উড়োজাহাজের জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত তেলের (জেট এ-১) দাম নিয়ে গণশুনানিতে এসে দেশীয় এয়ারলাইনসগুলো আন্তর্জাতিক বাজারের চেয়ে দ্বিগুণ দামে তেল কেনার অভিযোগ করেছে। এয়ারলাইনসগুলো বলেছে, বিমানবন্দরে একমাত্র তেল সরবরাহকারী রাষ্ট্রীয় কম্পানি পদ্মা অয়েলের কাছে অনেকটা জিম্মি তারা।
গতকাল রবিবার বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) কার্যালয়ে প্রথমবারের মতো তরল কোনো জ্বালানির দাম নির্ধারণ নিয়ে গণশুনানি করে বিইআরসি। শুনানিতে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) পক্ষ থেকে বলা হয়, এখন দেশের রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইনস বিমানসহ সব বেসরকারি এয়ারলাইনস নগদ টাকায় জ্বালানি কিনছে।
তবে বিমানের কাছে এখনো বিপিসির পুরনো বকেয়া আছে এক হাজার ৭০০ কোটি টাকা।
শুনানিতে পদ্মা অয়েল কম্পানি লিমিটেড তাদের প্রস্তাবে উল্লেখ করে, জেট এ-১ একটি বিশেষায়িত পণ্য। আমদানিকৃত ট্যাংকার থেকে জেট এ-১ খালাস কার্যক্রম শুরু করে উড়োজাহাজে সরবরাহ পর্যন্ত বিভিন্ন ধাপে শেল এভিয়েশনের বিশেষ নির্দেশনা প্রতিপালন করে বিভিন্ন ফিলটারিং-টেস্টিংয়ের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়। গুণগত মান রক্ষার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ল্যাবরেটরির যন্ত্রপাতি, হোসপাইপ যন্ত্রাংশ ক্রয় এবং এভিয়েশন ডিপো-বিমানবন্দর সার্ভিস স্টেশন ও ডেলিভারি ইকুইপমেন্ট নিয়মিত মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়সহ অন্যান্য অতিরিক্ত খরচ কম্পানিকে বহন করতে হচ্ছে, যা ক্রমেই বাড়ছে।
এ কারণে তেল বিপণন কম্পানির মার্জিন ও বিমানবন্দর খরচ বাড়ানো প্রয়োজন।
শুনানিতে বিইআরসির কারিগরি কমিটি জানায়, ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ফ্ল্যাট রেটের ভিত্তিতে ডিউটি পেইড জেট এ-১-এর মূল্য প্রতি লিটার ১০৫ টাকা ৫১ পয়সা, যা বিদ্যমান মূল্যহারের চেয়ে প্রতি লিটারে পাঁচ টাকা ৪৯ পয়সা কম। বন্ডেড বা ডিউটি ফ্রি মূল্যহার প্রতি লিটার ০.৬৯ মার্কিন ডলার, যা বিদ্যমান মূল্যহারের চেয়ে ০.৩৯৯ ডলার কম।
শুনানিতে বিইআরসির চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ বলেন, ‘এটি বিইআরসির জন্য তরল জ্বালানির প্রথম মূল্য নির্ধারণ।
এর আগে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম নির্ধারণ নিয়ে শুনানি হয়েছে। গণশুনানিতে সুবিধা হলো, সবার কথা শুনতে পারি। আবার লিখিত বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ আছে।’