ভৈরব বাজার, নরসিংদী, ঢাকা রেলপথে নরসিংদী কমিউটার নামের এক জোড়া নতুন ট্রেন যাত্রা শুরু করেছে। বুধবার (২৬ মার্চ) সকালে এই রেলপথে জনসাধারণের জন্য এই ট্রেন চালু করা হয়। তবে নতুন ট্রেনের নাম ‘নরসিংদী কমিউটার’ দেওয়ায় স্থানীয়দের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা গেছে।
ট্রেনটিতে ১১টি কোচে প্রায় ৭০০ আসন রয়েছে।
২৯১০ লো-ক-মেটিক ইঞ্জিন নিয়ে আপাতত ট্রেন দুটি সকাল-সন্ধ্যা চলবে। ঈদের আগে ও পরে ঈদ শিডিউল শেষে ডাবল ট্রিপে ফিরবে ট্রেন দুটি। দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে নতুন একজোড়া ট্রেন চালু হওয়ায় এ রেল পথে যাত্রীদের ভোগান্তি কমবে। এ নিয়ে ব্যাপক উচ্ছ্বসিত যাত্রী সাধারণ। তবে নতুন ট্রেনের নাম ‘নরসিংদী কমিউটার’ দেওয়ায় স্থানীয়দের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা গেছে।
আরো পড়ুন
আল্লাহর কাছে মা-বাবার জন্য দোয়া করা
স্থানীয়রা বলছেন, ভৈরব ও নরসিংদীবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল একটি কমিউটার ট্রেনের। ‘নরসিংদী কমিউটার’ নামের পরিবর্তে ‘ভৈরব কমিউটার’ নামটিকে বেশি উপযুক্ত মনে করছেন স্থানীয়রা।
ভৈরব, গাজিপুর ও নরসিংদীসহ রেলপথে যাত্রীর অধিক চাপ থাকার কারণে দীর্ঘদিন ধরে ভৈরব থেকে একটি কমিউটার ট্রেন চালুর দাবি করে আসছিল ভৈরব ও নরসিংদীবাসী।
ইঞ্জিন ও কোচ সংকটের কারণে দাবি বাস্তবায়ন হয়নি। এখন এক জোড়া নতুন ট্রেন চালু হওয়ায় ভৈরব থেকে ঢাকাগামী সরকারি-বেসরকারি অফিসের চাকরিজীবী ও সাধারণ মানুষ স্বল্প খরচে যাতায়াত করতে পারবে।
আরো পড়ুন
সংবিধান পরিবর্তন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ছাড়া কঠিন: জোনায়েদ সাকি
নরসিংদী কমিউটার ট্রেনটি প্রতিদিন ৬টা ৪৫ মিনিটে ভৈরব থেকে ছেড়ে ঢাকায় পৌঁছাবে ৯টা ১০ মিনিটে। ট্রেনটি নরসিংদীর দৌলতকান্দি, মেথিকান্দা, নরসিংদী, গাজিপুরের আড়িখোলা, টঙ্গি, ঢাকা-বিমানবন্দর, ঢাকা-ক্যান্টনমেন্ট ও তেজগাঁও স্টেশনে যাত্রাবিরতি করবে। অন্যদিকে ঢাকা কমলাপুর থেকে সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে ছেড়ে ট্রেনটি ভৈরববাজার পৌঁছাবে রাত ৯টা ১০ মিনিটে।
পথিমধ্যে ট্রেনটি তেজগাঁও, বিমানবন্দর, টঙ্গী, পুবাইল, আড়িখোলা, নরসিংদী ও মেথি কান্দায় যাত্রাবিরতি করবে।
১১টি শোভন শ্রেণীর কোচের মাধ্যমে ট্রেনটিতে প্রায় ৭০০ যাত্রী আসন থাকবে। এর মাঝে মহিলা যাত্রীদের জন্য নির্দিষ্ট একটি কোচ বরাদ্দ রয়েছে। এ ছাড়া ট্রেনটিতে এক হাজার ৫০০ যাত্রী আসনবিহীনভাবে চলাচল করতে পারবে।
আরো পড়ুন
ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে নতুন ট্রেন
বুধবার সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটে ৩৬ জন যাত্রী নিয়ে ট্রেনটি ভৈরব রেলস্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। মাত্র ৪৫ টাকা ভাড়া দিয়ে ঢাকা থেকে ভৈরব যাতায়াত করতে পারায় উচ্ছ্বসিত যাত্রীরা। এ ছাড়া মহিলাদের জন্য আলাদা একটি কোচ দেওয়ায় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান যাত্রী সাধারণ।
নতুন ট্রেনের ঢাকাগামী যাত্রী আশরাফ আহমেদ বলেন, মাত্র ৪৫ টাকা ভাড়ায় ঢাকা যাওয়া বর্তমান দেশের প্রেক্ষাপটে খুবই দুষ্কর। স্বল্প আয়ের মানুষদের জন্য এই ট্রেনটি অনেক উপকারে আসবে।
অপর এক যাত্রী স্বাধীন মল্লিক জানান, সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটে ট্রেনটির যাত্রা সময় হওয়ায় ভৈরববাসীর জন্য অনেক সুবিধা হয়েছে। কারণ সকাল ৬টায় ঢাকাগামী তিতাস কমিউটার ট্রেনে যাতায়াত করতে গেলে ছিনতাইয়ের কবলে পড়ার আশঙ্কা থাকতো। এ ছাড়া সাড়ে ৮টায় ঢাকাগামী এগারো সিন্দূর প্রভাতী ট্রেনটি নির্দিষ্ট সময়ে স্টেশনে থাকলেও প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট বিলম্বে যাত্রা শুরু করে। ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হয় যাত্রীদের। তিতাস কমিউটার ও এগারো সিন্দূর প্রভাতদী ট্রেনের মাঝামাঝি সময়ে নতুন ট্রেন চালু করায় যাত্রী ভোগান্তি কমে যাবে বলেও প্রত্যাশা তাদের।
আরো পড়ুন
চন্দনাইশের অসহায় গিয়াসের পাশে দাঁড়ালেন তারেক রহমান
নাম নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়ায় ভৈরব উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, যেভাবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ট্রেন হওয়া সত্ত্বেও একটি ঐতিহ্যবাহী নদীর নামে ‘তিতাস কমিউটার’ রাখা হয়েছিল, ঠিক তেমনি ভৈরব ও নরসিংদীবাসীর প্রধান নদী হিসেবে নতুন ট্রেনের নামটি এককভাবে না দিয়ে ‘মেঘনা কমিউটার’ দিলেই বেশি গ্রহণযোগ্যতা পাবে।
নরসিংদী কমিউটার ট্রেনের পরিচালক জাহাঙ্গীল আলম বলেন, নতুন ট্রেনটির শুভ উদ্বোধনসহ পরিচালনার দায়িত্বে থাকতে পেরে আমি আনন্দিত ও গর্বিত।
বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের ট্রাফিক পরিদর্শক মো. শাহজাহান পাটোয়ারি বলেন, দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে রেলওয়ের উপহার হিসেবে নরসিংদী কমিউটার নামে নতুন ট্রেনটি যাত্রা শুরু করে। আশা করি, এই পথের যাত্রীদের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘব হবে।
ভৈরব রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো ইউসুফ জানান, রেলওয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী ট্রেনটি ডাবল আপ-ডাউন এর কথা রয়েছে। তবে আপাতত দুইবার চলাচল করবে।
আরো পড়ুন
ঈদুল ফিতরে বায়তুল মোকাররমে ৫ জামাত