দেশের উচ্চ ও অধস্তন আদালতে মামলার জট বেড়েই চলেছে। বর্তমানে প্রায় ৪৪ লাখ মামলা চলমান রয়েছে। এই জট নিরসনে বিচারকের নতুন পদ সৃষ্টির উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ৪৪৮টি বিচারকের পদ সৃষ্টির সম্মতি দিয়েছিল।
দেশের উচ্চ ও অধস্তন আদালতে মামলার জট বেড়েই চলেছে। বর্তমানে প্রায় ৪৪ লাখ মামলা চলমান রয়েছে। এই জট নিরসনে বিচারকের নতুন পদ সৃষ্টির উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ৪৪৮টি বিচারকের পদ সৃষ্টির সম্মতি দিয়েছিল।
আজ সোমবার বিকেল ৩টায় সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে প্রশাসনিক উন্নয়নসংক্রান্ত সচিব কমিটির বৈঠকে ৩৯টি বিচারকের পদ সৃষ্টির প্রস্তাব উঠতে যাচ্ছে। পর্যায়ক্রমে প্রায় ৫০০ বিচারকের নতুন পদ সৃষ্টি হতে পারে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
মন্ত্রিপরিষদসচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদের সভাপতিত্বে এই বৈঠক হবে। সচিব কমিটির প্রস্তাবে বলা হয়েছে, নতুন পদ সৃষ্টির প্রস্তাবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও অর্থ বিভাগ সম্মতি দিয়েছে। সচিব কমিটির অনুমোদন পাওয়ার পর প্রস্তাবটি প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে যাবে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অনুমোদন পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
আইন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, দেশের বিভিন্ন আদালতে মামলার চাপ প্রশমনসহ মামলার সংখ্যা বৃদ্ধির প্রবণতা রোধ করার লক্ষ্যে কয়েক বছর আগে প্রায় দেড় হাজার বিচারকের পদ বাড়ানোর প্রস্তাব জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এরপর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ৯১টি অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের জন্য ৩৬৪টি এবং ২১টি অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের জন্য ৮৪টি পদসহ মোট ৪৪৮টি পদ সৃজনে সম্মতি দেয়।
সব কার্যক্রম শেষে আইন ও বিচার বিভাগ ২০২২ সালের ১৯ এপ্রিল ৬২টি অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এবং ১৯টি অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের জন্য ২৯২টি পদ সৃজনের জিও জারি করেছে। এবার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত এবং অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের জন্য ৩৯টি পদ সৃজনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে অর্থ বিভাগ সম্মতি দিয়েছে।
বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ফারুক কালের কণ্ঠকে বলেন, জনসংখ্যার তুলনায় বাংলাদেশে বিচারকের সংখ্যা অনেক কম। এর মধ্যে বিচারকের কিছু নতুন পদ বাড়লে অবশ্যই ভালো হবে। দেশে পাঁচ হাজারের বেশি বিচারক প্রয়োজন। অথচ সারা দেশে বিচারক কর্মরত মাত্র দুই হাজার ২০০ জন। তিনি আরো বলেন, জাপানে অপরাধের সংখ্যা কম হওয়ার পরও ১২ কোটি জনসংখ্যার জন্য বিচারক আছেন চার হাজার। সে অনুযায়ী বাংলাদেশে পাঁচ হাজারের বেশি বিচারক দরকার। এ ছাড়া আইন কমিশনের এক প্রতিবেদনেও পাঁচ হাজার বিচারক নিয়োগের কথা বলা হয়েছে।
মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি ও জট কমিয়ে আনার বিষয়ে গত বছরের আগস্টে আইন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে প্রতিবেদন দাখিল করে আইন কমিশন। প্রতিবেদনে মামলাজটের পাঁচটি মূল কারণ উল্লেখ করা হয়। এগুলো হলো পর্যাপ্ত বিচারক না থাকা, বিশেষায়িত আদালতে পর্যাপ্ত বিচারক নিয়োগ না হওয়া, মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা, জনবলের অভাব এবং দুর্বল অবকাঠামো। প্রতিবেদনে জরুরি ভিত্তিতে বিভিন্ন পর্যায়ে চার বছরে কমপক্ষে পাঁচ হাজার বিচারক নিয়োগের সুপারিশ করা হয়।
এ বিষয়ে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব শেখ আবু তাহের কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার বিচার বিভাগ সংস্কারে কমিশন গঠন করেছে। আশা করছি কমিশনের রিপোর্টে মামলাজট নিরসনের বিষয়ে বিভিন্ন সুপারিশ থাকবে। এ ছাড়া বিচারক সংকটের বিষয়েও উল্লেখ থাকবে। মন্ত্রণালয় সুপারিশ পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
সম্পর্কিত খবর
সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের স্ত্রী ও যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভানেত্রী সৈয়দা মোনালিসা ইসলাম এবং আওয়ামী লীগ নেত্রী ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী লিপি খান ভরসাকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
সোমবার (২৪ মার্চ) বিচারপতি মো.ইকবাল কবির ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ উভয় মামলায় রুলসহ এ আদেশ দেন।
মামলা দুটিতে আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাহেরুল ইসলাম তৌহিদ, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো.আল আমিন ও মো.মিজানুর রহমান। এ জামিনের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাহেরুল ইসলাম তৌহিদ।
জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘটনায় দায়ের করা এক মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকার ইস্কাটন এলাকা থেকে মোনালিসা ইসলামকে আটক করে পুলিশ। পরদিন ১৭ ফেব্রুয়ারি মেহেরপুর আমলি আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। আমলি আদালতের বিচারক বেগম শারমিন নাহার তাকে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ড শেষে ২০ ফেব্রুয়ারি তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের সন্ত্রাস বিরোধী আইনে দায়ের করা মামলার ১২ নম্বর এজাহারভুক্ত আসামি সৈয়দা মোনালিসা ইসলাম। ১৯ আগস্ট মামলাটি করেছিলেন মেহেরপুর সদরের মো.হাসনাত জামান।
অন্যদিকে, ১৬ মার্চ সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর গুলশান-২ এর ১১৭ নম্বর রোডের ৯/বি ফ্ল্যাট থেকে লিপি খান ভরসাকে গ্রেপ্তার করা হয়। একইদিন রাত সাড়ে ৯টায় রংপুর অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এর বিচারক শোয়েবুর রহমান লিপি খান ভরসাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে মহানগর জজ আদালতে জামিন আবেদন করলে ১৮ মার্চ তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।
গত বছরের ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিতে আহত রংপুর মহানগরীর ২৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদ মামুনের করা হত্যাচেষ্টা মামলার ১৭৯ নম্বর এজাহারভুক্ত আসামি লিপি খান ভরসা। ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি ঢাকায় অভিজাত এলাকায় ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে স্বামীর সঙ্গে বসবাস করছিলেন।
লিপি খান সবশেষ ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হওয়ার জন্য মনোনয়নপত্র কিনেছিলেন। এ ছাড়াও আওয়ামী লীগের সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনসির নির্বাচনী সভা-সমাবেশে অংশ নেন।
প্রায় এক দশক আগে ২০১৬ সালে ঢাকার কল্যাণপুরের ‘জাহাজ বাড়িতে’ কথিত জঙ্গি আস্তানায় অভিযানের নামে ৯ তরুণকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা (মিসকেস) করা হয়েছে।
এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহিদুল হক, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া ও ডিএমপি মিরপুর বিভাগের সাবেক উপকমিশনার (ডিসি) মো. জসীম উদ্দীন মোল্লাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সোমবার (২৪ মার্চ) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
এর আগে পুলিশের এই তিন কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখার জন্য ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি করতে পুলিশের এই কর্মকর্তারা ‘জঙ্গি নাটক’ তৈরি করেছিলেন বলে ট্রাইব্যুনালকে জানান চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। আগামী ৭ মে এই মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ রাখা হয়েছে।
শুনানি শেষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘২০১৬ সালের ২৫ জুলাই রাজধানীর কল্যাণপুরের জাহাজ বাড়ি নামের একটি বাড়িতে ৯ তরুণকে আটকে রেখে সোয়াত, সিটিটিসিসহ গিয়ে তাদের বাসার মধ্যে গুলি করে হত্যা করে।
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা জানতে পেরেছে, এই ৯ তরুণকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বহু আগে গ্রেপ্তার করে এইখানে নিয়ে আসা হয়। কেউ কেউ দুই-তিন মাস ধরে ডিবি হেফাজতেও ছিলেন। সেখান থেকে তাঁদের ধরে নিয়ে রাতে ওই বাসায় জড়ো করা হয়।
এদিকে জুলাই-আগস্ট গণআন্দোলনের সময় রাজধানীর রামপুরায় ভবনের কার্নিশে ঝুলে থাকা ১৮ বছর বয়সী এক কিশোরকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পুলিশ কর্মকর্তা হলেন চঞ্চল চন্দ্র সরকার ও সাবেক এসি রাজন কুমার সাহাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
ট্রাইব্যুনালে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের সঙ্গে ছিলেন, প্রসিকিউটর আব্দুস সোবহান তরফদার, বি এম সুলতান মাহমুদ, গাজী এম এইচ তামিম, শহিদুল ইসলাম, ফারুক আহমেদ ও মইনুল করিম।
হাইকোর্ট বিভাগের দুই বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও ফারাহ মাহবুবকে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২৪ মার্চ) রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে আইন মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে এক প্রজ্ঞাপন জারি করে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৯৫-এর দফা (১)-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি ফারাহ মাহবুবকে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, আপিল বিভাগের বিচারক পদে নিয়োগ দান করেছেন। এই নিয়োগ শপথগ্রহণের তারিখ হতে কার্যকর হবে।
জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় শপথ গ্রহণ করবেন এই দুই বিচারপতি।
জামালপুর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মির্জা আজম ও তার স্ত্রী দেওয়ান আলেয়ার নামে জামালপুরে থাকা ১৯ বিঘা জমি জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া বিভিন্ন ব্যাংকে থাকা ৩১টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দেওয়া হয়েছে। এসব হিসাবে ৩ কোটি ৮০ লাখ ২৩ হাজার ৯৫৮ টাকা রয়েছে।
সোমবার (২৪ মার্চ) ঢাকার মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।
জব্দ হওয়া সম্পদের মধ্যে মির্জা আজমের নামে জামালপুরে সাড়ে ৫৯ শতক জমি জব্দ করা হয়েছে। এসব সম্পদের মূল্য ২৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা। মির্জা আজমের নামে ১৮টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, মির্জা আজম ও তার স্ত্রী আলেয়ার সম্পদ জব্দ ও ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ চেয়ে পৃথক দুটি আবেদন করে দুদকের সহকারী পরিচালক ফেরদৌস রহমান।
মির্জা আজমের আবেদনে বলা হয়, মির্জা আজম সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ক্ষমতার অপব্যবহার ও প্রভাব খাটিয়ে নিজ নামে-বেনামে ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কম্পানি/প্রতিষ্ঠানের নামে ৩৯ কোটি ৭৬ লাখ ৬৭ হাজার ২০০ টাকা এবং তার মেয়ে আফিয়া আজম অপির নামে ৩ কোটি ৯৯ লাখ ৮৩ হাজার ৫৭ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পত্তি অসৎ উদ্দেশ্যে বিভিন্ন অবৈধ পন্থা ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জন করেন। এসব সম্পদ নিজের দখলে রেখে, পরিবারের সদস্যসহ অন্যান্যদের নামে ২০ কোটি ৭৩ লাখ ৮২ হাজার টাকা মূল্যের স্থাবর সম্পত্তি হেবা বা দান বা বিনিময়ের মাধ্যমে হস্তান্তর ও রূপান্তর করেন। নিজ নামে ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কম্পানি/প্রতিষ্ঠান এবং তার স্ত্রী আসামি দেওয়ান আলেয়াসহ তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কম্পানি/প্রতিষ্ঠানের নামে পরিচালিত বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ৭২৫ কোটি ৭০ লাখ ৪২ লাখ ২৩২ টাকা জমা ও ৭২৪ কোটি ৮৯ লাখ ৯৩ হাজার ৭১৫ টাকা উত্তোলনপূর্বক অস্বাভাবিক লেনদেনের মাধ্যমে জ্ঞাতসারে তার অপরাধলব্ধ অবৈধ অর্থ হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করে অপরাধ করায় তাদের বিরুদ্ধে দুদক মামলা দায়ের করে। মির্জা আজম কর্তৃক অর্জিত সকল সম্পদ সুনির্দিষ্ঠভাবে চিহ্নিত করা যায় নি।
দেওয়ান আলেয়ার আবেদনে বলা হয়, দেওয়ার আলেয়া তার স্বামী মির্জা আজমের প্রভাব খাটিয়ে এবং তার সহযোগিতায় নিজ নামে-বেনামে ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কম্পানি/প্রতিষ্ঠানের নামে ২৩ কোটি ৭৭ লাখ ৭১ হাজান ৯৯৫ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পত্তি অসৎ উদ্দেশ্যে বিভিন্ন অবৈধ পন্থা ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জন করেন। তা নিজের দখলে রেখে এবং তার নিজ নামে ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কম্পানি/প্রতিষ্ঠানের নামে পরিচালিত বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ১৮১ কোটি ৯৫ লাখ, ৬২ হাজার টাকা জমা ও ১৭৯ কোটি ২৬ লাখ ৯৬ হাজার ৪৯ টাকা উত্তোলনপূর্বক অস্বাভাবিক লেনদেনের মাধ্যমে জ্ঞাতসারে তার অপরাধলব্ধ অবৈধ অর্থ হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করেছেন এজন্য দুদক তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। আসামি দেওয়ান আলেয়া কর্তৃক অর্জিত সকল সম্পদ সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করা যায়নি। তবে তদন্তকালে প্রাপ্ত তার নিজ নামীয়/স্বার্থ সংশ্লিষ্ট এসব স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ যেন তিনি অন্যত্র হস্তান্তর ও স্থানান্তর করতে না পারেন এ জন্য স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধ করা একান্ত প্রয়োজন।