প্রশ্ন-উত্তর

অজু ছুটে যাওয়ার পর লজ্জায় নামাজ না ছাড়লে গুনাহ হবে?

ইসলামী জীবন ডেস্ক
ইসলামী জীবন ডেস্ক
শেয়ার
অজু ছুটে যাওয়ার পর লজ্জায় নামাজ না ছাড়লে গুনাহ হবে?
প্রতীকী ছবি

প্রশ্ন : নামাজের মধ্যে অজু ভেঙে গেলে লজ্জায় নামাজ ত্যাগ না করলে কোন ধরনের গুনাহ হয়? এ গুনাহ থেকে বাঁচার জন্য ইসলামে কোনো পন্থা আছে কি?

-সালাউদ্দীন, কিশোরগঞ্জ

উত্তর : নামাজের মধ্যে অজু ভেঙে গেলে নামাজ ত্যাগ না করলে বড় ধরনের গুনাহ হয়। বহু ওলামায়ে কিরাম বিনা অজুতে নামাজ পড়লে ঈমান চলে যাওয়ার আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন। তাই এ ধরনের পরিস্থিতিতে পতিত হলে নামাজ ছেড়ে দেবে। গুনাহ থেকে বাঁচার জন্য বেশি মুসল্লিকে কষ্ট না দিয়ে বের হওয়া সম্ভব হলে বের হয়ে অজু করবে।

আবার নামাজে শামিল হবে। আর নামাজ শেষ হয়ে গেলে একাকী নামাজ পড়ে নেবে। বের হওয়া সম্ভব না হলে নামাজ ছেড়ে দিয়ে নিজ জায়গায় বসে থাকবে। (হিদায়া : ১/২৪৯, আপকে মাসায়েল আওর উনকা হল : ২/৩২৬)

সমাধান : ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার বাংলাদেশ বসুন্ধরা, ঢাকা

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

প্রতিদিনের আমল

ঈমানের ওপর অবিচল থাকার দোয়া

ইসলামী জীবন ডেস্ক
ইসলামী জীবন ডেস্ক
শেয়ার
ঈমানের ওপর অবিচল থাকার দোয়া

মুমিনের সবচেয়ে মূল্যবান বিষয় হলো ঈমান। আর ঈমানের ওপর অবিচলতার জন্য সব সময় দোয়া করা কর্তব্য। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে,

رَبَّنَا اتْمِمْ لَنَا نُورَنَا وَاغْفِرْ لَنَا ۚ إِنَّكَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ

উচ্চারণ : রব্বানা আতমিম লানা নুরানা ওয়াগফির লানা ইন্নাকা আলা কুল্লি শাইইন কাদির। 

অর্থ: হে আমাদের প্রতিপালক, আমাদের জন্য আলোকে পরিপূর্ণ করে দিন এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন।

নিশ্চয়ই আপনি সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাবান। (সুরা তাহরিম, আয়াত : ৮)
 

মন্তব্য
হাদিসের কথা

ঈদের আগেই সদকাতুল ফিতর আদায়

ইসলামী জীবন ডেস্ক
ইসলামী জীবন ডেস্ক
শেয়ার
ঈদের আগেই সদকাতুল ফিতর আদায়

পবিত্র রমজান মাস শেষে আসে পবিত্র ঈদুল ফিতর। এ সময় রোজাদারদের ভুল-ত্রুটির ক্ষতিপূরণ হিসেবে সবাইকে সদকাতুল ফিতর আদায় করতে হয়। এ ব্যাপারে হাদিস শরিফে এসেছে, 

عَنِ ابْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ فَرَضَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم زَكَاةَ الْفِطْرِ صَاعًا مِنْ تَمْرٍ، أَوْ صَاعًا مِنْ شَعِيرٍ عَلَى الْعَبْدِ وَالْحُرِّ، وَالذَّكَرِ وَالأُنْثَى، وَالصَّغِيرِ وَالْكَبِيرِ مِنَ الْمُسْلِمِينَ، وَأَمَرَ بِهَا أَنْ تُؤَدَّى قَبْلَ خُرُوجِ النَّاسِ إِلَى الصَّلاَةِ‏.‏

ইবনে উমর (রা.) বর্ণনা করেছেন, রাসুল (সা.) সব মুসলিমের ওপর সদকাতুল ফিতর ফরজ করেনে। চাই সে দাস বা স্বাধীন হোক, পুরুষ বা নারী হোক, প্রাপ্ত বয়স্ক বা অপ্রাপ্ত বয়স্ক হোক তা দিতে হবে।

তা খেজুর বা যব থেকে এক সা পরিমাণ (বা এর সমূল্যের অর্থ) পরিশোধ করতে হবে। মানুষ ঈদের নামাজে বের হওয়ার আগেই তিনি তা পরিশোধ করার নির্দেশ দিয়েছেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৫০৩)
 

মন্তব্য

মক্কা ও মদিনার পবিত্র দুই মসজিদের ইতিকাফে যত সুবিধা

মুহাম্মদ হেদায়াতুল্লাহ
মুহাম্মদ হেদায়াতুল্লাহ
শেয়ার
মক্কা ও মদিনার পবিত্র দুই মসজিদের ইতিকাফে যত সুবিধা

পবিত্র রমজান মাসের গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতের মধ্যে ইতিকাফ অন্যতম। অতীতের নবী-রাসুলরাও ইতিকাফ করেছেন। কাবাগৃহ নির্মাণের পর মহান আল্লাহ ইবরাহিম (আ.) ও ইসমাঈল (আ.)-কে নির্দেশ দেন যেন তাঁরা ইতিকাফকারীদের জন্য তা (আল্লাহর ঘর) পরিষ্কার রাখেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘এবং আমি ইবরাহিম ও ইসমাঈলকে নির্দেশ দিয়েছি, তোমরা আমার ঘরকে সেসব লোকের জন্য পবিত্র করো, যারা (এখানে) তাওয়াফ করবে, ইতিকাফ করবে এবং রুকু ও সিজদা আদায় করবে।

’ (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ১২৫)

রাসুল (সা.) মদিনায় হিজরতের পর প্রতি রমজানের শেষ ১০ দিন ইতিকাফ করেছেন। নবীপত্নীরাও নিজ নিজ ঘরে ইতিকাফ করতেন। ইতিকাফের জন্য সর্বোত্তম স্থান হলো পবিত্র মসজিদুল হারাম। এরপর পবিত্র মসজিদে নববী।

অতঃপর মসজিদুল আকসা। জাবির (রা.) বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘মসজিদুল হারাম ছাড়া অন্য মসজিদের নামাজের চেয়ে আমার মসজিদের নামাজ হাজার গুণ শ্রেষ্ঠ (ফজিলতপূর্ণ)। আর অন্য মসজিদের নামাজের তুলনায় মাসজিদুল হারামের নামাজ এক লাখ গুণ উত্তম।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৪০৬)

প্রতিবছর রমজানে মক্কা ও মদিনায় ভিড় করেন বিশ্বের নানা প্রান্তের মুসল্লিরা।

রমজানের শেষ ১০ দিন ইতিকাফ করতে পবিত্র মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববীতে সমবেত হন তাঁরা। ইসলামের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ এই দুই স্থানে চাইলেই ইতিকাফ করা যায় না। এসব স্থানে ইতিকাফ করতে কিছু সুনির্দিষ্ট নীতিমালা অনুসরণ করতে হয়। নিম্নে তা নিয়ে আলোচনা করা হলো—

মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববীতে ইতিকাফের জন্য আগে থেকে নিবন্ধন করতে হয়। সাধারণত পঞ্চম রমজান থেকে অনলাইনে নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়।

eserv.wmn.gov.sa  বা মোবাইল অ্যাপ Visitors ডাউনলোড করতে হবে। যেকোনো প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিম পুরুষ ও নারীরা নিবন্ধন করতে পারবেন। এরপর সৌদি নাগরিকরা জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে আর অন্যদের পাসপোর্ট বা ভিসা নম্বর দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হলে ধাপে ধাপে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে আবেদন সম্পন্ন করতে হবে। এরপর মেইলে একটি কনফরমেশন মেসেজ যাবে। অতঃপর নির্দিষ্ট সময়ের পর ইতিকাফ কোড ও অনুমোদনপত্র পাওয়া যাবে। কোডটি মসজিদে অবস্থানকালে প্রয়োজন হয়। কারণ অনুমোদন পাওয়া সব মুসল্লির জন্য কোড অনুসারে একটি লকার বরাদ্দ থাকে। এতে মুসল্লিরা নিজেদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রাখতে পারেন।

মক্কা ও মদিনার পবিত্র দুই মসজিদবিষয়ক জেনারেল অথরিটির পক্ষ থেকে ইতিকাফের মুসল্লিদের জন্য বিভিন্ন সেবার ব্যবস্থা থাকে। নির্ধারিত স্থানে মুসল্লিদের থাকা-খাওয়া, প্রয়োজনীয় জিনিসের সুরক্ষার ব্যবস্থাসহ উন্নতমানের ব্যবস্থাপনা রয়েছে। মুসল্লিদের সুবিধার্থে বিশেষ সহায়তা ডেস্ক, ব্যক্তিগত জিনিসপত্র রাখার লকার, ফার্স্ট এইড সুবিধাসহ মেডিক্যাল ক্লিনিক, বহুভাষিক অনুবাদ সেবা এবং ধর্মীয় শিক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। তা ছাড়া ইফতার, রাতের খাবার, সাহরি এবং মোবাইল চার্জিং স্টেশনের সুবিধাও রয়েছে। প্রত্যেক মুসল্লিকে একটি কেয়ার কিট ও রিস্টব্যান্ড দেওয়া হয়েছে, যা তাদের চলাচল ও নির্ধারিত এলাকায় প্রবেশ সহজ করবে।

রমজানের শেষ সময়ে পবিত্র দুই মসজিদে মুসল্লিদের উপচে পড়া ভিড় রয়েছে। পবিত্র মসজিদুল হারামে গত ২৩ রমজান সারা দিনে ৩০ লাখেরও বেশি মুসল্লির উপস্থিতি ছিল। এদিকে পবিত্র মসজিদে নববীতে এবার ১২০টি দেশের চার হাজার পুুরুষ ও নারী মুসল্লি ইতিকাফে বসেছেন। তাঁদের মধ্যে পুরুষ মুসল্লিরা মসজিদের পশ্চিম দিকের ছাদের অংশে এবং নারী মুসল্লিরা উত্তর-পূর্ব অংশে অবস্থান করছেন। পুরুষরা ৬ ও ১০ নম্বর সিঁড়ি এবং নারীরা ২৪ ও ২৫ নম্বর দরজা দিয়ে নির্ধারিত স্থানে প্রবেশ করতে পারবেন।

সূত্র : অ্যারাব নিউজ ও  আল-হারামাইন ওয়েবসাইট
 

মন্তব্য

রাসুল (সা.) যত বছর রমজানের রোজা রেখেছিলেন

মুফতি আবদুল্লাহ নুর
মুফতি আবদুল্লাহ নুর
শেয়ার
রাসুল (সা.) যত বছর রমজানের রোজা রেখেছিলেন

ইসলাম আগমনের পূর্বে আরব সমাজেও রোজার প্রচলন ছিল। আয়েশা (রা.) বলেন, ‘জাহেলি যুগে কুরাইশরা আশুরার রোজা পালন করত এবং আল্লাহর রাসুল (সা.)-ও এই রোজা পালন করতেন। যখন তিনি মদিনায় আগমন করেন তখনো এই রোজা পালন করেন এবং তা পালনের নির্দেশ দেন। যখন রমজানের রোজা ফরজ করা হলো তখন আশুরার রোজা ছেড়ে দেওয়া হলো।

যার ইচ্ছা সে পালন করবে আর যার ইচ্ছা পালন করবে না।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২০০২)

মুসলমানরা মদিনায় হিজরত করার পর কিছুদিন আশুরার রোজা পালন করেন। এই সময় আশুরার রোজাই মুসলমানের জন্য ওয়াজিব ছিল। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘নবী (সা.) যখন মদিনায় আসেন তখন দেখতে পেলেন ইহুদিরা আশুরা দিন রোজা রাখে।

তাদের রোজা রাখার কারণ জিজ্ঞাসা করলে তারা বলল, এই দিনেই আল্লাহ তাআলা মুসা (আ.) ও বনি ইসরাঈলকে ফেরাউনের ওপর বিজয় দিয়েছিলেন। তাই আমরা ওই দিনের সম্মানে রোজা পালন করি। রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, তোমাদের চেয়ে আমরা মুসা (আ.)-এর বেশি নিকটবর্তী। এরপর তিনি সাওম পালনের নির্দেশ দিলেন।
’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৯৪৩)

এ ছাড়া মুসলিমরা প্রতি মাসে তিন দিন রোজা পালন করত বলে বিভিন্ন বর্ণনায় পাওয়া যায়। তবে বেশির ভাগ ফকিহ ও মুহাদ্দিসের মতে, রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার আগে আশুরার রোজা ওয়াজিব ছিল, যা পরবর্তী সময়ে নফলে পরিণত হয়। আর আইয়ামে বিদ বা প্রতি মাসে তিন দিন রোজা রাখার বিধান সব সময় মুস্তাহাব ছিল। হাদিসে আইয়ামে বিদের রোজার বিশেষ তাগিদ এসেছে।

আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, ‘আমার বন্ধু (সা.) আমাকে তিনটি কাজের অসিয়ত করেছেন।

মৃত্যু পর্যন্ত আমি তা ত্যাগ করব না। তাহলো—প্রতি মাসে তিন দিন রোজা রাখা, চাশতের নামাজ আদায় করা এবং বিতর আদায় করে শোয়া।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১১৭৮)

দ্বিতীয় হিজরিতে রমজানের রোজা ফরজ হয়। ইমাম নববী (রহ.) লেখেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) মোট ৯ বছর রমজানের রোজা রেখেছেন। কেননা তা দ্বিতীয় হিজরির শাবান মাসে ফরজ হয়। আর নবী (সা.) একাদশ হিজরির রবিউল আউয়ালে ইন্তেকাল করেন।’ (আল-মাজমুআ : ৬/২৫০)

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ