ছে না। সশস্ত্রবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার যথাযথ প্রয়োগ হচ্ছে না। সশস্ত্রবাহিনীকে সঠিকভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। সেটি করা গেলে ১৫ দিনের মধ্যেই দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হবে।
জনতার দলের প্রধান সমন্বয়ক এবং মুখপাত্র ডেল এইচ খান দলটি গঠনের প্রেক্ষাপট ও এই দলে কারা আছেন, সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করে বলেন, আমাদের স্লোগান হচ্ছে ‘ইনসাফ জিন্দাবাদ’। আমাদের দলের মূলনীতি সাম্য, ন্যায্যতা ও প্রগতি।
নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে জনতার দলের যাত্রা শুরু হয়েছে। গত ২০ মার্চ রাজধানীর খামারবাড়ীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে আনুষ্ঠানিকভাবে দলটি যাত্রা শুরু করে।