সাক্ষাৎকার : অধ্যাপক ড. মো. শামছুল আলম

সবাইকে নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার কাজ করছি

সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মো. সাইফুল ইসলাম
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মো. সাইফুল ইসলাম
শেয়ার
সবাইকে নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার কাজ করছি
অধ্যাপক ড. মো. শামছুল আলম

অধ্যাপক ড. মো. শামছুল আলম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়েছিলেন। ২০০৮ সালে তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি অর্জন করেন। শামছুল আলম ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন এবং ২০১২ সালে অধ্যাপক পদে উন্নীত হন।

তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে প্রভোস্ট ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান ছিলেন। তার ৩১টি গবেষণা প্রবন্ধ রয়েছে। তার তত্ত্বাবধানে ৬ জন পিএইচডি এবং ৭ জন এমফিল ডিগ্রি অর্জন করেছেন। ২০২৪ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি।

 

কালের কণ্ঠ : ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়কে কেমন অবস্থায় পেয়েছিলেন? বর্তমান অবস্থা কেমন?

ড. মো. শামছুল আলম : বিগত সরকারের শাসনামলে দেশের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়কেও ধ্বংস করা হয়েছিল। সেখান থেকে এ বিশ্ববিদ্যালয়কে টেনে তোলার চেষ্টা করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ সব অংশীজনকে সঙ্গে নিয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করার কাজ করছি।  

কালের কণ্ঠ : ইআবি এখনো ভাড়া বাসায় কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ কত দূর?

ড. মো. শামছুল আলম : ঢাকার কেরানীগঞ্জ থানাধীন ঘাটারচর ও মধ্যেরচর এলাকায় ১৭ একর জমিতে নির্মিত হবে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস। পুরো প্রজেক্টের কাজটি বাস্তবায়ন করছে সরকার। সেখানে কিছু আমলাতান্ত্রিক জটিলতা রয়েছে। আমি দায়িত্ব গ্রহণের পর পুরো ১৭ একর জমি বালু দিয়ে ভরাট করা হয়েছে। জমির বাউন্ডারির কাজ হয়েছে প্রায় ৮০ ভাগ।

কালের কণ্ঠ : স্থায়ী ক্যাম্পাসে কী কী থাকবে?

ড. মো. শামছুল আলম : একটি বড় আকারের ১০ তলা ভবন হবে। যেখানে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম চলবে। স্থায়ী ক্যাম্পাসে একটি বড় মসজিদ হবে। আর তিন একর জায়গাজুড়ে নির্মিত হবে আরবি ভাষা ইনস্টিটিউট। সৌদি আরবের অর্থায়নে এই ইনস্টিটিউট নির্মিত হবে। 

কালের কণ্ঠ : ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় অনেকাংশে পরীক্ষাকেন্দ্রিক...

ড. মো. শামছুল আলম : আমরা এ বিষয়ে দৃষ্টি দিয়েছি। বৃহৎ পরিসরে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা আগামীতে অনেকগুলো জার্নাল বের করব। ইতিমধ্যে বেশ কিছু প্রবন্ধ জমা হয়েছে। দেশ-বিদেশের ভালো মানের অনেক গবেষক আমাদের সঙ্গে কাজ করছেন। 

কালের কণ্ঠ : ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় এমফিল-পিএইচডি প্রগ্রাম চালু করবে?

ড. মো. শামছুল আলম : আমরা এমফিল-পিএইচডি দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি। এ জন্য নীতিমালাও চূড়ান্ত হয়েছে। খুব দ্রুত এ বিষয়ে সার্কুলার দেওয়া হবে। আশা করি, ভালো সাড়া পাব। 

কালের কণ্ঠ : ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন মাদরাসাগুলোর শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে...

ড. মো. শামছুল আলম : আমরা মাদরাসাগুলোকে কোয়ালিটি বাড়ানোর কাজে উদ্বুদ্ধ করছি। আগামীতে শুধু এই লক্ষ্যে সভা-সেমিনার করা হবে। এ বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য চাই। আসলে কেন এমন হচ্ছে। এ কাজে বিশেষজ্ঞদের নিয়োজিত করা হবে। এ ছাড়া বিগত ১৫ বছর চাকরির ক্ষেত্রে মাদরাসা শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হয়েছে। এটাও শিক্ষার মান ও শিক্ষার্থী কমে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলতে পারে। আমরা মাদরাসা শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করব। শিক্ষার্থীদেরে মধ্যে এই আস্থা তৈরির চেষ্টা করব যে তারা যোগ্য ও দক্ষ হলে চাকরির বাজারে আর বৈষম্যের শিকার হবে না। আশা করি, আগামীতে মাদরাসা শিক্ষার মানোন্নয়নের বিষয়গুলো সুষ্পষ্ট হবে। 

কালের কণ্ঠ : মাদরাসাগুলোতে নিয়মিত ক্লাস হয় না, পরীক্ষায় অনিয়মের কথাও শোনা যায়।

ড. মো. শামছুল আলম : আমরা ধীরে ধীরে একটি সিস্টেম গড়ে তুলব মাদরাসাগুলোর জন্য। সেখানে শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্টসংখ্যক ক্লাসে উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করা হবে। পরীক্ষায় অনিয়ম বন্ধে আমরা ইতিমধ্যে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছি। প্রয়োজনে কেন্দ্র বাতিলের সিদ্ধান্তও নেওয়া হবে।

কালের কণ্ঠ : মাদরাসা শিক্ষার্থীদের দক্ষতা উন্নয়নে প্রফেশনাল কোর্স করানোর উদ্যোগ আছে কি?

ড. মো. শামছুল আলম : আগামীতে আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে বিভিন্ন ভাষাসহ ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। সেখানে প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য আবাসিক সুবিধাও রাখা হবে।

কালের কণ্ঠ : ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল চ্যালেঞ্জ কী?

ড. মো. শামছুল আলম : দেখুন, আমরা দেড় হাজার মাদরাসা নিয়ে কাজ করি। এই বিপুলসংখ্যক প্রতিষ্ঠানে কাজগুলো সমন্বয় করতে যতসংখ্যক জনবল থাকা দরকার, তা আমাদের নেই। ফলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সুষ্ঠুভাবে কাজগুলো পরিচালনা করা অনেকটাই কঠিন। তবে আমরা চেষ্টা করছি সমন্বিতভাবে কাজ করার। একই সঙ্গে জনবল নিয়োগের জন্যও কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

কালের কণ্ঠ : আপনার মেয়াদের শেষে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়কে কোথায় দেখতে চান?

ড. মো. শামছুল আলম : দুর্নীতিমুক্ত, স্বচ্ছতার সঙ্গে পরিচালিত, বিশ্বমানের একটি বিশ্ববিদ্যালয় আমার স্বপ্ন। মাদরাসা শিক্ষার উন্নয়নে সবার সহযোগিতা নিয়ে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করব ইনশাআল্লাহ।

কালের কণ্ঠ : সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

ড. মো. শামছুল আলম : আপনাকেও ধন্যবাদ। কালের কণ্ঠের জন্য শুভ কামনা।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

বাকৃবিতে ছিনতাইয়ের সময় ছিনতাইকারী ও অটোচালক আটক

বাকৃবি প্রতিনিধি
বাকৃবি প্রতিনিধি
শেয়ার
বাকৃবিতে ছিনতাইয়ের সময় ছিনতাইকারী ও অটোচালক আটক
ছবি: কালের কণ্ঠ

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) সংলগ্ন আমবাগান এলাকায় ছিনতাইয়ের সময় এক ছিনতাইকারী ও তার সহযোগী অটোচালককে আটক করেছে পুলিশ। রবিবার (৩০ মার্চ) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মোখলেছুর রহমান। এর আগে শনিবার (২৯ মার্চ) রাত সাড়ে ১১ টার তাদের আটক করা হয়। 

আটককৃতরা হলেন—ময়মনসিংহের ফকিরাকান্দা এলাকার মো. আসিফ (১৯) এবং একই এলাকার অটোচালক মো. ইয়াসিন মিয়া (জিয়াদ)।

উপপরিদর্শত মোখলেছুর রহমান জানান, শিকারাকান্দা থেকে ব্রিজের মোড়ে যাওয়ার জন্য এক যাত্রী মো. ইয়াসিন মিয়ার অটোতে উঠেছিলেন। পথে ছিনতাইয়ের শিকার হয় ওই যাত্রী। ছিনতাইকারীরা তার কাছ থেকে মানিব্যাগ ও মোবাইল নিয়ে অটো থেকে নামিয়ে দেয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুল জব্বার মোড়ে পৌঁছালে ছিনতাইকারীদের মধ্যে কথাকাটাকাটি শুরু হয়।

এতে আশপাশের লোকজনের সন্দেহ হলে তারা ছিনতাইকারীদের দুইজন সদস্যকে আটক করেন। এ সময় আরো ৩-৪ জন পালিয়ে যায়।

এসআই মোখলেছুর রহমান বলেন, ‌‌‌‘প্রথমে ছিনতাইকারীরা তাদের অপরাধ অস্বীকার করলেও পরে নিজেদের দোষ স্বীকার করে নেয়। এরপর তাদের বাকৃবি পুলিশ ক্যাম্পে রাখা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের কোতোয়ালি মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়।’
 

মন্তব্য

জালিয়াতির অভিযোগে তামীরুল মিল্লাতের অধ্যক্ষ বরখাস্ত

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
জালিয়াতির অভিযোগে তামীরুল মিল্লাতের অধ্যক্ষ বরখাস্ত
সংগৃহীত ছবি

খাতা মূল্যায়নে জালিয়াতি, অর্থ আত্মসাৎসহ একাধিক অভিযোগে তামীরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসা যাত্রাবাড়ীর অধ্যক্ষ ড. মুহাম্মাদ আবু ইউছুফকে বরখাস্ত করা হয়েছে। ১২ মার্চ মাদরাসার গভর্নিং বডির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. কোরবান আলী স্বাক্ষরিত অফিস আদেশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।

অফিস আদেশে বলা হয়, তামীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার গভর্নিং বডির ১২ মার্চের সভায় আপনার বিরুদ্ধে ট্রাস্ট কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির আনীত ২০টি অভিযোগের প্রতিবেদন আলোচিত হয়। সব দিক বিবেচনা করে সর্বসম্মতিক্রমে আপনার বরখাস্তের মেয়াদ ২০ মার্চ থেকে আরো দুই মাস বাড়িয়ে ছয় মাস নির্ধারণ করা হয়েছে।

বরখাস্তকালে মাদরাসা থেকে সব প্রকার সুযোগ-সুবিধা বন্ধ থাকবে।

আরো পড়ুন
কুমিল্লায় ট্রেন দুর্ঘটনা নিয়ে গুজব

কুমিল্লায় ট্রেন দুর্ঘটনা নিয়ে গুজব

 

এ বিষয়ে মাওলানা আবু ইউছুফ বলেন, ‘কোনো বিষয়ে অভিযোগ থাকলে প্রথমে শোকজ দিতে হয়। শোকজের জবাবে সন্তুষ্ট না হলে ব্যবস্থা নেওয়া যায়। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে সে রকম হয়নি, আমাকে সরাসরি বরখাস্ত করা হয়েছে।

বরখাস্তের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে আবার দুই মাস বাড়িয়ে আরেকটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। এটিও আইনসংগত হয়নি।’

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

বাজারের মাংসে টাইফয়েড-ডায়রিয়ার জীবাণু, জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় হুমকি

বাকৃবি প্রতিনিধি
বাকৃবি প্রতিনিধি
শেয়ার
বাজারের মাংসে টাইফয়েড-ডায়রিয়ার জীবাণু, জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় হুমকি
সংগৃহীত ছবি

স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ মাংস প্রাপ্তি মানুষের অন্যতম মৌলিক চাহিদা। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, বাংলাদেশের মানুষ প্রতিদিন মাথাপিছু ১৪৩ দশমিক ৭৭ গ্রাম মাংস খেতে পায়। দৈনন্দিন জীবনে আমিষের চাহিদা পূরণে মাংসের অবদান অনস্বীকার্য। তবে, দেশের অধিকাংশ স্থানীয় পোল্ট্রি বাজারে এখনো অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মুরগি জবাই করা হয়, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় হুমকি।

 

সম্প্রতি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) একদল গবেষকের পরিচালিত গবেষণায় ময়মনসিংহ সদরের বিভিন্ন স্থানীয় বাজারে সাধারণভাবে জবাইকৃত মুরগির মাংসে মিলেছে টাইফয়েড (সালমোনেলা) ও ডায়রিয়া (ইকোলাই) রোগের জীবাণু। এছাড়াও দোকানে মুরগি অসুস্থ হলে বেশিরভাগ দোকান মালিক (৯৬.১৫ শতাংশ) মুরগি আলাদা রাখা বা মেরে ফেলার পরিবর্তে বিক্রি করে দেন বলে ওই গবেষণায় উঠে আসে। 

আরো পড়ুন
বাঘায় পদ্মা নদী থেকে অজ্ঞাত নারীর মরদেহ উদ্ধার

বাঘায় পদ্মা নদী থেকে অজ্ঞাত নারীর মরদেহ উদ্ধার

 

ময়মনসিংহ সদর ও এর আশেপাশের পোল্ট্রি বাজারসমূহের অবস্থা পর্যেবক্ষণ, বায়োসিকিউরিটি এবং পোল্ট্রি জবাইকরণ সম্পর্কে বিক্রেতাদের মনোভাব যাচাইকরণ এবং সেখানে বিক্রয়কৃত মাংসের গুণগতমান যাচাইয়ের জন্য বাংলাদেশ কৃষি বিশ্বব্যিালয়ের (বাকৃবি) পোল্ট্রি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ইলিয়াস হোসেনের নেতৃত্বে গবেষণা কার্যক্রমটি পরিচালিত হয়। গবেষণাটি ওয়ার্ল্ডস পোল্ট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ শাখা কর্তৃক আয়োজিত ১৩তম আন্তর্জাতিক পোল্ট্রি সেমিনার -২০২৫-এ উপস্থাপিত হয়।

 

ওই গবেষণায় দেখা গেছে, স্থানীয় বাজারের সাধারণভাবে জবাইকৃত মাংসে ক্ষতিকর ইকোলাই ও সালমোনেলা উল্লেখযোগ্য পরিমাণ উপস্থিতি রয়েছে, যেখানে স্বাভাবিক অবস্থায় মাংসে এগুলো থাকার কথা নয়। এসব মাংসের নমুনায় সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ লগারিদম ৪.০২ থেকে লগারিদম ৫.৫৯ সিএফইউ/গ্রাম এবং ইকোলাই ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ লগারিদম ৪.০১ থেকে লগারিদম ৫.৯৪ সিএফইউ/গ্রাম পর্যন্ত পাওয়া গেছে। স্থানীয় বাজারের নমুনায় মোট কার্যকর ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণও (টিভিসি) ছিল বেশি। 

গবেষণাটিতে ময়মনসিংহ সদরের চরপাড়া বাজার, মিন্টু কলেজ বাজার, মেছুয়া বাজার, নতুন বাজার, সানকিপাড়া বাজার, কেওয়াটখালী বাজার, শেষমোড় বাজার, সুতিয়াখালী বাজার, ভাবখালী বাজার, কে আর মার্কেট, শম্ভুগঞ্জ বাজার এবং গাছতলাসহ ১২টি স্থানীয় বাজারের পোল্ট্রি দোকানের তথ্য নেওয়া হয়।

একটি সুনির্ষ্টি প্রশ্নাবলীর তালিকা অনুসরণ করে এই ১২টি বাজারের ২৪টি পোল্ট্রি দোকানের কর্মীদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছিল। এসব বাজারে সাধারণভাবে জবাইকৃত এবং প্রসেসিং ইউনিটের পদ্ধতি অনুসরণ করে পোল্ট্রি ফার্মে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে জবাইকৃত মোট ২৬টি মাংসের (উরু এবং বুকের মাংস) নমুনা এবং ২টি পানির নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। নমুনাগুলো বাকৃবির মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড হাইজিন ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়েছিল বলে জানান অধ্যাপক ড. মো. ইলিয়াস হোসেন। 

গবেষণায় উঠে আসা স্থানীয় বাজারের মুরগির দোকানগুলোর অবস্থা সম্পর্কে গবেষকরা বলেন, গবেষণার তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে যে ৮৪.৬২ শতাংশ দোকানে মুরগি রাখার পর্যাপ্ত জায়গা নেই, ৯২ শতাংশ দোকানে ময়লা পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা নেই এবং ৪৬.১৫ শতাংশ দোকানে পর্যাপ্ত আলো ছিল না। এছাড়াও, ৩০.৭৭ শতাংশ দোকানে মাংস কাটার জায়গা অস্বাস্থ্যকর ছিল এবং পরিকল্পিত বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থা ছিল না।

এরকম পরিস্থিতি ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি এবং দূষণের জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরি করে।

স্বাস্থ্যকর মাংস প্রাপ্তির বিষয়ে অধ্যাপক ড. মো. ইলিয়াস হোসেন বলেন, বাংলাদেশের স্থানীয় বাজারগুলোর অধিকাংশ পোল্ট্রি দোকানে অপর্যাপ্ত জায়গায় পাখিগুলোকে রাখা হয় এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মুরগি জবাই করা হয় যা অত্যন্ত স্বাস্থ্য ঝুঁকি সম্পন্ন এবং নানা রোগ বিস্তারের কারণ হতে পারে। এর সমাধানে স্থানীয় বাজারগুলোতে ক্ষুদ্র প্রসেসিং ইউনিট স্থাপনের মাধ্যমে ক্রেতাদের নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত মাংস পৌছে দেওয়া সম্ভব। 

তিনি আরো বলেন, ক্রমবর্ধমান চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় বাজারগুলোতে ক্ষুদ্র প্রসেসিং ইউনিট প্রতিষ্ঠা করা গেলে তা একইসাথে যেমন নিরাপদ মাংস সরবরাহ নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে, পাশাপাশি স্থানীয় পোল্ট্রি দোকানগুলো আরো লাভজনকভাবে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবে। উল্লেখ্য যে, প্রসেসিং ইউনিটের মাংসে কোনো সালমোনেলা বা কলিফর্ম সনাক্ত করা যায়নি, যা ইঙ্গিত করে যে প্রসেসিং ইউনিট থেকে পাওয়া মাংস খাওয়ার জন্য নিরাপদ।

প্রযুক্তিগত সহযোগিতা প্রদানের মাধ্যমে স্থানীয় বাজারের পোল্ট্রি দোকানীদের ক্ষুদ্র প্রসেসিং ইউনিট স্থাপনে উৎসাহিত করতে হবে। মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পোল্ট্রি মুরগি বিক্রি বন্ধ করতে হবে। বাজার থেকে মাংস কেনার সময় ক্রেতাদের সতর্ক হতে হবে। ক্রেতা ও বিক্রেতাকে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে জবাইকৃত মাংসের উপকারিতা সম্পর্কে সচেতন করার জন্য সরকারি ও বেসরকারিভাবে বিভিন্ন জরুরী পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি করেন ওই অধ্যাপক।
 

মন্তব্য

ঢাবিতে হবে ঈদ র‍্যালি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
শেয়ার
ঢাবিতে হবে ঈদ র‍্যালি
সংগৃহীত ছবি

ঈদুল ফিতর পালন উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঈদ র‍্যালি বের করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান র‍্যালিতে নেতৃত্ব দেবেন।

শুক্রবার (২৮ মার্চ) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। 

এতে বলা হয়, ঈদের দিন ‘সকাল ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ মসজিদুল জামিআ'য় ঈদুল ফিতরের প্রথম জামাতের পর র‍্যালি শুরু হবে।

র‍্যালিটি টিএসসি হয়ে স্মৃতি চিরন্তন চত্বরে গিয়ে শেষ হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ র‍্যালিতে অংশগ্রহণ করবেন।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ